পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্ম আছে l আর এই সব ধর্মগুলো ধারণা দেয় মানুষের শরীরে আত্বা বলে একটা কিছুর
অস্তিত্ব আছে l এই আত্মার কখনো মৃত্যু হয় না l দেহ মারা যায় কিন্তু আত্মা কখনো মরে না বা বিনাশ হয় না l
মৃত্যুর পরে এই আত্মা নতুন এক জীবনে পদার্পণ করে l এবং আত্মাগুলো মানুষের মৃত্যুর পরে সৃষ্টিকর্তার নিকটে চলে যায়
l এবং সৃষ্টিকর্তা মানুষের কৃত কর্মের জন্য আত্মাকে শাস্তি দেয়
বা পুরস্কৃত করে l
আবার সৃষ্টিকর্তা হচ্ছে এমন এক সত্বা যে সমগ্র
বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছে কিন্তু নিজে কখনই সৃষ্টি হয়নি l এবং বিশ্বজগত তার ক্ষমতা ছাড়া চলতে পারবে না l বিশ্বজগত এবং মৃত্যুর পরের জগতের সব কিছুই সৃষ্টিকর্তা পরিচালনা করে l সৃষ্টিকর্তার জন্ম নেই এবং মৃত্যুও নেই l আদি অনন্তকাল থেকেই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব ছিল এবং চিরকাল তার
অস্তিত্ব থাকবে l কোন কোন ধর্ম বলে সৃষ্টিকর্তার একটা আকৃতি
আছে l আবার কোন কোন ধর্ম বলে সৃষ্টিকর্তার কোন আকৃতি
নেই l অর্থাত সৃষ্টিকর্তা নিরাকার এক সত্বা l
এবং পবিত্র সত্বা l
সৃষ্টিকর্তা যুগে যুগে কিছু মানুষ কে তার
প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছে অথবা কোন আকৃতি ধারণ করে পৃথিবীতে এসে মানুষকে পাপের পথ
থেকে সত্যের পথে এবং সৃষ্টিকর্তার নির্ধারিত পথে আনার চেষ্টা করেছে l
যারা সৃষ্টিকর্তার আদেশ অমান্য করেছে তাদেরকে তিনি কঠিন শাস্তি
দিয়েছে l আবার যারা সৃষ্টিকর্তার আদেশ মত চলেছে তাদেরকে
সে পুরস্কৃত করেছে l কোন কোন ধর্ম বলে সৃষ্টিকর্তা কিছু দূত বা
কর্মী নিযুক্ত করেছে যারা মানুষের সাথে যোগাযোগ করে সৃষ্টিকর্তার কথা মানুষকে জানায়
l যেমন ইসলাম ধর্ম, খ্রিষ্ট ধর্ম
এবং ইহুদি ধর্মে সৃষ্টিকর্তা কিছু দূত বা ফেরেশতা সৃষ্টি করেছে যেগুলো বিশ্বজগতের বিভিন্ন
কাজ সম্পন্ন করে এবং মানুষের কাছে সৃষ্টিকর্তার ঐশিবাণী নিয়ে আসে l যেমন ফেরেশতা জিব্রাইল বা এন্জেল গ্যাব্রিয়েল l
এগুলো আবার কোন পদার্থের তৈরী নয় l
এগুলো হচ্ছে আলোর তৈরী l আমরা জানি আলো এক প্রকার শক্তি l তাহলে যদি ফেরেশতারা
আলো বা নুর-এর তৈরী হয় তবে ফেরেশতাদের কোন নির্দিষ্ট কোন আকৃতি থাকবে না l এবং ফেরেশতারা হবে এক প্রকারের শক্তি l কারণ আলো হচ্ছে এক
প্রকার শক্তি l
আবার অন্যান্য ধর্মে যে সৃষ্টিকর্তার নিযুক্ত
করা দূতগুলো আছে সেগুলোও আলো বা আগুনের তৈরী হয়ে থাকে l এবং এই দেবদুতগুলো অলৌকিক শক্তির অধিকারী হয়ে থাকে l ফলে এই দেবদূতগুলো হচ্ছে এক প্রকারের শক্তি l
আবার সৃষ্টিকর্তা যে মানুষগুলোকে প্রতিনিধি
নিযুক্ত করে থাকে যেমন নবী বা রাসুল তারাও অলৌকিক শক্তির অধিকারী হয়ে থাকে l
এবং এই সব অলৌকিক শক্তির মানুষগুলো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম
অলৌকিক কাজ করে গেছে পৃথিবীতে l এবং সৃষ্টিকর্তা বিভিন্ন
সময়ে বিভিন্ন অলৌকিক কাজ করে চলেছে এই পৃথিবীর বুকে l
এখন আমরা যদি এই সব ধর্মীয় কথাগুলোকে বাস্তব
জ্ঞানের আলোকে বিচার করি তবে ধর্মের এই কথাগুলো অবাস্তব হয়ে যায় l বিজ্ঞানের মাপ কাঠিতে ধর্মকে ফেললে ধর্ম অবাস্তব আকার ধারণ করে
মানুষের জ্ঞানের কাছে l
বিজ্ঞান এখন অনেক উন্নত হয়েছে l ফলে মানুষ যেগুলোকে অলৌকিকতা বলে বিশ্বাস করত সেই ঘটনাগুলোকে
বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করে দেখিয়ে দিয়েছে l এবং প্রমান
করে দিয়েছে যে অলৌকিকতা বলে পৃথিবীতে কিছু নেই l ফলে সৃষ্টিকর্তা এবং সৃষ্টিকর্তার প্রেরিত নবী-রাসুল বা দূতদের অলৌকিকতার যে গল্প
গুলো পৃথিবীর মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে সেগুলো মিথ্যে এবং মানুষের বানানো গল্প বলেই
প্রমান হয়েছে l
আবার বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে আলোসহ যত
প্রকার শক্তি পৃথিবীতে বিরাজ করে এবং মহাবিশ্ব থেকে যে শক্তি পৃথিবীতে আসে সেসব শক্তিগুলোকে
মানুষ সনাক্ত করেছে এবং আবিষ্কার করেছে l যেমন আলোর কনিকা
ফোটন, বিভিন্ন প্রকার রেডিয়েশন, তেজস্ক্রিয় রশ্বি, আলফা-গামা-আল্ট্রাভায়োলেট
রে, এক্সরে এবং যত প্রকার আলোক শক্তি আছে সবগুলোই আবিষ্কার করে ফেলেছে
l আবার বিভিন্ন রকম ওয়েব যেমন রেডিও ওয়েব মাইক্রো ওয়েব প্রভৃতি
মানুষ আবিষ্কার করে ফেলেছে বা সনাক্ত করে ফেলেছে l শুধু তাই নয় পৃথিবীতে যত প্রকারের শক্তি আছে এবং মহাবিশ্ব থেকে যত প্রকার শক্তি
পৃথিবীতে আসে তার সব রকম শক্তিই মানুষ আবিষ্কার করে ফেলেছে যেমন আলোক শক্তি,
তাপ শক্তি, চুম্বক শক্তি,
মহাকর্ষ শক্তি, বিদ্যুত শক্তি প্রভৃতি
মানুষ আবিষ্কার করে ফেলেছে l
এখন ধর্ম যে সত্যি নয় এটা বিজ্ঞান দ্বারাই
প্রমানিত হয় l যেমন বিজ্ঞান বলে যে অলৌকিকতা বলে কিছু নেই
কিন্তু ধর্মগুলো দাড়িয়ে আছে অলৌকিকতার উপর l আবার ধর্মগুলো বলে আত্বা বলে কিছু আছে কিন্তু বিজ্ঞান বলে আত্মা বলে কোন কিছুর
অস্তিত্ব নেই l আবার ধর্ম বলে সৃষ্টিকর্তা নিরাকার কিন্তু
সৃষ্টিকর্তা চিন্তা করতে পারে এবং মহাবিশ্ব সৃষ্টিকর্তা নিজেই নিয়ন্ত্রণ করে l
অর্থাত সৃষ্টিকর্তার চিন্তা শক্তি আছে l কিন্তু বিজ্ঞান বলে চিন্তা করার জন্য মস্তিষ্ক থাকতে হবে l
আর নিরাকার কারও মস্তিস্ক থাকা সম্ভব নয় l আর এজন্যই সৃষ্টিকর্তার যে অস্তিত্ব মানুষ কল্পনা করেছে সেটার
বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই l সৃষ্টিকর্তা শুধু মানুষের
কল্পনা মাত্র l
আবার ধার্মিকগুলো বলে যে সৃষ্টিকর্তা বিভিন্ন
দূত বা ফেরেশতা পাঠিয়ে থাকে পৃথিবীতে এবং এই দূত বা ফেরেশতাগুলোই পৃথিবীর সমস্ত কাজ
এবং মহাবিশ্বের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে থাকে l অর্থাত এই দূতগুলো বা ফেরেশতাগুলো পৃথিবীতে এবং মহাবিশ্বের সব জায়গায়ই বিরাজমান
আছে l এবং এই দূত বা ফেরেশতাগুলো আলোর তৈরী বা আগুনের
তৈরী l অর্থাত ফেরেশতাগুলো বা দেবদূতগুলো এক প্রকারের
শক্তি l এখন বিজ্ঞান পৃথিবীতে আসা সব রকম শক্তি,
আলো ও তরঙ্গ সনাক্ত করার প্রযুক্তি বের করে ফেলেছে বা মানুষ
এই শক্তিগুলোকে আবিষ্কার করে ফেলেছে l কিন্তু কোথাও
এই আগুনের তৈরী বা আলোর তৈরী ফেরেশতা বা দেবদূতের দেখা পাওয়া যায়নি l অর্থাত এগুলোর বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই l এগোলো মানুষের কাল্পনিক কিছু চরিত্র যার বাস্তব অস্তিত্ব নেই
l
আবার কোন কোন ধর্মে জ্বিন-পরীর অস্তিত্বের
কথা বলা হয়েছে, যারা অদৃশ্য কিন্তু এরা পৃথিবীতে এবং আকাশে
বসবাস করে l এবং জ্বিন হচ্ছে আগুনের তৈরী l কিন্তু বিজ্ঞান কখনই এই জ্বিন বা পরীর কোন অস্তিত্ব পায়নি l
ফলে বুঝা যায় এগুলো হচ্ছে মানুষের কাল্পনিক চরিত্র যেগুলোর কোন
বাস্তব অস্তিত্ব নেই l
আবার অনেক ধর্মে একটু বেশিই কল্পনার বারাবারি
করা হয়েছে l অনেক ধর্মে বলা হয়েছে সৃষ্টিকর্তা সর্বত্র
বিরাজ করে অর্থাত সৃষ্টিকর্তা পৃথিবী এবং মহাবিশের সমস্ত জায়গাতেই বিরাজমান আছে l
বিজ্ঞান বলে মহাবিশ্বের যা কিছুর অস্তিত্ব
আছে তার সবগুলোই দুই অবস্থায় বিরাজমান l আর এটি হচ্ছে
শক্তি এবং পদার্থ l অর্থাত মহাবিশ্বের যা কিছু আছে তার সব কিছুই
এই শক্তি এবং পদার্থ হিসেবে বিরাজমান আছে l বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের সব পদার্থের অস্তিত্ব সনাক্ত করতে পারে এবং সমস্ত শক্তির
অস্তিত্বও সনাক্ত করতে পারে l আর পৃথিবীতে এবং মহবিশ্বে
যত পদার্থ এবং শক্তি আছে সেগুলো মানুষ আবিষ্কার করেছে (এবং করছে) l কিন্তু কোথাও সৃষ্টিকর্তার মত কিছুর অস্তিত্ব সনাক্ত করেনি বা
পায়নি l আবার বিশ্বজগতের সমস্ত উপাদান শক্তি এবং পদার্থের
বাইরে কিছু নেই l তাহলে খুব সহজেই বুঝা যায় পৃথিবীর অনেক কাল্পনিক
চরিত্র বা অস্তিত্বের মত সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বও কাল্পনিক যার অস্তিত্ব বাস্তব জগতে
নেই l এটির অস্তিত্ব আছে শুধু মানুষের মনে কিন্তু
বাস্তব জগতে নয় l
সব ধর্মই বলে সৃষ্টিকর্তা আদি অনন্তকাল থেকে
বিরাজ করছে l অর্থাত অনন্তকাল থেকে সৃষ্টিকর্তা ছিল এবং
অনন্তকাল সৃষ্টিকর্তা থাকবে l অর্থাত সৃষ্টিকর্তা
চিরজীবী l সৃষ্টিকর্তা অনন্তকাল ছিল এবং অনন্তকাল থাকবে
l কিন্তু বিজ্ঞান বলে সময় চিরকাল থেকে ছিল না অর্থাত সময় চিরন্তন
নয় l সময়ের সৃষ্টি হয়েছে এবং এর একটা শেষ থাকবে l অর্থাত সময় চিরকাল থেকে চলে আসেনি বরং সময় একটা নির্দিষ্ট সময়
আগে থেকে সৃষ্টি হয়েছে l এবং এটির একটা শেষ
বা সমাপ্তি থাকবে l আর তাই সৃষ্টিকর্তা চিরকাল থেকে বা অনন্তকাল
থেকে বিরাজমান আছে এবং অনন্তকাল পর্যন্ত বিরাজমান থাকবে এই কথাটি মিথ্যে l সময় সৃষ্টি হয়েছে একটা নির্দিষ্ট সময় আগে আর তাই সৃষ্টিকর্তা
থাকবে ওই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থেকেই l এর আগে সৃষ্টিকর্তার
থাকা সম্ভব হবে না কারণ সময় সৃষ্টি হবার আগে কিছু ছিল না; তাই সময় সৃষ্টি হবার আগে সৃষ্টিকর্তারও অস্তিত্ব থাকা সম্ভব হবে না l অর্থাত চিরকাল থেকে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব ছিল না l
পৃথিবীতে সব ধর্মই কাল্পনিক কিছু চরিত্র কল্পনা
করেছে l যেমন দেবদূত, ফেরেশতা প্রভৃতি, যেগুলোর কোন অস্তিত্ব নেই l এই সত্বাগুলোর অস্তিত্ব শুধু মাত্র মানুষের মনে l অর্থাত এগুলো মিথ্যে গল্প l আর তাই মানুষ যে সৃষ্টিকর্তার
অস্তিত্ব কল্পনা করে তার বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই l সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব শুধু মাত্র ধার্মিকদের মনে বা কল্পনায় আছে কিন্তু বাস্তবে
এগুলোর কোন অস্তিত্ব নেই l এটাই সত্যি l
বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে এটাই প্রমানিত হয়েছে l
মানুষকে সৃষ্টি করেছে কোন এক সৃষ্টিকর্তা
এই কথাটি প্রচলিত আছে পৃথিবীতে l কিন্তু বাস্তব সত্য
হচ্ছে মানুষ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের সৃষ্টি করেছে মানুষের মন দ্বারা এবং মানুষের কল্পনা
দ্বারা l অর্থাত সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টি করেনি
বরং মানুষই সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করেছে l
আর তাই পৃথিবীতে যে ধর্মগুলো প্রচলিত আছে
সেগুলোর কোনটিই সত্যি নয় l ধর্মের কথা বা ধারণাগুলো
যেমন মিথ্যা ঠিক তেমনি ধর্মগুলোও মিথ্যা l
No comments:
Post a Comment