Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Sunday, July 20, 2014

বিবর্তনবাদ এবং আস্তিকদের দ্বিমুখীতা :




প্রতিটা বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব উত্থাপিত হলে প্রথমে কিছু মানুষ এর বিরোধিতা করে l পরে যখন তত্বটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে তখন সবাই তত্ত্বটিকে মেনে নেয় l মানব ইতিহাসে এরকম হাজারও উদাহরণ আছে l কোন নতুন তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এর বিরোধিতা করা হয়নি এমনটি ঘটেনি কখনও l অথবা ঘটলেও এমনটি খুব কমই ঘটেছে l
সবসময়ই কোন বৈজ্ঞানিক তত্বের বিরোধিতা করেছে কিছু মানুষ l
আর এই বিরোধিতায় সব চেয়ে বেশি ভুমিকা রেখেছে আস্তিকরা l আস্তিকরা বিজ্ঞানের সেই সব তত্ত্বগুলোর ঘোর বিরোধী ছিল সবসময়ই যেসব তত্ত্ব ধর্মের বিরুদ্ধে গেছে l আস্তিকরা প্রথমে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলোর বিরোধিতা করেছে যেগুলো তাদের ধর্মের বিরুদ্ধে গেছে l কিন্তু যখন এই তত্ত্বগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তখন আস্তিকদের মধ্যে কেউ কেউ সেই তত্বকে মেনে নিয়েছে l আবার বাকি সকলে সেই তত্বের বিরদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে l কিন্তু যখন তত্বটির বিপুল তথ্য প্রমান সংগ্রহ করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে তখন সবাই সেই তত্বটি মেনে নিয়েছে l তবুও কিছু মানুষ থেকে গেছে যারা তত্বটি প্রতিষ্ঠিত হবার পরেও সেই তত্বটি মেনে নেয়নি l বরং এর বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে l যখন সেই তত্বটি সর্বজন গৃহীত হয়েছে ব্যাপক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে তখন এই লোকগুলোই সেই তত্বের গুনগান গেয়েছে l কেও কেও আবার একধাপ এগিয়ে বলেছে এই তত্বটি তাদের ধর্মে আগেই বলা হয়েছে l যে তারা আগে ওই তত্ত্বটিকেই অস্বীকার করেছে তারাই আবার ধর্মকে বাচাতে সেই তত্বকে ধর্মের সিল মোহর মেরে দিতে উদ্যত হয়েছে l এভাবেই আস্তিকরা আচরণ করে থাকে বৈজ্ঞানিক তত্বের ব্যাপারে l
এরকম অনেক উদাহরণ আছে মানুষের ইতিহাসে l
পৃথিবীর মানুষ আগে বিশ্বাস করতো পৃথিবী বিশ্বজগতের কেন্দ্রে রয়েছে l এই মিথ্যে ধারনাটি ধর্মে ভালো করেই ছিল সবসময় l কিন্তু যখন কোন এক বিজ্ঞানী দেখালো যে পৃথিবী কেন্দ্রে নয় বরং সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘুরে l এই তত্বটি ধর্মের বিরুদ্ধে গেল সরাসরি l ফলে খেপে গেল ধার্মিকরা l তাদের ধর্মকে বাচাতে সেই বিজ্ঞানীকে বাধ্য করা হলো এই তত্ত্ব তুলে নিতে l শুধু তাই নয় তাকে শাস্তিও দিল সেই ধার্মিক অন্ধ লোকগুলো l কিন্তু এই তত্ত্ব ঠিকই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে l আর সেই ধার্মিক লোকগুলোই এখন বলছে এই তথ্য সত্য l মেনে নিচ্ছে কারণ সত্যকে অস্বীকার করা যায় না l

তেমনি একটি তত্বের বিরোধীতা করে আসছে অন্ধবিশ্বাসী আস্তিকগুলো l সেটা হচ্ছে বিবর্তনবাদ l এই তত্ত্ব মতে মানুষের কোন আদিপুরুষ তৈরী করা হয়নি বরং মানুষ এসেছে অন্য কোন প্রাণী থেকে বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে l বিবর্তনবাদের দাবি হচ্ছে বানর, গরিলা, শিপ্পান্জি এবং মানুষ এসেছে একই পূর্বপুরুষ থেকে l এই পূর্ব পুরুষ থেকে বিবর্তিত হয়ে আজকের সভ্য মানুষের উত্থান ঘটেছে l ফলে কিছু ধর্ম যেমন খ্রিস্টান, মুসলমান ধর্মের বিরুদ্ধে যাওয়ায় এই তত্ত্বটিকে কখনই মেনে নিতে পারেনি তারা l বরং এই তত্বের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে l তারা মানুষকে মিথ্যা কথা বলে বিবর্তনবাদকে ভুল প্রমান করার চেষ্টা করেছে l কিন্তু তাতে এই তত্ত্ব থেমে থাকেনি; যেমনটি অন্যান্য তত্ত্বগুলো থেমে থাকেনি l এই তত্ত্ব আবির্ভাবের শত বছর পরেও এই তত্বের পক্ষে তথ্য প্রমান উত্থাপিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে l ফলে খ্রিস্টান ধর্মের লোকগুলো বিবর্তনবাদকে মেনে নিচ্ছে ব্যাপক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে l কিন্তু এখনো কিছু কিছু খ্রিস্টান এই তত্বকে মেনে নিতে পারছে না l তারা এর বিরোধিতা করেই যাচ্ছে উদ্ভট উদ্ভট তথ্য উত্থাপন করে করে l কিন্তু তবুও বিবর্তনবাদ যেভাবে প্রমাণিত হয়েছে তাতে তাদের ধর্মকে টিকিয়ে রাখতে তারাও বিবর্তনবাদের পক্ষে কথা বলতে শুরু করেছে l তারপরেও কিছু মানুষ থেকেই যাচ্ছে যারা বিবর্তনবাদকে সত্যি জেনেও মেনে নিতে পারছে না l
মুসলমানরা আরো বেশি বিবর্তনবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছে তাদের ধর্মকে বাচাতে l কিন্তু বিবর্তনবাদের এত এত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবার কারণে কিছু কিছু মুসলমান বিবর্তনবাদকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে l কিন্তু তারা সংখ্যায় খুব কম l বেশির ভাগ মুসলমান এখনও অস্বীকার করে বিবর্তনবাদকে হাজার হাজার তথ্য প্রমান উপস্থাপন এবং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবার পরেও l তবুও তারা তাদের ধর্মকে বাচাতে বিবর্তনের বিপক্ষে নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে এবং সহজ সরল স্বাধারণ মানুষকে মিথ্যা এবং ভুল ধারণা দিয়ে বেড়াচ্ছে ধার্মিকগুলো l
কিন্তু তাতে সত্য বিবর্তনবাদ মিথ্যে হয়ে যাবে না যেমনটি অন্য কোন তত্ত্ব মিথ্যে হয়ে যায়নি l বিবর্তন ঘটেছে এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে l
বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে ধর্মগুলো যুগের পর যুগ ধরেই অবস্থান নিয়েছে l এখনও নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও নিবে তাদের ধর্মকে বাচাতে যেয়ে l কিন্তু তাতে বিশেষ কোন লাভ হবে না কিছু মানুষকে কুসংস্কারে রাখা ছাড়া l অতীতে এমনটি বহুবার ঘটেছে, এখনো ঘটছে এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে এতে কোন সন্দেহ নেই l
আস্তিকদের দ্বিমুখিতার প্রমান পাওয়া যায় যখন তারা তাদের ধর্মকে বাচাতে যেয়ে বিজ্ঞানের সাথে নিজেদের ধর্মকে মিলাতে যায় l এবং তারা মানুষের কাছে উপস্থাপন করে দেখাতে চায় যে তাদের ধর্ম বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ l এবং বিজ্ঞানের সাথে মিল দেখাতে তারা তাদের ধর্মের আমূল পরিবর্তন করতেও দ্বিধাবোধ করে না l কিন্তু যে তত্বের সাথে তারা তাদের ধর্মকে মিলাতে পারে না বা মিল দেখাতে পারে না সেই তত্ত্বগুলোর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে বেড়ায় l
বিবর্তনবাদ তেমনই একটা তত্ত্ব যেটার সাথে মুসলমানরা তাদের ধর্মের পরিবর্তন এনেও এর সাথে মিল খুঁজে পাচ্ছে না অথবা সরাসরি এই তত্বটা তাদের ধর্মের বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলে তারা এর বিরোধিতা করে যাচ্ছে মিথ্যা কথা বলে বলে l কিন্তু অন্যান্য তত্ত্ব যেগুলো প্রতিষ্ঠিত এবং সর্বজন স্বীকৃত সেগুলোকে তারা এখন আর অস্বীকার করতে পারছে না বলে সেটার সাথে তাদের ধর্মের মিল দেখাচ্ছে l কিন্তু বিবর্তনবাদের সাথে তাদের ধর্মের কোন মিল না থাকায় এবং তাদের ধর্মের সরাসরি বিরদ্ধে যাওয়ায় তারা এর বিরুদ্ধে মানুষকে মিথ্যে বলে তাদের ধর্মকে টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছে l কিন্তু মানুষ তবুও জেনে যাচ্ছে যে বিবর্তনবাদ সত্য l তাদের মিথ্যা অপপ্রচার কোন কাজে দিচ্ছে না l এখন অনেক মুসলমানও মানতে বাধ্য হচ্ছে যে বিবর্তনবাদ সত্য l ধার্মিকরা ভুলে যায় যে তাদের মিথ্যে ধর্ম কখনই বিজ্ঞানকে এবং বিজ্ঞানের তত্বকে মিথ্যা প্রতিপন্য করতে পারেনি এবং কোনদিন তারা পারবে না l সত্য চিরদিন সত্যই থাকবে l
যেসব আস্তিকরা (খ্রিস্টান এবং মুসলমান) আজ বিবর্তনবাদ কে মেনে নিতে পারছে না সত্যি জেনেও বরং মানুষের মাঝে মিথ্যে বলে বলে এর বিরদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তারাই যখন দেখবে বিবর্তনবাদকে সবাই মেনে নিচ্ছে এর সত্যতার জন্য তখন এরাই ধর্মকে পরিবর্তন করে বিবর্তনবাদকে মেনে নেবে l শুধু তাই নয় তারাই তখন মিথ্যে দাবি করবে যে বিবর্তনবাদের কথা তাদের ধর্মগ্রন্থে আগেই বলা হয়েছে l অতীতে এরকম করেছে, বর্তমানে করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে এতে কোন ভুল নেই l
মুসলমানরা বিবর্তনবাদকে মিথ্যে প্রমান করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছে কারণ বিবর্তনবাদের স্বপক্ষে লক্ষ লক্ষ প্রমান উপস্থাপিত হয়েছে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য l
আবার তারাই তাদের ধর্মকে বৈজ্ঞানিক বলে দাবি করছে l এবং বিজ্ঞানকে তাদের মিথ্যা ধর্মকে বাচাতে ব্যবহার করছে l কিন্তু বিবর্তনবাদ তাদের ধর্মের সরাসরি বিরুদ্ধে যাওয়ায় তারা বিবর্তনবাদকে অস্বীকার করতে চাইছে l কিন্তু তবুও তারা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে বিবর্তনবাদ বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য বলে l কিন্তু তাদের অপপ্রচার কিন্তু থেকে থাকেনি l তারা এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েই যাচ্ছে এবং স্বাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে মিথ্যে বলে l কিন্তু তাতে বিবর্তনবাদ থেমে থাকছে না বরং আরোও বেশি করে সত্য প্রমানিত হচ্ছে l

যখন পৃথিবীর সব মানুষ বিবর্তনবাদ সত্য এটা জেনে যাবে তখন এই মুসলমানেরাই বিবর্তনবাদকে মেনে নেবে এবং বিবর্তনবাদের আলোকে তাদের মিথ্যে ধর্মকে নতুন করে সাজাবে l এবং দাবি করবে তাদের ধর্ম গ্রন্থে আগেই বিবর্তনবাদের কথা উল্লেখ করা আছে l
এভাবেই আস্তিকরা তাদের মিথ্যে ধর্মকে বাঁচিয়ে রেখেছে l এবং ভবিষ্যতেও এভাবেই মিথ্যে ধর্মগুলোকে বাঁচিয়ে রাখবে l
কিন্তু বিবর্তনবাদ অন্যান্য বৈজ্ঞানিক তথ্যের মতই সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকবে l কারণ মানব সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসে জর্জরিত মিথ্যে ধর্মগুলো মিথ্যে প্রতিপন্য হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে l প্রতিষ্ঠিত হবে সত্যের আলো l

No comments:

Post a Comment