Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Friday, January 22, 2016

একটি আস্তিকীয় গল্পের নাস্তিকী করণ এবং এর ব্যবচ্ছেদ করণ (প্রথম অংশ)


কয়েকদিন ধরে অনলাইনের মাধ্যমে একটা লেখাকে বারবার পোস্ট হতে দেখছি ডুবন্ত মানুষ যেমন খড়কুটাকে পেয়ে তাকেই ধরে বাঁচতে চায় অনেকটা মৃতপ্রায় ধর্মগুলোর এবং কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য এরা মাতৃগর্ভের সাথে ইহজগত এবং পরজগতের তুলনা করে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের প্রমাণ দেবার চেষ্টা করেছে অনেকটা তেঁতুলের উদাহরণ দিয়ে পায়েশের অস্তিত্ব প্রমাণ দেবার চেষ্টা
ওই পোস্টকে জন্ম এবং মৃত্যুকে এক করে দেখা হয়েছে ফলে মাতৃগর্ভের জীবনকে ইহজগত এবং মাতৃগর্ভের বাইরের জীবনকে পরকাল হিসেবে তুলনা করা হয়েছে আগেই বলেছি, ডুবন্ত মানুষের খড়কুটাকে আকড়ে ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা

ওই অপযুক্তিমূলক গল্পটিকে ব্যবচ্ছেদ করার আগে দেখে নেই সেই গল্পটি এবং এর ভিন্ন ভিন্ন রকম ভার্সন যেমন নাস্তিকীয় ভার্সন, সংশয়বাদী ভার্সন, যুক্তিবাদী ভার্সন, বৈজ্ঞানিক ভার্সন ইত্যাদি
আস্তিকীয় গল্পটি হলো,
একদা দুই জমজ শিশু মাতৃগর্ভে গল্প করিতেছিলো। একে অপরকে সুধাইলো, " তুমি কি প্রসবের পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস কর?"
অপরজন উত্তর দিলো, "অবশ্যই করি। নিশ্চই প্রসবের পরবর্তীকাল বলিয়া কিছু রহিয়াছে এবং সেই
পরবর্তীকালের প্রস্তুতিকরণের উদ্দেশ্যেই আজ আমরা এইখানে।"
প্রথম জন কহিলেন "আহারে বেয়াকুফ, প্রসব- পরবর্তী জীবন বলিয়া কিছু নাই। তোমার সেই প্রসব-পরবর্তী কাল্পনিক জীবন কিরুপে সম্ভব???"
দ্বিতীয় জন উত্তর দিলেন, "আমি ঠিক জানি না। তবে সেথায় এখান হইতে আলোক অনেক বেশি হইবে। হয়তো সেথায় আমরা নিজ পায়ে হাটিয়া বেড়াইবো, মুখ দিয়া আহার করিবো। হয়তো সেখানে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো, অনুভুতিগুলো এখানকার চাইতে ভিন্ন হইবে যাহা এখন আমরা বুঝিতে পারিতেছিনা।"
প্রথম জন, "ইহা কল্পনাবিলাস ব্যতীত কিছুই নহে। নিজের পায়ে চলাচল? অসম্ভব। আর মুখ দিয়ে
খাদ্য গ্রহন? অলিক কল্পনা আর কাহাকে বলে। আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির সরবরাহ আসে
এই নাড়ির মাধ্যমে। কিন্তু নাড়ির এই স্বল্প-দৈর্ঘ্য আমাদের প্রসব- পরবর্তী জীবনের জন্য কোনো
যুক্তিতেই যথেষ্ট হইতে পারে না। সুতরাং প্রসব-পরবর্তী জীবন এক কথায় অসম্ভব।"
দ্বিতীয় জন, "আমি মনে করি জীবন এখানেই শেষ নহে। হয়তোবা প্রসব-পরবর্তী জীবন অন্যরকম। হয়তো সেখানে আমাদের এই নাড়ির প্রয়োজনই হইবে না।"
প্রথম জন, "ফালতু চিন্তারও তো একটা সীমা থাকে। আর যদি এমন হতোই, তাহলে কেন কেউ কখনো সেখান হইতে ফিরিয়া আসেনি? প্রসব হইল জীবনের শেষ এবং তাহার পর কেবলই অন্ধকার, নিরবতা আর শূন্যতা।"
দ্বিতীয় জন, "আমি ঠিক বলিতে পারি না। কিন্তু তখন আমরা আমাদের মায়ের কাছে থাকিব আর সেই আমাদের দেখাশোনা করিবে।"
প্রথম জন, "মা ! তুমি সত্যিই মা বিশ্বাস কর? মা যদি সত্যিই থাকিয়া থাকে, তাহলে সে এখন কোথায় ?"
দ্বিতীয় জন, "সে আমাদের চারদিকেই বিরাজমান। সে আমাদের ঘিরিয়া রহিয়াছে। আমরা তাহার
মাঝেই বাঁচিয়া আছি। তাহাকে ছাড়া এই পৃথিবী অসম্ভব। তাহাকে ছাড়া আমরা অসম্ভব।"
প্রথম জন, " তাহলে আমরা তাহাকে দেখিনা কেন? কেন তাহাকে অনুভব করি না? এর একমাত্র যুক্তিসংগত কারন হইল, মা বলে কিছু নাই।"
দ্বিতীয় জন উত্তর দিলো, " মাঝে মাঝে, যদি তুমি নিরব থাকিয়া মনোযোগ সহকারে খেয়াল করিয়া
থাক, তুমি তাহার অস্তিত্ব অনুভব করিবে, তুমি তাহাকে শুনিতে পাইবে....যে তাহার মায়াভরা কন্ঠে আমাদের উপর হইতে ডাকিতেছে।"
( Dr. Wayne Dyer এর লেখা  "Your Sacred Self" বই থেকে নেওয়া হয়েছে।)
সন্দেহবাদী ভার্সন
একদিন দুই জমজ শিশু মাতৃগর্ভে গল্প করছিল একজন অন্যজনকে প্রশ্ন করলো- "তুমি কি প্রসবের পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস কর?
অপরজন উত্তর দিল, "অবশ্যই করি নিশ্চয়ই প্রসবের পরবর্তীকাল বলে একটা কিছু অবশ্যই রয়েছে কেন তুমি করো না?"
প্রথম জন বললো, "আমি আসলে নিশ্চিত নই হয়তো আছে হয়তো নেই সলে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হবার মতো যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে নেই কিন্তু তুমি মনে হয় নিশ্চিত হয়েই একথা বলছো তোমার কি এটি শুধুই বিশ্বাস নাকি এর পক্ষে কোন প্রমাণ আছে?”
দ্বিতীয়জন চট করে বলে উঠলো, “না কোন প্রমাণ নেই তবে আমার মাঝে মাঝে মনে হয় প্রসবের পরে একটি চমৎকার জগত থাকবে যেখানে আমরা সব সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবো আমরা এই মুখ দিয়ে ঠিক ভাবে কথা বলতে পারছি না কিন্তু প্রসব পরবর্তী জীবনে আমরা মুখ দিয়ে কথা বলতে পারবো এমন কি আমাদের সারা দেহও কথা বলতে সক্ষম হবে সেখানের তাপমাত্রা আমাদের এখানের মতো নয় সেখানে এক স্বর্গীয় তাপমাত্রা বিরাজ করে আর সেখানে থাকবে কঠিন পদার্থের সাগর আমরা যে তরলের মধ্যে ভেসে রয়েছি সেখানে আমরা কঠিন পদার্থের সাগরে ঢুবে থাকতে পারবো আর আমরা বাতাসে উড়ে বেড়াতেও পারবো সেখানে আমাদের এরকম ছোট কক্ষে বন্দি থাকতে হবে না আমরা মহাশুন্যে উড়ে বেড়াতে পারবো তুমি কি বিশ্বাস করো না এগুলো সত্য হতে পারে? আমি বিশ্বাস করি এগুলো চরম সত্যি আসলে এর ব্যাতিক্রম হতেই পারে না! তোমার কি মনে হয়?
প্রথমজন কিছুক্ষন ভেবে বললো, "আমি আসলে জানি না এরকমটি আসলেই হতে পারে কিনা? আমাদের কাছে এমন কোন প্রমাণ নেই যাতে আমরা বুঝতে পারি যে উষ্ণ তরলের বাইরেও বেঁচে থাকা সম্ভব কিনা! আর মানুষ বাতাসে ভেসে থাকতে পারে কিনা সেটি সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে তাছাড়া আমরা দেখতে পাচ্ছি আমরা পানিতে ভেসে থাকলে একটা অদৃশ্য বল আমাদেরকে নিচের দিকে টেনে ধরে রেখেছে আর তাই আমরা সব সময়ই তরলের নিচের দিকে অবস্থান করছি তাই আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছিনা বাতাসে ভেসে থাকা অথবা বাতাসে উড়ে বেড়ানো আমাদের মতো ডানা ছাড়া মানুষের পক্ষে সম্ভব কিনা! আমার এটা মনে হয়, যে বলটা আমাদের তরলের নিচের দিকে টেনে রেখেছে সেই বলটিই আমাদেরকে উড়তে দেবে না তাই আমরা বাতাসে ভেসে থাকতে পারবো না
দ্বিতীয় জন  আত্ববিশ্বাসের সাথেই বললো, "আমার বিশ্বাস আমরা বাতাসে উড়ে বেড়াতে পারবো শুধু তাই নয়, প্রসবের পরের জীবনে আমরা হাটতে পারবো আমাদের শুধু তরলে ভেসে থাকতে হবে না এবং আমরা একটা জায়গায় আটকেও থাকবো না বরং আমরা দৌড়াবো, পানিতে সাঁতার কাটবো, বাতাসে উড়ে উড়ে উপরে উঠে যাবো আমরা এমন জায়গায় ঘুমাবো যেখানে কোন বাতাস নেই, নেই কোন খাদ্যের নল আমরা না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবো এমন কি আমাদের তরলও খেতে হবে না আমরা শুধু বাতাসে এবং শুন্যে উড়ে বেড়াবো, হাটবো এবং শুন্যে ছুটাছুটি করবো কি রকম মজা হবে তুমি চিন্তা করতে পারো?
প্রথম জন বললো, "না আমি চিন্তা করতে পারি না আমি আগেই বলেছি আমাদেরকে একটি অদৃশ্য শক্তি টেনে রেখেছে তাই আমার মনে হয় না যে আমরা বাতাসে উড়ে বেড়াতে পারবো আমরা কাউকেই দেখিনি যে শুন্যে উড়ে বেড়াচ্ছে তাই তোমার মতো আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না যে এটা ঘটবেই তাই আমি এতে কোন মজা পাচ্ছি না আমার মনে হয় তোমার কল্পনার পাখাটা কোন যুক্তিই মানছে না হয়তো প্রসবের পরে একটা জীবন আছে যেহেতু প্রসবের মাধ্যর্মে আমরা মারা যাচ্ছি না যদি প্রসবের পরে ওই পাশে কোন জায়গা থেকেই থাকে তবে এটা সম্ভব যে সেখানে আমাদের একটা জীবন থাকবে কিন্তু তাই বলে আমরা বাতাসে উড়তে পারবো কিনা আমি বিষয়ে তোমার মতো নিশ্চিত ধারণা করতে পারছি না আমার মনে হয় তোমার এরকম ধারণাটা তোমার কল্পনা শক্তির লাগাম হীনতার জন্য সৃষ্টি হচ্ছে তুমি কিছুটা যুক্তি দিয়ে চিন্তা করে দেখ হয়তো তোমার বিশ্বাস পরিবর্তন হতে পারে।“
প্রথম জন প্রতিবাদ করে বললো, "অসম্ভব আমার বিশ্বাস ভূল হতে পারে না তুমি কি বলতে পারবে এই ছোট তরলের ঘরে আসার আগে তুমি কোথায় ছিলে?”
দ্বিতীয় জন মাথা নেড়ে বললো, "আমি আসলে জানি না!"
প্রথমজন উত্তেজিত হয়ে বললো, "তাহলে তুমি কিভাবে বলতে পারো যে প্রসবের পরে কোন জীনব নেই?”
দ্বিতীয় জন জবাবদিহির মতো বললো, "আমি বলছি না যে প্রসবের পরে জীবন আসলেই আছে নাকি নেই! আমি শুধু বলতে চাচ্ছি যে আমাদের হাতে এমন কোন প্রমাণ নেই যে প্রসবের পরের সময়টিতে আমরা বাতাসে ভেসে থাকবো নাকি থাকবো না সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি এমনকি আমাদের পক্ষে কখনই নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয় যে প্রসবের পরের জীবন আসলেই আছে নাকি নেই যে পরিমান তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে আছে তা থেকে আমরা এটা স্বীদ্ধান্ত নিতে পারি যে যদি প্রসবের পরের জীবন থেকেই থাকে তবে আমরা বাতাসে এবং শুন্যে উড়ে বেড়াতে পারবো না আমি শুধু এটাই বুঝাতে চেয়েছি
প্রথমজন উত্তেজিত হয়ে বললো, "যেহেতু তুমি জানো না যে প্রসবের পরে জীবন আছে কি নেই অথবা সেই জীবনটা কেমন তাই তোমার এটা বলা উচিত নয় যে আমরা প্রসবের পরের জীবনে বাতাসে এবং শুন্যে উড়ে বেড়াতে পারবো না তুমি যেমন বলেছো একটা শক্তি আমাদেরকে নিচের দিকে টানছে কিন্তু তাই বলে তুমি এটা বলতে পারো না যে বাতাসে বা শুন্যে আমরা উড়তে পারবো না বা শুন্যে দৌড়াতে পারবো না তুমি কি প্রমাণ করতে পারবে যে আমরা শুন্যে দৌড়াতে পারবো না?
দ্বিতীয়জন মাথা নেড়ে বললো, "না পারবো না"
প্রথমজন বললো,"তাহলে তুমি কি ভাবে বলছো যে প্রসবের পরের জীবনে আমরা শুন্যে উড়ে বেড়াতে পারবো না?"  
দ্বিতীয়জন আমতা আমতা করে বললো, "আমরা বুঝতে পারছি যে একটি শক্তি আমাদেরকে নিচের দিকে টেনে ধরে রাখছে এবং তরলের ঘনত্ব বেশী সেটা আমরা বুঝতে পারছি কিন্তু বাতাসের ঘনত্ব কম এবং শুন্যে কোন মাধ্যমই নেই তাই আমরা স্বীদ্ধান্তে আসতে পারি যে প্রসবের পরে যদি কোন জীবন থেকেই থাকে তবে তাতে আর যাই হোক না কেন আমাদের পক্ষে বাতাসে বা শুন্যে উড়ে বেড়ানো সম্ভব নয় কারণ সেই শক্তিটা আমাদেরকে নিচের দিকে টেনে ধরে রাখবে এবং আমাদেরকে শুন্যে উড়ে বেড়াতে দিবে না তাই আমার মনে হয় না যে আমাদের পক্ষে প্রসবের পরের জীবনে শুন্যে উড়ে বেড়ানো সম্ভব"
প্রথমজন উত্তেজিত গলায় বললো, "তুমি কি প্রসবের জীবনে গিয়েছিলে কখনও?”
দ্বিতীয়জন মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিল যে সে যায়নি প্রথমজন মাথা নাচিয়ে নাচিয়ে বলতে লাগলো, "তাহলে তুমি কিভাবে বুঝলে যে প্রসবের আগের যে অবস্থাতে আমরা আছি প্রসবের পরের জীবনেও আমরা একই অবস্থায় থাকবো? আমি নিশ্চিতভাবে জানি প্রসবের পরের জীবনে কোন শক্তি আমাদেরকে নিচের দিকে টেনে ধরবে না? আমরা কোন শক্তির বাঁধনে আটকা পড়ে থাকবো না তাই প্রসবের পরে আমরা খুব ভালো ভাবেই উড়ে বেড়াতে পারবো বাতাসেই উড়তে পারবো আর শুন্যেও উড়তে পারবো এর ব্যতিক্রম হবে না এর ব্যতিক্রম হওয়া সম্ভবও নয়
দ্বিতীয়জন প্রতিবাদ করে বললো, "এটা তোমার অন্ধবিশ্বাস আমরা জানিই না প্রসবের পরবর্তী কোন জীবন আছে নাকি নেই আর তুমি ধরেই নিচ্ছ যে সেই জীবনে মানুষ বাতাসে এবং শুন্যে উড়তে পারবে এটা তোমার কল্পনা এর কোন বাস্তব ভিত্তি দেখতে পাচ্ছি না হয়তো প্রসবের পরের কোন জীবন নেই অথবা যদি থেকেও থাকে তবে তোমার কল্পনার মতো নয় হতে পারে প্রসবের পরে আমরা অন্যরকম কোন তরলে ঢুবে থাকবো! অথবা আমরা তরলে না থাকলেও বাতাসে ঢুবে থাকবো, অথবা কোন কঠিন পদার্থের উপর দাড়িয়ে থাকবো আমরা আসলে জানি না আমাদের কি হবে অথবা আসলেই কিছু হবে কিনা তবে এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে আমরা বাতাসে এবং শুন্যে উড়ে বেড়াতে পারবো না এটা সম্ভব নয় যে শক্তিটা আমাদেরকে টেনে ধরে রেখেছে সেটা আমাদেরকে উড়তেও দিবে না আর আমরা শুন্যে দাড়াতেও পারবো না আমাদের প্রসবের পূর্বজীবনের অভিজ্ঞতা দিয়েই আমরা বুঝতে পারি প্রসবের পরের জীবন যদি থেকে থাকে তবে সেটি কেমন হতে পারে?
প্রথমজন আগের মতই উত্তেজিত ভাবে বললো, "অসম্ভব, আমরা কখনই বুঝতে পারবো না যে প্রসবের পরের জীবনে আমরা বাতাসে উড়তে পারবো কিনা এটা বুঝা সম্ভব নয় কারণ প্রসবের আগের দুনিয়া আর প্রসবের পরের দুনিয়া এক নয় সেখানে কোন শক্তি আমাদেরকে টেনে ধরে রাখে  না আমরা যেমন প্রসবের আগের জীবনে তরলে ভেসে থাকতে পারি ঠিক তেমনি আমরা প্রসবের পরের জীবনে বাতাসে এবং শুন্যে ভেসে থাকতে পারবো কারণ সেখানে একজন অতিক্ষমতাবাণ কেআমাদেরকে যা চ্ছা তাই করতে দেবে আমরা প্রসবের আগের জীবনে যেমন ছোট একটা ঘড়ে বন্দি হয়ে আছি কিন্তু প্রসবের পরের জীবনে সেই অতিক্ষমতাবাণ লোকটা আমাদেরকে যা ইচ্ছা তাই করার ক্ষমতা দেবে তখন আমরা বাতাসেও উড়তে পারবো এবং শুন্যেও উড়তে পারবো এমনকি শুন্যে হাটতেও পারবো কারণ সেই অতিক্ষমতাবাণ লোকটি সব কিছুই করতে পারে
দ্বিতীয়জন আগের মতই প্রতিবাদ করে উঠলো সে বললো, "এবার মনে হচ্ছে তুমি তোমার কল্পনার ফানুশটিকে ইচ্ছামতো ছেড়ে দিয়েছো তোমার কল্পনার কোন স্বীমাবদ্ধতা নেই যেন! আমরা জানিই না প্রসবের পরবর্তীতে কোন জীবন আসলেই আছে কিনা সেখানে তুমি নিশ্চিত করেই বলছো সেখানে নাকি অতিক্ষমতাবাণ একজন আছেন যিনি সব কিছু করতে পারেন আর আমাদেরকে যা কিছু খুশি তাই করতে দেবেন কল্পনারওতো একটা স্বীমা থাকা দরকার নাকি? তুমি কিভাবে নিশ্চিত হলে যে প্রসবের পরের জীবনে একজন অতিক্ষমতাবাণ লোকই বিরাজমান রয়েছে? হয়তো কোন অতিক্ষমতাবাণ কেউ নেই সেখানে হয়তো আমাদের মতই কেউ একজন আছে যে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে? হয়তো তার ক্ষমতা আমাদের মতই হয়তো তারও আমাদের মতই ক্ষমতা স্বীমাবদ্ধ! তাহলে তুমি কিভাবে নিশ্চিত হয়ে বলছো যে সেখানে একজন অতিক্ষমতাবাণ কেউই আছে যে সব কিছুই করতে পারে? তোমার কি মনে হয় না যে এমন কেউ থাকা সম্ভব নয় যে সব কিছুই করতে পারে? যদি থাকেও তবুও সে সেরকম অতিক্ষমতাবাণ কেউই রয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত রে বলাতো কখনই সম্ভব নয় কারণ আমরা বাইরের কোন কিছুই জানি না সেখানে আসলেই কিছু আছে নাকি কিছুই নেই সেটা আমরা জানি না হয়তো সেখানে একজন মা আছেন যিনি আমাদের মমতা ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবে এবং সে আমাদের মতই মানুষ তার কোন অতিক্ষমতা নেই কিন্তু তার আমাদের মত স্বাধারণ ক্ষমতা রয়েছে এবং সে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে না কিন্তু তার ক্ষমতা দিয়ে আমাদের ত্ননিতে পারে হয়তো আমরা যে বস্তুটিতে রয়েছি সেটাই সেই মানুষটি কিন্তু সে অতিক্ষমতাবাণ কেউ নয়? হতে পারে না এমনটি?
প্রথম জন বলে উঠলো, "কোন ভাবেও না সেখানে অতিক্ষমতাবাণ কেউ একজন আছেই যদি সে আমাদের মতো ক্ষমতার হয় তবে প্রসবের পরে সে আমাদের কিভাবে যন্ত্র নিতে পারবে? তার ক্ষমতাতো আমাদের মতই হবে সে কি তবে আমাদের যত্ন নিতে পারবে? তাই প্রসবের পরে যে থাকবে সে অবশ্যই অতিক্ষমতাবাণ কেউ হবে আমি সেটা জানি আমি বুঝতে পারি তার অতিক্ষমতা সম্পর্কে সে মাঝে মাঝেই উড়ে বেড়ায় শুন্যে এবং বাতাসে আমি সেটা জানি নিশ্চিত ভাবেই আর তাই আমি জানি সে সব কিছুই করতে পারে এটা নিশ্চিত
দ্বিতীয়জন বললো, "এটা তোমার অন্ধবিশ্বাস তুমি জানো না আসলেই প্রসবের পরে কোন জীবন আছে কিনা আর যদি থাকেও সেটা যে অতিক্ষমতাবাণই হতে হবে এমন কোন কথা নেই আর তাই প্রসবের পরের জীবনের কোন অতিক্ষমতাবাণ কেনা থেকে একজন স্বাধারণ মানুষও থাকতে পারে এটা আমরা নিশ্চিত করে জানি না তাই আমি এটা নিয়ে তোমার সাথে মারামারি করতে পারি না
প্রথমজন চরম উত্তেজিত হয়ে উঠলো, "তুমি ভেবেছ তুমি জগতের সব কিছুই জেনে গেছ? সামান্য একটু জেনেই এতো অহংকার তোমার? তুমি অতিক্ষমতাবাণ রক্ষাকর্তাকে অবিশ্বাস করো! তার ক্ষমতাকে তুমি ছোট করে দেখ? তুমি সেই অতিক্ষমতাবাণ মহান লোকটির সাথে স্বাধারণ মানুষের তুলনা করো? তোমাকে সেই অতিক্ষমতাবাণ লোকটি ছাড়বে না, সে তোমাকে পুড়িয়ে মারবে গরম তরলে তোমাকে ঢুবাবে সেখানে তোমার মাংসগুলো গলে যাবে; কিন্তু সেই অতিক্ষমতাবাণ লোকটি তোমার মাংসকে পুনরায় তৈরী করবেন এবং পুনরায় শান্তি দেবেন তখন বুঝবে অতিক্ষমতাবাণ কেউ আছে কি নেই!
দ্বিতীয় জন শান্ত হয়ে বললো, "তুমি খামোখাই উত্তেজিত হয়ে উঠেছো তুমি তোমার কল্পনাকে সত্য বলে মনে করছো আর তোমার কল্পনাকেই একমাত্র সত্য বলে বিশ্বাস করছো কিন্তু প্রসবের পরের জীবনে যে অতিক্ষমতাবাণ কাউকেই থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই সেই লোকটি আমাদের মতো মায়ামমতাপূর্ণ মানুষও হতে পারে আমি শুধু সেটা দাবী করেছি তোমার বিশ্বাসের যেমন কোন ভিত্তি নেই ঠিক তেমনি আমার বিশ্বাসেরও ভিত্তি নেই হতে পারে আমরা উভয়েই ভুল হতে পারে না কি?
প্রথমজন আগের মতই উত্তেজিত হয়ে বললো, "অসম্ভব এটা হতেই পারে না প্রসবের পরে যদি কেউ থেকেই থাকে তবে তাকে অবশ্যই অতিক্ষমতাবাণ কাউকেই থাকতে হবে কোন স্বাধারণ মানুষ সেখানে থাকতে পারবে না তবে আমাদের দেখাশুনা করবে কে? এখানে যেমন আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে এই টিউব, টিউবের তরল, এবং এই ছোট ঘরটি ঠিক সেভাবে প্রসবের পরের জীবনেও একজন অতিক্ষমতাবাণ কাউকে থাকতে হবে যে আমাদের খাদ্যের যোগান দেবে কোন স্বাধারণ মানুষের পক্ষে কি সেটা সম্ভব? তুমি আমি কি কাউকে খাদ্যের যোগান দিতে পারি? তাই প্রসবের পরের জীবনেও একজন অতিক্ষমতাবাণ লোকের দরকার যে সব সময়ই আমাদের জন্য খাদ্যের যোগান দেবে তোমার আমার মতো কোন মানুষের পক্ষে সেটা সম্ভব নয় তুমি তোমার মন দিয়ে চিন্তা করে দেখ একজন অতিক্ষমতাবাণ কারও অস্তিত্ব তুমি উপলব্ধি করতে পারবে
দ্বিতীয় জন বললো, " আমিতো কারও অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি না! আমি শুধু বুঝতে পারি কোথাও হতে তরলের সাপ্লাই হচ্ছে এবং আমাদের কাছ থেকে কোথাও এই তরলগুলো চলে যাচ্ছে কিন্তু কেউ সে তরলগুলো সাপ্লাই করছে কিনা অথবা কারও সাহায্য ছাড়াই এগুলো আসছে কিনা আমি জানি না আমি শুধু অনুমান করতে পারি যে হয়তো কেউ একজন এই তরল সাপ্লাই করছে কিন্তু সে অতিক্ষমতাবাণ কিনা সেটা আমি জানি না হয়তো সে অতিক্ষমতাবাণ কেউ যদিও সেটার সম্ভাবণা খুব কম তা না হলে কোন স্বাধারণ মানুষই এই তরলের সাপ্লাই দিচ্ছে আমি আসলে জানি না কিন্তু আমার মনে হয় হয়তোবা কোন একজন এই তরলের সাপ্লাই দিচ্ছে
উপরের গল্পটির থেকে এটি অনেক যুক্তিপুর্ন আস্তিককর্তৃক বর্ণিত গল্পে নানা কুযুক্তির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে কিন্তু এখানে যথাসম্ভব কুযুক্তি এড়ানো গেছে আর যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে সেটা চরিত্রের খাতিরে

গল্পটির বিজ্ঞানীকরণঃ
কোন একদিন দুই জমজ মায়ের গর্ভে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল একজন অন্যজনকে বললো- আচ্ছা তুমি কি প্রসবের পরের জীবনে বিশ্বাস করো?
দ্বিতীয়জন বললো, "হ্যাঁ করি আমি মনে করি প্রসবের পরে আমাদের জীবনটি অস্তিত্বশীল থাকবে
প্রথমজন বললো, "আমি বিশ্বাস করি যে প্রসবের পরের জীবনটি অনেক সুন্দর হবে সেখানে কোন সমস্যা থাকবে না এখানে যেসব সমস্যা আছে সেই জীবনটিতে কোন সমস্যাই থাকবে না কারণ সেখানে আমাদের দেখাশুনার জন্য একজন অতিক্ষমতাবাণ কোন স্বত্বা রয়েছেন যে সব সময় আমাদের দেখা শুনা করবেন এবং আমাদের সব ইচ্ছাই পুরণ করবেন
দ্বিতীয়জন বললো, "দেখ, প্রসবের জীবন আছে কি নেই সেটা আমরা এখানে বসে গনণা করতে পারি এবং আবিষ্কার বা প্রমাণ করতে পারি যে প্রসবের পরে আমাদের একটি জীবন থাকবে কিন্তু সেই জীবনটি যে এই জীবনের চেয়ে ভালো হবে সেটি আমরা বলতে পারি না কারণ আমাদের হাতে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই
প্রথমজন বললো, "কিন্তু আমার বিশ্বাস যে প্রসবের পরে একটি জগত থাকবে এবং সেখানে অতিক্ষমতাবাণ একজন আমাদের রক্ষা করবেন যেভাবে এখন করছেন আমরা যে তরল পাই সেটা কি আমরা পাঠাই নাকি বাইরের কোন অতিক্ষমতাবাণ ব্যক্তি পাঠায়? তুমি কি তার দয়া কে অস্বীকার করতে চাইছো? সেই পরম দয়ালু যে আমাদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য পাঠাচ্ছে সে কিছুতেই স্বাধারণ ক্ষমতার হতে পারে না অবশ্যই সে অতিক্ষমতাবাণ
দ্বিতীয় জন বললো, "দেখ আমি তোমার মনের অনুভুতিকে বুঝতে পারি কিন্তু বাস্তবতাটাও তো তোমাকে বুঝতে হবে নাকি? আমাদের হাতে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই যার দ্বারা আমরা স্বীদ্ধান্তে আসতে পারি যে বাইরে যে আছে সে একজন অতিক্ষমতাবাণ কোন একজনই বরং সেখানে হয়তো কোন স্বাধারণ মানুষ আছে, অথবা অন্য কোন প্রাণী আছে, হয়তো প্রাকৃতিক ভাবেই এই নিয়মটি আদিঅনন্তকাল ধরে চলে এসেছে! আমাদের কাছে এর বাইরে কোন স্বীদ্ধান্ত নেওয়া এই মুহুর্তে সম্ভব নয় তবে আমরা আমাদের জ্ঞান দিয়ে পর্যলোচলা করে দেখতে পারি যে আসলে এই মাতৃদেহের বাইরে কি আছে? তখন যদি সেখানে অতিক্ষমতাবাণ কাউকে পাওয়া যায় তবে তখন সে স্বীদ্ধান্তকে গ্রহন করা হবে তবু এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য প্রমাণগুলো বলছে যে বাইরে যে কারও থাকা সম্ভব সেটা যে অতিক্ষমতাবাণ কেউ হবে তার কোন ভিত্তি নেই বরং আমরা বর্তমানের তথ্য প্রমাণ দেখে স্বীদ্ধান্ত নিতে পারি যে আমাদের এখানে যে বা যারা অথবা যা কিছুই  খাদ্য পাঠাচ্ছে সে কোন স্বাধারণ মানুষ বা স্বীমিত ক্ষমতাবাণ কেউই হবে কারণ যদি অতিক্ষমতাবাণ কেউ থাকতো তবে সে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারতো যেহেতু কেউ বাইরে থেকে যোগাযোগ করেনি এপর্যন্ত তাই আমরা স্বীদ্ধান্তে আসতে পারি যে বাইরে যেই থাকুক না কেন সে কোন অতিক্ষমতাবাণ কেউ নয় তার ক্ষমতা স্বীমিত
প্রথমজন বললা, "তুমি যাই বল না কেন আমি জানি বাইরে একজন অতিক্ষমতাবাণ একজন অপেক্ষা করছে আমরা যখনই জন্মের পর বাইরে বের হবো সে আমাকে পুরস্কৃত করবে আর তোমাকে শাস্তি দেবে কারণ তুমি তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছো এবং সেই অতিক্ষমতাবাণ মানুষটির ক্ষমতায় আমাকে আর ছোট একটি ঘরে তরলের মধ্যে ঢুবে থাকতে হবে না আমি মুক্ত হবো এবং আমি যেখানে খুশি যেতে পারবো আমার তাপমাত্রা হবে স্বর্গীয় তাপমাত্রা আর আমরা জানি স্বর্গীয় তাপমাত্রা হলো চরম সুখোনীয় তাপমাত্রা আমি বাতাসে যেমন উড়তে পারবো ঠিক তেমনি আমি শুন্যেও উড়তে পারবো আমি অনন্তপথ পাড়ি দিতে পারবো আমি অনন্তকাল ধরে শুন্যে ঘুড়ে বেড়াতে পারবো বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারবো এবং শুন্যে সাতার কাটতে পারবো"
প্রথমজন বললা, "তুমি অসম্ভব কথা বলছো আমরা জানি আমাদেরকে একটি শক্তিশালী শক্তি নিচের দিকে টেনে ধরে রেখেছে তাই আমরা যদিও তরলে ভেসে থাকতে পারি কিন্তু আমরা বাতাসে ভেসে থাকতে পারবো না এটা তোমার কল্পনা মাত্র
প্রথমজন বললো, "মোটেও তা নয় বরং প্রসব পরবর্তী জীবন এই জীবনের চেয়ে আলাদা সেখানে আমাদেরকে তরলে ঢুবে থাকার দরকার হয় না আমাদের খাদ্যেরও কোন প্রয়োজন পড়ে না আমরা শুধু শুন্যে ভেসে বেড়াবো এবং মহাশুন্য পাড়ি দিয়ে অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবো
দ্বিতীয়জন বললো- তুমি তোমার কল্পনার পাখা মেলে ধরে যা ইচ্ছা তাই কল্পনা করে চলেছো এগুলো তোমার মনের কল্পনা মাত্র মানুষের পক্ষে কখনই উড়ে বেড়ানো সম্ভব হবে না কারণ একটি শক্তিশালী বল তার উপর প্রতিনিয়ত ক্রিয়াশীল রয়েছে আমার মনে হয় এই বল প্রসব পরবর্তী সময়ে কার্যকর থাকবে  মানুষের পক্ষে বাতাস বা শুন্যে ভেসে থাকা সম্ভব নয়।“
প্রথম জন বললো, "অবশ্যই সম্ভব আমি উপলব্ধি করতে পারি একজন অতিক্ষমতাবাণ স্বত্বা আমাদের রক্ষা করবেন প্রসবের পরের সময়টিতে এবং সে আমাদের সব কিছু করার ক্ষমতা দেবে  আমরা সেখানে অমর হয়ে থাকবো কেউ আমাদের সেখান থেকে প্রসবের মাধ্যমে অন্য কোথাও পাঠাতে পারবে না আমরা চিরঞ্জিবী হয়ে অনন্তকাল বাস করবো সেখানে"
দ্বিতীজন প্রতিবাদ করে বলে উঠলো, "তুমি প্রসবের পরের জীবনে চিরকাল বাস করবে? এটা অসম্ভব ব্যাপার কল্পনারওতো একটা স্বীমা থাকা দরকার নাকি? আমরা এমন কোন তথ্যপ্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাইনি যার দ্বারা আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে জন্মের পরে আমাদের জীবন অনন্তকাল ধরে টিকে থাকতে পারবে আমরা যেভাবে বড় হচ্ছি তাতে অচিরেই আমরা এই তরলের ঘর থেকে বের হবো এবং কোন এক জায়গায় অবশ্যই আশ্রয় নে কিন্তু আমাদের দেহ যদি এভাবে বড় হতে থাকে তবে অনন্তকাল ধরে বেঁচে থাকার জন্য যে পরিমাণ খাদ্যের দরকার সেটা সরবরাহ করা কারোও পক্ষেও সম্ভব নয় আর আমাদের দেহ যদি এভাবে বড় হতে থাকে তবে অনন্তকাল বেঁচে থাকতে হলে অস্বীম খাদ্যের দরকার যার অস্তিত্ব থাকা সম্ভব হবে না আর তাই আমরা কখনই চিরকাল বেঁচে থাকতে পারবো না এগুলো তোমার অপরিপক্ক মনের অসাড় কল্পনা এটা বাস্তব হতে পারে না
প্রথমজন বললো, "কেন বাস্তব হতে পারবে না? অবশ্যই এটি বাস্তব হবে আমি এটা বুঝতে পারি তুমি কি তরলের এই ঘরটির বাইরে কারও অস্তিত্ব টের পাও না? সে যদি অতিক্ষমতাবাণ নাই হবে তবে আমরা সেই ভ্রুণ অবস্থা থেকে তার অস্তিত্ব টের পাচ্ছি কেন? কারণ সে অনন্ত অস্বীম স্বত্বা তাই সে তার অতিক্ষমতা দিয়ে অনন্তকার ধরে বেঁচে আছে এবং আমাদেরকেও অনন্তকাল ধরে বাঁচিয়ে রাখবেন আমি এটা জানি"
দ্বিতীয়জন প্রতিবাদ করে বলে উঠলো, "অসম্ভব বাইরে যে আছে সে কোন অতিক্ষমতাবাণ কেউ নয় কারণ কারো পক্ষে অতিক্ষমতাবাণ হওয়া সম্ভব নয় তাহলে অস্বীম শক্তির দরকার যার অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয় আবার সে চিরঞ্জিবী হতে পারবে না তাহলে তার যে পরিমাণ খাদ্যের দরকার সেটার অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব আমাদের কেউ না কেউ খাদ্যের জোগান দিচ্ছে যদি অতিক্ষমতাবাণ কারও অস্তিত্ব থেকে থাকে তবে তাকেও নিশ্চয় কেউ না কেউ খাদ্যের যোগান দেবে? তাই তার খাদ্যের যোগান শেষ হয়ে গেলে সে কিভাবে চিরকাল বেঁচে থাকবে? আর তাই প্রসবের পরের অনন্ত জীবণ একেবারে অসম্ভব।“
প্রথমজন প্রতিবাদ করে বলে উঠলো, "তুমি কি প্রমাণ করতে পারবে যে অতিক্ষমতাবাণ বলে কেউ নেই"
দ্বিতীয়জন বুঝানোর মতো করে বললো, "না আমি পারবো না তবে অতিক্ষমতাবাণ কারও অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয় এই কারণটি এবং অতিক্ষমতাবাণ কারোও অস্তিত্বের তোমার প্রমাণ হীনতার কারণটিই আমার যুক্তির প্রমাণ।“
প্রথমজন রেগে গিয়ে বললো, "প্রসবের পর সেই অতিক্ষমতাবাণ ব্যাক্তি তোমাকে অনন্ত কাল ধরে শাস্তি দিতে থাকবে তখন বুঝতে পারবে অনন্তকাল বেঁচে থাকা অতিক্ষমতাবাণ কারও অস্তিত্ব থাকা সম্ভব কিনা!
দ্বিতীয়জন শান্ত গলায় বললো, "এটা তোমার অজ্ঞতাসূচক অন্ধবিশ্বাস তুমি কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে এমন কাল্পনিক ধারণাকে সত্য বলে মনে করছো এটি সত্য নয় বাস্তবিক জ্ঞান দিয়ে যুক্তি এবং প্রমাণ দিয়ে বুঝার চেষ্টা করে দেখ; তাহলেই তুমি বুঝতে পারবে।“

আগের দুটি ভার্সন থেকে এটি অনেক যৌক্তিক

বাকীটুকু দ্বিতীয় অংশে...(চলবে)

No comments:

Post a Comment