Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Friday, June 17, 2016

বাইবেলঃ এটি একটি কৌতুক গ্রন্থ, গল্প গ্রন্থ, সন্ত্রাসী গ্রন্থ, রক্তপিপাসী গ্রন্থ নাকি মিথ্যার সংকলন। (পর্ব ৪)



পৃথিবীর সব ধর্মের মতই খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে তাদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল হলো সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ তবে তাদের গ্রন্থটি সৃষ্টিকর্তা জেহোবা নিজের হাতে লিখে পৃথিবীতে পাঠায়নি বরং জেহোবা বা ইয়াহুয়ের নানা সময়ে নবী রাসুলদের প্রতি অবতীর্ণ বাণীগুলোকে অনেক মানুষ কালক্রমে লিপিবদ্ধ করে রেখেছিল যা গ্রন্থাকারে বাইবেল বলা হয় অর্থাৎ খ্রিস্টানদের দাবী যদিও বাইবেলের বর্ণিত কথাগুলো ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তার তবুও এই বাণীগুলো লিখেছে সাধারণ মানুষ
প্রায় চল্লিশ জন ভিন্ন ভিন্ন সময়ের মানুষ সম্পূর্ণ বাইবেল লিখেছে প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে নানা সময়ের মানুষ বাইবেলের বিভিন্ন অংশকে লিপিবদ্ধ করেছে ফলে খুব সহজেই বুঝা যায় বাইবেলের সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ হবার সম্ভাবনা কত কম যে বই নানা সময়ের নানা ধ্যান ধারণার মানুষ লিখেছে সেই গ্রন্থটি কখনই কোন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ হতে পারে না
কিন্তু খ্রিস্টান ধর্মের অন্ধবিশ্বাসী আস্তিকরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে বাইবেলের কথাগুলো কোন সৃষ্টিকর্তার দ্বারাই প্রবর্তন করা সম্ভব তাহলে খ্রিস্টানদের কথা যদি সত্যি হয়ে থাকে তবে বাইবেলের কথাগুলো যদিও একজন সৃষ্টিকর্তার তবে সেগুলো লিপিবদ্ধ করেছে কয়েকজন মানুষ যারা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এসে বাইবেলের বিভিন্ন অংশকে লিখে রেখেছে যা পরবর্তীতে একটি সম্পূর্ণ গ্রন্থের আকার ধারণ করেছে মানুষের মাধ্যমেই
খ্রিস্টানরা দাবী করে তাদের ধর্মগ্রন্ত বাইবেলে সমস্ত জ্ঞান বিজ্ঞানের কথা লেখা হয়েছে তারা অতি উৎসাহী হয়ে দাবী করে বিজ্ঞানের আজকের যত আবিষ্কার সবগুলোই বাইবেলের ধারণা থেকে করা হয়েছে অর্থাৎ পৃথিবীর সব ধর্মের অনুসারীরা যেমন অন্ধের মতো দাবী করে তাদের ধর্মগ্রন্থ থেকেই বিজ্ঞানের সব আবিষ্কারগুলো করেছে বিজ্ঞানীরা ঠিক একই রকম দাবী খ্রিস্টানরাও করে থাকে মুসলমানরা যেমন তাদের ধর্মগ্রন্থ কুরআনকে বিজ্ঞানময় দাবী করে বলে বিজ্ঞানের সব আবিষ্কারগুলো কুরআন পড়েই করা হয়েছে ঠিক একই ভাবে খ্রিস্টানরা এই দাবীটিই করে হিন্দুরা যেমন দাবী করে তাদের বেদ গীতা থেকেই বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার ঠিক একই দাবী খ্রিস্টানরাও করে পৃথিবীর সব ধর্মের মতো খ্রিস্টানরাও অন্ধের মতো বিশ্বাস করে বাইবেলে কোন ভূল ভ্রান্তি নেই বরং বিজ্ঞানের সব আবিষ্কারের কথাই বাইবেলে লেখা রয়েছে সেই দুই তিন হাজার বছর আগেই আর এসব দাবী করে তারা দেখাতে চায় তাদের ধর্মটি একজন অতিজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ধর্ম তাদের ধর্মগ্রন্থটিই একমাত্র সত্য এবং বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার শুধু তাদের ধর্মগ্রন্থ পড়েই করা হয় আসলে পৃথিবীর সব ধর্মের আস্তিকদের মতোই খ্রিস্টানরাও এই অন্ধবিশ্বাসময় দাবীটি করে থাকে

এই পর্বটিতে সমস্ত বাইবেলকে পর্যায়ক্রমে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে এটি আসলে কোন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ঐশী গ্রন্থ নাকী কিছু সাধারণ মানুষদের লেখা একটি সাধারণ মানের গ্রন্থ একজন বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বাইবেলকে যে দৃষ্টিতে দেখা যায় ঠিক একই ভাবে বাইবেলের প্রতিটি বাক্যকে, প্রতিটি বাণীকে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে এই পর্বটিতে
এর আগের পর্বগুলোতে যেভাবে বাইবেলের বাণিগুলোকে বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে যে এটি মোটেই কোন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত নয় বরং কিছু প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষের দ্বারা রচিত গ্রন্থ ঠিক একই ভাবে এই পর্বটিতেও বাইবেলকে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে
গতপর্বের পর থেকে....
.১৮
তারপরে প্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের নিঃসঙ্গ থাকা ভালো নয়| আমি ওকে সাহায্য করার জন্যে ওর মত আর একটি মানুষ তৈরী করব|”
ব্যাখ্যাঃ কেন ঈশ্বর আদমকে সৃষ্টি করার আগে পরিকল্পনা করতে পারলো না যে আদমের নিঃসঙ্গ থাকা উচিত নয় ? এতো পরে এসে কেন এই সিদ্ধান্ত নিতে হলো ? তাহলে তো দেখছি ঈশ্বর সর্বজ্ঞানী নয়

.১৯
প্রভু ঈশ্বর পৃথিবীর ওপরে সমস্ত পশু আর আকাশের সমস্ত পাখী তৈরী করবার জন্য মৃত্তিকার ধূলি ব্যবহার করেছিলেন প্রভু ঈশ্বর সমস্ত পশুপাখীকে মানুষটির কাছে নিয়ে এলেন আর মানুষটি তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নাম দিল
ব্যাখ্যাঃ আরেকটি অবৈজ্ঞানিক গল্প সাজিয়েছে অজ্ঞ ঈশ্বরটি আমরা সবাই জানি যে পশু পাখি মাটি বা ধূলি কণা দিয়ে তৈরি নয় মাটির উপাদান আর পশু পাখির শরীরের উপাদান পুরোটাই আলাদা সুতরাং যে ঈশ্বর দাবী করে সে নাকি পশুপাখিদেরকে মাটি বা ধূলি দিয়ে বানিয়েছে সে যে কত বড় অজ্ঞ-মূর্খ সেটা বুঝতে বেশী পন্ডিত হতে হয় না
আর পশু পাখির নামটিও আদমকে দিয়ে দিতে হলো ? কেন সর্বজ্ঞানী ঈশ্বর নাম দিতে পারেনি ?

.১৫
কৃষিকাজ আর বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এদন বাগানে রাখলেন
ব্যাখ্যাঃ এই ভার্সটি অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা প্রথমে আদমকে মাটি দিয়ে বানিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে জীবন দিয়েছে এবং তাকে ইডেন অর্থাৎ স্বর্গোদ্দানে রাখলো একজন রাখাল হিসেবে অর্থাৎ বাইবেল বলছে মানুষকে প্রথমে কৃষক করে রাখা হয়েছে অথচ বিজ্ঞান বলছে মানুষ প্রথমে শিকারী ছিল এবং তার অনেক পরে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেছে আসলে কৃষিকাজ আবিষ্কার হয়েছে নারীদের হাত ধরে
খ্রিস্টানদের ইশ্বর আদম নামের মানুষটিকে ইডেন বা বাগানের দেখাশোনার জন্য নিয়োগ দিলো অর্থাৎ মালির কাজ দিলো

.১৬
প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এই আদেশ দিলেন, “বাগানের যে কোনও বৃক্ষের ফল তুমি খেতে পারো|
.১৭
কিন্তু যে বৃক্ষ ভালো আর মন্দ বিষয়ে জ্ঞান দেয় সেই বৃক্ষের ফল কখনও খেও না যদি তুমি সেই বৃক্ষের ফল খাও, তোমার মৃত্যু হবে !”
ব্যাখ্যাঃ ঈশ্বর আদমকে বাগানের সব ফলই খেতে বললো কিন্তু ভালো মন্দ বিষয়ে জ্ঞান দেয় এমন ফল খেতে নিষেধ করলো ঈশ্বর কি ভালো মানুষ ? যদি ভালো মানুষই হয় তবে সে জ্ঞান বৃক্ষের ফল খেতে নিষেধ করেছে কেন ? যা খেলে ভালো মন্দের পার্থক্য বুঝা যাবে সেই ফল খেতে কেন নিষেধ করা হয়েছে ? মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি হলে ঈশ্বরের এতো আপত্তি কেন ?
উপরন্তু ঈশ্বর আদমকে একটি মিথ্যা কথা বলেছে সেই জ্ঞান বৃক্ষের ফলটি যাতে আদম না খায় ঈশ্বর আদমকে বলেছে জ্ঞান বৃক্ষের ফল খেলে নাকি আদম মারা যাবে কিন্তু আমরা জানি জ্ঞান বৃক্ষের ফল খাবার পরেও আদম মরেনি অর্থাৎ ঈশ্বর আদমকে মিথ্যা কথা বলেছে ঈশ্বর একজন মিথ্যাবাদী
এই ভার্সের সব চেয়ে হাস্যকর বিষয়টি হলো বাইবেল লেখক ভেবেছে জ্ঞান বুঝি কোন গাছের ফল খেয়ে অর্জন করা সম্ভব এসব আসলে রুপকথার গল্পে সম্ভব কিন্তু বাস্তব জগতে এসব জাদুকরী কিছু ঘটা সম্ভব নয় ফল খেয়ে জ্ঞানী হওয়ার ধারণাটি কখনই সম্ভব নয় বরং প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষ ভেবেছে জ্ঞান বুঝি কোন ফলে খেয়ে অর্জন করা যায় যেহেতু প্রাচীণকালের মানুষগুলো জানতো না মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি কিভাবে অর্জিত হয়, মস্তিষ্কই যে জ্ঞান অর্জনের জন্য দায়ী এসব তথ্য আদিম মানুষের পক্ষে কখনই জানা সম্ভ ছিল না তাই তারা কল্পনা করেছে জ্ঞান বুঝি গাছে ধরে আর সেই গাছের ফল খেলেই জ্ঞান লাভ করা সম্ভব
প্রাচীণকালের মানুষের ভ্রান্ত ধারণাগুলোই বাইবেলে উল্লেখ করায় এটাই প্রমাণিত হয় যে এগুলো প্রাচীণকালের অজ্ঞ মানুষ দ্বারা লিখিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা মাত্র এগুলো কিছুতেই কোন সৃষ্টিকর্তার কথা হতে পারে না

.২০
মানুষটি সমস্ত গৃহপালিত পশু, আকাশের সমস্ত পাখীর এবং অরণ্যের সমস্ত বন্য প্রাণীর নামকরণ করল মানুষটি অসংখ্য পশু পাখী দেখল কিন্তু সে তার যোগ্য সাহায্যকারী কাউকে দেখতে পেল না
ব্যাখ্যাঃ যাক অবশেষে যে কাজ ঈশ্বর করতে পারেনি আদম তা করেছে সে সব পশু পাখিদের নাম দিয়ে দিয়েছে কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এতো এতো পশু পাখির নাম দিলেও এদের মধ্যে কারো কাছ থেকে সাহায্য পাবার সম্ভাবনা দেখতে পেলো না আদমকে সাহায্য করার মতো কেউ ছিল না
সম্ভবত এখানে মহান ঈশ্বর আদমের সেক্সের বিষয়টি ইঙ্গিত করেছে কারণ পশুদের মধ্যে অনেকেই মানুষকে সাহায্য করতে পারে কিন্তু তাদের সাথে মানুষ সেক্স করতে পারে না ঈশ্বর হয়তো এমনটাই ইঙ্গিত করেছেন খুব ভালো, খুব ভালো!

.২১
তখন প্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে খুব গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করলেন| মানুষটি যখন ঘুমোচ্ছিল তখন প্রভু ঈশ্বর তার পাঁজরের একটা হাড় বের করে নিলেন| তারপর প্রভু ঈশ্বর যেখান থেকে হাড়টি বের করেছিলেন সেখানটা চামড়া দিয়ে ঢেকে দিলেন|
.২২
প্রভু ঈশ্বর মানুষটির পাঁজরের সেই হাড় দিয়ে তৈরি করলেন একজন স্ত্রী| তখন সেই স্ত্রীকে প্রভু ঈশ্বর মানুষটির সামনে নিয়ে এলেন

ব্যাখ্যাঃ এমন হাস্যকর কথা কি রুপকথার বইতেও পাবেন ? মোটেও পাবেন না এজন্যই বাইবেল প্রাচীণকালের কিছু অজ্ঞ মানুষদের দ্বারা লিখিত বলে প্রমাণ পাওয়া যায় কারণ কোন অতি জ্ঞানী ঈশ্বর এসব রুপকথার গল্পগুলোকে বাস্তব বলে উপস্থাপন করতো না পুরুষের পাজরের হাড় থেকে কি স্ত্রীদেরকে সৃষ্টি করা হয়? পুরোই পাগলামো মার্কা কথাবার্তা বলেছে বাইবেলের লেখক বিবর্তনবাদ অনুযায়ী এবং জীববিজ্ঞান অনুযায়ী মানুষ কোন হাড় থেকে জন্মে না বরং মানুষ জন্মে শুক্রানুর মাধ্যমে; স্থানান্তরিত হওয়া ডিএনএ-এর মাধ্যমে শুক্রানু ডিম্বানুর মাধ্যমে বুকের হাড় থেকে মানুষকে সৃষ্টি করা মাটির পুতুল বানানোর মাধ্যমে মানুষ সৃষ্টি করার মতই হাস্যকর অবাস্তব মনে হয় বাইবেল লেখক একজন মূর্খ মানুষ ছিল যে কুসংস্কারকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে সত্য বলে
বাইবেলের এসব গল্পকে খ্রিস্টানরা সত্য বলে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে বলেই খ্রিস্টান ধর্মান্ধরা বিবর্তনবাদকে মেনে নিতে চায় না যদিও বিবর্তনবাদ একটি প্রমাণিত থিউরী তথা বাস্তব সত্য তথাপি অন্ধবিশ্বাসী ধর্মান্ধরা এজন্যই এই প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানকে মানতে চায় না কারণ তারা বাইবেলে বর্ণিত এই আদম হাওয়ার কাল্পনিক গল্পটিকে সত্য বলেই ধরে নেয় ফলে তারা কাল্পনিক গল্পকে সত্য ধরে নিয়ে বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত সত্যকে অস্বীকার করে বিবর্তনবাদ একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য অর্থাৎ থিউরী বিজ্ঞানীগণ নানা প্রমাণের মাধ্যমে দেখিয়েছে প্রকৃতিতে বিবর্তন ঘটে এবং এই পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীজগতটি বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবির্ভূত হয়েছে বিজ্ঞানের আরেকটি থিউরী এবায়োজেনেসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জৈব যৌগ থেকে এককোষী জীবনের উদ্ভব ঘটেছে এই এককোষী জীবন থেকে বহুকোষী জীবের বিবর্তন ঘটেছে এভাবে এক প্রজাতির প্রাণী থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর বিবর্তন ঘটেছে এই প্রক্রিয়ায় অধিকতর সরলতম প্রাণী থেকে জটিলতম প্রাণীর উদ্ভব ঘটেছে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রথমে শিপ্পাঞ্জি, গড়িলা বা ওরাং ওটাং জাতিয় প্রাণীর পূর্বপুরুষদের উৎপত্তি ঘটেছে যা শিপ্পাঞ্জি বা গড়িলার মতই ছিল সৌভাগ্যক্রমে মানুষ প্রজাতির উৎপত্তি ঘটেছে এই শিপ্পাঞ্জি বা গড়িলার পূর্বপুরুষ থেকে সিপ্পাঞ্জি আর মানুষ প্রজাতি দুটোর পূর্ব পুরুষ একই প্রজাতি ছিল অর্থাৎ বুঝার সুবিধার জন্য বলা যায় মানুষের উৎপত্তি ঘটেছে শিপ্পাঞ্জি জাতিয় প্রাণী থেকে বিবর্তিত হওয়ার মাধ্যমে
অথচ বাইবেলের কল্পিত সৃষ্টিকর্তা এই তথ্যগুলো জানতো না বরং সেও প্রাচীণ কালের অজ্ঞ মানুষদের মতোই অজ্ঞতা বশত সে সময়ের প্রচলিত গল্প কথাগুলোকে সত্য ধরে নিয়ে বাইবেলে মানুষ উৎপত্তির গল্প বর্ণনা করেছে এগুলো রুপকথার কাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয় কারণ মাটি দিয়ে আদমকে বানানো এবং তার বুকের হাড় দিয়ে তার স্ত্রী হাওয়াকে বানানোর বর্ণনাটি অবৈজ্ঞানিক, অবাস্তব এবং একটি কাল্পনিক গল্প মাত্র
আদমকে মাটি দিয়ে বানানো হয়েছে, তার স্ত্রী হাওয়াকে তার বুকের হাড় দিয়ে বানানো হয়েছে এবং তার সামনে উপস্থিত করা হয়েছে এই সব বর্ণনাই একটি প্রাচীণ গল্প থেকে নেওয়া

.২৩
এবং সেই মানুষটি বলল,“অবশেষে আমার সদৃশ একজন হল| আমার পাঁজরা থেকে তার হাড়, আর আমার শরীর থেকে তার দেহ তৈরী হয়েছে| যেহেতু নর থেকে তার সৃষ্টি হয়েছে, সেহেতুনারী বলে এর পরিচয় হবে|”
ব্যাখ্যাঃ অবশেষে আদম খুশি হয়ে গেলোকারণ তার মতোই একজন সৃষ্টি হয়েছেআসলে গরু ছাগল দিয়ে তো আর সেক্সের কাছ চলছিল নাতাই বেচারা যখনই দেখলো বাহ্ এই বার পেয়েছি সেক্স করার মতো কোন মাধ্যমএইবার ঠিক আছে
কিন্তু একটা জিনিস বুঝা গেলো না, নর থেকে সৃষ্টি হলেই কেন নারী নাম দিতে হবে ? যদি সরাসরি আদমের মতো মাটির পুতুল বানিয়েও তার স্ত্রীকে সৃষ্টি করা হতো তবে কি তাকে নারী নাম দেওয়া যেতো নাউদ্ভট কথাবার্তা! আর নর থেকে বানানো হয়েছে বলে নারীই কেন নাম দিতে হবে, ম্যান থেকে সৃষ্টি হলেই তাকে ওম্যান নাম দিতে হবে ? নর থেকে নরা নাম দেওয়া যেতো, ম্যান থেকে ম্যানা বা ম্যানী নাম দিলে কার কি ক্ষতি হতো ? কারো ভাতে কি ছাই দেওয়া হতো ?
এই গল্পটি দিয়ে বাইবেল লেখক বুঝিয়েছে যেহেতু পুরুষের শরীর থেকে নারীর জন্ম তাই নারীকে পুরুষের অধীনস্ত হয়ে থাকতে হবেএমনকি নারীর নামটিও পুরুষের উপর নির্ভর করে দিতে হবেএজন্যই খ্রিস্টান ধর্মে নারীর অধিকার হরনের সব ব্যবস্থাই করে দেওয়া হয়েছেকিছু কাল্পনিক গল্পের উপর ভিত্তি করে একজন স্বাধীন মানুষকে পরাধীন করে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে যে গ্রন্থে সেটি কোন ক্রমেই কোন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ হতে পারে নাপুরোটাই কাল্পনিক মিথ্যা কথা দিয়ে গ্রন্থটি সাজানো হয়েছেএটি কোন রুপেই কোন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত নয়

বাইবেল যে কিছু প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষদের ভ্রান্ত ধারণার প্রতিফল সেটা প্রমাণিত হয় এসব অবৈজ্ঞানিক কথাগুলো পড়েআমরা জানি আমাদের প্রতিটি দেহ কোষে জীব কোষের কেন্দ্রিয় উপাদান ডিএনএ (ডিঅক্সি রাইবো নিউক্লিক এসিড) থাকেএই জৈব যৌগটিই প্রতিটি জীবের সমস্ত বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রন করেপ্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ডিএনএ-এর গঠন ভিন্ন ভিন্ন হয়ফলে যদি কোন মানুষের কোষ থেকে অন্য কাউকে তৈরি করা হয় তবে সেই মানুষটির ডিএনএ- একই হবেঅর্থাৎ মানুষটিও পূর্বের মানুষের মতই হবে বা তারা একই মানুষ হবেনর মানুষের থেকে কখনও নারীকে সৃষ্টি করা সম্ভব নয়কারন যদি নরের দেহ থেকে নারীকে সৃষ্টি করা হয় তবে দুজনেরই ডিএনএ একই হবে অর্থাৎ দুজনই পুরুষ হবেফলে নর থেকে কখনও নারীকে সৃষ্টি করা সম্ভব নয়তাই আদমের দেহ থেকে হাওয়াকে সৃষ্টি করার গল্পটি পুরোপুরিই মিথ্যা
বিবর্তনবাদ অনুযায়ী ডিএনএ-এর বিবর্তনের মাধ্যমেই জীবজগতের প্রজাতির ভিন্নতা আসেএকই ভাবে নারী পুরুষের উৎপত্তিও ডিএনএ-এর পরিবর্তনের মাধ্যমে হয়েছে একটি বিবর্তনীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে
আর আমরা জানি প্রকৃতিতে নারীর জন্ম আগে হয়েছেকারণ নারীই পুরুষকে জন্ম দিয়েছে বিবর্তিত অবস্থায়ফলে পুরুষ থেকে নয় বরং নারী থেকেই পুরুষের জন্মঅর্থাৎ বাইবেলের দাবী বাস্তবতার সম্পূর্ণ বিপরীত
এজন্যই বাইবেলের প্রতি অন্ধবিশ্বাস রাখা কুসংস্কারাচ্ছন্ন খ্রিস্টানরা বিবর্তনকে মেনে নিতে চায় নাযদিও বিবর্তন একটি প্রমাণিত সত্য
আর বাইবেল একটি রুপকথার গালগপ্পের বই ছাড়া আর কিছুই নয়

.২৪
এই জন্য পুরুষ পিতামাতাকে ত্যাগ করে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং এইভাবে দুজনে এক হয়ে যায়|
ব্যাখ্যাঃ বাইবেল লেখক দাবী করছে যেহেতু পুরুষের বুকের হাড় থেকে নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাই পুরুষ তার বাবা মাকে ত্যাগ করে তার স্ত্রীর সাথে দৈহিক ভাবে মিলিত হয় এবং আলাদা ঘর বাঁধে আর যেহেতু নারী পুরুষের বুকের হাড় থেকেই তৈরি তাই পুরুষ নারীর সাথে দৈহিক মিলনের মাধ্যমে এক হয়ে যায়
বাইবেল জুড়ে কতই না বিনোদন! এক দেহ থেকে দুজনের সৃষ্টি তাই তাদের ঘর সংসার করে এক হয়ে যেতে হবে!    

.২৫
তখন নরনারী উলঙ্গ ছিল, কিন্তু সেজন্যে তাদের কোন লজ্জাবোধ ছিল না|
ব্যাখ্যাঃ বাইবেলের এই কথাটির সাথে বিজ্ঞানের সামান্য মিল দেখানো সম্ভব কারণ আমরা জানি মানুষের পূর্ব পুরুষটি শিপ্পাঞ্জির মতো প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়েছে আর শিপ্পাঞ্জি সহ সব প্রাণীই উলঙ্গ থাকে এবং এজন্য তাদের কোন লজ্জাবোধ কাজ করে না এমনটি যখন বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ প্রজাতির উৎপত্তি ঘটে তখনও শুরুর দিকে তারা উলঙ্গই ছিল এবং এজন্য তাদের কোন লজ্জাবোধ কাজ করেনি কারণ সভ্যতার উন্নতি শুরু হয়েছে তার অনেক পরে
যদিও বাইবেলের এই কথাটির সাথে বাস্তবতার সামান্য মিল দেখানো সম্ভব তবে বাইবেলে বর্ণিত এই কাহিনীগুলো পুরোপুরিই মিথ্যা এবং এগুলো রুপকথার গল্পের লিখিত বর্ণনা তাই একে কোন ভাবেই বাস্তব বলা যায় না বরং রুপকথার গল্পেও এর থেকে অনেক বেশী বাস্তব কথাবার্তা লেখা থাকে ফলে বাইবেলকে একটি রুপকথার বই হিসেবেই বিবেচনা করা যায়; এর বেশী কিছু নয়
তাই বাইবেল একটি প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষদের লেখা একটি প্রাচীণ ভ্রান্ত ধ্যান ধারণার বই এতে কোনই সন্দেহ নেই

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ খ্রিস্টানরা এমন ভ্রান্ত ধারণার বইকেই বিজ্ঞানময় কিতাব বলে দাবী করে তারা এটা করে পৃথিবীর সব ধর্মের কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসী আস্তিকদের মতই পৃথিবীর কোন ধর্মগ্রন্থ যেমন বিজ্ঞানময় হতে পারে না (যেহেতু সবগুলো প্রাচীণ ভ্রান্ত ধ্যান ধারণার মানুষদের অজ্ঞতা থেকে লেখা) ঠিক একই ভাবে বাইবেলও বিজ্ঞানময় নয় বরং বাইবেল পড়ে এটাই প্রমাণিত হয় বাইবেল কিছু প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষদের লেখা এক প্রচীণ ধ্যান ধারণার বই এটা প্রমানিত

1 comment:

  1. Your Affiliate Money Printing Machine is waiting -

    And getting it set up is as simple as 1..2..3!

    Here's how it works...

    STEP 1. Tell the system what affiliate products the system will advertise
    STEP 2. Add push button traffic (it takes JUST 2 minutes)
    STEP 3. See how the system explode your list and sell your affiliate products on it's own!

    Are you ready to start making money???

    Your MONEY MAKING affiliate solution is RIGHT HERE

    ReplyDelete