Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Friday, December 19, 2014

ইশ্বরের আরেক নাম অজ্ঞতা এবং অজ্ঞতার আরেক নাম ইশ্বর ।

ইশ্বর কী?
আস্তিকদের দাবী অনুযায়ী ইশ্বর হচ্ছে এমন অতি ক্ষমতাবান এক স্বত্বা (ইনটিটি) যে এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছে । আর তাই আস্তিকরা তাকে সৃষ্টিকর্তা বলে সম্বোধন করে থাকে । কিন্তু ইশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা শুধু সৃষ্টিই করে না বরং লালন-পালন বা পরিচালনাও করে । আর তাই সৃষ্টিকর্তাকে পালনকর্তা বা বিশ্বজগতের পরিচালক বলেও সম্বোধন করা হয় । আর সৃষ্টিকর্তার যে নানাবিদ অতিক্ষমতার বর্ননা মানুষ দেয়, সেসব আস্তিকরাই করে থাকে । অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার ধারনার সৃষ্টিকর্তা হচ্ছে মানুষ ।
কিন্তু বিজ্ঞ বা জ্ঞানী মানুষরা বলে থাকে সৃষ্টিকর্তা হচ্ছে অজ্ঞতার আরেক নাম ।
প্রাচীনকালে মানুষ যখন বিশ্বজগতের রহস্য সম্বন্ধে কিছুই জানতো না অর্থাত অজ্ঞ ছিল তখন তাদের এই অজ্ঞতাই সৃষ্টিকর্তার ধারণার সৃষ্টি করে । এবং অজ্ঞতাই সৃষ্টিকর্তাকে এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে ।

প্রাচীন কালের মানুষ জানতো না বৃষ্টি কেন হয় ? যারা সৎ স্বাধারণ মানুষ ছিল তারা সৎ ভাবে বলতো - আমরা জানি না কেন বৃষ্টি হয় !
কিন্তু এই প্রশ্বটিই কোন চতুর-অসৎ মানুষকে করা হলো, তখন সে মিথ্যে করে তার অজ্ঞতাকে লোকাতে সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে এলো; এবং তার অজ্ঞতাকে সৃষ্টিকর্তাকে দিয়ে ঢেকে দিল ।
কেন বৃষ্টি হয় এই প্রশ্নের উত্তরে চতুর-অসৎ লোকটি বললো - ইশ্বর বৃষ্টি নামায় বলে বৃষ্টি হয় ।
লক্ষ করুন চতুর-অসৎ লোকটি তার অজ্ঞতা- "আমি জানি না" কে ইশ্বর (ইশ্বর ঘটান) দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে বা লোকাচ্ছে । অর্থাৎ এখানে চতুর লোকের অজ্ঞতা লোকানোই 'ইশ্বর' হিসেবে কাজ করছে ।
প্রাচীন কালে মানুষ জানতো না সে কীভাবে সৃষ্টি হলো বা কোথা থেকে সে এসেছে । বিশ্বজগত কীভাবে সৃষ্টি হলো ? তখন সব সৎ মানুষ বললো - 'আমি জানি না ।'
কিন্তু যখনই এক চতুর-অসৎ এবং মিথ্যেবাদী মানুষের আবির্ভাব ঘটলো, তখন সে বললো- 'ইশ্বর মানুষকে এবং এই বিশ্বজগতকে সৃষ্টি করেছে ।'
যে প্রশ্বটির উত্তর সেই চতুর-অসৎ ব্যক্তিটির জানা ছিল না সেই প্রশ্বটির উত্তর সে মিথ্যে করে বললো- ইশ্বর মানুষকে এবং এই বিশ্বজগতকে সৃষ্টি করেছে । অর্থাৎ চতুর-অসৎ এবং মিথ্যেবাদী লোকটি 'আমি জানি না' এই অজ্ঞতাকে ইশ্বরকে বসিয়ে ঢেকে দিল বা লোকিয়ে ফেললো ।
আর এই অজ্ঞতা ঢেকে দেবার বা লোকাবার ফলেই সৃষ্টি হল কাল্পনিক ইশ্বরের ।
অর্থাৎ ইশ্বর হচ্ছে অজ্ঞতার আরেক নাম ।
তারপর থেকে মানুষ সমস্ত অজ্ঞতাকে ঢাকতে একের পর এক ইশ্বরকে বসাতে থাকলো-
কেন ঝড় তুফান হয় ?
সৎ অজ্ঞ- "আমি জানি না ।"
অসৎ মিথ্যেবাদী অজ্ঞ- "ইশ্বর ঝড়-তুফান তৈরী করেন । "

কেন আকাশ নীল ?
সৎ অজ্ঞ- "আমি জানি না ।"
অসৎ মিথ্যেবাদী অজ্ঞ- "ইশ্বর আকাশকে নীল করে তৈরী করেছেন বলে আকাশ নীল ।"

কেন মানুষ মারা যায়?
সৎ অজ্ঞ- "আমি জানি না ।"
অসৎ মিথ্যেবাদী অজ্ঞ- "ইশ্বর মৃত্যু ঘটান ।"

কেন এটা হয়? কেন ওটা হয় ?
সৎ অজ্ঞ- " আমি জানি না ।"
অসৎ মিথ্যেবাদী অজ্ঞ- "ইশ্বর ঘটান বলে হয় ।"

কেন এটা এমন ? কেন ওটা অমন ?
সৎ অজ্ঞ- "আমি জানি না ।"
অসৎ মিথ্যেবাদী অজ্ঞ- "ইশ্বর এভাবে ঘটান বলে এটা এমন, ওটা অমন ।"

এভাবে সব অজ্ঞতাকে ঢেকে দিতে অসৎ মিথ্যেবাদী অজ্ঞ ব্যক্তি বা ব্যাক্তিসমোষ্টি ইশ্বর নামের মিথ্যে কাল্পনিক এক অস্বিত্বের সৃষ্টি করেছে ।
আজও সেই অজ্ঞতার ফল স্বরুপ কিছু অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ সেই ইশ্বরকে এখনও বিশ্বাস করে চলেছে অন্ধভাবে ।
অজ্ঞতার অপর নাম ইশ্বর । আর তাই যেটারই সঠিক উত্তর মানুষের কাছে নেই, সেই অজ্ঞতার স্থানেই মানুষ ইশ্বরকে বসিয়ে দেয় ।
বিজ্ঞান আজ অনেক প্রশ্নেরই জবাব বের করে ফেলেছে । কােন কাল্পনিক ইশ্বরের দরকার পরেনি তাদের । ফলে দুর হয়েছে অজ্ঞতা । আর অজ্ঞতার সাথে সাথে দুর হয়েছে ইশ্বরের ধারনা । (কিছু অন্ধবিশ্বাসী মানুষ এখনও সেই অজ্ঞতাকে অর্থাৎ ইশ্বরকে বাঁচিয়ে রেখেছে তারা কুসংস্কারাচ্ছন্ন হওয়াতে )
অজ্ঞতার অপর নাম ইশ্বর বলেই মানুষ যে সব প্রশ্বের উত্তর এখনও বের করতে পারেনি সেসব অজ্ঞতার স্থানে ইশ্বরকে বসিয়ে দেয় । আর ইশ্বরের অস্তিত্ব খুজে বেড়ায় ।
সুতরাং ইশ্বর যে অজ্ঞতারই অপর নাম এতে আর কোন সন্দেহ থাকে না ।
অর্থাৎ ইশ্বরের আরেক নাম অজ্ঞতা এবং অজ্ঞতার আরেক নাম ইশ্বর, (আল্লাহ, ভগমান, গড প্রভৃতি) ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : মানুষ যেসব প্রশ্নের উত্তর আগে জানতো না সেসব জায়গায় ইশ্বরকে বসিয়ে ওই সব প্রশ্নের উত্তর খোজার চেষ্টা করেছে । কিন্তু বিজ্ঞান যখন সেই সব প্রশ্নের উত্তর বের করে ফেলেছে এবং এর ফলে অজ্ঞতা দুর হয়েছে, সাথে সাথে ইশ্বরের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে এবং মানুষ সেই কাল্পনিক মিথ্যে ইশ্বরের অন্ধবিশ্বাস থেকে বেড়িয়ে এসেছে । কিন্তু এর পরেও কিছু মানুষ আছে যারা অন্ধভাবে এবং কুসংস্কারের জন্য কাল্পনিক মিথ্যে ইশ্বরকে অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে আসছে । আর এরাই যেসব প্রশ্বের উত্তর এখনও মানুষ জানে না সেসব অজ্ঞতার জায়গায় ইশ্বরকে বসিয়ে মিথ্যে সান্তনা খুজে বেড়ায় । কিন্তু বিজ্ঞান একদিন এসব প্রশ্নেরও সঠিক উত্তর বের করে ফেলবে । আর তার সাথে সাথে কাল্পনিক ইশ্বরেরও বিদায় ঘটবে । কারন অজ্ঞতার আরেক নাম ইশ্বর; আর তাই অজ্ঞতার বিদায়ের সাথে সাথে কাল্পনিক ইশ্বরেরও বিদা্য় ঘটবে । আজ যেসব প্রশ্নের উত্তর মানুষ জানে না বিজ্ঞান একদিন সেসব প্রশ্বেরও উত্তর বের করে ফেলবে । ফলে যারা অজ্ঞতার মাঝে ইশ্বরকে দেখতে পায় বা খুজে পায়, তারা অজ্ঞতা বিদায় নেবার কারণে আর ইশ্বরের অস্তিত্ব খুজে পাবে না । কারণ তখন ইশ্বরের জন্মদাতা অজ্ঞতারই মৃত্যু ঘটবে ।

No comments:

Post a Comment