Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Friday, April 1, 2016

আল কুরআনঃ ইহা একটি কৌতুক গ্রন্থ, গল্প গ্রন্থ, কবিতা গ্রন্থ, সন্ত্রাসী গ্রন্থ, নাকি কাম গ্রন্থ? (পর্ব ৪)



মুসলমানরা দাবী করে তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কুরআন স্বয়ং আরবীয় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে। এবং এটি দেড় হাজার বছর ধরে অবিকৃত অবস্থায় আছে। তারা কোন প্রমাণ ছাড়াই অন্ধের মতো বিশ্বাস করে যে কুরআনের প্রতিটা কথা আরবীয় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে। এই পর্বটিতে কুরআনের প্রতিটি বাক্যকে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে এর গঠন শৈলী বা এর অন্তর্নিহীত কথাগুলো মানুষের দ্বারা লেখা সম্ভব নাকি এটি একমাত্র কোন সর্বজ্ঞানী সৃষ্টিকর্তাই লিখতে পারে। মোট কথা কুরআনের বাক্যগুলোর অর্থ বিশ্লেষণ করে বা ব্যাখ্যা করে দেখা যে কুরআন আসলে কি বলেছে এবং এর বাস্তব তাৎপর্যই বা কি? বাস্তবতার নিরীখে বিচার বিশ্লেষণ করে দেখাটাই এই পর্বটির উদ্দেশ্য। এই পর্বে সমগ্র কুরআন পর্যায়ক্রমে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।

গত পর্বের পর থেকে.... 

আয়াত ১৬

"এরা তারাই, যারা সুপথের পরিবর্তে বিপথকে ক্রয় করেছে, সুতরাং তাদের বাণিজ্য লাভজনক হয়নি এবং তারা সঠিক সরল পথে পরিচালিত হয়নি।"

ব্যাখ্যাঃ মুহাম্মদের সময়ে আরবের মানুষ কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে নানা রকমের ব্যবসা বাণিজ্যের আসর বসাতো। হজ্জের সময়টি ছিল তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের সব চেয়ে উত্তম সময়। বর্তমানে যেমন সৌদি আরব হজ্জের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে (এবং সে জন্য তারা পৃথিবীর গরীব দেশগুলোকে মসজিদ মাদ্রাসা তৈরি করে তাদের উপার্জনের মাধ্যমটাকে সচল রাখে ) অনেকটা সেরকম।

কুরআনের লেখক অর্থাৎ আল্লাহ, আরবের পৈত্তলিক ধর্মকে এবং মুনাফেকদেরকে (বা কাফেরদেরকে) তাদের ধর্মবিশ্বাসকে এবং তারা কোন ধর্ম মানবে কোন ধর্ম মানবে না সেটাকে ব্যবসার সাথে তুলনা করেছে। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ধর্মবিশ্বাসটা আসলে একটা ব্যবসা। এ জন্যই যখন কাফেররা এবং মুনাফেকরা মুহাম্মদকে নবী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। তারা মুহাম্মদের ধর্মকে অস্বীকার করে বা মেনে না নিয়ে তাদের নিজস্ব ধর্মে অটল থেকেছে। বা মুনাফেকরা মুখে মুহাম্মদকে নবী বলে স্বীকার করলেও মনে প্রাণে আসলে তাকে নবী বলে মেনে না নিয়ে তাদের নিজেদের ধর্ম বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়েছে। আর এটাকেই মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ একটি ব্যবসা বলে উল্লেখ করেছে। (এখন বুঝতে পারছি ইসলামী পন্ডিতরা কেন ধর্মকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে এবং ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে।)

সুতরাং দেখতে পাচ্ছি কুরআনের লেখকের কাছে অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ধর্ম বা ধর্মবিশ্বাসটা আসলে একটি ব্যবসা। এজন্যই সে মুনাফেকদের এবং কাফেরদেরকে বলছে তারা মুহাম্মদকে না মেনে তাদের নিজেদের বিশ্বাসকে ধরে রেখে (কাফেরদের ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে এবং মুনাফেকদের ক্ষেত্রে গোপনে গোপনে) যে ধর্মবিশ্বাসময় ব্যবসা বাণিজ্য করেছে তাতে তারা লাভজনক হয়নি উপরন্তু তারা সঠিক পথে পরিচালিত হয়নি।

তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি আল্লাহর কাছে ধর্ম বিশ্বাসটা একটা ব্যবসা এবং যারাই মুহাম্মদকে নবী মানবে না অর্থাৎ মুসলমান হবে না আল্লাহর মতে তারাই ধর্মব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং ভূল পথে পরিচালিত হবে।

কুরআনের এই আয়াতটি পরে আমার বলতে ইচ্ছে করছে "হে আল্লাহ সুবাহানু তায়ালা, তুমহারা জবাব নেহী!"

আয়াত ১৭

"এদের দৃষ্টান্ত ব্যক্তির দৃষ্টান্তের ন্যায় যে অগ্নি প্রজ্বলিত করলো, অতঃপর অগ্নি যখন তার পার্শ্ববর্তী সমস্ত স্থান আলোকিত করলো, তখন আল্লাহ তাদের আলো ছিনিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ছেড়ে দিলেন, সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায় না।"

"তারা বধির, মূক অন্ধ অতএব তারা (সঠিক পথের দিকে) প্রত্যাবর্তন হবে না।"

ব্যাখ্যাঃ যখন মুহাম্মদ শত চেষ্টা করেও আরবের বুদ্ধিমান জ্ঞানী মানুষদেরকে বুঝাতে পারলো না যে সত্যিই সে নবী এবং তার ফলে তাদের অনেকে তাকে সরাসরি মিথ্যাবাদী বলে তাকে প্রত্যাখ্যান করলো অনেকে তাকে মুখে নবী হিসেবে স্বীকার করলেও মন থেকে তারা তাকে নবী হিসেবে স্বীকার করলো না। (এর একটা কারণ মুহাম্মদ তার নবুয়তের কোনই প্রমাণ দিতে পারেনি।) এজন্য সে তাদের প্রতি অর্থাৎ কাফের মুনাফেকদের প্রতি রুষ্ট হলো। ফলে আল্লাহ উপরিউক্ত আয়াতের মাধ্যমে সেই সব কাফের মুনাফেকদেরকে বধির (কানে শুনে না), মূক (কথা বলতে পারে না) এবং অন্ধ (চোখে দেখে না) বলে গালি দিচ্ছে। অর্থাৎ মুহাম্মদ আল্লাহর দাবী অনুযায়ী যারাই মুহাম্মদকে নবী মানে না তারাই হলো বধির, মূক অন্ধ অর্থাৎ শারীরিক প্রতিবন্ধি। মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা বলছে কাফের মুনাফেকরা হচ্ছে এমন লোকের মতো যে আলো জ্বালালো অন্ধকার দূর করার জন্য ঠিক তখনই আল্লাহ আলো নিভিয়ে দিয়ে তাদেরকে অন্ধকারে ফেলে দিলো। আর এভাবেই তারা আলোহীন বধির, মূক অন্ধ হয়ে অবিশ্বাসী হয়ে রইলো। ফলে তারা ইমান আনলো না। এই আয়াতটির মাধ্যমে মুহাম্মদ আল্লাহ দাবী করেছে যে অবিশ্বাসীরা বা মুনাফেকরা কখনই ঈমান আনবে না কারণ তারা বিশ্বাসে অন্ধ, বোবা এবং কালা অর্থাৎ প্রতিবন্ধি।

বস্তুত পক্ষে মুহাম্মদের মনের কষ্টকে লাঘব করার জন্য আল্লাহ এই আয়াত বাণিয়েছে তাকে শান্তনা দিয়ে বলছে যে কাফেররা মুনাফেকরা হলো প্রতিবন্ধির মতো ফলে তারা কখনই ঈমান আনবে না।

পক্ষান্তরে বলা যায় মুহাম্মদ নবীয়তীর কোন প্রকার প্রমাণ না দিতে পেরে নিজেকে এবং তার অনুসারীদেরকে শান্ত রাখার জন্য এই আয়াতটি আল্লাহর মাধ্যমে নাযীল করেছেন।

আমরা জানি অবিশ্বাসীরা জ্ঞানে এবং মানে মুসলমানদের থেকে অনেক উন্নত। সে সময়েও তারা মুহাম্মদের চেয়ে জ্ঞানে উন্নত ছিল। সুতরাং তারা কখনই বধির, মূক বা অন্ধ নয় এবং কখনও ছিলও না। তাই এই আয়াতের কোনই ভিত্তি নেই। বরং অবিশ্বাসীদেরকে অর্ধ-বিশ্বাসীদেরকে হীন করতে (গালাগালি স্বরুপ) উক্ত আয়াতের আমদানী করেছে মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ।

 

আয়াত ১৯ ও ২০

"অথবা আকাশ হতে পানি বর্ষণের ন্যায় যাতে অন্ধকার, গর্জন ও বিদ্যুত রয়েছে, তারা বজ্রধ্বনি বশতঃ মৃত্যু ভয়ে তাদের কর্ণসমুহে স্ব-স্ব অঙ্গলি গুঁজে দেয় এবং আল্লাহ অবিশ্বাসীদের পরিবেষ্টনকারী।"

"যেন বিদ্যুত তাদের দৃষ্টি হরণ করে ফেলবে, যখন তিনি তাদের জন্য একটু আলো (বিদ্যুত) প্রজ্জ্বলিত করেন তখন, তাতে তারা চলতে থাকে এবং যখন তাদের উপর অন্ধকারাচ্ছন্ন করেন তখন তারা দাঁড়িয়ে থাকে এবং যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন নিশ্চয় তাদের শ্রবণ শক্তি ও তাদের দর্শন শক্তি হরণ করতে পারেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর শক্তিমান।"

 

ব্যাখ্যাঃ ঝড়ের রাতে যখন প্রচন্ড বৃষ্টি নামে আকাশের মেঘের জন্য রাত হয়ে যায় ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার এবং মাঝে মাঝে বিদ্যুত চমকায়। সেই আলোতে মানুষ যতটুকু দেখতে পায় ততটুকু দৃষ্টি দিয়ে পথ চলে। বজ্রের প্রচন্ড শব্দে তারা মৃত্যু ভয়ে ভীত হয়ে উঠে। তারা ভাবে এই বুঝি একটি বজ্র এসে তাদেরকে মেরে ফেলবে। ভীত সন্ত্রস্ত মানুষটি কানে আঙ্গুল দিয়ে শব্দের তীব্রতা থেকে বাঁচতে চায় এবং বিদ্যুৎ চমকানোর আলো পথ চলে বাড়িয়ে যেতে থাকে।

এরকম একটি অসহায় মানুষের সাথে মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা কাফের ও মুনাফেকের উদাহরণ দিয়েছে। আল্লাহ দাবী করেছে কাফের ও মুনাফেকরা হলো সেই অসহায় মানুষটির মতো যে বিপদে পড়েও মুহাম্মদের সৃষ্টিকর্তাকে মানে না এবং তার কাছে সাহায্য চায় না। তারা শত বিপদেও মুহাম্মদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে মাথা নত করে না। এজন্য আল্লাহ বলেছে, কাফের বা মুনাফেকরা ভাবে যে তাদের চারপাশে আল্লাহ নেই। কিন্তু আসলে আল্লাহ তাদের চারপাশে রয়েছে। এবং তারা চাইলে সে তাদেরকে বাঁচাতে পারবে। কিন্তু তারা সেটা চায় না। কারণ তাদেরকে আল্লাহ বোবা, মূক ও অন্ধ করে রেখেছে। আল্লাহ বলেছে সে ইচ্ছে করলেই তাদেরকে অর্থাৎ মুনাফেক বা কাফেরকে বধির বা অন্ধ করে দিতে পারে। আল্লাহ নিজেই নিজেকে সর্বশক্তিমান বলে দাবী করছে।

মোট কথা মুহাম্মদ কাফের মুনাফেককে একজন ঝড়ের রাতে অসহায় মানুষের সাথে তুলনা করে বলেছে তারা যেমন ঝড়ের রাত দেখেও আল্লাহকে মানে না অর্থাৎ মুহাম্মদকে নবী বলে মানে না ঠিক তেমনি কাফের মুনাফেকও তার উপর অন্ধ আনুগত্য স্বীকার করে না।

এতো এতো গালাগালি, হুমকী দেবার কি প্রয়োজন সেটা বুঝতে পারছি না! মুহাম্মদ কিছু প্রমাণ দিলেই তো হয়ে যেতো! সেটা না করে মুনাফেক কাফেরদেরকে বোবা, ঠসা, আর অন্ধ বলে গালাগালি করার কী দরকার? আর তাদের সাথে ঝড়ের রাতের অসহায় মানুষের উদাহরণ দিয়ে লাভ কি? তারাতো মুহাম্মদকে নবী হিসেবেই মানে না তাহলে তারা মুহাম্মদের আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে কেন?

এই আয়াতের সব থেকে হাস্যকর দিকটা হচ্ছে যদি আল্লাহ সেই ঝড়ের রাতের অসহায় মানুষটির আশে পাশেই থাকে তবে সে তাকে সাহায্য করে না কেন? উপরন্তু তাকে ভয় দেখাচ্ছে সে ইচ্ছে করলেই তার শ্রবণশক্তি ও দেখার শক্তি ছিনিয়ে নিয়ে সেই মানুষটিকে মৃত্যু মুখে ফেলে দিতে পারে। অথচ নির্লজ্জ্বের মতো নিজে এসে কোন প্রমাণ দিতে পারে না। তাহলে যদি কাফির বা মুনাফেকরা আল্লাহ ও মুহাম্মদকে নবী হিসেবে না মানে তবে তাতে কি কাফের মুনাফেকদেরকে এভাবে গালাগালি করে তাদেরকে ভয় দেখাতে হয়?

আসলে এই আয়াতটা আল্লাহ মুহাম্মদকে এবং তার অন্ধ অনুসারীদেরকে শান্তনা স্বরুপ বাণিয়েছে যাতে মুহাম্মদ নিজে ও তার অন্ধ অনুসারীরা মনে না করে যে তারা সত্য পথে আছে মুহাম্মদকে নবী হিসেবে না মেনে। এটাই এই আয়াতের উদ্দেশ্য।

আয়াত ২১

"হে মানব মন্ডলী! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত কর যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা ধর্মভীরু (পরহেজগার) হও।"

ব্যাখ্যাঃ এতোক্ষণ কাফের মুনাফেকদেরকে গালাগালি করে এবং হুমকী ধামকী দেখিয়ে এখন মুমিনদেরকে বলছে মুমিনরা অর্থাৎ মুহাম্মদের অন্ধ অনুসারীরা যেন আল্লাহর ইবাদত করে। আল্লাহ দাবী করছে যে আল্লাই মুমিনদেরকে এবং তাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছে। যেহেতু কাফেররা এবং মুনাফেকরা (মন থেকে) আল্লাহর ইবাদত করবে না তাই ধরে নেওয়া যায় আল্লাহ মুহাম্মদের অন্ধ অনুসারী অর্থাৎ মুমিনদেরকেই তার ইবাদত করতে বলেছে। শুধু তাই নয় সে দাবী করেছে মুমিনদেরকে এবং তাদের পূর্ববর্তীদেরকে নাকি সে নিজেই সৃষ্টি করেছে।

হলেও হতে পারে মুমিনদেরকে আল্লাহই সৃষ্টি করেছে! তবে মানুষকে যে আল্লাহ সৃষ্টি করেনি সেটা ১০০% সত্য। কারণ বিবর্তনের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত সরল ও আদি প্রজাতির প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়ে এই পৃথিবীতে মানুষের জন্ম হয়েছে এবং মানুষ তার মাতা পিতার মাধ্যমে পৃথিবীতে বংশ বিস্তার করেছে। কোন সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে সৃষ্টি করেনি। আর এটার প্রমাণ আমরা পাই বিজ্ঞানের কাছ থেকে। মুমিনদেরকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছে এটা সত্য হলেও হতে পারে। (কারণ তাদের অনেকেরই আচার আচরণ অনেক ক্ষেত্রেই স্বাধারণ মানুষের থেকে আলাদা। )

আয়াত ২২

"যিনি তোমাদের জন্যে যমীনকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরুপ করেছেন এবং যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তার দ্বারা তোমাদের জন্যে উপজীবিকা স্বরুপ ফলপুঞ্জ উৎপাদন করেন, অতএব তোমরা জেনে শুনে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না।"

ব্যাখ্যাঃ ইতিপর্বে আল্লাহ নানা রকমের তথ্য দিয়ে মুহাম্মদকে ব্যাখ্যা করেছে কিভাবে ঈমানদার হওয়া যায়, কে মুমিন এবং কে কাফের বা মুনাফেক। তাদের কি কি পরিণতি ও তাদের অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে আল্লাহ মুহাম্মদকে জ্ঞান দিয়েছে। কিন্তু এই আয়াতে সে মুহাম্মদকে পৃথিবী ও আকাশ এবং বৃষ্টি পদ্ধতি ও তা দিয়ে গাছ থেকে ফল উৎপাদন সম্পর্কে জ্ঞান দিয়েছে। কিন্তু কথা হচ্ছে এই জ্ঞানই কি আল্লাহর জ্ঞান? যদি তাই হয়ে থাকে তবে আমাকে স্বীকার করতেই হবে আল্লাহর জ্ঞানের পরিধি খুব একটা ভালো নয়। এমনকি পৃথিবী ও আকাশ সম্পর্কে জ্ঞানই নিম্নমানের।

আজ আমরা বিজ্ঞানের কল্যাণে জানতে পেরেছি যে পৃথিবী হচ্ছে গোলক আকারের পাথরে মতো। বলতে গেলে পৃথিবী হলো গোলক আকারের দানব আকৃতির পাথর। কিন্তু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুহাম্মদকে জ্ঞান দিচ্ছে এটা বলে যে, পৃথিবী হলো শয্যা বা বিছানার মতো। অর্থাৎ পৃথিবীর আকৃতি হচ্ছে শয্যা বা বিছানার মতো সমতল। পৃথিবীর মতো এমন একটি বৃহৎ গোলাকার পাথর খন্ডকে কি দেখে আল্লাহর বিছানার মতো সমতল মনে হলো সেটি ভেবে বের করা আমার মতো স্বাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। হতে পারে আল্লাহ মুহাম্মদকে ভূল জ্ঞান দিচ্ছিলো অথবা হতে পারে আল্লাহ নিজেই জানে না যে আসলে পৃথিবী সমতল বিছানার মতো নয়। (আল্লাহকে মনে হচ্ছে জাকির নায়েকের মতো যে বিজ্ঞান সম্পর্কে খুব সামান্য জ্ঞান রাখে কিন্তু মুসলমানদেরকে ভূল ভাল বিজ্ঞান শিখিয়ে তাদের কাছে মহা বিজ্ঞানী সাজে।)

আবার আল্লাহ বলছে আকাশ নাকি ছাদ! পৃথিবীর বুকে দাড়ানো একজন মানুষের কাছে অবশ্য আকাশকে ছাদের মতই দেখায়। তাই একজন মানুষ মনে করতেই পারে যে আকাশ হলো একটি ছাদ। কিন্তু মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা কি দেখে আকাশকে ছাদ বললো বুঝতে পারছি না। আবার দাবি করছে আল্লাহ নিজেই পৃথিবীকে বিছানার মতো সমতল বানিয়েছে এবং আকাশকে ছাদ বানিয়েছে। বিজ্ঞান সম্পর্কে আল্লাহর জ্ঞান যে গ্রামের অশিক্ষিত মূর্খ মানুষের মতো তা নিশ্চিত বুঝতে পারছি। তাই সে মুহাম্মদকে মিথ্যা জ্ঞান দিয়েই যাচ্ছে একের পর এক (একদম জাকির নায়েকের মতো- যে বোকাসোকা মুসলমানদেরকে বিজ্ঞান সম্পর্কে মিথ্যা ও ভূলভাল জ্ঞান দিয়ে থাকে হরহামেশাই)।

আমরা আজ বিজ্ঞানের মাধ্যমে খুব ভালো ভাবেই জানি আকাশ কোন ছাদ নয় (যদিও মানুষের কাছে আকাশকে ছাদ বলেই মনে হয়)। আকাশ হলো গ্যাসীয় পদার্থ দিয়ে তৈরী একটি গ্যাসীয় আবরণ; যাতে সূর্যের আলো বিক্ষেপিত হয়ে নীল রংয়ের একটি অবয়ব তৈরী করে। আর এটি একটি আলোর ফলে উৎপন্ন মস্তিষ্কের একটি প্রতিচ্ছবি মাত্র। এটি কোন ক্রমেই কোন ছাদ নয়। যেটা আল্লাহর হয়তো জানা ছিল না। অথবা জানলেও ভূল ভাবে জানে (জাকির নায়েকের মতো)। অথবা সে আসলে জানতোই না পৃথিবী ও আকাশ আসলে কি রকম!

কিন্তু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দাবী করেছেন সে নিজেই নাকি বৃষ্টি পাঠায় (যা আকাশ থেকে পড়ে) এবং তা দিয়ে নানা রকমের ফলমুল উৎপাদন করে (কৃষকরা খামোখাই পরিশ্রম করে মরে। গাধারা জানেই না আল্লাহই বৃষ্টির মাধ্যমে ফলমূল সৃষ্টি করে।)।

আবার আল্লাহ মানুষকে বলছে মানুষ যেন জেনে শুনে আল্লাহর সাথে কোন সৃষ্টিকর্তা বা দেবতার শরীক না করে। তৎকালীন আরব সমাজে মানুষ বহু ঈশ্বরে বিশ্বাস করতো অর্থাৎ আল্লাহর শরীক বানাতো। কিন্তু আল্লাহ কিছু মিথ্যা ও ভূলভাল তথ্য দিয়ে দাবী করছে সে নাকি বৃষ্টি পাঠিয়ে ফলমূল তৈরি করে তাই কেউ যেন তার শরীক তৈরি না করে।

বলে রাখা ভালো মুহাম্মদ বা আল্লাহ এদের কেউই কিন্তু কোন প্রকারের প্রমাণ দেয়নি। উপরন্তু আল্লাহ কিছু ভূলভাল তথ্য দিয়ে দাবি করছে যাতে কেউ তার শরীক খাড়া না করায়। অদ্ভূত দাবী। মানুষ কোন প্রকারের প্রমাণ ছাড়া কিভাবে নিশ্চিত হবে যে আল্লাহ আসলে একজনই। মুহাম্মদ যে সব কিছুই সত্য বলেছে তারই বা প্রমাণ কি? এরপরেও আরবের তৎকালীন মানুষরা কিভাবে নিশ্চিত হবে আল্লাহ একজনই নাকি বহুজন? তারাতো কোন আল্লাহ বা দেবতাকেই দেখেনি। মুহাম্মদ শুধু তার মুখে দাবী করেছে এবং কিছু কুরআনের আয়াত বলেছে যে সেই আল্লাহর নবী এবং আল্লাহ একজনই। সে অবস্থায় আরবের মানুষ কিভাবে নিশ্চিত হতে পারবে যে আল্লাহর শরীক আছে কি নেই অথবা মুহাম্মদ আসলেই আল্লাহরই নবী?  

আর তাই তাদেরকে আল্লাহর শরীক না করতে বলা, তাও আবার কিছু ভূলভাল তথ্য দেবার পর, তাহলে তারা কেন মুহাম্মদের মুখ দিয়ে বলা আল্লাহর কথাগুলোকে বিশ্বাস করবে? আর তারা কোন প্রমাণ ছাড়া আল্লাহর শরীক করবেই না বা কেন যা তাদের পূর্বপুরুষেরা যুগযুগ ধরে করে এসেছে?

অদ্ভূত দাবী!

 

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই পর্বগুলোতে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে কুরআনকে বিচার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাস্তববাদী বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে কুরআনকে বাস্তবতার বিজ্ঞানের প্রেক্ষিতে বিচার করলে কুরআন যে রুপ ধারণ করবে এই পর্বগুলোতে সেটাই পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment