১.
সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে যতই ভাবি ততই দ্বিধান্বিত হয়ে যাই। আচ্ছা ও লোকটা অনন্তকাল ধরে কিভাবে বেঁচে আছে?
সৃষ্টিকর্তা কি খায়? যেহেতু সৃষ্টিকর্তা বেঁচে থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে কিছু না কিছু শক্তি খরচ করতে হয়। কারণ জীব বা জড় সেটা মানুষই হোক অথবা ইলেক্ট্রন তাকে শক্তির আদান প্রদান করতে হয়। আর জীবতো শক্তি ব্যবহার করে তার যাবতিও কাজ কারবার সম্পন্ন করে। অর্থাত শক্তির ব্যবহার ছাড়া বিশ্বজগত অচল।
আর বিশ্বজগতে যত প্রকারের বস্তু এবং জীব আছে প্রত্যেকে শক্তিকে ব্যবহার করে। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী জীবন ধারণের জন্য (যেমন-হাটা-চলা, কাজ করা অথবা চিন্তা ভাবনা করা এসব কিছুতেই শক্তি খরচ করতে হয়।
অর্থাৎ মোট কথায় বিশ্বজগতের এমন কোন কাজই সম্পন্ন হতে পারে না যেটাতে শক্তিকে ব্যবহার করা না হয়।
কোন প্রাণী বা জীব যখন বেঁচে থাকে তখন অবশ্যই তাকে শক্তি ব্যবহার করতে হয় বা শক্তি খরচ করতে হয়। প্রাণী বা জীব এই শক্তি পায় খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে। তাই জীবকে বেঁচে থাকতে হলে তার খাদ্য গ্রহন করা আবশ্যিক ব্যপার। এভাবেই জীবজগত বেঁচে থাকে।
তাহলে সৃষ্টিকর্তাকেও নিশ্চয়ই শক্তিকে ব্যবহার করতে হয় (যেহেতু বিশ্বজগতের কোন কাজই শক্তিকে ব্যবহার করা ছাড়া সম্পন্ন হতে পারে না)। সৃষ্টিকর্তা যখন বেঁচে থাকে, চিন্তা করে এবং নানাবিধ কাজ সম্পন্ন করে তখন অবশ্যই তাকে শক্তি ব্যয় করতে হয়। তাকে নিশ্চয়ই সেই শক্তি গ্রহন করতে হয়। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো, সৃষ্টিকর্তা সেই শক্তিটা পায় কোথায়? সে কি খাদ্য গ্রহন করে?
যেহেতু সৃষ্টিকর্তা জীবের মতো বেঁচে থাকে তাই তাকে অবশ্যই জীবের মতো খাদ্য গ্রহন করতে হয়। তাহলে প্রশ্ন হলো সৃষ্টিকর্তা কি খেয়ে বেঁচে থাকে? সৃষ্টিকর্তা কি গাছের মতো করে সূর্য থেকে শক্তি তৈরী করে নাকি প্রাণীর মতো করে খাদ্য গ্রহন করে?
আর যদি সৃষ্টিকর্তা খাদ্য গ্রহন করে থাকে তবে সেই খাদ্য আসে কোথা থেকে? সেটাও কি সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করে নাকি অন্য কেউ সেটা সৃষ্টি করে সৃষ্টিকর্তার কাছে সাপ্লাই করে?
সৃষ্টিকর্তা সেই অনন্তকাল থেকে কি একই রকমের খাদ্য গ্রহণ করে এসেছে নাকি মানুষের মতো সব ধরনের খাদ্য গ্রহন করে এসেছে?
যেদিন কিছুই ছিল না সেদিন সৃষ্টিকর্তা কোথায় থাকতো? কি করতো? আর কিই বা খেয়ে বেঁচে থাকতো?
আচ্ছা আস্তিকরা যে দাবী করে যে সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কিছুই সৃষ্টি হতে পারে না, তাহলে এই সৃষ্টিকর্তাকে কি সে নিজেই সৃষ্টি করেছে? সে এমনি এমনি সৃষ্টি হয়েছে? তাহলে কি সৃষ্টিকর্তা চিরকাল ব্যাপী ছিল না? সে একটা নির্দিষ্ট সময় কাল আগে সৃষ্টি হয়েছে?
আচ্ছা সেটা না হয় মেনে নিলাম যে সব কিছু সৃষ্টিকর্তাই সৃষ্টি করেছে। তাহলে এখন প্রশ্ন আসে সব কিছু সৃষ্টি করার পূর্বে সৃষ্টিকর্তা ছিল কোথায়? যেহেতু সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করার পূর্বে কিছুই ছিল না তাহলেতো সৃষ্টিকর্তা যে জায়গাটিতে থাকতো সেই জায়গাটাও সৃষ্টি করতে হয়েছে। তো তার পূর্বে সৃষ্টিকর্তা ছিল কোথায়? কারণ জায়গাটাও তো কাউকে না কাউকে সৃষ্টি করতে হয়েছে! তাহলে সেই জায়গাটি সৃষ্টির পূর্বে সৃষ্টিকর্তা কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল? কারণ তখনওতো কোন জায়গা সৃষ্টি হয়নি। কারণ সৃষ্টিকর্তা তখনও সেই জায়গাটি সৃষ্টি করেন নি।
আচ্ছ, সৃষ্টিকর্তা সব কিছু সৃষ্টি করেছে। তাহলে সময়কেও নিশ্চয় সে নিজেই সৃষ্টি করেছে। কারণ সব কিছুর মতো সময়ও তো নিজে নিজে সৃষ্টি হতে পারবে না। তাহলে সৃষ্টিকর্তা কখন সময় সৃষ্টি করেছে? আর সময় সৃষ্টি হবার পূর্বে সৃষ্টিকর্তা কোথায় ছিল মানে কোন সময়ে ছিল? আবার সেই সময়টিই বা কোন সময়ে বা কখন তৈরী করেছে?
সৃষ্টিকর্তা যদি সৃষ্টি না হয়ে থাকে এবং সে যদি চিরকালই বিদ্যমান থেকে থাকে তবে নিশ্চই তাকে একটা জায়গা বা স্থান দখল করে থাকতে হয়েছে সেই অনন্তকাল ধরেই; তাহলে প্রশ্ন হলো সেই জায়গা বা স্থানটিও কি সৃষ্টিকর্তার মতোই চিরঞ্জীবি? সেই জায়গা বা স্থান কি সৃষ্টি করা হয়নি? যদি স্থানকে সৃষ্টি করা হয়ে থাকে তবে তার আগে সৃষ্টিকর্তা কোথায় ছিল? আর যদি সেটা চিরকাল ধরেই থেকে থাকে তবে তাহলে তো সৃষ্টিকর্তার মতো সেটাও চিরস্থায়ী। তাহলেতো সৃষ্টিকর্তা একজন নয়। বরং তার শরীক আছে।
আবার প্রশ্ন আসবে তাহলে সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কিছুই সৃষ্টি হতে পারে না সেই কথাটি কেন সেই চিরঞ্জীবি জায়গাটি বা স্থানটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়? তাহলেতো সেই জায়গা বা স্থানটি সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হলো । এর কি ব্যাখ্যা হবে তাহলে?
এটাই কি প্রমাণ হবে না যে সৃষ্টিকর্তা ছাড়াও কিছু কিছু জিনিস সৃষ্টি হতে পারে?
সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তার দরকার হয়নি অথচ সব কিছুরই একজন সৃষ্টিকর্তা থাকতেই হবে এই কথাটিই তো পৃথিবীর শ্রেষ্ট কু-যুক্তি? কারন সে ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তা কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হতে পেরেছে।
অর্থাৎ কোন কিছুই সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারে না সেই কথাটিকে মিথ্যে প্রমান করে সৃষ্টিকর্তা ঠিকই সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পেরেছে। যদি সৃষ্টিকর্তা পারে তবে অন্য কিছু কেন পারবে না?
২.
আচ্ছা পৃথিবীতে এতো এতো ধর্ম কেন?
সৃষ্টিকর্তা যদি একজনই হবে তবে পৃথিবীতে এতো এতো ধর্ম তৈরী করে কেন মানুষে মানুষে খুনাখুনি করার একটা মাধ্যম তৈরী করে দিলেন?
এটা কি এজন্য যে সৃষ্টিকর্তা আসলে একজন নয়; অনেকগুলো। সব সৃষ্টিকর্তার জন্ম একটি মাত্র প্রধান সৃষ্টিকর্তা থেকে। তিনিই প্রধান সৃষ্টিকর্তা এবং বাকী সৃষ্টিকর্তাগুলো তার সন্তান। আর প্রধান সৃষ্টিকর্তাগুলো এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি তার সন্তান সৃষ্টিকর্তাদেরকে এর রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন। ফলে সেই সন্তান সৃষ্টিকর্তাগুলো যে যার মত করে ধর্ম তৈরী করেছে! বড় ভাই জেহোভা, সে ইহুদি ধর্ম তৈরী করেছে। তার ছোট ভাই গড, সে খ্রিস্টান ধর্ম সৃষ্টি করেছে। আর তার ছোট ভাই আল্লাহ ইসলাম ধর্ম তৈরী করেছে। এদের মধ্যে জেহোভা-এর জমজ একটি ভাই আছে, যার নাম ভগবান; সে তৈরী করেছে সম্পূর্ন ভিন্ন ভাবে হিন্দু ধর্ম। ভাইদের মধ্যে যে স্বাধীন চেতা সে তৈরী করেছে বৌদ্ধ ধর্ম।
আর সব চেয়ে ছোট ভাই সে তৈরী করেছে বাহাই ধর্ম।
এভাবে প্রধান সৃষ্টিকর্তার সন্তানেরা যার যার মতো করে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম তৈরী করেছে । আর তারা সবাই মিলে দেখছে বোঁকা মানুষগুলো এই ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের জন্য একে অন্যে কেমন শত্রুতা করছে। মারামারা খুন ধর্ষন এবং পরস্পরে যুদ্ধ করছে সেটা দেখে সব সৃষ্টিকর্তাগুলো মিটিমিটি হাসছে। আর তারা ভাবছে তাদের বাবা সৃষ্টিকর্তা কেন এমন একটি খারাপ চরিত্রের প্রাণী সৃষ্টি করেছে যারা পরস্পরে মিলে মিশে থাকতে পারে না? একে অন্যে শত্রুতা করে ? মানুষগুলো খুব বোকা।
আচ্ছা এরকম কি হতে পারে?
৩.
সব ধর্মের আস্তিকগুলোর একটা মিল আছে। এরা নিজেদের ধর্মগুলোর এবং ধর্মগ্রন্থগুলোর ভূল দেখতে পায় না। কিন্তু অন্য ধর্মের এবং ধর্মগ্রন্থগুলোর ভূল স্পষ্ট দেখতে পায়। অর্থাৎ নিজেদের ধর্ম এবং ধর্ম গ্রন্থের ব্যাপারে এরা হয় অন্ধবিশ্বাসী কিন্তু বিধর্মীদের বেলায় এরা হয়ে উঠে যুক্তিবাদী।
কেন এই বিপরীতমুখীতা ?
কারণ আস্তিকগুলোকে অন্ধবিশ্বাসী বানানো হলেও তাদের মস্তিষ্কের একটা অংশ যুক্তিবাদী থেকে যায়। মানুষ আস্তিক হয়ে জন্মায় না। মানুষ (পরিবার ও সমাজ) তাকে আস্তিকে পরিণত করে তার যুক্তি ও স্বাধীন বিচার বিশ্লেষনীয় ক্ষমতা নষ্ট করে দিয়ে। ফলে সব আস্তিক পরিবারের সন্তান হয়ে উঠে সেই পরিবারের নির্ধারিত ধর্মের একজন অন্ধবিশ্বাসী। তার চিন্তা চেতনা ওই নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি অন্ধআনুগত্যশীল থাকলেও অন্যান্য ধর্মগুলোর ক্ষেত্রে সে অন্ধবিশ্বাস দেখায় না। সে ক্ষেত্রে তার মস্তিষ্কের যুক্তিবাদী অংশটুকু ঠিকই কার্যকর থাকে। ফলে সে নিজের ধর্মের প্রতি হয় অন্ধবিশ্বাসী এবং বাকী ধর্মগুলোর প্রতি হয় যুক্তিবাদী। আর এজন্যই সে বিধর্মীদের ধর্মের এবং ধর্মগ্রন্থের ভূল ভ্রান্তি ধরতে পারলেও নিজের ধর্মের ভূলগুলো সে ধরতে পারে না। এর কারণ এটাই যে ওই মানুষটি নিজের ধর্মের ক্ষেত্রে অন্ধবিশ্বাসী এবং অন্য ধর্ম সম্পর্কে যুক্তিবাদী থাকে।
ধর্মের অনুসারীরা তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া ধর্মকে চিরসত্য মনে করে কারণ সেই ধর্মের প্রতি তাদের অন্ধবিশ্বাস কাজ করে। কিন্তু ভিন্ন ধর্মের প্রতি তাদের কোন অন্ধবিশ্বাস কাজ করে না বলেই তারা ভিন্ন ধর্মের ভুলগুলো বা ভিন্ন ধর্মের ধর্মগ্রন্থগুলোর ভূলগুলো সহজেই ধরতে পারে।
এখানে মনে রাখতে হবে, কোন মানুষের অন্ধবিশ্বাস তার চিন্তা চেতনাকে নিয়ন্ত্রন করে (কিন্তু সে সেই অন্ধবিশ্বাসকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে না প্রায় সব ক্ষেত্রে) বলে সে নিজের ধর্মের ভূলগুলো এবং ধর্মগ্রন্থগুলোর ভূল দেখতে পায় না (বা দেখতে পেলেও তাদের অন্ধবিশ্বাস সেই ভূলগুলোকে সত্য বলে দেখায়)। আর সে জন্যই প্রত্যেক আস্তিক তার নিজের ধর্মকে একমাত্র সত্য এবং অন্য ধর্মগুলোকে মিথ্যে বলে বিনা প্রমাণে বিশ্বাস করে। এবং ভিন্ন ধর্মকে এবং ধর্মগ্রন্থকে যুক্তি দিয়ে বিচার করতে পারে বলে সেগূলোর ভূল সে ধরতে সক্ষম। কিন্তু অন্ধবিশ্বাসের কারণে নিজের ধর্মের ভূলগুলো ধরতে অক্ষম।
আর তাই আমরা দেখতে পাই হিন্দুরা মুসলমানদের এবং খ্রিস্টানদের ধর্ম এবং ধর্মগ্রন্থের ভূল ভ্রান্তি অতি সহজেই ধরতে পারে কিন্তু তাদের ধর্মগ্রন্থের ভূলগুলো ধরতে পারে না।
আবার মুসলমানরা বাইবেল ও বেদ-গীতার ভূলগুলো দেখতে পেলেও কুরআনের ভূল দেখতে পায় না।
আবার একই রকম ভাবে খ্রিস্টানরা কুরআন ও বেদের ভূল দেখতে পেলেও বাইবেলের কোন ভুলই দেখতে পায় না।
আর এভাবেই আস্তিকগুলো নিজেদের পরিবারের ধর্ম মেনে চলে যুগযুগ ধরে। আর অন্য ধর্মগুলোকে মিথ্যে বলে মনে করে।
সব আস্তিকদেরই একই দাবী, শুধু তারাই জান্নাতে যেতে পারবে কিন্তু বাকী সবাই যাবে জাহান্নামে।
এটাই হচ্ছে ধর্মগুলোর যুগ যুগ ধরে টিকে যাবার কারণ।
৪.
অনেক আস্তিকরাই দাবী করে যে সৃষ্টিকর্তা অনন্তকাল ধরে একা একাই
বাস করে। কিন্তু মানুষের মতো সৃষ্টিকর্তারও রাগ, অভিমান, হিংসা, বিদ্বেষ, মায়া, মমতা,
ভালোবাসা ইত্যাদি রয়েছে। এমন কি তাদের মতে সৃষ্টিকর্তা মানুষের মতই তোষামোদে খুশি
হয়। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা প্রশংসা শুনতে ভালোবাসে।
সৃষ্টিকর্তার এসব গুনাগুন থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে সৃষ্টিকর্তা
মানুষের মতই আবেগপ্রবণ এবং অনুভূতি সম্পন্ন। সুতরাং আমরা ধরে নিতে পারি যে যেহেতু সৃষ্টিকর্তার
আবেগুলো মানুষের মতই (বরং ক্ষেত্র বিশেষে অনেক বেশী) তাই আমরা ধরে নিতে পারি যে মানুষের
মতই সৃষ্টিকর্তারও নিঃসঙ্গতার অনুভূতি সম্পন্ন। অর্থাৎ মানুষের মতো সৃষ্টিকর্তারও
নিঃসঙ্গতার অনুভুতিটি রয়েছে। তাই সৃষ্টিকর্তা একা একা অনন্তকাল ধরে বেঁচে থাকতে থাকতে
অধর্য্য হয়ে যান। কারণ মানুষের যেহেতু অধর্য্য হওয়ার অনুভূতিটি রয়েছে তাই সৃষ্টিকর্তারও
নিশ্চয় এই অনুভূতিটি রয়েছে যেহেতু সৃষ্টিকর্তাও মানুষের মতই অনুভূতি সম্পন্ন।
তাহলে স্বাভাবিক প্রশ্নটি আসে, সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয় অনন্তকাল
ধরে বেঁচে থাকতে থাকতে তার মধ্যে অধর্য হয়ে গেছেন এবং চরম রকমের নিঃসঙ্গতা বোধ করেছেন।
আচ্ছা সৃষ্টিকর্তাটি এজন্যই মানুষ সৃষ্টি করেছেন যাতে তার নিঃসঙ্গতা
কাটিয়ে উঠতে পারেন! তাহলে বলতেই হয় সৃষ্টিকর্তাও মানুষের মত নিঃসঙ্গ একাকী একজন অসহায়
মানুষ (জীব)। তাহলে কি সৃষ্টিকর্তারও মানুষের মত অনেক কষ্ট আছে? অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা
হলো একজন অধর্য্য নিঃসঙ্গ, দুঃখি মানুষ (জীব)?
৫.
সৃষ্টিকর্তা মানুষের মতো অনুভূতিশীল হওয়ায় সৃষ্টিকর্তার নিঃসঙ্গতা কাটিয়ে উঠার ইচ্ছা করে (যেহেতু সৃষ্টিকর্তা মানুষের মতই অনুভূতি সম্পন্ন মানুষ বা জীব)। তাই সৃষ্টিকর্তা ইচ্ছি করলেই তার সঙ্গী সৃষ্টি করে তার নিঃসঙ্গতা কাটাতে পারে।
তাহলে সৃষ্টিকর্তাও কি তার সঙ্গী অর্থাৎ বউ, ছেলেপেলে বা ভাই সৃষ্টি করার চেষ্টা করে? নাকি সে একাকী থেকেই নিঃসঙ্গ অসহায় মানুষ (জীব) হিসেবেই থাকতে চায়। তবে বলতেই হয় সৃষ্টিকর্তা ইচ্ছা করেই তার একাকী নিঃসঙ্গ অসহায় জীবন বেছে নিয়েছে।
আর তাই সৃষ্টিকর্তা আসলে ইচ্ছামূলক ভাবেই মানুষের মতই মানুষ বা জীব থেকে গেছে।
ধর্ম কি?
ReplyDeleteধর্ম হল ব্যক্তি হোক,বস্ত হোক বা কোনো সত্ত্বা হোক তার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য।
যেমন:আগুনের ধর্ম তার সংস্পর্শে যাই থাকুক তাকে দাহ্য করা।
জলের ধর্ম কোমলতা ও জীবের জীবনধারণে সাহায্য করা,বায়ুর ধর্ম প্রবহমান হওয়া,সূর্যের ধর্ম আলো প্রদান করা।
এ ধর্ম সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকবে।অর্থাৎ এদের ধর্ম সনাতন(চিরন্তন)। একইভাবে মানুষের ধর্ম সনাতন যার মূল ভিত্তি মানবতা।বাস্তবে ধর্ম একটি তা হল সনাতন ধর্ম।হিন্দু একটি বিদেশি শব্দ।এর প্রকৃত নাম সনাতন।সনাতন ধর্মের মুল ভিত্তি মানবতা।
বেদ অনুসারে ঈশ্বর নির্বিকার(ক্ষুধা,তৃষ্ণা, রাগ,ভালোবাসা ইত্যাদি জৈবিক অনুভূতিবিহীন)।ঈশ্বর সর্বব্যাপী বিরাজমান,ইন্দ্রিয় দ্বারা তাকে উপলব্ধি করা যায় না,শুদ্ধ আত্মা তাকে উপলব্ধি করতে পারে।