Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Monday, April 27, 2015

মানব সভ্যতার অদ্ভুত এক সৃষ্টি, বিশ্বজগতের কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তা। ভিত্তিহীন কাল্পনিক হলেও মানুষের সব কল্পনার সৃষ্টি থেকে অনেক অনেক শক্তিশালী সৃষ্টি এই কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তা।


আস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস যে এই বিশ্বজগতের একজন সৃষ্টিকর্তা আছেকিন্তু সেই সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তা নেইআস্তিকরা দাবী করে কোন কিছুই একজন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারে নাকিন্তু সেই সৃষ্টিকর্তাটি একজন সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছেকিন্তু যখন তাদেরকে প্রশ্ন করা হয় যে, কেন কোন কিছু সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারবে না, সব কিছুর একজন সৃষ্টিকর্তা থাকলে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি হতে কেন একজন সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন হলো না, তখন আস্তিকরা সঠিক উত্তর দিতে পারে নাতারা কোন যুক্তি ছাড়াই দাবী করে যে সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তার দরকার হয়নিসৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করার দরকার পড়েনি কারণ সে সব সময়ই ছিলঅর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি হয়নি বলে তার সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন নেই
কিন্তু যখন প্রশ্ন করা হয় যদি সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি না হয়েই বিরাজমান থাকতে পারে তবে বিশ্বজগত কেন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারবে না?
মুলত আস্তিকরা এসব প্রশ্ন শুনলে ভয় পায় এবং আমতা আমতা করতে থাকেকারণ তাদের কাছে এই প্রশ্নগুলোর উপযুক্ত উত্তর জানা নেইতারা বিশ্বজগতের রহস্যের সমাধান করতে  সৃষ্টিকর্তা নামের আরেক মস্ত বড় রহস্য এনে বিশ্বজগতের রহস্যের সমাধান করতে চায়ফলে একটা রহস্যের সমাধান করতে যেয়ে তারা যে বড় আরেকটি রহস্যের আমদানী করে এই ব্যপারটা তারা ধরতে পারে নাতারা ভাবে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে মানুষ সঠিক ভাবে জানতে পারবে না তাই সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে কোন কথা না বলাই ভালোতাই বিশ্বজগতের রহস্যের সমাধান করতে সৃষ্টিকর্তাকে সামনে দাড়া করালেই চলবেকিন্তু সৃষ্টিকর্তার রহস্যের কোন সমাধানের কোন প্রয়োজন নেই

কিন্তু মানুষের মন সেভাবে কাজ করে নামানুষ সব রহস্যের সমাধান করতে চায়আর তাই কিছু মানুষ সৃষ্টিকর্তার ধারণা ভিত্তিহীন দেখে বিশ্বজগতের প্রকৃত রহস্য ভেদ করতে সব সময়ই ব্যস্তআর তাই মানুষ আজ বিশ্বজগতের রহস্য ভেদে অনেক এগিয়ে গেছেমানুষ আজ জানে কিভাবে মানুষের আবির্ভাব হয়েছে আর কিভাবে বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছেএসব করতে মানুষের সৃষ্টিকর্তা নামের অদ্ভুত রহস্যের আমদানী করতে হয়নি

বিশ্বজগতের রহস্য ভেদ করতে সৃষ্টিকর্তা নামের অদ্ভুত রহস্য ছাড়াই মানুষ বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্য বের করে ফেলেছে

প্রাচীণ মানুষ বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্য জানতো নামানুষ কোথা থেকে আবির্ভাব হয়েছে সেটার রহস্য সেই প্রাচীণ মানুষকেও ভাবিয়ে তুলেছেকিন্তু মানুষের আবির্ভাব এবং বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্য জানার বা বোঝার মতো জ্ঞান ও প্রযুক্তি সেই প্রাচীণ মানুষের ছিল নাকিন্তু তাদের জানার আগ্রহী মন থেমে থাকেনিতাদের স্বল্প জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্য এবং মানুষের জন্ম রহস্যের সমাধান করার চেষ্টা করেছেফলে তারা বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্য এবং মানব জাতির সৃষ্টি রহস্যের সমাধান করতে যেয়ে সৃষ্টিকর্তা নামের এক অজানা রহস্যের আমদানী করেছেযেহেতু সেই প্রাচীণ মানুষদের বিশ্বজগতের ও মানুষের সৃষ্টি রহস্য সমাধান করার মতো জ্ঞান ছিল না তাই তাদের আগ্রহী মন বিশ্বজগতের সৃষ্টির কারণ হিসেবে সৃষ্টিকর্তার আমদানী করতেই হয়েছেফলে সৃষ্টিকর্তা নামের কাল্পনিক চরিত্রটি এমন সব রহস্যের সমাধান হিসেবে তাদের কাছে উপস্থিত হয়েছে যেসব রহস্যের সমাধান করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল নাতারা বিশ্বজগত সৃষ্টি ও মানব জাতির আবির্ভাবের রহস্যের খুব সহজ সমাধান করেছে সৃষ্টিকর্তার মতো কাল্পনিক এক চরিত্রের সৃষ্টি করেফলে সব রহস্যের সমাধান তারা করতে পেরেছে সৃষ্টিকর্তাকে দিয়ে
বিশ্বজগত কিভাবে সৃষ্টি হলো, এর সহজ উত্তর সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেমানুষ কিভাবে এলো ? কারণ সৃষ্টিকর্তা মানুষ সৃষ্টি করেছে
খুবই সহজ সমাধান

প্রাচীণকালের মানুষের পক্ষে এর চেয়ে ভালো সমাধান করা সম্ভব ছিল নাআর এই সহজ ও হাস্যকর সমাধানটিই কালে কালে মানুষের কাছে সত্য হিসেবে ধরা দিয়েছেকিন্তু তাদের সেই সত্যটি টিকে ছিল শুধু তাদের অন্ধবিশ্বাসের উপর; সেটুকু বুঝার মতো জ্ঞান তাদের ছিল না। (ভাবতে অবাক লাগে, এখনো মানুষ প্রাচীণ কালের সেই হাস্যকর ধারণাকে সত্য বলে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে সেটা দেখে।)

এভাবেই প্রাচীণকালের অল্প জ্ঞানের মানুষের দ্বারা বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্যের সমাধানের হাত ধরে সৃষ্টি হওয়া সৃষ্টিকর্তা কালে কালে মানুষের অন্ধবিশ্বাসের মাধ্যমে মানব সমাজে টিকে আছেএবং অন্ধবিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষকে নিয়ন্ত্রন করছেপ্রাচীন মানুষের বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্যের সহজ ও হাস্যকর সমাধানই কালে কালে মানব সমাজে রাজত্ব করেছে; কিন্তু তার কোন বাস্তব ভিত্তি নেইমানুষ যেমন বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্যের সমাধান করতে কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি করেছে, ঠিক একই ভাবে কিছু অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ সেই প্রাচীণ ভুল ধারণাটিকেই সত্য ভেবে বসে আছেবিজ্ঞান যেখানে বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্য ও মানব জাতির আবির্ভাবের পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভাবে বের করে ফেলেছে সেখানে কিছু মানুষ প্রাচীণকালের মিথ্যে ও কাল্পনিক ধারণাকে সত্য বলে অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে চলেছে

প্রাচীণ কালের মানুষের জানার আগ্রহ থেকে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি ঘটেছিলসেই সময়ের মানুষের পক্ষে এর থেকে ভালো সমাধান করা সম্ভব ছিল না বলে তারা সৃষ্টিকর্তার মতো হাস্যকর এক রহস্যের আমদানী করে বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্যের সমাধান খুজে ফিরেছেকিন্তু বর্তমানে যারা সেই প্রাচীণ ধ্যান ধারনাকে সত্য বলে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে তাদের প্রতি করুনা করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে নাতারা আধুনিক যুগে থেকেও মন মানুষিকতায় সেই প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষদের মতো রয়ে গেছেঅথচ যারা সেই প্রাচীণ আমলে থেকে সৃষ্টিকর্তার মতো এক রহস্যের সৃষ্টি করেছে তারা সেই প্রাচীণ আমলে থেকেও অনেক আধুনিক ছিলসেই প্রাচীণকালে অজ্ঞতাপূর্ণ সমাজে থেকেও বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে ভেবেছে এবং বিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্যের সমাধান করতে চেষ্টা করেছে তাদের স্বল্প জ্ঞান দিয়েআর যারা সেই প্রাচীণকালের প্রাচীণ অজ্ঞ মানুষের দ্বারা সৃষ্টি হওয়া কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার ধারণাকে অন্ধ ভাবে সত্য বলে মনে করে তারা কতটা মন মানুষিকতায় প্রাচীণ সেটা ভাবতেও অবাক লাগে

আস্তিকদের দাবী সৃষ্টিকর্তা বিশ্বজগতের সব কাজ পরিচালনা করেসৃষ্টিকর্তার আদেশ ছাড়া কোন কিছুই কার্যকর থাকতে পারে নাসব কিছুকেই (এমন কি ইলেক্ট্রনের ঘুর্ণনও) সৃষ্টিকর্তা ঘটায়সৃষ্টিকর্তা বিশ্বজগতের সব কিছুকে সচল রাখেযদি সৃষ্টিকর্তা না থাকতো তবে কোন কিছুই সচল থাকতো না বলে আস্তিকদের দাবী
কিন্তু বিজ্ঞান আজ এতো উন্নত হয়েছে যে মানুষ আজ জানে কিভাবে বিশ্বজগত চলছে কোন সৃষ্টিকর্তার সহযোগিতা বা হস্তক্ষেপ ছাড়াইফলে বাস্তব জগতকে সচল রাখতে সৃষ্টিকর্তা নামের অদ্ভুত রহস্যের আমদানী করার দরকার হয়নি

প্রাচীণকালে মানুষ ভাবতেও পারেনি বিশ্বজগতটা কতটা বিশালতারা খালি চোখে যতটুকু দেখা যায় সেটুকুকেই বিশ্বজগত ভেবেছেআর তাই তারা কল্পনা করেছে আকাশের উপরে কেউ একজন বসে পৃথিবীর মানুষের কর্মকান্ডের পর্যালোচনা করছেমানুষ মরে গেলে মানুষের কৃত কর্মের হিসাব নেবে সেই স্বত্বাটি
সেই স্বত্বাটিই এই পৃথিবী, মানুষ ও বিশ্বজগতের বাকী সব কিছুকে সৃষ্টি করেছে এবং সেই স্বত্বাটিই সব কিছুকে পরিচালিত করেমানুষ ভেবেছে আকাশে বসে থাকা সেই সৃষ্টিকর্তাটি শুধু মাত্র মানুষকে সৃষ্টি করার জন্যই এই বিশ্বজগতকে সৃষ্টি করেছেআর মানুষের বসবাসের জন্য সৃষ্টি করেছে পৃথিবী, সূর্য, গ্রহ ও নক্ষত্রঅর্থাৎ প্রাচীণকালের অজ্ঞ মানুষদের ধারণা জন্মে ছিল যে বিশ্বজগত সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য শুধু মাত্র মানুষফলে তারা কল্পনা করে আনন্দ পেত যে মানুষই হলো সৃষ্টির শ্রেষ্ট, বিশ্বজগত মানুষের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে
কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান জেনেছে যে, বিশ্বজগত খালি চোখে যতটুকু দেখা যায় ঠিক ততটুকু নয়বিশ্বজগত এতো সুবিশাল যে মানুষের পক্ষে সাধারণ ভাবে কল্পনা করাও কষ্টকরপৃথিবী, সূর্য-চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্রও বিশ্বজগতের মুল উদ্দেশ্য নয়, সেখানে মানুষতো একটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তুচ্ছ সৃষ্টি মাত্র

আমাদের খালি চোখে দেখা বিশ্বজগতের চেয়ে লক্ষ কোটি গুন বিশাল এই বিশ্বজগতএমনকি বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে, আমাদের বিশ্বজগতের মতো হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি এবং অসীম সংখ্যক বিশ্বজগতের অস্তিত্ব বিদ্যমান
সুতরাং প্রাচীণকালের মানুষের সেই আকাশের উপরে বসে থাকা সৃষ্টিকর্তার কোন বাস্তব ভিত্তি নেইলক্ষ কোটি বিশ্বজগত রেখে, লক্ষ কোটি গ্যালাক্সি রেখে, কোটি কোটি নক্ষত্র রেখে, লক্ষ কোটি কোটি গ্রহ রেখে শুধু মাত্র সৌরজগতের একটি ছোট্ট গ্রহের অতিক্ষুদ্র এক প্রজাতির কর্মকান্ডের দিকে নজর রাখা সৃষ্টিকর্তার ধারণাটা কতটা হাস্যকর সেটা সেই প্রাচীণকালের মানুষের দ্বারা চিন্তা করা অসম্ভব ছিলআর তাই খালি চোখে দেখা বিশ্বজগতের কিয়দ্বংশকে বিশ্বজগত ভাবা এবং আকাশের উপরে একজন কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাকে বসিয়ে বিশ্বজগতের সৃষ্টির রহস্যের সমাধান করাটা কতটা হাস্যকর সেটা এই একবিংশ শতাব্দিতে এসে মানুষ টের পাচ্ছেআর জ্ঞানী বিজ্ঞানীরা সহজেই বুঝতে পারছে সৃষ্টিকর্তার ধারণা কতটা ভিত্তিহীন এবং হাস্যকরবিশ্বজগতের সৃষ্টি রহস্যের সমাধান করতে যেয়ে সৃষ্টিকর্তার মতো এক রহস্যের আমদানী করা এবং তাকে আকাশের উপরে বসিয়ে দিয়ে মানুষের কর্ম-কান্ডের হিসাব রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত রাখা এবং মানুষের মৃত্যুর পর আরেকটা জীবনের কল্পনা করে সেই অনন্ত জীবনের রক্ষনা বেক্ষনের দায়িত্ব সেই সৃষ্টিকর্তার উপর দিয়ে কাল্পনিক সান্তনা খুজে মৃত্যু ভয় থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করাটা সেই প্রাচীণ কালের অজ্ঞতাপূর্ণ মানব সমাজের জন্য ঠিক থাকলেও বর্তমানে সেসব ধারণা ভিত্তিহীনই নয় বরং হাস্যকরআর সেই সব কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার ভিত্তিহীন অস্তিত্বে এখনও যেসব মানুষ অন্ধের মতো বিশ্বাস করে তারা চিন্তা চেতনায়, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে কতটা প্রাচীণ সেটা খুব সহজেই বুঝা যায়

প্রাচীনকালে মানুষ ভাবতো বিশ্বজগতটা অনন্ত কালেরআর তাই চিরন্তন এক সৃষ্টিকর্তা বিরাজমান রয়েছে, আর সেই সৃষ্টিকর্তাই বিশ্বজগত ও মানুষকে সৃষ্টি করেছে যাতে করে সেই সৃষ্টিকর্তাকে মানুষ ইবাদত করে অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার গুনগান করেপ্রাচীনকালে মানুষের ধারণা ছিল বিশ্বজগত চিরকালের, এবং সৃষ্টিকর্তা চিরকাল থেকেই বিরাজমানসেই সৃষ্টিকর্তা সব সময়ই ছিল এবং সব সময়ই থাকবেঅর্থাৎ সেই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি বা ধ্বংস কোনটাই ঘটে নাঅর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা চিরন্তন
কিন্তু আমরা আজ জেনেছি যে বিশ্বজগত চিরন্তন নয়বিশ্বজগতের একটি শুরু আছে এমনকি সময় এবং স্থানও (স্পেস) সৃষ্টি হয়েছে এক নির্দিষ্ট সময়কাল পূর্বেমানুষ আজ জেনেছে বিশ্বজগতের শুরু হয়েছে বিগ ব্যাং-এর মাধ্যমে এবং বিগ ব্যাং-এর মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছে সময় এবং স্থানেরঅর্থাৎ বিগ ব্যাং-এর পূর্বে কিছু ছিল নাকোন স্থান বা শুন্য জায়গা ছিল না এবং সময় বলেও কোন কিছুর অস্তিত্ব ছিল না বিগ ব্যাং-এর পূর্বেআর তাই কোন সৃষ্টিকর্তার বিরাজমান থাকার মতো স্থান ও সময় ছিল না বিগ ব্যাং-এর পূর্বেআর তাই বিশ্বজগত সুষ্টির পূর্বে কোন কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার বিরাজমান থাকার সম্ভাবনা ছিল শুন্যের কোঠায়
যেখানে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকার জন্য কোন স্থান ছিল না এমনকি কোন সময়ও ছিল না সে অবস্থায় একটা চিরন্তন সৃষ্টিকর্তার ধারণা অবাস্তব এবং অসম্ভবএরকম কোন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকা শুধু মানুষের কল্পনাতেই মানায়কারণ কল্পনার জগতে কোন নিয়ম নীতি কাজ করে নাযে যেমন খুশি কল্পনা করতে পারে, যে যেমন খুশি তার কল্পনার জগতকে সৃষ্টি করতে পারেআর তাই চিরন্তন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব শুধু মাত্র মানুষের কল্পনার জগতেই বিদ্যমান; বাস্তব জগতে নয়

প্রাচীনকালে যখন মানুষ ভাবতো বিশ্বজগত দৃষ্টি সীমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ তখন মানুষ মনে করেছে বিশ্বজগত স্থিরফলে একজন সৃষ্টিকর্তার পক্ষে মানুষকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠানো এবং আকাশের উপর থেকে মানুষের উপর সব সময় লক্ষ রাখা সম্ভবকিন্তু আজ আমরা জানি বিশ্বজগত স্থির নয়বিশ্বজগত ক্রমাগত ভাবে প্রসারিত হচ্ছে এবং বিশ্বজগতের আয়তন ক্রমেই বেড়ে চলেছেফলে কোন সৃষ্টিকর্তার পক্ষে আকাশের উপর বসে থেকে মানুষের কর্মকান্ডের পর্যলোচনা করা সম্ভব নয়প্রাচীণকালের মানুষের এই তথ্যগুলো জানা ছিল না বলে তারা আকাশের উপর এক সৃষ্টিকর্তাকে বসিয়ে দিয়েছে মানুষের কর্মকান্ডের হিসেব কিতের রাখার জন্যকিন্তু প্রসারনশীল এই বিশ্বজগতে আকাশের উপরে কোন সৃষ্টিকর্তার বসে থাকা সম্ভব নয়কিন্তু প্রাচীণকালের মানুষের এসব কল্পনা করাও সম্ভব ছিল না বলে তারা সৃষ্টিকর্তাকে এভাবে কল্পনা করেছে

সৃষ্টিকর্তার ধারণা কালে কালে বিবর্তিত হয়েছে বহুবারপ্রথমে প্রাচীণ মানুষেরা কল্পনা করেছে বিশ্বজগতে বহু সৃষ্টিকর্তা রয়েছেকালে কালে সেই বহু সৃষ্টিকর্তার ধারণায় সৃষ্টিকর্তার সংখ্যা কমতে শুরু করেএবং এক সময় এক সৃষ্টিকর্তার ধারনা প্রতিষ্ঠিত হয়অর্থাৎ বহু সৃষ্টিকর্তা কমতে কমতে এক সৃষ্টিকর্তায় এসে থেমেছেকেউ কেউ দাবী করে এক সময় এই এক সৃষ্টিকর্তাও বিলুপ্ত হয়ে শুন্য সৃষ্টিকর্তাতে পরিণত হবে, অর্থাৎ কোন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বই থাকবে না

প্রাচীণকালে মানুষ ভেবেছে বিশ্বজগত স্থির এবং পৃথিবী, সূর্য, চন্দ্র, আকাশ এবং আকাশে স্থাপিত তারকাগুলোই এই বিশ্বজগতের সব কিছুতাই তারা আকাশের উপরে সৃষ্টিকর্তার আবাস বলে ধারণা করতোঅর্থাৎ প্রাচীণ মানুষ কল্পনা করেছে তারকা সমৃদ্ধ আকাশের উপরেই সৃষ্টিকর্তা আছেকেউ কেউ আকাশের উপরে আরো আকাশ কল্পনা করেছেকেউ কেউ ভেবেছে আকাশের উপরে আছে স্বর্গ নরক, আবার কেউ কেউ ভেবেছে আকাশে রয়েছে স্বর্গ আর পৃথিবীর নিচে আছে পাতাল এবং পাতালে রয়েছে নরকপ্রাচীণ মানুষ জানতো না আকাশের উপরে কিছু নেই এবং পৃথিবীর নিচে পাতাল বলেও কিছু নেইতাই তারা এমন অদ্ভুত ধারনা তৈরী করেছিল

প্রাচীণ মানুষ বিশ্বজগতকে স্থির মনে করে এবং সময়কে চিরন্তন কল্পনা করে সৃষ্টিকর্তাকে চিরন্তন করে ভেবেছে এবং চিরন্তন সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করেছেপ্রাচীণ কালের মানুষ আকাশের উপরে সৃষ্টিকর্তার আবাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে তার কল্পনা শক্তির দ্বারাসময় অসীম তাই সৃষ্টিকর্তাও চিরকালের এবং স্থান চিরন্তন তাই সৃষ্টিকর্তাও চিরন্তন এটাই ছিল প্রাচীণ কালের মানুষের বিশ্বাস
কিন্তু আধুনিক কালে এসে আমরা জেনেছি যে কোন কিছুই চিরন্তন নয়স্থান এবং কালকেও সৃষ্টি হতে হয়েছে শক্তি ও পদার্থের সৃষ্টির মতো করেঅর্থৎ বিশ্বজগত সৃষ্টির পূর্বে যেমন শক্তি (এনার্জি) বা পদার্থের (ম্যাটার) অস্তিত্ব ছিল না ঠিক তেমনিভাবে স্থান (স্পেস) এবং কালেরও (টাইম) অস্তিত্ব ছিল নাঅর্থাৎ বিশ্বজগতের সৃষ্টির পূর্বে কোন কিছুরই অস্তিত্ব ছিল না
আর তাই আকাশের উপরে বসে থাকা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বও ছিল নাকারণ সৃষ্টিকর্তার শারীরিক গঠনের শক্তি বা পদার্থের অস্তিত্ব যেমন ছিল না ঠিক তেমনি ভাবে সৃষ্টিকর্তার অবস্থানের জন্য স্থান এবং সময় কোনটিই ছিল নাআর তাই প্রমাণিত হয় যে সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেইএটি মানুষের এক কল্পনা মাত্র

চিরন্তন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব এবং সৃষ্টিকর্তার ধারণা (কল্পনা) ভিত্তিহীন এটা প্রমাণিত হবার পরও কিছু কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসী তাদের কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্ত হতে পারেনিফলে সেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসীদের দল সৃষ্টিকর্তার নতুন রুপ দান করেছেতারা নতুন করে সৃষ্টিকর্তাকে সাজিয়েছেআগের যে সৃষ্টিকর্তাকে স্থান এবং সময়ের মধ্যে বিরাজ করতে হতো (যেমন সৃষ্টিকর্তা আকাশের উপরে অবস্থিত বলে মানুষ দাবী করতো) সেই সৃষ্টিকর্তাকে নতুন করে সাজিয়ে স্থান কালের উর্ধে উঠিয়ে দেওয়া হলোআর আস্তিকরা দাবী করতে থাকলো যে, সৃষ্টিকর্তা স্থান ও কালের উর্ধ্বে
প্রথমে বহু সৃষ্টিকর্তা থেকে বিবর্তিত হয়ে এক সৃষ্টিকর্তায় রুপান্তর এবং পরে স্থান কালের মধ্যে থেকে বেড়িয়ে স্থান কালের উর্ধ্বে চলে গেলো সৃষ্টিকর্তাসেটা না হলে মিথ্যে সৃষ্টিকর্তার কাল্পনিক ধারণা মানব সমাজে টিকে থাকতে পারতো না। (এখনও কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে বিশ্বজগত স্থির এবং চিরন্তন আর তাই সৃষ্টিকর্তাও চিরন্তন।)

কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোন কিছুই কি স্থান কালের উর্ধ্বে থাকতে পারেএটা সম্পূর্ণ অবাস্তব, অসম্ভব এবং অবৈজ্ঞানিককোন কিছুই স্থান কালের বাইরে অবস্থান করতে পারবে নাসেটা শক্তি (এনার্জি) হোক বা পদার্থ (ম্যাটার)এমনকি পদার্থের অতিক্ষুদ্র কনিকা গুলো তৈরী হয়েছে যেসব স্ট্রিং দ্বারা সেগুলোও স্থান ও কালের মধ্যেই বিরাজ করেস্ট্রিংগুলো এক এক ডাইমেনশন থেতে বহু ডাইমেনশনে যেতে পারে এবং এক কাল থেকে অন্য কালেও যেতে পারবে কিন্তু কখনই স্থান কালের বাইরে যেতে পারবে না
বিশ্বজগত যখন তৈরী হয়নি তখনও কোন কিছু স্থান কালের বাইরে অবস্থান করেনি

বিগ ব্যাং থিওরী অনুযায়ী আমরা জানি সমস্ত বিশ্বজগত এক বিন্দুতে মিলিত ছিলসেই এক বিন্দুতে এনার্জি বা শক্তি অর্থাৎ বিশ্বজগতের মোট উপাদানের সবটুকু এক বিন্দুতে মিলিত ছিল এবং সেই বিন্দুটিতেই স্থান এবং কাল সীমাবদ্ধ ছিলএর পূর্বে কোন কাল ছিল না, কোন স্থানও ছিল নাফলে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকার মতো সময় ও স্থান কোনটাই ছিল নাঅর্থাৎ বিশ্বজগতের সৃষ্টির পূর্বে কোন সৃষ্টিকর্তাও ছিল না

যদি শুন্য থেকে বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়ে থাকে তবে সেই শুন্যতায় শক্তি ও পদার্থের সাথে সাথে স্থান ও কালও অনুপস্থিত ছিলঅর্থাৎ শক্তি, পদার্থ, স্থান ও কাল কোন কিছুই ছিল নাঅর্থাৎ বিশ্বজগত সৃষ্টির পূর্বে সব কিছুই ছিল শুন্যঅর্থাৎ সে সময়টা ছিল শুন্য জগত আর শুন্য জগতের সব কিছুই ছিল শুন্য  ফলে কোন সৃষ্টিকর্তা থাকার সম্ভাবনাও একেবারে শুন্য ছিল সেই শুন্য জগতে

আবার যদি বিশ্বজগত শুন্য থেকে সৃষ্টি না হয়ে থাকে তবে বিশ্বজগতের মোট উপাদান যেটা বিশ্বজগত সৃষ্টির পূর্বেও ছিল সেটা এতো ক্ষুদ্র অবস্থায় ছিল যেটা ছিল অতি অতি অতি অতি .... ক্ষুদ্র বিশ্বজগতসেই অতি ক্ষুদ্র জগতটিতেই বিশ্বজগত একেবারে মিলিত ছিল এক বিন্দুতেআর এই বিন্দুটিই হলো সমগ্র বিশ্বজগতএই বিন্দুর বাইরে কোন কিছুরই অস্তিত্ব ছিল না; স্থান এবং কালেরও নাআর তাই কোন সৃষ্টিকর্তার পক্ষেও এই বিন্দুর বাইরে অবস্থান করা সম্ভব ছিল নাকারণ এই বিন্দুর বাইরে সময় এবং স্থান কোনটিরই অস্তিত্ব ছিল নাবিগ ব্যাং-এর মাধ্যমে এই অতি অতি... ক্ষুদ্র বিন্দু থেকে আজকের এই বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছেঅর্থাৎ বিশ্বজগতের সব কিছুই এই অতি ক্ষুদ্র বিন্দুটি থেকে সৃষ্টি হয়েছে (শক্তি, পদার্থ, স্থান ও কাল সব কিছু)
ফলে যদি সৃষ্টিকর্তা বলে কোন কিছু থেকে থাকে তবে তাকেও এই বিন্দু থেকেই সৃষ্টি হতে হবেফলে সে আর সৃষ্টিকর্তা থাকতে পারবে নাসে নিজেও হবে একটি সৃষ্টি, যে অন্যান্য সব কিছুর (শক্তি, পদার্থ, স্থান ও কালের) সৃষ্টির সাথে সাথে সৃষ্টি হয়েছেফলে সে আসলে সৃষ্টিকর্তা নয়
আর তাই বিশ্বজগতের কোন সৃষ্টিকর্তা থাকাও অসম্ভবফলে এই বিশ্বজগতের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই

প্রাচীণকালের মানুষ এসব আধুনিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলো জানতো না বলে তারা বিশ্বজগতের সৃষ্টির রহস্যের সমাধান বের করতে যেয়ে সৃষ্টিকর্তার মতো এক কাল্পনিক চরিত্রের আমদানী করেছেআর তাই আধুনিক কালে এসে সৃষ্টিকর্তার ধারণাটি অবাস্তব, অসম্ভব, অবৈজ্ঞানিক এবং হাস্যকর হয়ে দাড়িয়েছে

আর সেই প্রাচীণকালের ভ্রান্ত ধারণাকে সত্য প্রমাণ করতে যেছে কিছু কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসী মানুষ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে আরো হাস্যকর রুপ দান করেছেতারা দাবী করে সৃষ্টিকর্তা স্থান কালের উর্ধ্বেকিন্তু কোন কিছুর পক্ষে স্থান কালের উর্ধ্বে থাকা সম্ভব নয়যা কিছুর অস্তিত্ব আছে তাকে অবশ্যই কোন স্থান বা স্পেসে থেকে বিরাজমান থাকতে হবেসেই স্থান বা স্পেসটি যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, সব কিছুকেই স্থান বা স্পেসে অবস্থান করতে হবেআর কোন ক্রিয়া সংগঠিত হতে হলে অবশ্যই তাকে সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবেস্থান ছাড়া কোন কিছু বিরাজমান থাকতে পারবে না এবং সময়হীন অবস্থায় কোন কার্য সংঘটিত হতে পারবে নাসেই সময়টা যত ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম হোক না কেন, কোন অস্তিত্বশীর কিছুকে অবশ্যই স্থান ও কালের মধ্যে বিরাজমান হতে হবে
ফলে যদি কোন সৃষ্টিকর্তা সত্যিই বিরাজমান থাকে তবে তাকে অবশ্যই স্থান দখল করতে হবে বা স্থানে বিরাজমান হতে হবে এবং তার কার্যসম্পাদন করার জন্য (যেমন বিশ্বজগত সৃষ্টি করা) সময়ের ভিতর দিয়ে যেতে হবেকিন্তু বিশ্বজগত সৃষ্টির পূর্বে সেই স্থান ও সময় কোনটিরই অস্তিত্ব ছিল নাআর তাই সৃষ্টিকর্তার চরিত্রটি একটি রুপকথার রুপ নিয়েছেঅর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকা শুধু রুপকথাতেই সম্ভব বাস্তব জগতে সম্ভব নয়আস্তিকদের দাবী সৃষ্টিকর্তা স্থান কালের উর্ধ্বে এই ধারণা শুধু অবাস্তব, অসম্ভব ও অবৈজ্ঞানিকই নয় উপরন্তু হাস্যকর

বিশ্বজগতের ইতিহাসে এমন কিছুর অস্তিত্বই (বাস্তবতায় বা তত্বীয়ভাবে) আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি যা স্থান কালের উর্ধ্বে যেতে পারেআর তাই বলা যায় সৃষ্টিকর্তার ধারণা রুপকথার গল্পকথা ছাড়া আর কিছুই নয়
প্রাচীনকালের মানুষের হাত ধরে বিশ্বজগতের রহস্যের সমাধানের চেষ্টা থেকে তৈরী হওয়া সৃষ্টিকর্তার ধারণা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন কল্পনা মাত্রবাস্তবতার সাথে এর কোন মিল নেইফলে সৃষ্টিকর্তার ধারণাকে রুপকথার মর্যাদা দেওয়া যায় এর বেশী কিছু নয় 

প্রাচীণকালের স্বল্প জ্ঞানের মানুষের দ্বারা তৈরী হওয়া সৃষ্টিকর্তার রুপকথাকে যারা বর্তমানে এসে সত্য বলে দাবী করে এবং স্থান কালে বিরাজমান কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাকে যারা স্থান কালের উর্ধ্বে নিয়ে যেতে চায় তারা সম্পূর্ণ ভ্রান্তির জগতে বাস করেতারা রুপকথায় বিশ্বাসী অর্থাৎ তারা কুসংস্কারে বিশ্বাসী এবং তারা অন্ধবিশ্বাসী

সৃষ্টিকর্তার রুপকথার সৃষ্টি অবাস্তব, অসম্ভব, অবৈজ্ঞানিক ও হাস্যকর এবং স্থান কালের উর্ধ্বের সৃষ্টিকর্তার নতুন রুপকথা আরো বেশী অবাস্তব, অসম্ভব, অবৈজ্ঞানিক ও হাস্যকর

মানব জাতির সৃষ্টি জগতের অদ্ভুত এক সৃষ্টি কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাআর এই সৃষ্টিকর্তার কাল্পনিক ধারণার সৃষ্টিকর্তা মানুষ নিজেই

No comments:

Post a Comment