Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Saturday, December 26, 2015

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নের যৌক্তির ও বৈজ্ঞানিক উত্তর। (পর্ব ৩)



আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
কুরআনে বলা আছে যে আকাশ ছিল ধুম্রকুঞ্জ; এবং বিগ ব্যাং থিউরীতেও বলা হয়েছে যে, বিগ ব্যাং এর পূর্বে বিশ্বজগতের সব উপাদান ছিল বায়বীয় অবস্থায়। আর তাই ১৪০০ বছর পূর্বে কুরআনের পক্ষে তখনই বিগ ব্যাং সম্পর্কে জানা সম্ভব যদি সেটা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ হয়। আর তাই কুরআন সত্যই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
এই দাবীটি প্রায় সব উদিয়মান শিক্ষিত (নাকি কুশিক্ষিত) মুসলমানরা করে থাকে। তারা যেমন বিগ ব্যাং থিউরীটা ভালো করে জানে না শুধুমাত্র কিছু ইসলামী (কু) পন্ডিতদের বই পড়ে বিগ ব্যাং সম্পর্কে জেনেছে, ঠিক তেমনি তারা কুরআনের যে আয়াতটিতে এই কথাটি বলা আছে সেটাও নিজের চোখে পড়ে দেখেনি। ফলে তারা বিগ ব্যাং এবং কুরআনের আয়াতটি সম্পর্কে না জেনেই অথবা একটু আদটু জেনেই গলা উচিয়ে উক্ত অজ্ঞতাসূচক ভ্রান্ত দাবীটি করে থাকে।


প্রকৃতপক্ষে বিগ ব্যাং থিউরীর কোথাও ধুয়া অথবা বায়বীয় পদার্থ থেকে বিগ ব্যাং ঘটার কথা বলা হয়নি। প্রকৃত সত্য হলো বিগ ব্যাং সংঘটিত হবার সময় বা আগে কোন পদার্থেরই সৃষ্টি হয়নি। বিগ ব্যাং এর সময়টিতে অথবা বিগ ব্যাং-এর আগে কোন পদার্থ ছিল না বরং বিশ্বজগতের সমস্ত উপাদানগুলো ছিল শক্তিরুপে (এনার্জি)। বিগ ব্যাং-এর সময়ে বিশ্বজগতের সমস্ত উপাদানগুলো মহাবিশ্বের চারটি বল- দূর্বল নিউক্লিয় বল, সবল নিউক্লিউ বল, তাড়িতচৌম্বক বল এবং মহাকর্ষ বল এই চারটি বল একত্রে সুপার ফোর্স বা মহা বল হিসেবে বিদ্যমান ছিল। তখনও কোন পদার্থ বা গ্যাস তৈরী হয়নি। বিগ ব্যাং-এর কয়েক মিনিট পর যদিও বিশ্বজগতের কিছু কণা যেমন ফোটন তৈরি হয়েছিল কিন্তু গ্যাস তৈরী হবার মত উপাদান তখনও তৈরী হয়নি। বিগ ব্যাং-এর অনেক পরে ইলেক্ট্রন এবং প্রোটন তৈরী হয়েছিল। কিন্তু তখনও কোন পদার্থ বা গ্যাস তৈরী হয়নি। বিগ ব্যাং এর লক্ষ বছর পরে প্রথম পদার্থ হাইড্রোজেন পরমাণু তৈরী হয়েছিল। তারপর এই হাইড্রোজেনগুলো তারকাগুলোতে একত্রিত হয় এবং দুটো হাইড্রোজেন মিলে হিলিয়াম গঠিত হয় (ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে- যে পদ্ধতিতে আমাদের সূর্য প্রতিনিয়ত শক্তি -রোদ তৈরী করে চলেছে) এবং কিছু কিছু তারকা হাইড্রোজেন শেষ হবার পর বিস্ফোরিত হয়ে অন্যান্য পদার্থ তৈরী করে মহাশুন্যে ছড়িয়ে দিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা বলেন, পৃথিবীতে যত প্রকারের মৌল (কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন প্রভৃতি) আছে তার সবই কোন না কোন তারকার বিস্ফোরিত অংশ যা ছড়ে গিয়ে পৃথিবীতে এসেছিল।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে বিগ ব্যাং-এর সময়টিতে বা এর পূর্বে কোন রকমের পদার্থই ছিল না। আর তাই কোন ধরণের গ্যাস বা বায়বীয় পদার্থও বিগ ব্যাং এর কাছাকাছি সময়ে তৈরী হয়নি। গ্যাস বা বায়বীয় পদার্থ তৈরী হয়েছিল বিগ ব্যাং-এর লক্ষ বছর পরে। আর ধূয়া তৈরী হয়েছে বিগ ব্যাং-এর কোটি কোটি বছর পরে।

সুতরাং মুসলমানদের করা দাবী যে, বিগ ব্যাং-এর আগে বিশ্বজগতের সমস্ত উপাদান ধূয়া ছিল তার কোন বাস্তব ভিত্তি নেই। ভিত্তিহীন এই মিথ্যা দাবীটি মুসলমানরা এজন্যই করে যে তারা বিজ্ঞানের সাথে কুরআনকে মিলাতে চায় যাতে তারা মিথ্যা বলে এবং প্রতারণা করে কুরআনকে বিজ্ঞানময় গ্রন্থ দাবী করতে পারে। প্রকৃত পক্ষে কুরআনের দাবীটি পুরোপুরি ভূল। যেমনটি মুসলমানদের করা বিগ ব্যাং-এর আগে ধূয়ার দাবীটি ভূল এবং মিথ্যা।

প্রকৃত পক্ষে কুরআন কি বলেছে সেটা বুঝতে হলে আগে কুরআনের সেই আয়াতটি ভালো করে পড়তে হবে। কুরআনে সুরা ফসিলতের (হা-মীম সেজদা) ১১ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ করা আছে,
"অতপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন, যা (তখন) ছিল ধুম্রকুঞ্জ বিশেষ, এরপর তিনি তাকে ও যমীনকে আদেশ করলেন, তোমরা উভয়েই এগিয়ে এসো-ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায়; তারা উভয়েই বললো- আমরা অনুগত হয়েই এসেছি।" (অনুবাদ- হাফেজ মুনির উদ্দীন)

এই আয়াতটিতে আকাশের কথা বলা হয়েছে যে আকাশ ধুম্রপুঞ্জ বা ধুয়ার মত ছিল। এরপর আকাশ এবং পৃথিবীকে আল্লাহ আসতে বললে আকাশ আর পৃথিবী বর্তমান যেখানে আছে সেই অবস্থানটিতে এসেছে। কুরআনের এই দাবীটি দেখেই বুঝা যায় যে এখানে প্রাচীণকালের মানুষের ভ্রান্ত ধারণার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াতটি দ্বারা কখনই বিগ ব্যাং-এর কথা বলা হয়নি। কারণ এক- বিগ ব্যাং এর আগে কোন ধুয়ার অস্তিত্ব ছিলই না; কারণ তখনও ধুয়া তৈরী হয়নি। ধুয়া তৈরী হয়েছে বিগ ব্যাং-এর কোটি কোটি বছর পরে। দুই- কুরআনের এই আয়াতটিতে বলা হচ্ছে আকাশ এবং পৃথিবীকে আল্লাহ আসতে বলছে, অর্থাৎ কুরআনের কথা অনুযায়ী আকাশ এবং পৃথিবী বিশ্বজগত তৈরীর আগেই সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু বিগ ব্যাং থিউরী অনুযায়ী আকাশ এবং পৃথিবী তৈরী হয়েছে বিগ ব্যাং -এর লক্ষ কোটি বছর পরে। অর্থাৎ এই আয়াতটি বিগ ব্যাং বিরোধী কথা বলছে। বিগ ব্যাং থিউরী যেখানে বলেছে পৃথিবী এবং আকাশ বিগ ব্যাং-এর লক্ষ কোটি বছর পরে তৈরী হয়েছে সেখানে কুরআন বলছে পৃথিবী এবং আকাশ আগেই তৈরী করা ছিল আল্লাহ শুধু এদেরকে বর্তমান স্থানে আসতে বলেছে। স্পষ্টত এটা একটি বিগ ব্যাং-এর বিপরীত কথা এবং অবশ্যই ভূল। অর্থাৎ কুরআন ভূল কথা বলছে। যেটা দিয়ে মুসলমানরা কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানাতে চেয়েছিল সেই আয়াতটিই বরং কুরআনকে মিথ্যা প্রমাণিত করেছে।

আবার প্রকৃতপক্ষে আকাশ কখনই ধুয়ার কুন্ড বা পুন্জ ছিল না বায়ু দিয়ে আকাশ গঠিত তবে সেটা ধুয়া নয়। ধুয়া আর গ্যাস এক জিনিস নয় । এটা ঠিক যে ধুয়াও একটি গ্যাস। কিন্তু আকাশ যে সমস্ত গ্যাস বা বায়ুবীয় পদার্থ দিয়ে তৈরী সেটি ধুয়া নয়। বরং আকাশের অন্যান্য গ্যাসের মতই একটি গ্যাস মাত্র। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আকাশ কেবল ধুয়া দিয়েই তৈরী বরং আকাশ ধুয়ার মত আরো অনেক গ্যাসীয় পদার্থের সমষ্টি। ধূয়া হলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং জলীয় বাষ্পের (পানির) সমন্বয়ে গঠিত একটি মিশ্রিত উপাদান। আর আকাশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং জলীয় বাষ্প ছাড়াও অক্সিজেন নাইট্রোজেনের মতো আরো অনেক উপাদান বিদ্যমান।
ফলে কুরআনের দাবী যে, আকাশ ধূয়া ছিল কিন্তু বর্তমানে আকাশ ধুয়া নেই এই দাবীটি পুরোপুরি মিথ্যা। কুরআন মতে আকাশ শক্ত কঠিন পদার্থের তৈরী এক প্রকার ছাদ (যে কথা কুরআন অনেক বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেছে)। কিন্তু বাস্তব সত্য হলো আকাশ গ্যাসীয় পদার্থের ফলে সূর্যের আলোর বিক্ষেপন, প্রতিফলন এবং প্রতিসরন জাতীয় কাল্পনিক প্রতিচ্ছবি মাত্র। প্রকৃত পক্ষে আকাশ কঠিন পদার্থের নয়। আবার ধূয়ারও নয়।
অর্থাৎ কুরআন সম্পূর্ণরুপে মিথ্যার বাণী সংকলন।

আরেকটা কথা বলে রাখা দরকার যে মুসলমানরা কথায় কথায় আল্লাহকে হাজির করে কুরআনের সত্যতা প্রমাণ করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ কুরানে ওমুক বলেছে তমুক বলেছে বলেই সব সত্যি হয়ে যায়নি আল্লাহ কুরআন নামের এক আরবীয় মানুষের ছয়শত খ্রিস্টাব্দে রচিত বইয়ে বর্নিত কাল্পনিক সত্বা যার কোন বাস্তব অস্তিত্ব নেই আর এই বই দিয়ে কোন কিছুর সত্য মিথ্যা যাচাই করা যায় না আর তাই আল্লাহ এই বলেছে সেই বলেছে বলে কোন কিছু প্রমান করা যাবে না।
'সুপার ম্যান এটা বলেছে, সেটা বলেছে তাই এসব সত্যি'; কেউ কী এটা মেনে নেবে
সুপারম্যান যেমন একটা কাল্পনিক চরিত্র যার অস্তিত্ব শুধু বই আর সিনেমায় কিন্তু এর বাস্তব অস্তিত্ব নেই, ঠিক তেমনি আল্লাহও একটা কাল্পনিক চরিত্র যার অস্তিত্ব শুধু্ই কুরআন নামে একটা পুরোতন বইয়ে বিদ্যমান কিন্তু বাস্তব জগতে নয় । আর তাই আল্লাহ কুরআনে বলেছে যা সেটাই সত্যি হবে এমনটা বিশ্বাস করাটা শুধু অজ্ঞতা, অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের সমষ্টি মাত্র।



আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
কুরআনে যে শক্ত কঠিন ছাদ আকৃতির আকাশের কথা বলা হয়েছে সেটি আসলে মেঘ। মেঘ অত্যান্ত কঠিন পদার্থকারন ঝড়ের সময় বুঝতে পারবেন মেঘে মেঘে ঘর্ষন করলে কি পরিমান শব্দ হয় এই শব্দটি হওয়ার কারণ হলো মেঘ অত্যন্ত কঠিন পদার্থ। আর এই শক্ত কঠিন মেঘকেই কুরআনে আকাশ বলা হয়েছে।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
এই একটা বাক্যেই আপনি কতটা বিজ্ঞান জানেন তার প্রমান দিয়ে দিয়েছেনসঠিক ভাবে জানুন তারপর কথা হবেমেঘ কি, কিভাবে মেঘ তৈরী হয় এবং কেন আকাশে বিদ্যুৎ চমকায়, এসব প্রাথমিক তথ্য না জেনে বিজ্ঞান এবং ধর্মকে সর্বপরী কুরআনকে সত্য দাবী করা বোকামী। অজ্ঞ মানুষেরাই এমনটি করে থাকে। বিজ্ঞানের কিছু না জেনে শুধু মাত্র অন্ধের মতো ধর্মকে বিশ্বাস করলে বিশ্বজগত সম্পর্কে এমন ভ্রান্ত ধারণা কখনই মন থেকে দুর হবে না। মনের অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কার থেকে  মুক্তি পেতে হলে আগে বিজ্ঞানের প্রাথমিক ধারণাগুলো ভালো ভাবে জানতে হবে। তবেই ধর্ম নামক কুসংস্কার থেকে মুক্ত হওয়া যাবে।

মেঘ কোন কঠিন পদার্থ নয়। সমুদ্রের পানি বাষ্প হয়ে বাতাসে মিশে যায়। এই জলীয় বাষ্প বাতাসের অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড প্রভৃতি অপেক্ষাকৃত ভারী গ্যাস গুলোর তুলনায় পাতলা বলে এটি বায়ুমন্ডলের উপরের দিকে উঠতে থাকে। এই বাষ্প যখন বায়ুমন্ডলের উপরের দিকে উঠে যায় তখন এগুলো আবার পুনরায় তরলে পরিনত হয়। বায়ুমন্ডলের উপরের দিকে তাপমাত্রা কম থাকে বলে সহজেই বাষ্প পানিতে পরিণত হতে থাকে। কিন্তু এর ঘনমাত্রা কম থাকে বলে এগুলো নিচে পড়ে যায় না। এই বাষ্পগুলোই জমে মেঘের তৈরী করে। এখানে উল্লেখ্যযোগ্য ব্যাপার হলো বাতাস একটা নির্দিষ্ট ভরের বাষ্পকে বহন করতে পারে। আমরা জানি যে পানি তরল অবস্থায় যে ঘনত্ব থাকে বাষ্প হলে তার আয়তন বেড়ে যায় বলে এটি বেশী পরিমান বাতাসের সাথে মিশে যায়। ফলে বাতাস সহজেই বাষ্পকে বহন করতে পারে। কিন্তু এই বাষ্পই যখন বায়ুমন্ডলের উপরের স্থরে পৌছে যায় তখন বায়ুমন্ডলের উপরের স্থরের তাপমাত্রা কম হওয়ায় বাষ্পগুলো জমে পানিতে পরিনত হয়। এসময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমান খুব বেড়ে যায় বলে সূর্যের আলো সহজে পৃথিবীতে আসতে পারে না। এবং সূর্যের আলো পৃথিবীতে আসার সময় এই জলীয় বাষ্পে আলোর প্রতিসরণের কারণে আকাশে সাদা মেঘের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে। এই প্রতিচ্ছবি বাতাসের জলীয় বাষ্পের কারণে তৈরী হয় বলে একে মেঘ নামে ডাকা হয়। প্রকৃতপক্ষে এই মেঘ আর কিছুই নয়; এগুলো বাতাসে উপস্থিত বাষ্প বা জলীয় বাষ্প। এই বাষ্পকে আমরা মেঘ হিসেবে দেখি কারণ এই জলীয় বাষ্পে সূর্যের আলো প্রতিফলিত এবং প্রতিসরিত হয়ে পৃথিবীতে আসে। আর আমরা আকাশে বাষ্পের যে প্রতিচ্ছবিটি দেখি সেটিই হলো মেঘ। যখন বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্তরে এই রকম জলীয় বাষ্প জমা হতে থাকে তখন ক্রমেই সাদা মেঘ কালো মেঘে পরিণত হয়। কালো মেঘ হলো বায়ুমন্ডলের মধ্যে স্তরে স্তরে জমে থাকা জলীয় বাষ্প। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ তখন এতই বেশী হয় যে এর মধ্য দিয়ে আর সূর্যের আলো পৃথিবীতে আসতে পারে না। ফলে কালো মেঘের সৃষ্টি হয়। বায়ুমন্ডলের নিচের স্তরের চেয়ে উপরের স্তরে তাপমাত্রা কম থাকে। আর তাই পানি বাষ্প হয়ে আকাশে উঠে গেলে এগুলো উপরে যেয়ে পুনরায় তরলে পরিণত হয়। তখন বাতাসে পানির পরিমান বেড়ে যায় বলে বাতাস আর একে ধরে রাখতে পারে না। তাই এই পানি যখন নিচে পড়ে যায় তখন এগুলো বৃষ্টি রুপে মাটিতে পড়ে। এভাবেই বাষ্প, মেঘ এবং বৃষ্টির সৃষ্টি হয়।

আবার বাতাসে জমে থাকা জলীয় বাষ্প বাতাসের সাথে সাথে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়। আর বায়ুমন্ডলে বিভিন্ন স্তর গুলোতে জমে থাকা বাষ্পের সাথে যখন অন্য স্তরের বাতাসের সাথে ঘর্ষণ লাগে তখন এই সব জলীয় বাষ্পগুলো আয়নিত হয়ে যায়। ফলে এদের মধ্যে বৈদ্যতিক চার্জের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে দুই রকমের চার্জ সৃষ্টি হয়। নেগেটিভ চার্জ এবং পজেটিভ চার্জ। আবার এই নেগেটিভ এবং পজেটিভ চার্জগুলো যখন পরস্পরের সাথে মিলে যায় তখন এক ধরনের বৈদ্যতিক বিষ্ফোরণ ঘটে। এই বিষ্ফোরণের শব্দই আমরা শুনে থাকি। এগুলোকেই বজ্রপাত বলে। অনেক সময় এই চার্জগুলো বায়ুমন্ডলের নিচের দিকে চলে আসে এবং গাছপালার সংস্পর্শে এসে এগুলোকে পুঁড়িয়ে দেয়।এজন্য বজ্রপাতে গাছপালা এমনকি মানুষ পুঁড়ে যায়।
মোট কথা বজ্রপাত কোন অলৌকিক ঘটনা নয়। এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা যেখানে বাতাসে গ্যাস, ধূলিকণা বা বাষ্পের মধ্যে ঘর্ষণের ফলে বৈদ্যতিক চার্জ তৈরী হয়। এই চার্জ লক্ষ লক্ষ ভোল্টেজ পর্যন্ত হয়ে যায়। আর এজন্যই বজ্রপাত এত ভয়ংকর হয় এবং এতো উচ্চ শব্দ তৈরী হয়।

অর্থাৎ বজ্রপাত কোন কঠিন মেঘ বা শক্ত কঠিন আকাশের জন্য হয় না। বজ্রপাত হয় বাতাসের গ্যাস এবং জলীয় বাষ্পের কারণে। আর তাই মেঘই শক্ত কঠিন আকাশ এই দাবীর কোন ভিত্তিই নেই। প্রকৃত পক্ষে আকাশ বলে কিছু নেই। আমরা যে ঘরের মতো শক্ত কঠিন আকাশ দেখতে পাই সেটি আসলে কোন কঠিন পদার্থ দ্বারা তৈরী নয়। সুর্যের আলো বায়ুমন্ডল ভেদ করে পৃথিবীতে আসার সময় নীল আলো বিক্ষেপণের জন্য যে প্রতিচ্ছবি তৈরী হয় সেটিকেই আমরা আকাশ হিসেবে দেখি। প্রকৃতপক্ষে আমাদের দৃশ্যমান আকাশ কোন কঠিন পদার্থের নয় বরং এটি বাতাসের দ্বারা তৈরী। কিন্তু কুরআনে শক্ত কঠিন ছাদের মতো আকাশের কথা বলেছে। এমনকি সময় সময় সেই আকাশের কোন টুকরোকে ভেঙ্গে মানুষের মাতার উপর ছুড়ে মারার ভয় পর্যন্ত দেখানো হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কুরআন লেখক দেড় হাজার বছর আগের মানুষ ছিল বলে সে জানতো না যে আকাশ কোন শক্ত কঠিন পদার্থের তৈরী নয়। আর তাই আকাশের কোন টুকরো নেই আর সেই টুকরো দিয়ে কাউকে ঢিল মারা যায় না। প্রকৃতপক্ষে কুরআন লেখক নিতান্তই একজন স্বাধারণ মানুষ বলে এসব ভূল ভাল কথা বলে মানুষকে বোকা বানিয়েছে।

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
বায়ুমন্ডলের আকাশ হয়তো গ্যাসের কিন্তু কুরআনে বর্ণিত আছে স্তরে স্তরে সাতটা আকাশ আছে। বায়ুমন্ডলের আকাশ সম্পর্কে আমরা জানি কিন্তু বাকী আকাশ সম্পর্কে আমরাতো জানিই না। তাহলে কিভাবে দাবী করতে পারি যে শক্ত কঠিন ছাদ স্বরুপ আকাশের অস্তিত্ব নেই?

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
এই আকাশ যদি গ্যাসের হয় তাহলে মহা জ্ঞানী (?!) আল্লাহ কেন এটাকে শক্ত কঠিন ছাদ বলে দাবী করেছে? আবার এই শক্ত কঠিন ছাদ ভেঙ্গে কেন মানুষের মাথায় পড়ার হুমকি বা ভয় দেখিয়েছে?
যে আল্লাহ একটা মিথ্যে দাবী করতে পারে আর সেই মিথ্যে দিয়েই মানুষকে ভয় দেখাতে পারে, সেই আল্লাহ হাজারটা মিথ্যে কথা বলবে সেটাই স্বাভাবিক। আর তাই বাকী আকাশগুলোর দাবী যে মিথ্যে সেটা সহজেই বুঝা যায় ।
বিজ্ঞানীদের দাবী আকাশ বলে কিছু নেই। সেটা এক আকাশ হোক বা সাত আকাশ । আমাদের বিশ্বজগতের পুরোটাই শুন্যতা । মাঝে মাঝে গ্যালাক্সিগুলো অবস্থিত । (ব্ল্যাক হোন এবং ব্ল্যাক ম্যাটারও আছে)। তার বাইরে সব শুন্য ।
সুতরাং কুরআনে যে আকাশের দাবী করা হয়েছে সেটা সম্পুর্নই অবাস্তব ।

বাকী আকাশ বলতে বিশ্বজগতে কিছু নেই আর তাই আমরা জানি না বলেই সেটা সত্যি হয়ে যাবে না অজ্ঞানতাই কোন কিছুর প্রমান নয় আমরা যা জানি না অর্থাত যে বিষয়ে অজ্ঞ সেটাকেই সৃষ্টিকর্তার প্রমান হিসেবে উল্লেখ করা মহা বোকামী যেটা আস্তিকরা সব সময় করে
বিজ্ঞান এটা জানে না সুতরাং আল্লাহ সত্য বিজ্ঞান ওটা জানে না সুতরাং আল্লাহ সত্য অর্থাৎ অজ্ঞানতাই হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার আরেক নাম
ঠিক তেমনি মানুষ আজ জানে না মহাবিশ্বের শেষে কী আছে, সুতরাং কুরআনে বর্নিত শক্ত কঠিন সাত আকাশ সত্যি এগুলো ভাউতাবাজী এবং প্রতারনা
মহাবিশ্বের শেষে মহাশুন্যও থাকতে পারে অথবা এর সীমানা। কিন্তু কুরআনের শক্ত কঠিন আকাশই থাকবে এর কোনই ভিত্তি নেই
বিজ্ঞান জানে না তাই কুরআন সত্যি এই দাবী হচ্ছে একটা অপ্রমানিত বিষয় হাজির করে আরেক কাল্পনিক ধারনার সত্যতা দাবী করা।  এটা হলো অজ্ঞতা বা প্রতারনা।
কুরআনের প্রথম আকাশের দাবী যেমন মিথ্যা ঠিক তেমনি বাকীগুলোর দাবীও মিথ্যা
শক্ত কঠিন আকাশ একটা গাজাখুরী গল্প ছাড়া কিছুই নয়

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
বিগ ব্যাং থিউরী অনুযায়ী সমস্ত বিশ্বজগত প্রসারিত হচ্ছে। বেলুনকে ফুঁ দিয়ে যেভাবে ফুলানো হয় সেভাবেই বিশ্বজগত প্রসারিত হচ্ছে। অর্থাৎ বিশ্বজগত বেলুনের মতো ফুলে যাচ্ছে। এখন যদি এই বেলুনগুলোর পৃষ্টদেশগুলোই কুরআনে বর্ণিত শক্ত কঠিন আকাশ বলা হয়ে থাকে তাহলে এই আকাশকে আমরা এখনও আবিষ্কার করতে পারিনি। আর তাই কুরআনের শক্ত কঠিন আকাশ নেই সেটা দাবী করা যাবে না। আবার বেলুনের চারপাশে যদি আরও বেলুন থাকে যেটা এই বেলুনের মতো করে প্রসারিত হচ্ছে প্রথম বেলুনের চারপাশে তবে মানুষ কখনই প্রথম বেলুনের বাইরে যেয়ে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বেলুনের সন্ধান করতে পারবে না। আর তাই মানুষ কখনই কুরআনে বর্ণিত স্তরে স্তরে সাত আকাশ সম্পর্কে জানতে পারবে না। সুতরাং কুরআনে বর্ণিত আকাশের কোন অস্তিত্ব নেই দাবীটা করা বোকামী। কুরআনে বর্ণিত শক্ত কঠিন আকাশ আছে, আর সেটা হলো বিগ ব্যাং এর ফলে সম্প্রসারিত হওয়া বিশ্বজগতের বেলুনের মতো করে প্রসারিত হওয়া উপরের স্তরটা। তাহলে কুরআনে বর্ণিত বেলুনের এই পৃষ্ঠাকে আকাশ বলা হলে এই আকাশ সম্পর্কে আমরা জানি না

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
প্রথমত বিগ ব্যাং এবং বেলুনের প্রসারিত হওয়া সম্পূর্ণ এক ব্যাপার নয়। বিজ্ঞানীগণ বিগ ব্যাং-কে খুব সহজ ভাবে বুঝানোর জন্য বেলুনের উদাহরণটা উপস্থাপন করে থাকেন। কিন্তু তাই বলে বেলুনের ফুঁলে উঠা এবং বিগ ব্যাং একই রকম ঘটনা নয়। এটা ঠিক যে বিগ ব্যাং বেলুনের মতই ফুঁলে ফেপে উঠছে কিন্তু এটি বেলুনের ফুঁলে উঠার মত নয়। আমরা জানি যে বেলুন ফুঁলালে এর পৃষ্ঠাদেশটিই শুধু প্রসারিত হতে থাকে এবং বেলুনের ভিতরে বাতাস জমা হতে থাকে। অপর দিকে বিগ ব্যাং-এর ফলে বিশ্বজগতের সমস্ত অংশ প্রসারিত হচ্ছে। বিশ্বজগতের সমস্ত উপাদান একেকটি গ্যালাক্সির আকার ধারণ করে পরস্পরের থেকে দুরে সরে যাচ্ছে। এবং বিশ্বজগত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। মহাবিশ্বের আয়তন যেমন বেড়ে যাচ্ছে ঠিক একই ভাবে এর অভ্যন্তরের উপাদানগুলোও (গ্যালাক্সীগুলো) পরস্পরের থেকে দুরে সরে যাচ্ছে। এভাবে সমস্ত বিশ্বজগতই একে অন্যের থেকে দুরে সরে গিয়ে আয়তনে বড় হচ্ছে। বিশ্বজগত শুধু এর বস্তুগুলোকে নিয়ে প্রসারিত হচ্ছে না বরং এর সাথে সাথে স্পেস বা শুন্যস্থানও প্রসারিত হচ্ছে। অর্থাৎ স্পেস বা স্থানও ছোট থেকে বড় হচ্ছে বা প্রসারিত হচ্ছে। অপর দিকে বেলুনের শুধু পৃষ্ঠাদেশটিই প্রসারিত হয় কিন্তু এর অভ্যন্তরের উপাদানগুলো প্রসারিত হয় না।

বিগ ব্যাং থিউরী অনুযায়ী বিশ্বজগতের সমস্ত উপাদানগুলো প্রসারিত হচ্ছে। মহাবিশ্বের পদার্থের সাথে সাথে শুন্যস্থান বা স্পেসও প্রসারিত হচ্ছে। মহাবিশ্বের পদার্থের মতো করে স্থান বা স্পেসও বিগ ব্যাং-এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে।
বিগ ব্যাং ঘটার পরে মহাবিশ্বের উপাদানগুলো শুন্যস্থানের দিকে প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে। আবার এর সাথে সাথে শুন্যস্থান বা স্পেসও তথা মহাবিশ্বও আয়তনে বড় হচ্ছে। অর্থাৎ বিশ্বজগতের শেষের দিকে শুন্যস্থান বা স্পেসও প্রসারিত হচ্ছে। এর আগে বা পরে কিছু নেই। শুন্যস্থান বা স্পেস যেহেতু কোন কঠিন পদার্থ নয় তাই মহাবিশ্বের কোন বেলুনের পৃষ্ঠাদেশের মত কোন কঠিন পদার্থের অস্তিত্ব নেই। মোট কথা বিগ ব্যাং-এর মাধ্যমে পদার্থের সাথে সাথে শুন্যস্থানও প্রসারিত হচ্ছে। আর তাই বেলুনের পৃষ্ঠার মত কোন কঠিন পদার্থের আবরণ বিশ্বজগতে নেই। মহাবিশ্বের পদার্থ যা প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে তার বাইরে বেলুনের পৃষ্ঠার মত কোন শক্ত কঠিন পদার্থের আবরন নেই। শুধু শুন্যস্থান বা স্পেস আছে। আর আমরা জানি শুন্যস্থান বা স্পেস কোন কঠিন পদার্থের আবরণ নয়। আমরা জানি কোথাও কোন কিছু (পদার্থ এবং শক্তি) না থাকলে শুধু শুন্যস্থান বা স্পেস উপস্থিত থাকে। কিন্তু বিগ ব্যাং অনুযায়ী এই শুন্যস্থানটিও তৈরী হয়ে বিশ্বজগতের উপাদানগুলোর সাথে সাথে প্রসারিত হচ্ছে। অর্থাৎ মহাবিশ্বের আগে আগে শুধু শুন্যস্থান বা স্পেস রয়েছে। আর এই শুন্যস্থান বা স্পেসও মহাবিশ্বের পদার্থ ও শক্তির সাথে সাথে প্রসারিত হচ্ছে। যেহুতু শুন্যস্থান বা স্পেস বিগ ব্যাং-এর মাধ্যমে তৈরী হয়ে মহাবিশ্বের উপাদানের আগে আগে প্রসারিত হচ্ছে তাই এই শুন্যস্থান বা স্পেস প্রতিনিয়ত প্রসারিত হওয়ার মাধ্যমে মহাবিশ্বের আয়তন বেড়ে যাচ্ছে। আর তাই বিশ্বজগতের অগ্রভাগে বেলুনের পৃষ্ঠার মতো কোন কঠিন পদার্থের আবরণ নেই। ফলে কুরআনে যে শক্ত কঠিন আকাশের কথা বলা হয়েছে তার কোন অস্তিত্বই বাস্তব পৃথিবীতে নেই। মহাবিশ্ব যেমন প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে তেমনি স্পেস বা শূন্যস্থানও প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে বলে বিশ্বজগতের বাইরে শুধু শুন্যস্থানই বিরাজ করতে পারে। আর শূন্যস্থান কোন শক্ত কঠিন পদার্থ নয়। যেহেতু মহাবিশ্বের বাইরের দিকে কেবল মাত্র শুন্যস্থানই রয়েছে এবং এই শূন্যস্থান বা স্পেস প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে তাই মহাবিশ্বের অগ্রভাগে কোন শক্ত কঠিন পদার্থের আবরণ থাকা সম্ভব নয় যেমনটি বেলুনের আছে। কারণ শূন্যস্থান বা স্পেস প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে যার মানে এই শূন্যস্থান যেখানে এখনও উপস্থিত হতে পারেনি সেখানে কোন কিছুরই অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। কারণ শূন্যস্থান বা স্থান অথবা স্পেস ছাড়া কিছুই বিরাজ করতে পারে না।

আর তাই কুরআনের বর্ণনার মত কোন শক্ত কঠিন আকাশের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়। বায়ুমন্ডল যেমন কুরআনে বর্ণিত শক্ত কঠিন আকাশ নয় তেমনি মহাবিশ্বের শেষ প্রান্তে কোন শক্ত কঠিন আকাশ থাকা সম্ভব নয়। কারণ স্থান বা স্পেসও প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হচ্ছে। ফলে স্পেস বা স্থানের বাইরে কোন কিছু থাকা সম্ভব নয়। আবার মহাবিশ্বের উপাদানগুলো প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে। আর তাই বিগ ব্যাং থিউরী অনুযায়ী মহাবিশ্বের শেষে কোন শক্ত কঠিন পদার্থের আকাশের উপস্থিত থাকাটা অসম্ভব। অর্থাৎ কুরআনে ভূল কথা লেখা হয়েছে। কুরআন লেখক আমাদের দৃশ্যমান আকাশকে শক্ত কঠিন পদার্থের ছাদ মনে করেছিল। বাস্তবে আসলে বায়ুমন্ডলের দ্বারা তৈরী হওয়া আকাশকে ঘরের ছাদের মতই দেখা যায়। আর তাই কুরআন লেখকও আকাশকে ছাদ ভেবে ভূল করেছে। তাই সে কুরআনে আকাশকে শক্ত কঠিন পদার্থের ছাদ বলে দেখিয়েছে। কুরআনে আকাশকে শক্ত কঠিন ছাদ বলাতে এটাই প্রমাণিত হয় যে কুরআন লেখক আকাশ সম্পর্কে জানতো না।

কুরআনের লেখক সত্যই কি বায়ুমন্ডলের আকাশের কথা বুঝায়নি কুরআনে? নাকি বিশ্বজগতের বাইরের কোন শক্ত কঠিন আকাশকে বুঝিয়েছে?
না কুরআনে মহাশুন্যের শেষের কোন আকাশের কথা বলা হয়নি কুরআনে বায়ুমন্ডলে আলোর প্রতিফলন , প্রতিসরণ এবং বিক্ষেপনের দ্বারা তৈরী হওয়া আকাশের কথাই বলা হয়েছে
যেমন সুরা নাহল-এর ৭৯ নাম্বার আয়াতে বলা আছে,
"তারা কি লক্ষ্য করে না আকাশের শুন্য গর্ভে নিয়ন্ত্রনাধীন পাখিদের প্রতি ? আল্লাই ওদের স্থির রাখেন;...."
এই আয়াতে বলা হয়েছে যে কুরআনে বর্ণিত আকাশ আমাদের দৃশ্যমান আকাশের মধ্যেই অবস্থিত। কুরআন যে আকাশে পাখিদের উড়ে বেড়ানোর কথা বলেছে সেটি বায়ুমন্ডলের আকাশ। আমরা জানি যে পাখিরা বায়ুমন্ডলের আকাশের উপরে উড়ে বেড়ায়। আর এই বায়ুমন্ডলেই সূর্যের আলোর মাধ্যমে আকাশের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে। অর্থাৎ কুরআন আমাদের দৃশ্যমান আকাশের কথাই বলেছে। আর কুরআন লেখক ভেবেছিল যে দৃশ্যমান এই আকাশটি শক্ত কঠিন এবং পৃথিবীর ছাদ।

এছাড়া সুরা রাদের ১৭ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
"তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষন করেন, ফলে উপত্যকাসমূহ ওদের পরিমান অনুযায়ী প্লাবিত হয় ...."
অর্থাৎ কুরআন যে আকাশের কথা বলেছে সেটি বায়ুমন্ডলের দ্বারা তৈরী হওয়া আমাদের দৃশ্যমান আকাশ। আমরা খুব ভালো করেই জানি যে বায়ুমন্ডলের আকাশ থেকেই পানি বর্ষিত হয়। কিন্তু কুরআনে উল্লেখিত এই আকাশ শক্ত কঠিন পদার্থের তৈরী নয়। আকাশ হলো বায়ুমন্ডলে সূর্যের আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরণ এবং বিক্ষেপনের মাধ্যমে তৈরী হওয়া ছাদের মত দেখতে একটি প্রতিচ্ছবি মাত্র। কিন্তু আকাশ যে একটি আলোর প্রতিচ্ছবি এই তথ্যটি কুরআন লেখকের পক্ষে দেড় হাজার বছর আগে জানা সম্ভব ছিল না। আর তাই কুরআন লেখক যেভাবে আকাশকে ছাদ বলে ভূল করেছে সেভাবেই কুরআনে তার ভূল ধারনাগুলোই লিখে রেখেছে।

কুরআনে অনেক আয়াতে আকাশের কথা বলা হয়েছে যেখানে পাখিরা উড়ে বেড়ায় এবং যেখান থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হয়।
কিন্তু আমরা জানি বৃষ্টি আকাশ থেকেই হয় আর এই আকাশ আমাদের দৃশ্যমান আকাশই
আকাশ শক্ত কঠিন পদার্থের কোন কিছু নয় কিন্তু কুরআনের কাল্পনিক আল্লাহ বেউকুফের মতো বলছে এটা নাকি ভেঙ্গে পড়তে পারে
কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে এই দৃশ্যমান শক্ত কঠিন আকাশ ভেঙ্গে পড়ার ভয় কুরআন লেখক বারবার দেখিয়েছে। কুরআন লেখক নানা ভাবে আকাশের খন্ডকে ভেঙ্গে মানুষের মাথার উপর ফেলে দেবার ভয় দেখিয়েছে। এটা স্বাভাবিক যে কুরআন লেখক বুঝতেই পারেন নি যে আকাশ হলো গ্যাসের তৈরী। আর গ্যাস ভেঙ্গে কারো মাথার উপর পড়তে পারে না। স্বভাবতই কুরআন লেখক একজন অজ্ঞ স্বাধারণ মানুষ ছিল বলে আকাশকে শক্ত কঠিন ছাদ ভেবেছে যেমনটি আমাদের কাছে আকাশকে শক্ত কঠিন ছাদ বলে মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে সেটা সত্যি নয়।




1 comment:

  1. আপনিও পুরো রিসার্স না করেয় মন গড়া বলে গেছেন। ভালোভাবে রিসার্স করুন। বিগব্যাং এর আগে সিঙ্গুলারাটির মধ্যে যে বল গুলোর কথা উল্লেখ করেছেন অর্থাৎ সবল নিউক্লিও,দুর্বল নিউক্লিও,মহাকর্ষ বল এর কথা বললেন সেই বল গুলো কি এবং কথায় এই বল গুলো পাওয়া যায় ভালভাবে জানুন।তাছাড়া সিঙ্গুলারিটি সম্পর্কে আমরা যা জানি তার সবই হাইপোথিসিস। দ্বিতীয় বলেছেন মেঘ অত্যন্ত কঠিন পদার্থ এবং কোরআনে এটিকে শক্ত আকাশ বলা হয়েছে। এটা আপনার মন গড়া কথা এবং আয়াতের অপব্যাখ্যা।এমন ব্যাক্ষা কেউই করেননি। বিজ্ঞানীদের ধারণা তারা এই সম্পূর্ণ মহাবিশ্বের কেবল ৪% ই জানতে পেরেছেন। আমাদের বায়ুমন্ডলের যে আকাশ সেটাকেও প্রথম আসমান বলা হয়নি। প্রথম আসমান কতটুকু তা এখনো আমাদের ধারণার বাইরে। মানুষ প্রথম আসমানের এখনো বলতে গেলে কিছুই এক্সপ্লোর করতে পারেনি ভবিষ্যতে হয়তো পারবে অথবা পারবেনা। আকাশকে করা হয়েছে ছাদ। গত কয়েকদিনে আমার ক্ষুদ্র এলাকাতেই অনেকগুলো উল্কা পরেছে যা সাথে সাথেই পুরে ছাই হয়ে গেছে।এই আকাশ অর্থাৎ বায়ুমন্ডল না থাকলে এতোদিনে উল্কার আঘাতে আপনি আমি শেষ হয়ে যেতাম। কুরআন পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগ অবদি মানব জাতির জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। সামান্য ক্ষুদ্র জ্ঞানে কুরআনের কিছু আয়াতকে মনগড়া অপব্যাক্ষ্যা দিলেই আপনি কুরআন ভুল প্রমান করে ফেলেছেন তা ভেবে লাফিয়ে উঠবেননা।

    ReplyDelete