Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Saturday, November 14, 2015

কোরআনের বর্ণনায় সমতল পৃথিবী - পর্ব ১




 
প্রথম অধ্যায়
কোরআন সমতল পৃথিবী
বিছানা বা কার্পেট আকার পৃথিবী এবং প্রশস্তভাবে বিস্তৃত পৃথিবী
পৃথিবীর সব ধর্মের মতই ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা বলে থাকে যে তাদের বিশ্বাসের মূল ভিত্তি অর্থাত কোরআন বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য l আর এই কোরআনে কোনো ভুল নেই l এবং কোরআন সম্পূর্ণ রূপে বিজ্ঞানের সাথে একমত l
কিন্তু আমরা যদি কোরআন নিয়ে যাচাই করে দেখি তখন আমরা স্পষ্টভাবেই দেখি যে এতে প্রচুর ভুল রয়েছে অন্যান্য ধর্ম গ্রন্থগুলোর মত l
কিন্তু তার পরও মুসলমানরা তাদের দাবি করে থাকে যে কোরআনে যেভাবে বলা হয়েছে সেটা আধুনিক বিজ্ঞান-এর সাথে সম্পূর্ণ একমত l
এই দাবির বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ উঠে আসছে এবং এখনো অভিযোগ হচ্ছে যে কোরআনে অনেক ভুল কথা বা তথ্য দেয়া আছে যেটা প্রাচীন মানুষের ভ্রান্ত ধারণা সাথে পুরোপুরি মিলে যায় l যেমন কোরআন যেসময়ে লেখা হয়েছে সেসময়ে মানুষ বিশ্বাস করতো যে আমাদের এই পৃথিবী সমতল l আমাদের উপর ছাদের মত করে তৈরী করা হয়েছে শক্ত এবং মজবুতভাবে স্থাপিত আকাশ l শুধু তাই নয় তারা বিশ্বাস করতো আকাশের উপরে আছে আরেকটা আকাশ ; এবং তার উপর আরেকটা আকাশ l এভাবেই পর পর সাতটা আকাশ স্থাপিত হয়েছে উর্ধাকাশে l
সেসময় মানুষ বিশ্বাস করতো যে সমতল পৃথিবী হাওয়ার উপর শুন্যে ভেসে আছে l এবং এটি মাঝে মাঝেই কোনো এক দিকে কাত হয়ে অথবা হেলে পড়ে যেতে থাকে l আর তাই এর উপর পাহাড়-পর্বত স্থাপিত হয়েছে এবং এর ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে l আর তাই পৃথিবী হেলে-দুলে উঠে না বা কোনো দিকে কাত হয়ে বা ঢলে পড়ে যায় না l পাহাড়-পর্বত স্থাপনের ফলেই পৃথিবী ভারসাম্য রক্ষা করে স্থির হয়ে শুন্যে ভাসছে l কেউ কেউ বিশ্বাস করতো সমতল পৃথিবীকে ধরে রেখে আছে কোনো দানব অথবা কোনো দানব আকৃতির কচ্ছপ l আর এর উপর স্থাপিত পৃথিবী মাঝে মাঝে ভারসাম্য হারিয়ে এদিক ওদিক হেলে বা দুলে উঠে l আর এর ফলেই ভূমিকম্প হতে থাকে l
এরকম আরো আজগুবি ধারণা করতো সে সময়ের মানুষগুলো l কারণ সেসময় বিজ্ঞান এতটা উন্নত হয়ে উঠেনি l আর তাই মানুষগুলো প্রাচীন কালের ধারনাগুলোকেই একমাত্র সত্যি মনে করতো l এবং কল্পনা করতো এই পৃথিবী এবং এর উপর ছাদ আকৃতির মজবুত এবং দৃঢ় আকাশ সৃষ্টি করেছে একজন সৃষ্টিকর্তা l আর এসব বিশ্বাস করতো সেসময়ের মানুষগুলো এবং তারা সেই কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার নানা রকম পূজাঅর্চনা  অথবা প্রার্থনা করতো সেই কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের আশায় l এর অনেক আগেই ধর্ম এবং সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস মানুষ করে এসেছে l আর পৃথিবী, পাহাড় আকাশ সম্পর্কে এই ধারণা গুলোও তৈরী হয়েছে কোরআন আবির্ভাবেরও বহু আগে l যেমন কোরআনের প্রায় পাঁচশত বা সাড়ে পাঁচশত বছর আগের ধর্ম গ্রন্থ খ্রিস্টানদের বাইবেল, সেখানেই এই ধারণাগুলো বর্ণনা করা আছে l
আর কোরআনেও আকাশ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা যেমন সাত আকাশ, বর্ণিত হয়েছে সেই প্রাচীন ধারণা থেকেই l আবার সমতল পৃথিবীর কথাও কোরআনে বর্ণনা করা হয়েছে নানা ভাবে l যেটা প্রাচীন মানুষের ভ্রান্ত ধারণা ছিল l পাহাড় সম্পর্কিত ধারনাও সেই প্রাচীন মানুষগুলোর ধারণা l এসব কথা কোরআনে বেশ স্পষ্ট ভাবেই বর্ণিত হয়েছে l যে কেউ কোরআন পড়লে এই কথা গুলো পাবে l
সুতরাং এটা স্পষ্ট ভাবেই বোঝা যায় যে অন্যান্য ধর্ম গ্রন্থের মত কোরআনেও প্রচুর ভুল রয়েছে l এবং সেই ভুলগুলো মানুষ বার বার মুসলমানদের কাছে উত্থাপর করেছে l তারা বলেছে যে কোরআনে পৃথিবীর কথা বলা হয়েছে যে পৃথিবী সমতল l
কিন্তু মুসলমানরা কোরানের অন্য ব্যাখ্যা দিয়ে সেই দাবির বিপক্ষে প্রতিবাদ করে আসছে l
তারা বলে কোরআনে পৃথিবীকে সমতল বলা হয়নি বরং কোরআনে পৃথিবীকে গোলাকার বলা হয়েছে l
আমি এই বইটিতে কোরানের বিভিন্ন আয়াত দিয়ে দেখিয়েছি যে কোরআনে পৃথিবীর আকৃতি সম্পূর্ণ রূপে সমতল বলা হয়েছে l আপনারা এই বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন যে মুসলমানদের দাবি কতটা ভুল বা মিথ্যা l কোরআনের বর্ণনায় পৃথিবী সম্পূর্ণ ভাবেই সমতল l
আসুন তাহলে কোরআনের আয়াতগুলো থেকে দেখি কোরআনে পৃথিবী সম্পর্কে এবং এর আকৃতি সম্পর্কে কি বলা হয়েছে l
কুরআন-এর ৪০ নাম্বার সুরায় বর্ণিত আছে ,
(৪০) সুরা আল মুমিন , আয়াত ৬৪ :
  "আল্লাহ পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্য বাসস্থান , আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন , অতপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক l তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা l বিশ্বজগতের পালনকর্তা , আল্লাহ বরকতময় l"
(৪০)  সুরা আল মুমিন , আয়াত ৬৪ :
    "আল্লাহই তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন বাসোপযোগী এবং আকাশ কে করেছেন ছাদ এবং তোমাদের আকৃতি গঠন করেছেন উত্কৃষ্ট এবং তোমাদেরকে দান করেছেন উত্কৃষ্ট রিযিক l এই তো আল্লাহ, তোমাদের প্রতিপালক l কত মহান জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ !" (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
(৪০) সুরা আল মুমিন , আয়াত ৬৪ :
     "আল্লাহই তিনি যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে বাসোপযোগী বানিয়েছেন আর আকাশকে একটি চাদোয়া; আর তিনি তোমাদের আকৃতি গঠন করেছেন, সুতরাং তিনি তোমাদের আকৃতি কত সুন্দর করেছেন ! আর তিনি তোমাদের জীবিকা দিয়েছেন উত্কৃষ্ট বস্তু থেকে l এইই হচ্ছেন আল্লাহ - তোমাদের প্রভু l অতএব সকল মহিমার পাত্র আল্লাহ- বিশ্বজগতের প্রভু l"  (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)
SURA 40. Mumin, or The Believer
64. It is Allah Who has made for you the earth as a resting place, and the sky as a canopy, and has given you shape- and made your shapes beautiful,- and has provided for you Sustenance, of things pure and good;- such is Allah your lord. So Glory to Allah, the lord of the Worlds! (Translation by  Abdullah Yusuf Ali ).
40. Al Mu'min (The Believer)
64. Allah it is Who appointed for you the earth for a dwelling-place and the sky for a canopy, and fashioned you and perfected your shapes, and hath provided you with good things. Such is Allah, your lord. Then blessed be Allah, the lord of the Worlds! (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

উপরিউক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ এই পৃথিবীকে তৈরী করেছেন মানুষের বাসুপযোগী অর্থাৎ বাসস্থান হিসেবে l এবং মহান আল্লাহ তাআলা আকাশকে ছাদ বা চাদোয়া করে তৈরী করেছেন l এবং মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে প্রথমে তৈরী করেছেন এবং পরে মানুষের আকৃতিকে অনেক সুন্দর করে দিয়েছেন l এবং মহান আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন খুব ভালো বা উত্কৃষ্ট রিযিক বা খাবার l আর যে মহান সত্তা এগুলো দিয়েছেন তিনি মহান আল্লাহ, মানুষের প্রভু, মানুষের প্রতিপালক l সুতরাং বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ কত মহান, কত বরকতময় l
আপনারা এবার লক্ষ করুন এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন যে তিনি এই পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযুগী করেছেন এবং আকাশকে তিনি পৃথিবীর ছাদ বা চাদোয়া হিসেবে রেখেছেন l মানুষকে সৃষ্টি করে মানুষকে সুন্দর আকৃতি দিয়েছেন আর তাদের রিজিকের ব্যবস্থা করেছেন খুব ভালো খাদ্য উপকরণ দিয়ে l আর তাই আল্লাহ মহান এবং বরকতময় l
আবার আরেকটা আয়াত লক্ষ করুন :
(০২) সুরা বাকারা; আয়াত ২২ :
     "যে পবিত্র সত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উত্পাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসেবে l অতএব , আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকেও সমকক্ষ কর না l বস্তুত : এসব তোমরা জানো l"
(০২) সুরা বাকারা; আয়াত ২২ :
      "যিনি তোমাদের জন্যে যমীনকে শয্যা আকাশকে ছাদ স্বরূপ করেছেন এবং যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন, অতপর তার দ্বারা তোমাদের জন্যে উপজীবিকা স্বরূপ ফলপুঞ্জ উত্পাদন করেন, অতএব তোমরা জেনে শুনে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না l" ((অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
(০২) সুরা বাকারা; আয়াত ২২ :
     "যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে ফরাশ বানিয়েছেন, আর আকাশকে চাদোয়া; আর তিনি আকাশ থেকে পাঠান বৃষ্টি, তা দিয়ে তারপর ফলফসল উত্পাদন করেন তোমাদের জন্য রিযিক হিসেবে l অতএব আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্ধী খাড়া করো না, অধিকন্তু তোমরা জানো l"(অনুবাদ:- : জহুরুল হক)
 SURA 2. Baqara, or the Heifer:
22. Who has made the earth your couch, and the heavens your canopy; and sent down rain from the heavens; and brought forth therewith Fruits for your sustenance; then set not up rivals unto Allah when ye know [the truth]. (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 2. Baqara
22. Who hath appointed the earth a resting-place for you, and the sky a canopy; and causeth water to pour down from the sky, thereby producing fruits as food for you. And do not set up rivals to Allah when ye know [better].  (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, যিনি বা যে পবিত্র সত্তা মানুষের জন্য ভূমিকে বা যমীনকে বিছানা অথবা শয্যা এবং আকাশকে ছাদ বা চাদোয়া স্বরূপ বানিয়েছেন, আর আকাশ থেকে বৃষ্টি বা পানি বর্ষণ করেন এবং সেই পানি দ্বারা বিভিন্ন ফল ফসল উত্পাদন করেন মানুষের খাবার বা রিযিক হিসেবে l অতএব আল্লাহ তাআলা বলছেন যে কেউ যেন তার সাথে অন্য কাউকে সমকক্ষ বা শরীক না করে l আর এই সব মানুষের(মুসলিমদের) জানা আছে l
অর্থাত এই আয়াত অনুযায়ী, আল্লাহ তাআলা বলছেন যে তিনি পৃথিবীকে মানুষের বিছানা স্বরূপ সৃষ্টি করেছেন আর আকাশকে তার ছাদ স্বরূপ করে সৃষ্টি করেছেন l এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি রূপে পানি বর্ষণ করে সেই পানি দ্বারা বিভিন্ন ফল ফসল উত্পাদন করে মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন l আর এজন্য কেউ যেন তার শরীক না করে অর্থাত তার সমকক্ষ কাউকে দাড় না করায় l
লক্ষ করুন, এই আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে তিনি ভূমিকে বিছানার মত আর আকাশকে ছাদের মত করে তৈরী করেছেন l
এখন আমরা আরেকটা আয়াত দেখবো:
(১৫) সুরা আল হিজর; আয়াত ১৯ :
    "আমি ভু-পৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি এবং তার উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক বস্তু সুপরিমিত ভাবে উত্পন্ন করেছি l"
(১৫) সুরা আল হিজর; আয়াত ১৯ :
    "পৃথিবীকে আমি বিস্তৃত করেছি এবং ওতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি; আমি ওতে প্রত্যেক বস্তু উদগত করেছি সুপরিমিত ভাবে l" (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
(১৫) সুরা আল হিজর; আয়াত ১৯ :
     "আর পৃথিবী- আমরা তাকে প্রসারিত করেছি, আর তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা, আর তাতে উত্পন্ন করেছি হরেক রকমের জিনিস সুপরিমিতভাবে l" (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)
SURA 15. Al-Hijr, or The Rocky Tract:
19. “And the earth, We have spread out [like a carpet]; set thereon mountains firm and immovable; and produced therein all kinds of things in due balance.”
 (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 15. Al-HIJR:
19. “And the earth have We spread out, and placed therein firm hills, and caused each seemly thing to grow therein.” (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াতটিতে বলা হয়েছে যে , আল্লাহ অথবা আল্লাহ তার ফেরেস্তাগণ পৃথিবীকে বিস্তৃত বা প্রসারিত করেছেন (কোনো ক্ষেত্রে কার্পেটকে যেভাবে বিছানো হয় সেভাবে প্রসারিত বা বিস্তৃত করা হয়েছে) l এবং আল্লাহ অথবা আল্লাহ তার ফেরেস্তাগণ পৃথিবীর উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছেন (সুদৃঢ়ভাবে) l এবং এই পৃথিবীতে প্রত্যেকবস্তু সুপরিমিতভাবে উত্পন্ন বা উদগত করেছেন l

অর্থাত এই আয়াত অনুযায়ী আল্লাহ তার ফেরেশতাদেরকে দিয়ে পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন অথবা একে প্রসারিত করেছেন l আর এতে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং পৃথিবীতে প্রত্যেক বস্তু দিয়েছেন পরিমিতভাবে l

লক্ষ করুন এখানে আল্লাহ বলছেন যে তিনি পৃথিবীকে বিস্তৃত বা প্রসারিত করেছেন l

এবার অন্য একটা আয়াত দেখবো :
(৫০). সুরা ক্বাফ; আয়াত :
         "আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালার ভার স্থাপন করেছি এবং তাতে সর্বপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ উদগত করেছি l"
(৫০). সুরা ক্বাফ; আয়াত :
         "আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং সেখানে উত্পন্ন করেছি নয়ন প্রীতিকর সর্বপ্রকার উদ্ভিদ l" (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
(৫০). সুরা ক্বাফ; আয়াত :
         "আর পৃথিবী- তাকে আমরা প্রসারিত করেছি আর তাতে স্থাপন করেছি পাহাড়-পর্বত, আর তাতে আমরা জন্মিয়েছি হরেক রকমের মনোরম বস্তু- " (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)

SURA 50. Qaf
7. And the earth- We have spread it out, and set thereon mountains standing firm, and produced therein every kind of beautiful growth [in pairs]- (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 50. QAF
7. “And the earth have We spread out, and have flung firm hills therein, and have caused of every lovely kind to grow thereon,” (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াত অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন বা প্রসারিত করেছেন l আর পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বত মালা অর্থাত তিনি পৃথিবীর উপর পর্বত স্থাপন করেছেন l এবং এতে অর্থাত পৃথিবীতে সবপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ উত্পন্ন করেছেন l

অর্থাত আল্লাহ পৃথিবীকে বিস্তৃত বা প্রসারিত করেছেন আর এতে স্থাপন করেছেন পাহাড় পর্বত l এবং এর মধ্যে সব প্রকার সুন্দর উদ্ভিদ উত্পন্ন করেছেন l

লক্ষ করুন এখানেও বলা হয়েছে যে আল্লাহ পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন অথবা প্রসারিত করেছেন l

(৭৮). সুরা আন- নাবা ; আয়াত :
     "আমি কি করিনি ভূমিকে বিছানা ?"
     "এবং পর্বতমালাকে পেরেক ?"
(৭৮). সুরা আন- নাবা ; আয়াত :
      "আমি কি পৃথিবীকে বিছানা বানিয়ে দেই নি ?"
      " পাহাড় সমূহকে পেরেক রূপে গেড়ে দেইনি ?" (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)

(৭৮). সুরা আন- নাবা ; আয়াত :
      "আমরা কি পৃথিবীকে পাতানো-বিছানারূপে বানাইনি, "
       "আর পাহাড়-পর্বতকে খুটিরুপে ?" (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)

SURA 78. Nabaa,
6. Have We not made the earth as a wide expanse,
7. And the mountains as pegs? (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 78. AN-NABA
6. Have We not made the earth an expanse,
7. And the high hills bulwarks? (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)


এই আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ মানুষকে বা মুহাম্মদ : কে প্রশ্ন করেছেন যে আল্লাহ অথবা আল্লাহ তার ফেরেস্তাগণ পৃথিবীকে বিছানার মত করে তৈরী করেছেন অথবা বিছানার মত করে একে প্রসারিত করেছেন l অর্থাত পৃথিবীকে তিনি প্রশস্ত ভাবে প্রসারিত করেছেন l
এবং পর্বতমালাকে পেরেকের মত ভূমিতে গেড়ে দিয়েছেন l অথবা পর্বত মালাকে খুটি রূপে গেড়ে দিয়েছেন l
তাহলে এই আয়াত অনুযায়ী বুঝা যাচ্ছে যে পৃথিবীকে আল্লাহ ফেরেস্তাদের মাধ্যমে বিছানা যেমন প্রশস্ত ভাবে বিছানো হয় সেই ভাবেই একে প্রসারিত করেছেন l
লক্ষ করুন এখানে বলা হয়েছে যে পৃথিবীকে বিছানার মত অর্থাত প্রশস্তভাবে প্রসারিত করেছেন l যেভাবে বিছানাকে বিছানো হয় সেভাবে l আর পর্বতকে পেরেকের মত বা খুটির মত পৃথিবীর উপর স্থাপন করেছেন l

আবার আরেকটা আয়াত লক্ষ করি :
(৮৮). সুরা আল গাশিয়াহ ; আয়াত ১৯ ২০ :
   "এবং পাহাড়ের দিকে যে, তা কিভাবে স্থাপন করা হয়েছে ?"
   "এবং পৃথিবীর দিকে যে, তা কিভাবে সমতল বিছানো হয়েছে?"
(৮৮). সুরা আল গাশিয়াহ ; আয়াত ১৯ ২০ :
       "এবং পর্বতমালার দিকে যে, কিভাবে ওটাকে বসানো হয়েছে ?"
       "এবং ভুতলের দিকে যে, কিভাবে ওটাকে সমতল করা হয়েছে ?"  (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
(৮৮). সুরা আল গাশিয়াহ ; আয়াত ১৯ ২০ :
       "আর পাহাড়-পর্বতের দিকে- কেমন করে তাদের স্থাপন করা হয়েছে,"
       "আর এই পৃথিবীর দিকে- কেমন করে তাকে প্রসারিত করা হয়েছে ?"
(অনুবাদ:- : জহুরুল হক)
SURA 88. Gashiya, or The Overwhelming Event
19. And at the Mountains, how they are fixed firm?-
20. And at the Earth, how it is spread out? (Translation by Abdullah Yusuf Ali)
SURA 88. Al-GHASHIYA
19. And the hills, how they are set up?
20. And the earth, how it is spread? (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ প্রশ্ন করছে মানুষকে যে তারা কি লক্ষ করেনা বা দেখেনা যে পাহাড়-পর্বতের দিকে যে সেটা বা সেগুলো কিভাবে স্থাপন করা হয়েছে (দৃঢ়ভাবে) l তিনি আরো প্রশ্ন করেছেন যে তারা (মানুষেরা ) কি লক্ষ করেনা পৃথিবীর দিকে যে সেটা কিভাবে সমতল বিছানো হয়েছে বা প্রসারিত করা হয়েছে l

এই আয়াত অনুযায়ী আল্লাহ মানুষকে প্রশ্ন করেছেন যে কিভাবে পাহাড়-পর্বত সমূহকে স্থাপন করা হয়েছে (দৃঢ়ভাবে) এবং পৃথিবীকে সমতল ভাবে বিছানো হয়েছে বা প্রশস্ত ভাবে প্রসারিত করা হয়েছে l
লক্ষ করুন এখানে বলা হয়েছে যে পৃথিবীকে সমতল বিছানো হয়েছে যেভাবে বিছানা বিছানো হয় অথবা প্রসারিত করা হয়েছে (প্রসস্তভাবে) l অর্থাত পৃথিবীকে সমতল বা প্রশস্ত করা হয়েছে l

(৫১). সুরা আয-যারিয়াত; আয়াত ৪৮:
       "আমি ভূমিকে বিছিয়েছি l আমি কত সুন্দর ভাবেই না বিছাতে সক্ষম l"

(৫১). সুরা আয-যারিয়াত; আয়াত ৪৮:
      "এবং আমি পৃথিবীকে বিছিয়ে দিয়েছি, সুতরাং আমি কত সুন্দরভাবে বিছিয়েছি !"  (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)

(৫১). সুরা আয-যারিয়াত; আয়াত ৪৮:
      "আর পৃথিবী - আমরা একে বিছিয়ে দিয়েছি; কাজেই কত সুন্দর এই বিস্তারকারী !" (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)

SURA 51. Zariyat, or the Winds that Scatter
48. And We have spread out the [spacious] earth: How excellently We do spread out! (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 51. ADH-DHARIYAT
48. And the earth have We laid out, how gracious is the Spreader [thereof]! (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াত অনুযায়ী আল্লাহ বলছেন যে আল্লাহ অথবা আল্লাহ তার ফেরেস্তাগণ এই ভূমিকে বা পৃথিবীকে বিছিয়েছেন অথবা প্রসারিত করেছেন (প্রশস্তভাবে) l এবং তিনি সুন্দর করে বিছিয়েছেন আর কত সুন্দর সেই বিস্তারকারী যে একে বিছিয়েছে বা প্রসারিত করেছে খুব ভালোভাবে  l
অর্থাত আল্লাহ পৃথিবীকে বিছিয়েছে যেভাবে বিছানা বিছানো হয় অথবা একে প্রসারিত করেছেন প্রশস্তভাবে l আর আল্লাহ কত ভালোভাবে বিছিয়েছেন বা প্রসারিত করেছেন আর তাই সে খুব সুন্দর প্রসারণকারী বা বিস্তারকারী l
লক্ষকরুন এখানে আল্লাহ সরাসরি বলছেন যে তিনি এই ভূমি বা পৃথিবীকে সুন্দর ভাবে বিছিয়েছেন বা একে প্রসারিত করেছেন সুন্দর ভাবে l
(চলবে....)


(বি.দ্র.: লেখাটি এমকেএ আহমেদ রচিত "কোরআনের বর্ণনায় সমতল পৃথিবী- ১ম খন্ড" থেকে ধারাবাহিক ভাবে নেওয়া হচ্ছে।)

No comments:

Post a Comment