Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Tuesday, December 29, 2015

একবিংশ শতাব্দির বিজ্ঞানময় জগতে থেকেও মিথ্যে ধর্মগুলো কিভাবে টিকে আছে? আর কতদিন টিকে থাকতে পারবে? মিথ্যে ধর্মগুলোর কি মৃত্যু ঘটবে না?


বিশ্ব এগিয়ে গেছে অনেক দুর। প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের আধুনিক আবিষ্কারে সারা পৃথিবীতে জয়জয়কার। পৃথিবীর নানা কুসংস্কার এবং অপবিশ্বাস আস্তে আস্তে দুর হয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে। পৃথিবীর আনাচে কানাচে বিজ্ঞানের আলো প্রবেশ করে ফেলেছে। মানুষ প্রাচীণ অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারকে আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে প্রতিদিন। ফলে বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে মানুষ ধর্মের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে সরে আসছে। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কৃত তত্বগুলো যখন এক এক করে ধর্মের কুসংস্কারগুলোর মৃত্যু ঘটাচ্ছে ঠিক সেই সময়টিতেই কিছু অন্ধবিশ্বাসী এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ পড়ে রয়েছে তাদের প্রাচীণ মিথ্যা ও ভ্রান্ত ধ্যাণ ধারনা আকড়ে ধরে। বিজ্ঞানের সাফল্য এবং উৎকর্ষতা যখন আকাশ চুম্বী ঠিক সেই সময়টিতেই কিছু মানুষ বিজ্ঞানের জয়গানকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে তাদের কুসংস্কারের ধর্মে বুঁদ হয়ে আছে। মানুষ সামাজিকতায়, জ্ঞান বিজ্ঞানে এবং প্রযুক্তিতে উন্নতির চরম শীখরে প্রবেশ করছে। ঠিক এই সময়টিতেই কিছু মানুষ পড়ে রয়েছে প্রাচীণকালের মানুষের সৃষ্টি করা ধর্ম এবং কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাসে (অন্ধবিশ্বাসে)। 
এসব মানুষদের মধ্যে যেমন আছে কৃষক মজুর শেণীর মানুষ, তেমনি আবার রাজা মহারাজাও রয়েছে। জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে থাকা মানুষও তাদের মনের কোঠায় অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের ধর্মগুলোকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। মানুষ যত উঁচুতেই উঠুক না কেন শৈশবে মনের উপর জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া ধর্মের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাসগুলো থেকে মুক্ত হতে পারে না। মনের কোণায় অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের ধর্মগুলো জড়ো সড়ো হয়ে ঘাপটি মেরে থাকে। একজন মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে গিয়েও মনের গহীনে ধর্মগুলোকে লালন করে থাকে। এজন্যই আমরা দেখতে পাই আধুনিক বিজ্ঞানময় জগতে বাস করেও কিছু মানুষ ধর্মে অন্ধ হয়ে থাকে। জাগতিক বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে তারা প্রাচীণ ধর্মীয় কুসংস্কার নিয়ে মজে থাকে।

মানুষ যুক্তিবাদী প্রাণী। প্রাচীণকাল থেকেই মানুষ তার বৃদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করতে করতে টিকে আছে। তার যৌক্তিক মন বা বুদ্ধিমত্তা দিয়েই সে প্রকৃতিকে বশ্ মানাতে শিখেছে। আর তাই মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞানে এতটা উন্নতি সাধন করতে পেরেছে। মানুষ শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়েও তার বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে এতকাল ঠিকে ছিল। বনের সাধারণ প্রাণী থেকে আজকের মানুষে উন্নিত হয়েছে। আজ জ্ঞান বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে মানুষ উন্নতির চরম শীখরে অবস্থান করছে। আর এই উন্নত অবস্থানে থেকেও কিছু মানুষ তাদের মনের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না।

ধর্ম শুধু যে অশিক্ষিত মূর্খ মানুষকে বশ করে রেখেছে তাই নয় বরং সমাজের নিচু থেকে উঁচু সব শ্রেণীর মানুষকেই তার বশে রেখেছে। তাই আমরা দেখতে পাই কৃষক মজুর শ্রেণীর মানুষের সাথে সাথে সমাজের উঁচু শ্রেণীর শিক্ষিত মানুষদেরকেও ধর্ম তার গোলাম বানিয়ে রেখেছে। অশিক্ষিত জ্ঞান বিজ্ঞান বঞ্চিত মানুষের চেয়ে শিক্ষিত জ্ঞান বিজ্ঞান জানা মানুষরা কমই ধর্মের বশ মেনেছে। ধর্মের অশুভ ছায়া থেকে শিক্ষিত মানুষরা ক্রমে ক্রমেই মুক্ত হতে শিখছে। কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাসের কালো ছায়ার অশুভ হাত থেকে শিক্ষিত সমাজ বেরিয়ে আসাতে ধর্ম বিলুপ্তির পথ ধরেছে।

প্রাচীণ মানুষ প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করতে পারতো না। সে স্বামর্থ তাদের ছিল না সেই সময়ে। আর তাই তারা প্রকৃতিকে ব্যাখ্যায় একটি কাল্পনিক সমাধান বের করেছিল। মেঘ কেন হয়, বৃষ্টি কেন হয়, আকাশে বিদ্যুত চমকায় কেন, ঝড় তুফান কেন হয়, ভুমিকম্প কেন হয় সূর্য চন্দ্র কিভাবে চলাচল করে। পৃথিবীটা কিসের উপর দাড়িয়ে, কিভাবে দাড়িয়ে, এই পৃথিবী কোথা থেকে আসলো, মানুষ কিভাবে আবির্ভূত হলো এরকম হাজার প্রশ্নের উত্তর সেই সময়ের মানুষের পক্ষে নির্ণয় করা সম্ভব ছিল না। যুক্তিবাদী বুদ্ধিমান মানুষগুলো তাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার মধ্যেই এসবের উত্তর খোজার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা বিজ্ঞানের সাধারণ জ্ঞানটুকু তখনও আবিষ্কার করেনি। তাই তারা তাদের জ্ঞানের পিপাসা মেটাতে খুব সহজ এবং হাস্যকর উত্তর তৈরী করেছিল। তারা সব কিছুর ব্যাখ্যায় একজন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব কল্পনা করেছিল। সৃষ্টিকর্তার কাল্পনিক ধারণার জন্ম দিয়ে মানুষের জানার আগ্রহকে নিয়ন্ত্রন করতে পেরেছিল। প্রকৃতিকে ব্যাখ্যার একটি উপায় তারা পেয়েছিল সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করার মাধ্যমে। সৃষ্টিকর্তার ধারণার জন্ম দেবার পরে মানুষ দেখেছে যে প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে। ঝড়, বৃষ্টি, ভূমিকম্প প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যাখ্যা তারা সৃষ্টিকর্তাকে দিয়ে করেছে। সৃষ্টিকর্তা এসব কিছুই ঘটান এমন একটি ধারণা মানুষের জ্ঞান পিপাসাকে প্রাচীণকারে নিবারণ করতে পেরেছিল। আর এভাবেই মানুষ সৃষ্টিকর্তার ধারণার আমদানী করে। এই ধারণাটিই যুগে যুগে প্রাচীণ মানুষেরা বংশ পরম্পরায় বয়ে নিয়ে আসে। ধর্মে অনেক পরিবর্তন আসে মানুষ জ্ঞানে উন্নত হবার সাথে সাথে। ফলে প্রাচীণকালের মানুষ যে সৃষ্টিকর্তাকে প্রকৃতির ব্যাখ্যায় হাজির করেছিল জ্ঞানে উন্নত হবার সাথে সাথে সৃষ্টিকর্তারও উন্নতি সাধন করেছে মানুষ। আর তাই সূর্য দেবতা, চন্দ্রের দেবতা, ঝড় তুফানের দেবতা, ভূমিকম্পের দেবতা ইত্যাদি হাজারও রকমের দেবতা বিবর্তিত এবং বিবর্ধিত হয়ে একক সৃষ্টিকর্তা বা এক ঈশ্বরের ধারণার জন্ম হয়।

এক ঈশ্বরের ক্ষমতাও দিনে দিনে বৃদ্ধি পেতে থাকে মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধির সাথে সাথে। মানুষ যতই উন্নত হতে থাকে তার সৃষ্টি করা কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাও ক্ষমতায় উন্নত হতে থাকে। এভাবেই সারা পৃথিবীতে এই কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার ধারণা ছড়িয়ে পড়ে আনাচে কানাচে। মানুষ প্রকৃতি এবং বেঁচে থাকা এমনকি নৈতিকতার ধারক এবং বাহকের আসনে কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাকে বসিয়ে দেয়। পরবর্তী কোন এক সময়ে মানুষ আবিষ্কার করে জ্ঞানের এক উৎকৃষ্ট মাধ্যম। দর্শনের আবির্ভাবের মাধ্যমে মানুষ বাস্তব সম্মত জ্ঞান চর্চা শুরু করে। কাল ক্রমে এই দর্শন উন্নত হয়ে এক সময় জ্ঞানের নতুন এবং উৎকৃষ্টতম শাখার আবির্ভাব ঘটে। আর সেটি হলো বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের আবির্ভাবের ফলে মিথ্যে এবং কুসংস্কারগুলো সমাজ থেকে বিদায় নিতে থাকে। এক শ্রেণীর বাস্তব চিন্তা ধারার মানুষের জন্ম হয় যারা বিশ্বজগতকে ধর্মের কুসংস্কার থেকে বাঁচিয়ে বিজ্ঞানের আঁচলে নিয়ে আসে। আর জন্ম নিতে থাকে বিশ্বজগতের বিজ্ঞানসম্মত বাস্তব সত্য জ্ঞানের। প্রকৃতির ব্যাখ্যায় সৃষ্টিকর্তাকে হটিয়ে দিয়ে মানুষ প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা হাজির করতে থাকে। আস্তে আস্তে ধর্মের কুসংস্কারগুলো দুর হয়ে বিজ্ঞানের উন্নতি হতে থাকে। ধর্ম যেমন বিশ্বজগতের মিথ্যে ব্যাখ্যা হাজির করেছিল বিজ্ঞান সেখানে বাস্তব সত্য জ্ঞান এনে ধর্মের কুসংস্কারগুলোকে একে একে ধ্বংশ করতে থাকে। আজ আর মানুষ মেঘের গর্জন শুনে মেঘ দেবতাদের লড়াই বা যুদ্ধের কথা কল্পনা করে না। আজ মানুষ জেনে গেছে মেঘে কোন কাল্পনিক দেবতা বা ফেরেশতা নেই। ধর্ম মানুষকে মিথ্যে কথা বলে এসেছে এতকাল। ভুমিকম্প হলে কেউ আর ঈশ্বরের অভিশাপ মনে করে না। মানুষ আজ জেনে গেছে ধর্ম এতকাল ধরে মিথ্যে কথা বলে এসেছে মানুষকে। রোগ হলে কোন মানুষ আর ঈশ্বরের শাস্তি ভাবে না। মানুষ আজ জেনে গেছে রোগ কোন স্রষ্টার শাস্তি নয়; রোগ জীবানু নামক এক প্রাকৃতিক কারণ। আজ মানুষ জেনে গেছে ধর্ম এতদিন ধরে মানুষকে মিথ্যে বলে প্রতারণা করে এসেছে। জ্ঞান বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতায় মানুষ আজ জেনে গেছে মানুষকে কোন সৃষ্টিকর্তা বানায়নি। মানুষ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক নিয়মে পৃথিবীতে এসেছে। আদম হাওয়া অথবা মনু সংহিতার কাহিনী রুপকথার গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়। ধর্ম এতদিন ধরে মিথ্যে বলে এসেছে মানুষকে। প্রতারণা করেছে মানুষের সাথে। পৃথিবীকে কোন সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেনি। পৃথিবী সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক নিয়মেই তৈরী হয়েছে। ধর্ম মানুষকে মিথ্যে বলে প্রতারণা করে এসেছে এতোদিন। উপরের ওই আকাশটা যাকে দেখতে শক্ত কঠিন ছাদের মতো দেখা যায় সেটি আসলে কোন কঠিন পদার্থের ছাদ নয়। ওটি বাতাসের সমষ্টি মাত্র। ধর্ম এতোদিন ধরে মিথ্যে বলে মানুষের সাথে প্রতারণা করে এসেছে। পৃথিবীকে কেউ ধরে রাখেনি। সূর্য চন্দ্রকে কেউ নিয়ন্ত্রন করছে না। কোন ফেরেশতা বা দেবতা নেই আকাশে। ধর্ম এতোদিন মিথ্যে বলে এসেছে। ধর্ম সব মিথ্যে বলে এসেছে এতোদিন। ধর্ম যে মিথ্যেবাদী প্রতারক ছাড়া আর কিছুই নয় মানুষের আর জানার বাকী নেই। 

কিন্তু তবুও মানুষ ধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কার থেকে বের হতে পারছে না। অশিক্ষিত মানুষ যেমন কিছু না জেনে না বুঝেই ধর্মকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে চলেছে ঠিক সেভাবে শিক্ষিত মানুষও এই কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে বের হতে পারছে না। ধর্মের মিথ্যেবাদীতা এবং প্রতারণাগুলো শিক্ষিত মানুষ জানার পরেও ধর্মের ধোঁকা থেকে বের হতে পারছে না। এর কারণটিও শিক্ষিত মানুষের অজানা নয়। শৈশবের শিক্ষা এবং সংস্কারগুলো যে মানুষ বড় হয়ে ছাড়তে পারে না (সেই ক্ষমতা মানুষের অবশিষ্ট থাকে না) শিক্ষিত মানুষের সেটা অজানা নয়। তবুও তারা শৈশবের মিথ্যা ধারণা এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। শিক্ষিত চাকরীজীবি থেকে শুরু করে শিক্ষক, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার এমনকি বিজ্ঞানী পর্যন্ত শৈশবের চাপিয়ে দেওয়া ধর্মীয় অপশিক্ষা থেকে বের হয়ে আসতে পারে না। তারা একই সাথে বিজ্ঞানের সত্য জ্ঞান এবং ধর্মীয় কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস তাদের মনে ধারণ করে চলে। ফলে আজও দেখা যায় বিশ্ব জুড়ে ধর্মের এতো প্রতাপ। শৈশবে একটি শিশুকে চাপিয়ে দেওয়া মিথ্যা ধর্মের ধারণাগুলো তাদের মস্তিষ্কে স্থায়ী আসন গেড়ে বসে। শৈশবের ধর্মীয় অপজ্ঞান, অপযুক্তিগুলো মানুষের মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রন করে রাখে। ফলে একজন মানুষ আধুনিক জ্ঞানে শিক্ষিত হয়েও ধর্মীয় কুসংস্কারগুলোকে সত্য বলে অন্ধের মত বিশ্বাস করে চলে। মানুষ বিজ্ঞানী হয়েও মস্তিষ্কের এক কোণে বিজ্ঞানের সত্য ও বাস্তব জ্ঞান এবং অন্য কোণে ধর্মীয় কুসংস্কার ধারণ করে রাখে নিজের অজান্তেই। আর তাই একজন শিক্ষিত মানুষ বা একজন বিজ্ঞানী বিজ্ঞানের সত্য জ্ঞান এবং ধর্মের মিথ্যা ও প্রতারণা জানার পরেও ধর্মকে অনুসরণ করে অন্ধের মতো। এর কারণ হলো শৈশবে একজন শিশুকে তার যুক্তিবুদ্ধি হবার আগেই ধর্মের মিথ্যে, অপজ্ঞান এবং অপযুক্তিগুলো তার মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তার মস্তিষ্ক গঠিত হয় এসব ধর্মীয় মিথ্যে ধারণা, অপজ্ঞান এবং অপযুক্তি তথা কুসংস্কার দিয়ে। তাদের মস্তিষ্কের মধ্যে এই সব অপজ্ঞান এবং অপযুক্তিগুলো নিউরণের মধ্যে রাসায়নিক বন্ধনের মাধ্যমে স্থায়ী হয়ে যায়। ফলে এই মানুষটিই বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা বিজ্ঞানী হবার পরেও তার মস্তিষ্কের রাসায়নিক বন্ধনযুক্ত এই সব অপজ্ঞান এবং অপযুক্তি বা কুসংস্কারগুলো তার চিন্তা চেতনাকে নিয়ন্ত্রন করে মরার আগ পর্যন্ত। ফলে খুব কম মানুষই ধর্মের মিথ্যাবাদিতা এবং প্রতারণা জানার পরেও ধর্মীয় কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে। আর তাই দেখা যায় একবিংশ শতাব্দির বিজ্ঞানময় জগতে বসেও একজন মূর্খ অশিক্ষিত মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষিত বিজ্ঞানী পর্যন্ত ধর্মের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাসকে ধারণ করে চলে।এজন্যই পৃথিবীতে এখনও ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে না। ধর্মের টিকে যাবার কারণ হলো একজন শিশুকে শৈশবেই ধর্মের মিথ্যা ধারণা, অপযুক্তি এবং অপজ্ঞান তথা কুসংস্কার দিয়ে বশ করে রাখা হয়। তার স্বাধীন চিন্তা চেতনা, যুক্তি বুদ্ধি নিয়ন্ত্রন করে এই সব কুসংস্কার বা অপজ্ঞান এবং অপযুক্তিগুলো। আর তাই মানুষ শিক্ষিত হবার পরেও সে ধর্মের গোলাম হয়ে জীবন কাটায়। এজন্যই পৃথিবীতে এত এত কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী ধর্মের অনুসারীদের বসবাস। যদি মানুষকে শৈশবে ধর্মের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস বা অপজ্ঞান, অপযুক্তি জোর করে ঢুকিয়ে না দেওয়া হয় তবে কোন কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসীর জন্ম হবে না পৃথিবীতে। শিশুদেরকে যদি যুক্তি বুদ্ধি তৈরীর স্বাধীনতা দেওয়া হয় তবেই পৃথিবী থেকে ধর্ম নামের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস দুর হতে পারবে।

বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে ধর্মের বিলুপ্তি ঘটছে। বিজ্ঞানের সত্য এসে পড়ায় একটা একটা করে ধর্মের কুসংস্কার ও মিথ্যা ধারণার মৃত্যু ঘটছে। বিজ্ঞান যতই উন্নত হচ্ছে ধর্ম ততই মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞান তথা সত্য জ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথেই ধর্মের মিথ্যে অপজ্ঞানগুলো একটা একটা করে মৃত্যুবরণ করছে। সেদিন বেশী দুরে নয় যখন বিজ্ঞানের সত্য জ্ঞানের আলো ধর্মকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলবে এবং মিথ্যে ও কুসংস্কারের ধর্মের মৃত্যু ঘটাবে। যেভাবে বিজ্ঞান এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আর বেশী দেরি নেই ধর্মের বিলুপ্তি ঘটার। অচিরেই ধর্মের মৃত্যু ঘটার মাধ্যমে বিলুপ্তি হয়ে যাবে।

বিজ্ঞানের এত উন্নতি হয়েছে যে ধর্ম অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে যেতো। কিন্তু ধর্মগুলোকে টিকিয়ে রেখেছে অশিক্ষা, কুশিক্ষা এবং অপশিক্ষাগুলো। মানুষ ধর্মের মৃত্যুর সংবাদ অনেক আগেই পেয়েছে। আর তাইতো কিছু ধর্মান্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসীর দল ধর্মকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এজন্য এমন ঘৃণ্য জঘন্য কাজ নেই যা তারা করছে না। বিজ্ঞানের সত্য জ্ঞানকে গোঁপন করে, মিথ্যে ভাবে বিজ্ঞানকে উপস্থাপন করে অপবিজ্ঞান ছড়াচ্ছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসীদের কাছে। ফলে ধর্মের কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাসে বুঁদ হয়ে থাকা মানুষগুলো প্রকৃত বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে পারছে না। ধর্মের স্রষ্টা এবং রক্ষাকারী এসব মানুষ কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসীদের কাছে প্রকৃত বিজ্ঞানের জ্ঞানকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। আর তাই সেসব মানুষ প্রকৃত বিজ্ঞান না জানতে পেরে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী থেকে যাচ্ছে। আবার ধর্মের রক্ষাকর্তাগণ বিজ্ঞান সম্পর্কে নানা ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী ধার্মীকদেরকে প্রতারিত করছে। এমন কি তারা বিজ্ঞানের নামে অপপ্রচার করে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসীদের কাছে অপবিজ্ঞানের সৃষ্টি করছে। ফলে তারা বিভ্রান্ত হয়ে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী ধার্মীক হয়েই ধর্মের গোলামী করে যাচ্ছে।

এত হীনকর কাজ করেও যখন মানুষকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে রাখা যাচ্ছে না মানুষ ঠিকই বিজ্ঞানের প্রকৃত জ্ঞান জেনে যাচ্ছে তখন ধর্মের স্রষ্টা এবং রক্ষাকর্তা ঐসব মানুষগুলো তাদের ধর্মগ্রন্থের মধ্যে বর্ণিত প্রাচীণ মিথ্যে এবং প্রতারণামূলক কথাগুলোর অর্থ পরিবর্তন করে সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থ এবং অপব্যাখ্যা হাজির করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আর এসব কুৎসিত ঘৃন্য জঘন্য কাজের জন্যই ধর্ম আরো কিছু কাল টিকে রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানের সাথে সাথে মানুষ প্রযুক্তিতেও উন্নতি সাধন করায় ধর্মের স্রষ্টা-রক্ষাকর্তারা আর মানুষকে প্রতারিত করতে পারছে না। মানুষ ঠিকই তাদের চতুরতা ধরে ফেলছে। পৃথিবীর মানুষ আজ জেনে যাচ্ছে যে ধর্মের রক্ষাকর্তা ঐসব প্রতারক মানুষগুলো তাদের হীন স্বার্থ উদ্ধার করতেই তাদের গ্রর্মগ্রন্থের আসল অর্থের পরিবর্তন, পরিবর্ধন, এবং সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মগ্রন্থগুলোকে বিজ্ঞানের সাথে মিলিয়ে ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত অর্থের পরিবর্তন করে, বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থ করে ধর্মগ্রন্থের যে অপব্যাখ্যা হাজির করে সেটা ধর্মরক্ষাকর্তাদের মিথ্যেবাদিতা প্রতারণা এবং ভন্ডামী ছাড়া আর কিছুই নয়।

ধর্মগ্রন্থের প্রকৃত অর্থকে পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে ধর্মগ্রন্থের সম্পূর্ন ভিন্ন অর্থ তৈরী করে এবং অপব্যাখ্যা করে ধর্ম রক্ষকরা ধর্মকে জিইয়ে বা বাঁচিয়ে রেখেছে ঠিকই কিন্তু জ্ঞান বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে তাদের প্রতারণামুলক ধর্মগ্রন্থের অর্থ পরিবর্তন এবং অপব্যাখ্যাগুলো মানুষের কাছে উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে ধর্ম আবার মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়ছে। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির এত দ্রুত উন্নতি ঘটছে যে খুব বেশী দিন আর ধর্মের রক্ষাকর্তা মানুষেরা কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাসের ধর্মগুলোকে আর বাঁচিয়ে রাখতে পারবে না। যে ধর্মের মৃত্যু ইতিমধ্যেই হয়ে যেতো কিন্তু ধর্ম রক্ষাকর্তাগণদের প্রতারণা ভন্ডামীর জন্য ধর্ম আরও কিছু দিন বেঁচে রয়েছে, আর বেশীদিন ধর্ম বেঁচে থাকতে পারবে না। বিজ্ঞানের সত্য পূর্ণ-প্রতিষ্ঠিত হবার মাধ্যমে ধর্মের পূর্ণ মৃত্যু ঘটবে সুনিশ্চিত।

No comments:

Post a Comment