আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
বাস্তব ক্ষেত্রে প্রার্থনা অবশ্যই কাজে দেয়। অফিসে
যান? চাকরী করেন? নিশ্চয় যান, নিশ্চয় করেন নয়তো জীবন চলে কি করে? ছুটির দরকার হলে নিশ্চয়ই
বসের কাছে ছুটির আবেদন করেন? প্রার্থনা করাটা যদি অর্থহীন এবং সময় অপচয় করা হয় তবে
ছুটির আবেদন করাটা কি সময় নষ্ট নয়? প্রার্থনা যদি কাজেই না দেয় তবে অফিসে ছুটির আবেদন
কেন করেন?
যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
প্রার্থনা
কোন কাজেই আসে না
জীবন চলতে হলে বা চালাতে হলে চাকরি করার দরকার পড়ে; প্রার্থনার নয় । সারাদিন রাত প্রার্থনা করলেও জীবন চলার মতো উপাদান আকাশ থেকে পড়বে না । নিজেকে পরিশ্রমের মাধ্যমে উপার্জন করতে হবে । এখানে প্রার্থনার ফল শুন্য ।
ছুটির আবেদন একটা বাস্তব প্রক্রিয়া । ছুটি চাওয়া হয় কোন বাস্তব ব্যাক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টির নিকট যার বাস্তব অস্তিত্ব আছে । আর এটা বাস্তব প্রক্রিয়া বলে ছুটি চাইলে ছুটি কার্যকর হয় ।
কিন্তু প্রার্থনা একটা মনো-কাল্পনিক সান্তনা ছাড়া কিছু নয় । প্রার্থনা করা হয় কোন অস্তিত্বহীন কাল্পনিক সত্বার কাছে । ফলে এটা কখনই কোন ফল নিয়ে আসে না । এটা একটা মনের সান্তনা হিসেবে কাজ কর (অন্ধবিশ্বাসীর কাছে) । তাছাড়া এর কোন বাস্তব প্রয়োগ নেই । ফলে কখনই কোন প্রার্থনা সত্যি হয় না বা প্রার্থনার কোন ফল হয় না । আর তাই ছুটির আবেদনের সাথে প্রার্থনার তুলনা করা বোকামি । তাছাড়া ছুটির আবেদন করা হয় কারন এটি একটি কার্যকর প্রক্রিয়া । প্রত্যেক চাকরী জীবির ছুটি পা্ওয়ার অধিকার আছে । আর তাই ছুটির আবেদন করলে ছুটি মেলে । এটা বাস্তব এবং কার্যকরী সত্য ঘটনা । কিন্তু প্রার্থনা কোন সত্য ও কার্যকরী প্রক্রিয়া নয় । এটা অন্ধবিশ্বাসীদের মনের শান্তনা স্বরুপ কাজ করে । প্রার্থনা কখনই কোন কার্য সম্পাদন করতে পারে না । কিন্তু ছুটির আবেদন একটা কার্য সম্পাদন করে । আবেদনে ছুটি মেলে অর্থাৎ এটি বাস্তব ও কার্যকরী প্রক্রিয়া ।
কিন্তু প্রার্থনা কোন বাস্তব প্রক্রিয়া না হওয়ায় এটির মাধ্যমে কোন কার্যকরী ফল সম্পাদিত হয় না । প্রার্থনা অনেকটা সিগারেটের মতো কাজ করে । যারা সিগারেট খায় তারা ভাবে সিগারেট খেলে টেনশন কমে । কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সিগারেট খেলে শরীর সিগারেটের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে বলে স্মোকারের শরীর সিগারেটের নিকোটিন পাওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকে '। আর টানশনে এই আগ্রহ বা নির্ভরশীলতা বেড়ে যায় বলে স্মোকারের সিগারেট না খেলে ভালো লাগে না । আর এই অবস্থায় যখন স্মোকার সিগারেট খায় তখন তার ভালো লাগে এবং তার কাছে মনে হয় সিগারেট খাওয়াতে টেনশন কমে গেছে । কিন্তু বাস্তবে এমনটা হয় না । আর এজন্যই যারা সিগারেট খায় না মানে নন-স্মোকার তাদের টেনশন কমানোর জন্য সিগারেট খেতে হয় না । কিন্তু স্মোকারের খেতে হয় ।
সেরকম অন্ধবিশ্বাসীদের কাছে মনে হয় প্রার্থনা মনের শান্তি ঘটায় । এবং কোন কার্য সম্পন্ন হলে তারা ভাবে তাদের প্রার্থনার জন্যই এই কাজটি সম্পন্ন হয়েছে । কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ওই কাজটি সম্পন্ন হতে প্রার্থনা কোন ভুমিকাই পালন করেনি । প্রার্থনা না করলেও ওই কাজটি সম্পন্ন হতো । কারণ কার্য সম্পাদন হয় কর্তার কর্মের দ্বারা; প্রার্থনার দ্বারা নয় । আর এজন্যই কর্তার দ্বারা যে কাজ সম্পন্ন হওয়া সম্ভব নয় সেটা কখনই সম্পন্ন হয় না । লক্ষ কোটি বার প্রার্থনা করলেও হয় না । কিন্তু কর্তা যে কাজ করতে সক্ষম সেটা তার কর্মের দ্বারাই সম্ভব হয় । এখানে প্রার্থনা করলেও কর্ম বা কাজ তাকে করতেই হয় । আর যদি সে কাজ করে প্রার্থনা নাও করে তবুও ওই কাজটি সম্পন্ন হয় । কিন্তু কাজ না করে শুধু প্রার্থনা করলে ওই কাজটি কখনই সম্পাদন হয় না ।
অর্থাৎ প্রার্থনার ফলাফল একেবারে শুন্য ।
আর এজন্যই যারা ইশ্বর বা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে না তাদের কার্য বা কাজ সম্পন্ন করতে কোন প্রার্থনার প্রয়োজন হয় না । তারা সব কাজ নিজেদের পরিশ্রমের দ্বারা সম্পন্ন করে । প্রার্থনা তাদের কোন কাজেই আসে না । এমন কি তাদের মনের শান্তনার জন্যও প্রার্থনার দরকার হয় না । তারা সব কাজ প্রার্থনা বিহীন কর্মের দ্বারা সম্পন্ন করে থাকে ।
মানে প্রার্থনার ফলাফল একেবারে শুন্য ।
আস্তিকদের
অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক,
অপযৌক্তিক এবং
অপ-বৈজ্ঞানিক
প্রশ্নঃ
আপনি যখন ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখেন তখন আপনার পাশে জেগে থাকা মানুষটি কেন সেই সপ্নটা দেখে না ? সৃষ্টিকর্তা আছে বলেই এমনটি হয়।
যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
মানুষের মস্তিষ্কের দুটো অংশ- চেতন মন এবং অবচেতন
মন । আমরা যখন ঘুমিয়ে পড়ি তখন
আমাদের মস্তিষ্কের চেতন মনের অংশটুকু ঘুমিয়ে পড়ে । কিন্তু অবচেতন মন জেগে
থাকে । চেতন মন হচ্ছে আমরা যা চিন্তা করি বা অনুভব করি অর্থাৎ আমরা যে আমাদের অস্তিত্ব টের পাই সেটাই । আবার অবচেতন মনের উপর আমাদের কোন নিয়ন্ত্রন নেই । মস্তিষ্কের এই অংশটুকু প্রানীর শারীরবৃত্তিয় সমস্ত
কাজ সম্পন্ন করে ও নিয়ন্ত্রন করে । যেমন হৃৎসন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি । মোট কথায় চেতন মনের নিয়ন্ত্রন আমরা করতে পারি কিন্তু অবচেতন মনকে নিয়ন্ত্রন করতে পারি না । আর তাই আমরা ঘুমিয়ে পড়লেও মস্তিষ্কের অবচেতন অংশ জেগে থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃৎস্পন্দন প্রভৃতি নিয়ন্ত্রন করে চলে । কিন্তু আমাদের চেতনা লোপ পায় কারন আমাদের চেতন মন ঘুমিয়ে পড়ে ।
ঘুম দুই প্রকারের । এক- গভীর ঘুম (Non rapid eye movement sleep) এবং দুই- হালকা ঘুম (rapid eye movement sleep)
হালকা ঘুমের সময় চোখ নড়াচড়া করে এবং এই সময় মস্তিষ্কের কিছু অংশ জাগ্রত থাকে অর্থাৎ সম্পুর্ন মস্তিষ্ক ঘুমিয়ে পড়ে না । আর এই ঘুমের সময়ই মানুষ স্বপ্ন দেখে ।
কিন্তু গভীর ঘুমের সময় সম্পুর্ন চেতন মন ঘুমিয়ে পড়ে বলে এই সময় মানুষ স্বপ্ন দেখে না ।
এতক্ষন পরে যেটা বোঝা যাচ্ছে সেটা হল স্বপ্ন সম্পুর্নরুপে মস্তিষ্কের শারীরবৃত্তিও কর্মকান্ড । অর্থাৎ মস্তিষ্কের জৈব রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়াই স্বপ্ন তৈরী করে ।
মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে কিন্তু মস্তিষ্কের চেতন মনের কিছু অংশ জাগ্রত থাকে তখন অবচেতন মন মস্তিষ্কের ওই চেতন মনকে কাজে লাগিয়ে স্বপ্ন তৈরী করে । অর্থাৎ স্বপ্ন নিয়ন্ত্রন করে অবচেতন মন । আর এজন্যই আমরা খারাপ স্বপ্ন দেখলে সেখান থেকে বেড়িয়ে আসতে পারি না । কারন ওই স্বপ্নগুলো নিয়ন্ত্রন করে অবচেতন মন যার উপর আমাদের নিয়ন্ত্রন নেই ।
স্বপ্ন সম্পুর্ন মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ; ভালো করে বললে স্বপ্ন মস্তিষ্কের রাসায়নিক ক্রিয়াকলাপ ।
এর ফলে যখন কোন মানুষ স্বপ্ন দেখে তখন ওই মানুষটির মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে নানা রাসায়নিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং এর দ্বারা স্বপ্ন তৈরী হয় । ফলে যখন কোন মানুষ স্বপ্ন দেখে তখন ওই স্বপ্নটি ওই মানুষটি ছাড়া আর কেউ দেখতে পারে না । কারন স্বপ্নটি শুধুমাত্র তার মস্তিষ্কেই উৎপন্ন হচ্ছে; অন্য কারোও মস্তিষ্কে নয় । আর এজন্যই একজন মানুষের স্বপ্ন শুধু ওই মানুষটি ছাড়া আর কেউ দেখতে পায় না । কিন্তু যদি কোন ভাবে একজন মানুষের মস্তিষ্কের সাথে অন্য কোন মানুষের মস্তিষ্কের সংযোগ ঘটানো সম্ভব হয় তবে একজনের স্বপ্ন অন্য একজন দেখতে পারবে ।
অর্থাৎ এক জন মানুষের স্বপ্ন অন্য কোন মানুষ না দেখতে পারার কারণ হচ্ছে স্বপ্ন দেখতে থাকা মানুষের মস্তিষ্কের সাথে ওই দ্বিতীয় মানুষটির মস্তিষ্কের কোন যোগাযোগ ঘটে না । আর তাই একজনের স্বপ্ন অন্য কেউ দেখতে পায় না।
স্বপ্ন সম্পূর্নই মস্তিষ্কের অভ্যন্তরিন ক্রিয়া । আর তাই কোন মস্তিষ্কের মধ্যে উৎপন্ন হওয়া স্বপ্ন অন্য কেউ দেখতে পায় না ।
এর সাথে স্রষ্টার অস্তিত্ব অনস্তিত্বের কোন ব্যাপার নেই। সৃষ্টিকর্তা একজন কাল্পনিক চরিত্র। যার কোন অস্তিত্ব নেই তাকে স্বপ্নের মধ্যে খুজে ফেরাটাও কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাসের অংশ মাত্র।
আস্তিকদের
অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক,
অপযৌক্তিক এবং
অপ-বৈজ্ঞানিক
প্রশ্নঃ
আত্বা একটা
শক্তি। এটা এমন এক শক্তি যা মানুষ আবিষ্কার
করেনি। আর তাই আত্মার অস্তিত্ব সম্পর্কে মানুষ জ্ঞাত নয়।
আসলে
আত্মা
আছে
কিন্তু
মানুষ
আত্মার
সন্ধান
এখনও
পায়নি। তবে অবশ্যই আত্মার অস্তিত্ব আছে।
যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
আপনি সম্ভবত শক্তি বা এনার্জির
কথা বলছেন । যেমন বৈদ্যতিক শক্তি, তাপ শক্তি, যান্ত্রিক শক্তি, আলোক শক্তি ইত্যাদি।
প্রকৃতিতে যত প্রকারের শক্তি আছে তার সব ধরনের শক্তিই বিজ্ঞানীরা বের করে ফেলেছে । তাপ শক্তি, বৈদ্যতিক শক্তি, আলোক শক্তি এগুলোর আবিষ্কার এবং ব্যবহার অনেক পুরোনো ব্যাপার ।
আপনি বা আপনারা (আত্বাবাদীরা) যদি আত্বাকে শক্তি হিসেবে দাবী করেন তবে আপনাকেরকেই বলতে হবে আত্বা আসলে কোন শক্তির মধ্যে পড়ে ।
যদি আত্বা সম্পূর্ন ভিন্ন কোন শক্তি হয়ে থাকে তবে সেই শক্তিকে কেন বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারছে না ?
উল্লেখ্য বিজ্ঞানীরা সব ধরনের শক্তি এবং কণিকা আবিষ্কার করে ফেলেছে যতগুলো পৃথিবী এবং সৌরজগতের আশেপাশে আছে । কিন্তু বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার সব সময় ধর্মের বিপক্ষে গেছে ।
এখনও আস্তিকরা আত্বা একটা শক্তি বা এনার্জি বলে দাবী করে কিন্তু সবসময়ের মতো কোন প্রমান হাজির করতে পারে না ।
মনিষীরা দাবী করে অজ্ঞতাই হচ্ছে ইশ্বর । আর তাই যেখানেই মানুষের অজ্ঞতা সেখানেই তারা ইশ্বরের দাবি করে ।
কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে আত্বা বলে কোন কিছুর অস্তিত্ত নেই । আর তাই আত্বা একটা শক্তি এটির কোনই ভিত্তি নেই । যদি আত্বা বলে কিছুর অস্তিত্ব থাকতোই যেটি পৃথিবীতে হর হামেশাই যাতায়াত করে (মৃত্যুর সময় চলে যায় আর জন্মের সময় আসে বলে আত্বাবাদীরা দাবী করে) তবে বিজ্ঞানীরা অবশ্যই এর অস্তিত্বের প্রমান পেতো । কারণ বিজ্ঞানীরা সব ধরনের শক্তিরই অস্তিত্ব সনাক্ত করতে পেরেছে ।
আত্বা একটা শক্তি। এটা আস্তিকদের সব ধরণের মিথ্যেচার এবং অজ্ঞতার মতই আরেকটা অজ্ঞতা ও মিথ্যাচার । বাস্তবে এমন কোন শক্তি বা এনার্জি অথবা এরকম কিছুর অস্তিত্ব বাস্তব জগতে নেই । আছে শুধু আস্তিকদের কল্পনা, অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের জগতে । অন্যান্য সব কল্পনা, অন্ধবিশ্বাস, এবং কুসংস্কারের মতই । .
আস্তিকরা অজ্ঞতার মাঝেই ইশ্বরের অস্তিত্ব খুজে পায় । যেখানেই মানুষের অজ্ঞতা সেখানেই তারা ইশ্বরের অস্তিত্ত খুজে পায় । যেখানেই মানুষের অজ্ঞতা সেখানেই তারা আত্বা, পরম আত্বাকে খুজে পায় । বিজ্ঞান একটা একটা করে অজ্ঞতা দুর করছে আর একটা একটা করে ইশ্বরের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যাচ্ছে । বিগ ব্যাং এবং বিবর্তনবাদ এর উৎকৃষ্টা প্রমান ।
ইশ্বরের এবং আত্বার ভ্রান্ত ধারনার মৃত্যু আসন্ন ।
প্রকৃতিতে যত প্রকারের শক্তি আছে তার সব ধরনের শক্তিই বিজ্ঞানীরা বের করে ফেলেছে । তাপ শক্তি, বৈদ্যতিক শক্তি, আলোক শক্তি এগুলোর আবিষ্কার এবং ব্যবহার অনেক পুরোনো ব্যাপার ।
আপনি বা আপনারা (আত্বাবাদীরা) যদি আত্বাকে শক্তি হিসেবে দাবী করেন তবে আপনাকেরকেই বলতে হবে আত্বা আসলে কোন শক্তির মধ্যে পড়ে ।
যদি আত্বা সম্পূর্ন ভিন্ন কোন শক্তি হয়ে থাকে তবে সেই শক্তিকে কেন বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারছে না ?
উল্লেখ্য বিজ্ঞানীরা সব ধরনের শক্তি এবং কণিকা আবিষ্কার করে ফেলেছে যতগুলো পৃথিবী এবং সৌরজগতের আশেপাশে আছে । কিন্তু বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার সব সময় ধর্মের বিপক্ষে গেছে ।
এখনও আস্তিকরা আত্বা একটা শক্তি বা এনার্জি বলে দাবী করে কিন্তু সবসময়ের মতো কোন প্রমান হাজির করতে পারে না ।
মনিষীরা দাবী করে অজ্ঞতাই হচ্ছে ইশ্বর । আর তাই যেখানেই মানুষের অজ্ঞতা সেখানেই তারা ইশ্বরের দাবি করে ।
কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে আত্বা বলে কোন কিছুর অস্তিত্ত নেই । আর তাই আত্বা একটা শক্তি এটির কোনই ভিত্তি নেই । যদি আত্বা বলে কিছুর অস্তিত্ব থাকতোই যেটি পৃথিবীতে হর হামেশাই যাতায়াত করে (মৃত্যুর সময় চলে যায় আর জন্মের সময় আসে বলে আত্বাবাদীরা দাবী করে) তবে বিজ্ঞানীরা অবশ্যই এর অস্তিত্বের প্রমান পেতো । কারণ বিজ্ঞানীরা সব ধরনের শক্তিরই অস্তিত্ব সনাক্ত করতে পেরেছে ।
আত্বা একটা শক্তি। এটা আস্তিকদের সব ধরণের মিথ্যেচার এবং অজ্ঞতার মতই আরেকটা অজ্ঞতা ও মিথ্যাচার । বাস্তবে এমন কোন শক্তি বা এনার্জি অথবা এরকম কিছুর অস্তিত্ব বাস্তব জগতে নেই । আছে শুধু আস্তিকদের কল্পনা, অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের জগতে । অন্যান্য সব কল্পনা, অন্ধবিশ্বাস, এবং কুসংস্কারের মতই । .
আস্তিকরা অজ্ঞতার মাঝেই ইশ্বরের অস্তিত্ব খুজে পায় । যেখানেই মানুষের অজ্ঞতা সেখানেই তারা ইশ্বরের অস্তিত্ত খুজে পায় । যেখানেই মানুষের অজ্ঞতা সেখানেই তারা আত্বা, পরম আত্বাকে খুজে পায় । বিজ্ঞান একটা একটা করে অজ্ঞতা দুর করছে আর একটা একটা করে ইশ্বরের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যাচ্ছে । বিগ ব্যাং এবং বিবর্তনবাদ এর উৎকৃষ্টা প্রমান ।
ইশ্বরের এবং আত্বার ভ্রান্ত ধারনার মৃত্যু আসন্ন ।
আস্তিকরা দাবী করতে পারে যে বিজ্ঞান কি গুপ্ত শক্তির রহস্য বের করে ফেলেছে?
উত্তরে বলতে হয়, না বিজ্ঞান এখনো গুপ্ত শক্তির রহস্য বের করতে পারেনি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে একজন মহাশক্তিশালী দানব এই বিশ্বজগতকে সৃষ্টি করেছে। অজ্ঞতা দিয়ে কোন কিছুরই অস্তিত্ব প্রমাণিত হয় না। অজ্ঞতাকে সব সময় ইশ্বর বলে দাবী করা হয়। যেখানে অজ্ঞতা সেখানেই ঈশ্বরকে বসিয়ে দেওয়া হয়। গুপ্ত শক্তি সম্পর্কে মানুষ পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখে না সত্যি; তবে তার মানে এই নয় যে গুপ্ত শক্তি দিয়েই আত্বা গঠিত হয়েছে বলে বিজ্ঞানীগন এর অত্বিত্ব পায়নি। যদি এমনটিই হতো তবে বিজ্ঞানীরা এতো দিনে গুপ্ত শক্তিকে আবিষ্কার করে ফেলতো। গুপ্তশক্তি মানুষের আওতার বাইরে রয়েছে বলে মানুষ গুপ্তশক্তিকে আবিষ্কার করতে পারছে না। যদি আত্মারুপি গুপ্তশক্তি পৃথিবীতে আসতো তবে এতো দিনে সব শক্তির মতই গুপ্তশক্তিকে বিজ্ঞানীগণ আবিষ্কার করে ফেলতো।
আর তাই আত্মার মতো মিথ্যে কাল্পনিক এক বাজে ধারণা প্রমাণ করতে গুপ্তশক্তির আমদানী করাটা অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের প্রমাণ হবে।
আস্তিকদের
অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক,
অপযৌক্তিক এবং
অপ-বৈজ্ঞানিক
প্রশ্নঃ
১, ২, ৩, এরকম আপনি যত সংখ্যাই যোগ করুন না কেন এগুলির সমষ্টি কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সংখ্যাই হবে। কখনই অসীম কোন সংখ্যা হবে না। আর তাই স্বসীম জ্ঞান দিয়ে ঈশ্বরের মতো এক অসীম স্বত্বাকে কখনই প্রমাণ করা যাবে না বা বোঝা যাবে না।
যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
আপনার ধারনা স্বসীম থেকে অসীম
হওয়া সম্ভব নয়? তথ্যটি ভুল। প্রকৃতপক্ষে
স্বসীম থেকেই অসীমের সৃষ্টি । অসীম এমন একটা ব্যাপার যার আপাত শুরু এবং শেষ পাওয়া যায় না । কিন্তু এর মানে এই নয় এর কোনই
শুরু থাকতে পারবে না । ১, ২, ৩, .... এভাবেই যেতে থাকবে । কিন্তু এ্টি কিন্তু কখনই শেষ হবে না । লক্ষ , কোটি, বিলিওন, টিট্ট্রিওন এভাবেই এগোবে । কিন্তু একটার পর একটা নতুন কিন্তু বড় সংখ্যা বের হতে থাকবে । এভাবে যেতে যেতে এটি "প্রায় অসীম" কিন্তু অসীম নয় পর্যন্ত যেতে পারবে । এবং এটি থামবে না । যেতেই থাকবে বড় সংখ্যার দিকে । এভাবে একটা "প্রায় অসীম কিন্তু অসীম নয়" পার হয়ে আরেকটা প্রায় অসীমের দিকে এগোতে থাকবে । এভাবে একটা একটা "প্রায় অসীম" পার হতে হতে অসংখ্য "প্রায় অসীম" পার হয়ে যাবে । এক সময় এটি "প্রায় অসীম" সংখ্যক "প্রায় অসীম" সংখ্যাকে অতিক্রম করবে । কিন্তু তবুও এটি থামবে না, সামনের দিকে এগোতেই থাকবে । আর এভাবেই একটা স্বসীম সংখ্যা থেকে "প্রায় অসীম" × প্রায় অসীম × প্রায় অসীম × প্রায় অসীম × প্রায় অসীম × অসীম সংখ্যক "প্রায় অসীম = অসীম সংখ্যা হবে ।
অর্থাৎ স্বসীম থেকেই অসীমের সৃষ্টি ।
কিন্তু অসীমেরও যে একটা শুরু আছে সেটা অসীম সংখ্যার পরে কোন স্থানে অবস্থিত কোন একটি সংখ্যা দেখবে তার আগে এবং পরে অসীমতা । অর্থাৎ দুদিকেই অসীমতা । কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এই অসীমেরও একটা শুরু ছিল যেটা অসীম সংখ্যক "প্রায় অসীম" দিয়ে গঠিত হয়েছে ।
আর তাই আপনার দাবী "১, ২, ৩, এরকম আপনি যত সংখ্যাই যোগ করুন না কেন এগুলির সমষ্টি কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সংখ্যাই হবে " দাবীটা সঠিক নয় ।
আপনি বিশ্বাস না করলে এটা সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর নিয়ে চেষ্টা করে দেখুন সেখানে একটা সময় আনলিমিটেড দেখাবে (যেহেতু ক্যালকুলেটরের ধারন ক্ষমতা কম) । কিন্তু এই ক্যালকুলেটরের ক্ষমতা যদি অনেক বেশী করা যায় তবে একসময় সংখ্যার মাত্রা এতো বেড়ে যাবে যে এটা প্রায় অসীম হয়ে যাবে । আর এই প্রায় অসীম গুলো মিলেই অসীম সংখ্যা তৈরী করে ।
অর্থাৎ অসীমতা স্বসীমতা থেকেই তৈরী ।
এটা ঘটবে কোন সংখ্যা গণনার ক্ষেত্রে ।
কিন্তু যদি মহাবিশ্বের পরিমান এরকম হয় মানে এর পরিমান গনণা করে প্রায় অসীমের দিকে যায় এবং এই পরিমান অসীম সংখ্যক প্রায় অসীম পরিমান হয় তবে বিশ্বজগত অসীম হবে ।
যেমন বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মাল্টিভার্সের কথা বলছে এবং এই মাল্টিভার্সের সংখ্যা অসীম পরিমানের হতে পারে ।
সুতরাং এটাই প্রমানিত হয় অসীম সংখ্যক স্বসীম দিয়েই অসীম গঠিত । অর্থাৎ স্বসীম থেকেই অসীমের সৃষ্টি হয় ।
সৃষ্টিকর্তা অসীম নাকি স্বসীম আপনি কিন্তু জানেন না। আপনি এক্ষেত্রে আপনার কুসংস্কারময় অন্ধবিশ্বাসের দাড়স্ত হচ্ছেন। অর্থাৎ আপনি আগেই ধরে নিয়েছেন একজন সৃষ্টিকর্তা আছে যে অসীম। এই ধারণার কোন বাস্তব প্রমাণ নেই। আর তাই স্বসীম থেকে অসীম হতে পারবে নাকি পারবে না তার উপর সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমাণের চেষ্টা করছেন। যেহুতু স্বসীম থেকে অসীমের তৈরী, তাই স্বসীম জ্ঞান দিয়েই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমাণ করা যেতো যদি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব বাস্তব বা সত্যি হতো। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা সত্যি নয় বলে এর অস্তিত্ব শুধু কল্পনা, অন্ধবিশ্বাস এবং কুসসংস্কারের দাড়স্ত হয়ে নানা অযুক্তি, কুযু্ক্তি, অপযু্ক্তি ও অপবিজ্ঞান দিয়ে করতে হয়। অসীম স্বসীমের কুযুক্তি একারণেই উৎপত্তি করা হয়েছে।
আস্তিকদের
অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক,
অপযৌক্তিক এবং
অপ-বৈজ্ঞানিক
প্রশ্নঃ
প্রকৃতি যেহেতু নিজেই একটি সীমাবদ্ধ স্বত্বা এবং
প্রকৃতির কোন সত্ত্বারই এই ক্ষমতা নেই যে
নিজে থেকে কোন মৌলিক পদার্থ সৃষ্টি করা তাই সম্মিলিত প্রকৃতিরও এই ক্ষমতা নেই যে এই মহাবিশ্বকে নিজে থেকে সৃষ্টি করা। তাই প্রকৃতি যদি নিজে নিজেকে সৃষ্টি না করতে পারে
তাইলে এই প্রকৃতি এই মহাবিশ্বকে
কে সৃষ্টি করেছেন ? নিশ্চয় সৃষ্টিকর্তা?
যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
এটাই হচ্ছে আস্তিকদের স্বীমাবদ্ধতা, তারা সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কোন
সৃষ্টির কথা ভাবতেই পারে না । কোন কিছু সৃষ্টি হতে যদি সৃষ্টিকর্তা লাগেই তবে সৃষ্টিকর্তা কেন কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া
সৃষ্টি হতে পারলো? আর যদি সৃষ্টিকর্তা অন্য কোন
সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হতে পারে তবে প্রকৃতিতে বিদ্যমান সমস্ত
উপাদান সৃষ্টি হতে কেন সৃষ্টিকর্তা লাগবে ? কোন কিছুর সৃষ্টিরই বা প্রয়োজনটা কি ? সব কিছুকে কেন সৃষ্টিই হতে হবে ? কেন কোন কিছু চিরদিন বিদ্যমান থাকতে পারবে না? কেন শুধুমাত্র সৃষ্টিকর্তাই (আস্তিকদের কাল্পনিক) চিরকাল থাকতে পারবে সৃষ্টি না হয়েই ? তবে কেন অন্য কোন কিছু সৃষ্টি না হয়ে থাকতে পারবে না ? সৃষ্টিকর্তার ধারনাকে কেন সব কিছুর উপরে রাখতে হবে ? আর যেটা সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সেটা কেন অন্য কোন কিছুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না ?
সৃষ্টি না হয়েও কোন কিছু চিরকাল ধরে থাকতে পারে । (এখানে চিরকাল ব্যপারটা আপেক্ষিক । কারণ কাল বা সময় নিজেই চির নয় । কারন শক্তি বা এনার্জি সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না । এগুলোকে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রুপান্তর করা যায় মাত্র । তাহলে এই বিশ্বজগতকে কেন সৃষ্টি হতে হবে ? কেন এটা এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রুপান্তর হয়ে এই বিশ্বজগতের সৃষ্টি (আসলে তৈরী ) হতে পারবে না ?
সৃষ্টিকর্তার সাথে এই বিশ্বজগতের উপাদানকে তুলনা করে দেখলেই দেখতে পাবেন সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির দরকার না হলে এগুলোরও সৃষ্টি হবার দরকার নেই ।
কুয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন-এর মাধ্যমে কিছু পরিমান (অল্প পরিমান) শক্তি কিছু সময়ের (অল্প সময়) জন্য শুন্য থেকে তৈরী হয় (নেগেটিভ এনার্জি এবং পজেটিভ এনার্জি তৈরী হয়) । এবং অল্প সময়ের ব্যবধানেই এই শক্তি (নেগেটিভ ও পজিটিভ) পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায় । আর এটি ঘটতে কোন সৃষ্টিকর্তারই প্রয়োজন হয় না ।
বিজ্ঞানীরা ধারনা করে যদি কুয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র মাত্রায় শক্তি উৎপাদন হতে পারে (এবং ধ্বংস হতে পারে) তবে এটি বৃহৎ পরিসরেও হতে পারে । আর শুন্য থেকে বিশ্বজগত সৃষ্টি হতে পারে কোন সৃষ্টিকর্তা ব্যতিত ।
এজন্যই বিগ ব্যাং থিওরী এবং বিবর্তনবাদ থেকে ইশ্বরকে বাদ দেয়া হয়েছে । এদুটো তত্ত্ব অনুযায়ী কোন ইশ্বরের হাত ছাড়াই এই বিশ্বজগত এবং জীবজগত সৃষ্টি হয়েছে ।
আর মাল্টি-ইউনিভার্স তত্ত্বের মাধ্যমে যে অসীম বিশ্বজগতের সৃষ্টি হওয়া্ সম্ভব তাতে ইশ্বর একটা বাহুল্য ছাড়া কিছুই নয় । (অবশ্য যদি মাল্টিগড ধারনার আবির্ভাব না হয়)
সৃষ্টি থাকলে সৃষ্টিকর্তা থাকতেই হবে এই ধারনাটা ভূল । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই ভূল ধারনাটা আমাদেরকে শৈশবেই মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যখন মস্তিষ্ক ঠিক ভাবে গঠিতই হয়ে উঠে না; আর যুক্তি বুদ্ধি তৈরী হবার আগেই এই মিথ্যে ধারনা ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে এটি নিজেই একটি যুক্তির নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে । ফলে কোন আস্তিকের পক্ষেই এই ভূল ধারনার বাইরে যাওয়া সম্ভব হয় না । ফলে সে সারাজীবন এই ভূল যুক্তিকেই সত্যি বলে মনে করে ।
কোন কিছু সৃষ্টি হতে হলে সৃষ্টিকর্তার কোনই প্রয়োজন নেই । (কারণ কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাগুলোই সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে ।)
কোন কিছুই যদি সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে না পারে তবে কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাও অন্য কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারবে না। আর যদি সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি হতে পারে তবে বাকী সব কিছুও কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হতে পারবে।
আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তিতে বলা যায় যে যেহেতু শক্তি এবং প্রতিশক্তি (পজেটিভ এবং নেগেটিভ শক্তি) পরস্তরকে ধ্বংস করে দিয়ে শুন্যে মিলিয়ে যেতে পারে তবে শুন্য থেকেও এই ভিন্ন দুই প্রকৃতির শক্তি তৈরী হতে পারে। ইনফ্লেশন থিওরী অনুযায়ী শুন্য থেকেই এই বিশ্বজগত তৈরী হয়েছে। যেহেতু শুন্য থেকে বিশ্বজগত তৈরী হতে হলে কোন সৃষ্টিকর্তার কোন দরকার হয় না তাই বিশ্বজগতকে কে সৃষ্টি করলো এই প্রশ্নের দরকার হয় না। আর তাই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা কে সেটা নিয়েও অযথা কথা বলতে হয় না।
বিশ্বজগত স্বসীম নাকি অসীম সেটা মানুষ জানে না। আমাদের এই বিশ্বজগত স্বসীম হলেও যদি মাল্টিভার্স সত্যি হয়ে থাকে তবে অসীম সংখ্যাক বিশ্বজগত রয়েছে যেগুলোর কোন সৃষ্টিকর্তার দরকার নেই। আর তাই অসীম সৃষ্টিকর্তার ধারণা অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয় এমনকি অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার সমৃদ্ধ।
আস্তিকদের
অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক,
অপযৌক্তিক এবং
অপ-বৈজ্ঞানিক
প্রশ্নঃ
আল্লাহ সুবহানাতায়ালা হচ্ছেন একটি আজালী বা অনন্ত
অসীম সত্ত্বা। একটি সসীম সত্ত্বা কখনই একটি অনন্ত অসীম আজালী
সত্ত্বাকে বুঝতে পারবে না।
যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
আর অনন্ত বা আজালী স্বত্ত্বা (যার সৃষ্টি হয়নি) বলে যদি কিছু থেকে থাকে তবে নিশ্চই তাকে অনন্তকাল সময় অতিবাহিত করতে হয়েছে । কিন্তু বিজ্ঞান বলে অনন্তকাল বলে কিছু নেই । আমরা যে সময়কে অনন্ত বলে ভেবে এসেছি আসলে সেই সময় অনন্ত নয় । সময় সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি ধ্বংসও হবে । আর তাই কোন সৃষ্টিকর্তার পক্ষেও অনন্তজীবি হওয়া সম্ভব হবে না ।
যদি বলেন সৃষ্টিকর্তা সময়ের উর্ধে তবে তার প্রমান দিতে হবে কোন কিছু (বুদ্ধিমান সত্ত্বা) সময়ের উর্ধে হতে পারে কিভাবে?
পদার্থের বৈশিষ্টগুলো সময়ের উপর নির্ভরশীল । সময় ছাড়া বিশ্বজগত কল্পনাও করা যায় না । বিগ ব্যাং-এর একদম শুরুর অবস্থায় যে সময়হীন সিঙ্গুলারিটির অবস্থা ছিল সেখানে কোন পদার্থের অস্তিত্ব ছিল না । হয়তো শূন্য থেকে বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছে । ফলে সেখান থেকেই সময় সৃষ্টি হয়েছে । এবং সৃষ্টি হয়েছে আমাদের চেনা বিশ্বজগতের ।
এই সময় কিন্তু বিগ ব্যাং-এর পুর্বে ছিল না । এর পুর্বে (প্রাথমিক অবস্থায়) কি ছিল সেটা সঠিক ভাবে এই মুহুর্তে মানুষ জানে না । কিন্তু একদিন অবশ্যই জানবে ।
এটুকু জানা গেছে যে এর পূর্বে সময় বলে কিছু ছিল না আর তাই কোন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব থাকার মতো সময় অবশিষ্ট ছিল না ।
কিন্তু মানুষ এখন জানে না, এর মানে এই নয় এখানে একজন কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাকে বসাতে হবে।
অবশ্য অজ্ঞতার আরেক নাম যদি হয় সৃষ্টিকর্তা তবে মানুষের এই অজ্ঞতার জায়গায় সৃষ্টিকর্তাকে বসানো যায় । যেমন প্রাচীন কালে মানুষ জানতো না কেন বৃষ্টি হয়, মেঘ হয়, ঝর-তুফান হয় ? মানুষ জানতো না কেন ভুমিকম্প হয়, কেন বজ্রপাত হয় , কেন মেঘ ডাকে ? কেন দিন হয়, কেন রাত হয়, কেন খড়া হয়, কেন জোয়ার ভাটা হয় ? কিভাবে মানুষ পৃথিবীতে এসেছে আর কিভাবেই বা বিশ্বজগতের উৎপত্তি হয়েছে ? এরকম হাজারও অজ্ঞতা মানুষকে সৃষ্টিকর্তার ধারনার জন্ম দিয়েছে । কোন কিছুর উত্তর মানুষের জানা ছিল না বলে তারা নিজেদের মতো করে উত্তর তৈরী করেছে । তারা ভেবেছে সৃষ্টিকর্তাই এসব কিছু ঘটান । তিনিই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। আর এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাদের ধারনা । কালে কালে এটি বিশ্বাস থেকে অন্ধবিশ্বাসে পরিনত হয়েছে । কুসংস্কার হয়ে মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে । আর তাকে নামানো যাচ্ছে না । বংশানুক্রমে এটি প্রবাহিত হচ্ছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ।
শৈশবে চাপিয়ে দেওয়া ভুল যুক্তিগুলো, মিথ্যে ধারনাগুলোই সেই মানুষটিকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রন করে চলেছে যুগ যুগ ধরে ।
আল্লাহ আজানী বা অনন্ত সত্ত্বা হলে তাকে সৃষ্টি করার প্রয়োজন হয়নি । কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে এই সৃষ্টিহীন অবস্থা প্রযোজ্য হলে এই বিশ্বজগতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে । আর যদি বিশ্বজগতের মতো আল্লাহকেও রুপান্তরিত হতে হয়, যেভাবে বিশ্বজগত রুপান্তরিত হয়ে আজকের বিশ্বজগতে পরিনত হয়েছে সেভাবে যদি সৃষ্টিকর্তাও রুপান্তরিত হয়ে থাকে তবে সে আর অলমাইটি সৃষ্টিকর্তা থাকে না ।
আবার যদি বিশ্বজগতের শুন্য থেকে সৃষ্টি হবার মতো সৃষ্টিকর্তাও শুন্য থেকে সৃষ্টি হয় তবে সে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে যোগ্যতা হারিয়ে ফেলবে ।
তাহলে সৃষ্টিকর্তা কি অনন্ত বিশ্বজগতের মতো অনন্ত অসীম ? কিন্তু বিশ্বজগত তো অনন্তকালের নয় । সীমিত (অনন্ত অসীমও নয়) । তাহলে সৃষ্টিকর্তাও কি অনন্তকালের নয় (যেহেতু সময়কে সৃষ্টি হতে হয়েছে) । তবে সে সৃষ্টিকর্তাও নয় বরং একটা সৃষ্টি ।
তাহলে নিশ্চই সৃষ্টিকর্তা অনন্ত অসীম এবং অনন্তকালের । কিন্তু কালইতো অনন্ত নয় । তাহলে সৃষ্টিকর্তা অনন্তকালের হয় কিভাবে ?
আবার সময়হীন অবস্থায় সৃষ্টিকর্তার টিকে থাকাও অসম্ভব । কারণ সময় ছাড়া কারও পক্ষেই কোন কিছু করা সম্ভব নয়; টিকে বা বেঁচে থাকাও অসম্ভব ।
তাই অনন্ত বা আজালী সৃষ্টিকর্তার ধারনা কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয় । কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস মাত্র।
আগেই দেখানো হয়েছে যে, স্বসীম থেকেই অসীমের সৃষ্টি । আর তাই ‘মানুষ কখনই অসীম কে বুজতে পারবে না’ কথাটাও ঠিক নয় । মানুষ অসীমের ধারনাকে অনেক আগেই জয় করেছে ।
যদি কোন অসীম সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু থেকেও থাকতো সেটা মানুষের পক্ষে বের করা খুব ভালো ভাবেই সম্ভব হতো । মানুষ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা এই তিন মাত্রার জগতে থেকেও মানুষ আজ জেনে গেছে আমরা যেমন জগতকে তিন মাত্রায় দেখি সেটা মোটেও তিন মাত্রার নয় । সময় একটি মাত্রা যেটা আমাদের তিন মাত্রার সাথে যুক্ত হয়ে চার মাত্রার স্থান-কালের জগত সৃষ্টি করেছে । অর্থাৎ তিন মাত্রার জগতের মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়েছে চার মাত্রার বিশ্বজগতের সন্ধান করতে ।
আবার মানুষ এই বিশ্বজগতের বাইরে যদি কোন ইউনিভার্স থেকে থাকে সেগুলোর সম্পর্কে ধারনাও করতে পারছে । যেমন মানুষ মাল্টিইউনিভার্সের কথা অনুমান করছে । এক সময় মানুষ সেই সব ইউনিভার্সের সন্ধানও বের করে ফেলবে । (কারন মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে সক্ষম।)
যদি কোন অসীম সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু থেকেও থাকতো সেটা মানুষের পক্ষে বের করা খুব ভালো ভাবেই সম্ভব হতো । মানুষ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা এই তিন মাত্রার জগতে থেকেও মানুষ আজ জেনে গেছে আমরা যেমন জগতকে তিন মাত্রায় দেখি সেটা মোটেও তিন মাত্রার নয় । সময় একটি মাত্রা যেটা আমাদের তিন মাত্রার সাথে যুক্ত হয়ে চার মাত্রার স্থান-কালের জগত সৃষ্টি করেছে । অর্থাৎ তিন মাত্রার জগতের মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়েছে চার মাত্রার বিশ্বজগতের সন্ধান করতে ।
আবার মানুষ এই বিশ্বজগতের বাইরে যদি কোন ইউনিভার্স থেকে থাকে সেগুলোর সম্পর্কে ধারনাও করতে পারছে । যেমন মানুষ মাল্টিইউনিভার্সের কথা অনুমান করছে । এক সময় মানুষ সেই সব ইউনিভার্সের সন্ধানও বের করে ফেলবে । (কারন মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে সক্ষম।)
স্ট্রিং থিওরীর মতে জগতের মাত্রা দশ থেকে এগারোটি হতে পারে।
মানুষ
তিন
মাত্রার
জগতে
থেকে
এগারো
মাত্রার
জগত
সম্পর্কেও
জানতে
সক্ষম।
মানুষ সাড়ে তেরশো কোটি বছর পূর্বের সৃষ্টির রহস্যও বের করে ফেলেছে । যেটা অসম্ভব বলে মনে হয় । সাড়ে চারশো কোটি বছর আগের পৃথিবী এবং সাড়ে তিনশো বছর আগের প্রানীর আবির্ভাব সম্পর্কেও মানুষ জেনে গেছে । মানুষ আজ জেনেছে কিভাবে মানুষের বিবর্তন ঘটেছে ।
আর তাই মানুষের পক্ষে সম্ভব বিশ্বজগতের সব অজানা রহস্য উৎঘাটন করা ।
তাহলে যদি সৃষ্টিকর্তা বলতে কিছু থাকতো তবে অবশ্যই মানুষ সেটা বের করতে সক্ষম হতো ।
কিন্তু বাস্তবে সৃষ্টিকর্তার কোন অস্তিত্ব নেই বলে সৃষ্টিকর্তার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি । এমনকি আল্লাহ যেসব অস্তিত্বের বর্ননা করেছে যেমন- জ্বীন, ফেরেশতা, শয়তান, আত্বা প্রভৃতির কোন অস্তিত্বই পাওয়া যায় নি । আর যাবেও না । কারণ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব মানুষের কল্পনায় । বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই ।
ফলে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের সাক্ষিগোপাল হিসেবে আবির্ভুত সসীম জ্বীন, পরী, ফেরেশতা, শয়তার বা অবতারদের অস্তিত্বের প্রমাণহীনতাই কাল্পনিক অসীম সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বহীনতার প্রমাণ।
No comments:
Post a Comment