Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Thursday, March 26, 2015

কেন আমরা একেকজন একেকটি আলাদা আলাদা স্বত্বা যদিও আমরা একই রকম উপাদান থেকে তৈরী হয়েছি ?


আস্তিকরা বুঝতে পারে না যে, মানুষের আলাদা আলাদা স্বত্বা তৈরী হয় কি করে? তারা ভাবে যেহেতু প্রত্যেকটি মানুষই তৈরী হয় একই রকম পদার্থ থেকে, একই রকম মৌল থেকে এমনকি একই রকম ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন থেকে, তাই যদি এই সব পদার্থ, মৌল বা কনিকাগুলো থেকেই সব মানুষ তৈরী হয় এবং তাদের মধ্যকার রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলোও একই রকম হয় তাহলে আলাদা আলাদা মানুষ তৈরী হয় কি করে? সব মানুষ একই রকম উপাদান থেকে তৈরী এবং একই রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বেঁচে থাকে; তাহলে কোন উপাদান তাদেরকে আলাদা আলাদা করে দেয়কোন উপাদানের জন্য তারা আলাদা আলাদা স্বত্বা হিসেবে বিরাজ করে?

কথাটি সত্যি যে প্রত্যেকটি মানুষ একই রকম ইলেক্ট্রন, প্রোটন এবং নিউটনের সমন্নয়ে গঠিত একই রকম পদার্থ থেকে উৎপন্ন হয়কিন্তু সেই সব পদার্থের সমন্নয়ে গঠিত মানব দেহটি এক রকম নয়যদিও মানুষের ডিএনএ একই উপাদান দিয়ে তৈরী তবুও সেগুলো সম্পূর্নরুপে এক রকম নয়
প্রত্যেকটি মানুষের ডিএনএ-এর গঠন আলাদা আলাদাডিএনএ কোডিং আলাদা আলাদা হবার কারণে একেক জন মানুষ একেক রকমের হয়এবং ঠিক এই কারণেই একেকজন মানুষের মধ্যে একেক রকমের স্বত্বা তৈরী হয়আমার আপনার ডিএনএ-এর কোডিং-এর জন্য আমাদের কার্যকারিতা আলাদামস্তিষ্কের গঠনে সুক্ষ পার্থক্য আছেঠিক তেমনি একই রকম এনার্জি ব্যবহার করার পরেও আমাদের শরীর একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করেআর এই ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়াই একেক রকমের মানব স্বত্বার জন্ম দেয়


এটি বুঝার জন্য আমরা ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের উদাহরণ টানতে পারিপ্রত্যেকটি ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি তৈরী হয় একই রকম পদার্থ থেকেএইসব ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রগুলো স্বকৃয় হয় একই রকমের ইলেক্ট্রনের প্রবাহ থেকেকিন্তু সেই সব যন্ত্রে যখন তথ্য আদান প্রদান করা হয় তখন দেখা যায় একই রকম ইলেক্ট্রনিক্সের যন্ত্রে একই রকম ইলেক্ট্রন প্রবাহ করলেও ভিন্ন ভিন্ন তথ্য উৎপন্ন করা যায় এবং স্থানান্তরিত করা যায়
আরো সহজ করে বললে, যদি কোন একটি অডিও বা ভিডিও বার্তা এক যন্ত্র থেকে অন্য একটি যন্ত্রে পাঠানো হয়, তবে দেখা যায় ভিন্ন ভিন্ন অডিও বা ভিডিওগুলো তাদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রাখেএখানে একটা ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রে ভিডিওটিকে বা অডিওটিকে তথ্য আকারে পাঠানো হয়ফলে যখন সেই ভিডিওটিকে বা অডিওটিকে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পাঠানো হয় তখন এটির নির্দিষ্ট সংকেতকে ইলেক্ট্রিক এনার্জি ব্যবহার করে পাঠানো হয়সব ভিডিও বা অডিওর ক্ষেত্রে একই রকমের ইলেক্ট্রন থেকে উৎপন্ন একই রকমের শক্তিকে ব্যবহার করা হয়কিন্তু নির্দিষ্ট ভিডিও বা অডিওর ক্ষেত্রে সংকেত গুলো ভিন্ন ভিন্ন থাকে বলে সেই ভিডিও ও অডিওটি স্থানান্তরের পরেও ভিডিও বা অডিওগুলো একই বার্তা প্রকাশ করেযে ভিডিও বা অডিওকে স্থানান্তর করা হয়, সেই ভিডিও বা অডিওটিই ভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত হয়এখানে একই রকমের ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র থাকে, একই রকম ইলেক্ট্রন প্রবাহিত হয়ে একই রকমের শক্তি উৎপন্ন করে কিন্তু প্রতিটি ভিডিও বা অডিওর সংকেত গুলো আলাদা আলাদা থাকে বলে সেগুলো আলাদা আলাদা ভিডিও বা অডিও হিসেবেই প্রকাশিত হয়
ঠিক তেমনি যখন ভিডিও বা অডিও গুলো রেকর্ড করা হয় তখন ভিডিও বা অডিও রেকর্ডারটি একই রকমের পদার্থ দিয়ে তৈরী এবং একই রকমের ইলেক্ট্রনের প্রবাহের ফলে একই রকমের শক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে ভিডিও বা অডিওগুলো রেকর্ড করা হলেও ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও বা অডিও রেকর্ড হয়ে মেমরীতে জমা থাকেএখানে ভিডিও বা অডিও ভিন্ন ভিন্ন হলেও উপাদানগুলো থাকে একই রকমকিন্তু তার পরেও ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও বা অডিওগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্বত্বা হিসেবে থাকে
এর কারণ হলো ভিডিও বা অডিওগুলো রেকর্ড হবার সময় ভিন্ন ভিন্ন সংকেত ব্যবহৃত হয়ে সেই ভিডিও বা অডিও গুলো রেকর্ড হয়ফলে সেই সংকেতের পার্থক্যের জন্য একই ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র দিয়ে এবং একই রকম ইলেক্ট্রন প্রবাহিত করে সেই সংকেত গুলো তৈরী করা হলেও ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও বা অডিও ভিন্ন ভিন্ন সংকেত বহন করায় ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও বা অডিও হয়েই বিরাজমান থাকে  

ঠিক একই ভাবে মানব দেহ একই উপাদান দিয়ে তৈরী হলেও তাদের ডিএনএ কোডিং-এর পার্থক্যের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মানব স্বত্বার সৃষ্টি হয়
মানুষের ভিন্ন ভিন্ন স্বত্বা তৈরী হবার কারণ হলো ডিএনএ কোডিং-এর ভিন্নতাভিন্ন ভিন্ন ডিএনএ কোডিং-এর কারণে মানুষের শারীরিক গঠন ভিন্ন ভিন্ন হয়একই কারণে মানুষের মস্তিষ্কের গঠনও ভিন্ন ভিন্ন হয়ফলে একই রকম উপাদান দিয়ে সব মানুষ গঠিত হলেও এবং একই রকম এনার্জি ব্যবহার করা হলেও প্রত্যেকটি মানুষ আলাদা আলাদা আচরন করে, প্রত্যেকটি মানুষ আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করেঠিক একই কারণে মস্তিষ্কে প্রত্যেক মানুষের জন্য আলাদা আলাদা স্বত্বার সৃষ্টি হয়এই আলাদা আলাদা স্বত্বাগুলো হল মস্তিষ্কের ভিন্ন ভিন্ন কার্যকারীতার জন্য উৎপন্ন হওয়া আলাদা আলাদা রেজাল্ট বা ফলমানুষের মন বা তার নিজস্ব স্বত্বাটি হলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতার রেজাল্ট বা ফল
ফলে ভিন্ন ভিন্ন গঠনের মস্তিষ্ক ভিন্ন ভিন্ন স্বত্বা তৈরী করেআর তাই প্রত্যেকটি মানুষই আলাদা আলাদা স্বত্বা  

কিন্তু আস্তিকরা বিশ্বাস করে আত্মা নামের অস্বাভাবিক এক স্বত্বা বা উপাদান আছে যেটা মানুষকে জীবিত রাথে এবং ভিন্ন ভিন্ন আত্মা ভিন্ন ভিন্ন মানব স্বত্বার জন্ম দেয়কিন্তু বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের বাইরে এমন কোন কিছুরই সন্ধান পায়নি যেটা কোন মানুষকে জীবিত রাখে বা তার স্বত্বাটিকে তৈরী করেবিজ্ঞানীরা মানুষের বেঁচে থাকার জন্য তার জৈব রাসায়নিক গঠন এবং জৈবিক ক্রিয়াকেই কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেনএবং মানুষের মনের অস্তিত্বের জন্য মস্তিষ্ককেই দায়ী বলে রায় দিয়েছেনবিজ্ঞানীদের মতে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাই মানুষের মন তৈরী করে এবং তার ভিতরের ব্যক্তি স্বত্বাটি জাগ্রত হয়এই মন তৈরী হওয়া এবং ব্যক্তি স্বত্বা উৎপন্ন হওয়ার পিছনে তার শারীরিক জৈবিক গঠন এবং জৈবিক ক্রিয়াই দায়ী
অর্থাৎ জৈব রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরী মানব শরীরে ঘটিত রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে যে জীব স্বত্বাটির উৎপত্তি ঘটে সেটাই হলো মানব স্বত্বা
আর মানব স্বত্বা তৈরী হবার পিছনে অন্য কোন কাল্পনিক উপাদানের প্রয়োজন হয়নিমানুষের জৈব রাসায়নিক উপাদানগুলোই মানব স্বত্বাগুলোকে তৈরী করেছেকোন অলৌকিক আত্মার দরকার হয়নি
আত্মার ধারণা হলো মানুষের অজ্ঞতার কারণে কল্পনা থেকে তৈরী হওয়া ভ্রান্ত ধারণা
মানুষ তার কল্পনা শক্তি খরচ করে অজানা জীবন রহস্য উদঘাটন করার জন্য যে কাল্পনিক আত্মার ধারণা তৈরী করেছে সেটির বাস্তব কোন ভিত্তি নেইএটি প্রাচীণ কালের মানুষদের স্বল্প জ্ঞান দিয়ে জীব রহস্য উদঘাটনের একটি নমুনাএতে বোঝা যায় প্রাচীন কালের মানুষও জীবন কি, কোথা থেকে কিভাবে জীবন তৈরী হয় এসব প্রশ্ন সেই প্রাচীন মানুষদেরকেও ভাবিয়ে তুলতোকিন্তু তাদের উপযুক্ত জ্ঞান ছিল না বলে তারা নিজেদের মতো করে জীবনের ব্যাখ্যা করার জন্য আত্মার ধারণার সৃষ্টি করেছে 
কিন্তু বাস্তব জগতে আত্মা বলে কিছু নেইবিজ্ঞানীরা প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে, জীব তার জৈব রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলেই জীবন তৈরী করেছেকোন আত্মার উপস্থিতি জীব দেহে নেইএবং মানব মন বা মানব স্বত্বাটি তৈরী হয়েছে মানুষের শারীরিক জৈব ক্রিয়াকলাপের ফলেইমস্তিষ্কে ঘটা রাসায়নিক ক্রিয়া বিক্রিয়াই মানব মনকে তৈরী করে, তৈরী করে মানব স্বত্বাটিকে

কম্পিউটারের উদাহরণ দিয়ে বিষয়টিকে আরো সহজ ভাবে উপস্থাপন করা যাকপ্রত্যেকটি কম্পিউটার একই রকমের উপাদান দিয়ে গঠিতএবং একই রকম বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে এগুলো চলেকিন্তু কম্পিউটারকে পরিচালনা কারী সফ্টওয়ার বা প্রোগ্রামগুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়যদিও এগুলো একই রকমের উপাদান এবং এনার্জি দিয়ে পরিচালিত হয়কিন্তু এদের কোডিং-এর ভিন্নতার জন্য একেকটি সফ্টওয়ার বা প্রোগ্রাম আলাদা আলাদা বৈশিষ্টের হয়ফলে একই রকম উপাদান দিয়ে তৈরী হওয়া এবং একই রকম এনার্জি দিয়ে চলার ফলেও সফ্টওয়ারগুলো আলাদা আলাদা রকম হয় কারণ ভিন্ন ভিন্ন সফ্টওয়ার বা প্রোগ্রামগুলো ভিন্ন ভিন্ন কোডিং সংকেত দিয়ে তৈরী করা হয়

প্রত্যেকটি মানুষের ডিএনএ আলাদা আলাদা (কোডিং বিশিষ্ট্য)ফলে প্রত্যেকটি মানুষ আলাদা আলাদা গঠনের, আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের এবং আলাদা আলাদা চরিত্রেরআলাদা আলাদা ডিএনএ-এর জন্যই মানুষ আলাদা আলাদা রকমের হয়আর আলাদা আলাদা ডিএনএ-এর জন্যই আলাদা আলাদা গঠণের মস্তিষ্ক তৈরী হয়মস্তিষ্কের গঠনের পার্থক্যের জন্যই মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ভিন্ন ভিন্ন হয়আর ভিন্ন ভিন্ন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা আলাদা আলাদা হবার কারণে আলাদা আলাদা মন তৈরী হয় এবং এজন্যই আলাদা আলাদা মানুষের আলাদা আলাদা ব্যক্তি স্বত্বা তৈরী হয়যদিও প্রত্যেকটি মানুষ একই রকমের উপাদান থেকে তৈরী তবুও প্রত্যেকটি মানুষের গঠনের ভিন্নতার জন্যই আলাদা আলাদা ব্যাক্তি স্বত্বা তৈরী হয়
কোন আত্মার দরকার হয়না ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি স্বত্বা তৈরী করার জন্যজৈব পদার্থই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে গঠিত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি স্বত্বা তৈরী করে
আর তাই প্রত্যেকটি মানুষই একেকজন একেকটি আলাদা আলাদা স্বত্বা যদিও সবাই একই রকম উপাদান থেকে তৈরী হয়েছে

প্রশ্ন আসতে পারে যে, যদি আত্মা নাই থাকে এবং জৈব রাসায়নিক ক্রিয়াই মানব স্বত্বাকে অস্তিত্বশীল করে তুলে তবে মানুষের আলাদা আলাদা স্বত্বা তৈরীর ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তার ভুমিকা কি?
এর উত্তরে বলা যায়, সৃষ্টিকর্তার কোন ভুমিকাই নেই মানুষের আলাদা আলাদা স্বত্বা তৈরীর ক্ষেত্রেপ্রত্যেকটি মানুষের জন্ম হয় দুটি ভিন্ন ডিএনএ-এর জৈব রাসায়নিক মিলনের ফলে নতুন ডিএনএ তৈরীর মাধ্যমেদুইটি ভিন্ন ডিএনএ-এর একটি আসে বাবার কাছ থেকে এবং অন্য ডিএনএটি আসে মার কাছ থেকেপ্রত্যেকটি ডিএনএ মইয়ের মতো দুই অংশ নিয়ে গঠিতকিন্তু সন্তান জন্ম দেবার সময় মই আকৃতির ডিএনএ মাঝ বরাবর ভেঙ্গে যায় এবং বাবা ও মা উভয়ের ডিএনএ অর্ধেক অর্ধেক হয়ে যায়যখন এই অর্ধেক অর্ধেক ডিএনএ পরস্পরের কাছে আসে তখন এই ভিন্ন ভিন্ন ডিএনএ-এর অর্ধেক অংশ দুটো মিলিত হয়ে একটি পুর্ণাঙ্গ নতুন ডিএনএ তৈরী করেফলে সম্পূর্ণ নতুন কোডিং-এর একটি ডিএনএ তৈরী হবার মাধ্যমে একটি নতুন মানব স্বত্বার সৃষ্টি হয়এভাবেই কোন সৃষ্টিকর্তার কোন রুপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই নতুন নতুন মানব স্বত্বা সৃষ্টি হয় সম্পূর্ন জৈব রাসায়নিক ক্রিয়ার মাধ্যমেআর তাই মানব স্বত্বা সৃষ্টিতে সৃষ্টিকর্তা নামক কাল্পনিক স্বত্বার কোন দরকারই হয়নি কখনও
ঠিক যেভাবে জড় অজৈব থেকে জড় জৈব তৈরী হয়েছে এবং জড় জৈব থেকে জীব সৃষ্টি হয়েছে কোন সৃষ্টিকর্তার সাহায্য ছাড়াই, আর অন্য জীব স্বত্বা থেকে মানব স্বত্বার সৃষ্টি হয়েছে সম্পূর্ণ জৈব রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে কোন কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার সাহায্য ছাড়াই; ঠিক একই ভাবে এক মানব স্বত্বা থেকে আরেক ভিন্ন মানব স্বত্বার সৃষ্টি হয় কোন সৃষ্টিকর্তার হস্তক্ষেপ ছাড়াই
তাই মানব স্বত্বা সৃষ্টিতে সৃষ্টিকর্তার কোন ভুমিকাই নেই
মানব স্বত্বা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক নিয়মেই সৃষ্টি হয়েছে জীব বিজ্ঞানের সুত্র মেনেকোন সৃষ্টিকর্তার দরকার হয়নি একটুও  

বি.দ্র.: ভিডিও বা অডিওগুলোকে কপি করা যায়অর্থাৎ একই ভিডিওকে কয়েকশ বা কয়েক হাজার কপি করা যায় কিন্তু তাদের কোডিং একই থাকে বলে কপিগুলোর গুনাগুন একই থাকেকম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ফাইলকে কপি করে হাজার হাজার কপি করে রাখা যায়কিন্তু সব ক্ষেত্রেই প্রত্যেকটি কপির কোডিং হুবহু একই রকম হওয়ায় প্রতিটি একই স্বত্বার কপি বা ডুপ্লিকেট তৈরী হয়কিন্তু সেগুলোর আচরণ বা স্বত্বা একই রকম থাকে
ঠিক একই ভাবে যদি মানুষকে ক্লোন করে ওরকম অনেকগুলো কপি করা হয়, তবে কি সেই ক্লোন মানুষগুলোও একই রকম মানুষ হবে? নাকি তারা ভিন্ন ভিন্ন স্বত্বা তৈরী করবে?
বিষয়টি অনেক জটিলকিন্তু সহজ করে বললে, মানুষের ক্লোন করে কপি মানুষ সৃষ্টি করলেও তারা আসলে একই মানুষ হবেকিন্তু সেই মানুষটি ভিন্ন ভিন্ন স্বত্বাতে বিরাজ করবে কিন্তু তাদের স্বত্বাগুলোর মধ্যে কোন পার্থক্য থাকবে নাঅর্থাৎ একই রকম উপাদান দিয়ে তৈরী হওয়া ভিন্ন ভিন্ন ডিএনএ কোডিং-এর ভিন্ন ভিন্ন মানব স্বত্বাগুলোকে যখন ক্লোন করা হবে তখন একই মানুষের স্বত্বাটিও কপি হবেসেই ক্লোন মানুষগুলো বা কপি মানুষগুলো আসলে একই স্বত্বার প্রতিরুপ; একই স্বত্বার কপি স্বত্বা বা ডুপ্লিকেট স্বত্বাকিন্তু সেই স্বত্বাগুলোও আলাদা আলাদা স্বত্বা হিসেবে বিরাজ করবে যদিও তারা একই স্বত্বাএক্ষেত্রে একই মানুষ দুটো হবে, ঠিক তেমনি একই স্বত্বা দুটো হবে কিন্তু তারা আসলে একই স্বত্বাএকটি আরেকটির কপি বা ডুপ্লিকেট স্বত্বা হিসেবে বিরাজ করবেএকই স্বত্বা হলেও প্রত্যেকটি আবার আলাদা স্বত্বা হিসেবে বিরাজ করবে
ঠিক অডিও, ভিডিও বা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ফাইলের মতোই

No comments:

Post a Comment