Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Tuesday, January 5, 2016

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নের যৌক্তির ও বৈজ্ঞানিক উত্তর। (পর্ব ৫)



আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
আল্লাহ কুরআনের মধ্যে ভালো খারাপের বর্ণনা করে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন,
"হে নবী ভালো আর মন্দ কখনো এক হতে পারে না।"
আল্লাহ আরও বলেছেন যে, ভালোর সাথে খারাপ হওয়া উচিৎ না।
কুরআন ভালো মন্দের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করেছে। কোন মানুষের মধ্যে নয়। আর তাই কুরআনই ভালো খারাপ নির্ণয় করেছে। তা না থাকলে মানুষ ভালো খারাপের পার্থক্য করতে পারতো না। আর তাই ইসলামই নৈতিকতার একমাত্র উৎস।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
ভালো আর মন্দ যে এক নয় এটা একটা স্বাধারণ কথা ভালোর বিপরীত হচ্ছে খারাপ আর এটা বলার জন্য কুরআনের মতো প্রাচীন একটা গ্রন্থের আমদানির প্রয়োজন নেই সবাই জানে ভালো আর খারাপ ভিন্ন বিষয়

ভালো ও মন্দের পার্থক্য কুরান আমদানির হাজার বছর আগেই মানুষ করে দিয়েছে
আপনি ভালো আর খারাপের পার্থক্য বলতে আপনার ধর্মের মানুষ ভালো আর বি-ধর্মের মানুষ খারাপ এটা বুঝাচ্ছেন কিন্তু ভালো আর খারাপ ধর্ম দিয়ে বিবেচিত হয় না কারো ক্ষতি করা খারাপ এটা সব ধর্মেই খারাপ এটা ধর্মের উপর নির্ভরশীল নয় আবার ধর্মে অনেক খারাপ কাজকে ভালো মনে করা হয় যেগুলো আসলে খারাপ সুতরাং ভালো খারাপ ধর্ম দিয়ে বিচার করা হয় না যেটা ভালো সেটা ধর্ম ছাড়াই ভালো আর যেটা খারাপ সেটা ধর্মের হস্তক্ষেপ ছাড়াই খারাপ প্রতারণা করা খারাপ কারণ এতে অন্য কে ক্ষতিগ্রস্থ হয় আর তাই প্রতারণাকারী, সে যে ধর্মেরই হোক না কেন সে খারাপ এখানে ধর্মের কোন ভুমিকা নেই ধর্মে যেসব কাজ খারাপ বলা হয় বাস্তবে সেসব আসলে খারাপ নয় যেমন- পুজা করা ইসলামে খারাপ কিন্তু হিন্দুতে ভালো (পুন্যের) কাজ কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে যদি পুজা করলে কারো ক্ষতি না হয় তবে সেটা করা খারাপ নয় আবার পশু হত্যার উৎসব করা খারাপ যেটা ইসলাম ও হিন্দু ধর্মে বিদ্যমান, আর এটাকে তারা ভালো কাজ মনে করে কিন্তু আধুনিক যুগে অনেক সভ্য মানুষ এটাকে বর্বরতা মনে করে সুতরাং ভালো খারাপের মাপকাঠি ধর্ম দিয়ে নয় বরং ভালো খারাপ নির্ভর করে মানুষের উন্নত নৈতিকতার উপর

যদি মানুষের মধ্যে (হিন্দু-মুসলিম) বৈষম্য নাই থাকে তবে একজন মুসলমান হিন্দুকে বিয়ে করলে কোন দোষ থাকার কথা নয় কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সব ধর্মই মানুষের মধ্যে সর্বচ্চ বৈষম্য তৈরী করে রেখেছে বলে পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে মুসলিম, হিন্দু, খৃস্টান, বৌদ্ধ এইসব কৃতিম পার্থক্যের মানুষ বাস করে এদের মধ্যে বাস্তব বা বৈজ্ঞানিক কোন পার্থক্য নেই সবাই সমান মর্যাদার মানুষ কিন্তু সত্য হচ্ছে ধর্ম এদের মধ্যে পার্থক্য তৈরী করেছে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজেদেরকে শ্রেষ্ট মনে করে বাকীদেরকে নিম্ন মর্যাদার মনে করে এই কৃতিম পার্থক্য করে রেখেছে মানুষের দ্বারা সৃষ্ট ধর্ম (ইশ্বর, গড, আল্লাহ, ভগমান)

ধর্ম কখনই ভালো খারাপের পার্থক্য তৈরী করেনি। বরং মানুষ ভালো খারাপের পার্থক্য করেছে। কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ এটি ধর্ম তৈরী হবার আগেই মানুষ জেনেছিল। মানুষই ভালো কাজ এবং মন্দ কাজকে পৃথক করেছিল সমাজ ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। মানুষ সমাজ বদ্ধ হবার সাথে সাথে আবিষ্কার করেছিল যে যদি মানুষে মানুষে হিংসা বিদ্বেষ দুর করে পরস্পরে ভালোবাসা সহযোগিতা, সহমর্মিতা না দেখায় তবে কোন সমাজ ব্যবস্থা টিকে থাকতে পারবে না। পরস্পরে সহযোগিতা ও সহমর্মিতাই মানুষের সমাজ ব্যবস্থাকে মজবুত করে এবং সেই সমাজ উন্নত হয়ে উঠে।
এমন কি মানুষ যখন দেখেছে, চুরি করা বা ডাকাতি করা অথবা কাউকে অন্যায় ভাবে হত্যা করা এবং মিথ্যে কথা বলাটাও পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস বেঙ্গে ফেলে যা আবার পরবর্তিতে পুরো সমাজ ব্যবস্থাকেই ধ্বংশ করে দেয় তখন মানুষই ভালো এবং মন্দের পার্থক্য তৈরী করেছে। এবং ভালো মন্দের পার্থক্যের মাঝে নিজেদের নৈতিকতা বোধ তৈরী করেছে। আর এভাবেই মানুষ ভালো মন্দের পার্থক্য তৈরি করার মাধ্যমে সমাজ ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রেখেছে।

ভালো মন্দের ধারণা ধর্ম তৈরী করেনি। মানুষই ধর্ম তৈরী করেছে এবং ধর্ম তৈরী করার আগেই ভালো মন্দের ধারণা তৈরী করেছে বা আবিষ্কার করেছে। মানুষ ধর্ম তৈরী করার পরে সমাজের প্রচলিত ভালো মন্দের ধারণাগুলো ধর্মে ঢুকিয়ে নিয়েছে। ফলে ধর্ম কখনই ভালো মন্দের পার্থক্যের সৃষ্টিকর্তা নয়। মানুষই ভালো মন্দের সৃষ্টিকর্তা বা আবিষ্কার কর্তা। বরং ধর্মই মানুষের ভালো মন্দের নৈতিকতাবোধকে ধার করেছে।
কুরআন বা অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ আবিষ্কারের অনেক আগেই সমাজে নৈতিকতাবোধ প্রচলিত ছিল। কুরআনতো আসলো মাত্র দেড় হাজার বছর আগে। কিন্তু তারও বহু আগে থেকে মানুষ ভালো মন্দ এবং নৈতিকতার চর্চা করে এসেছে। আর তাই কুরআন কখনই ভালো মন্দের সৃষ্টি বা পার্থক্য কোনটিই তৈরী করেনি। বরং কুরআন সমাজের প্রচলিত ভালো মন্দ এবং নৈতিকতা ধার করে নিয়েছে।
আর এজন্যই কুরআন সহ সব ধর্মগ্রন্থেই কিছু অনৈতিক আইন এবং ততকালীন ভালো মন্দের ধারণাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ফলে দেখা যায় কুরআনে এমন কিছু অনৈতিক এবং মন্দ কাজকে বৈধ করে এগুলোকে ভালো কাজের মর্যাদা দিয়েছে যেগুলো বর্তমান সময়ে চরম অনৈতিক এবং অবৈধ মন্দ কাজ। অথচ এমন কাজগুলোকে কুরআন ভালো কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
আর এটা দ্বারা এটাই প্রমানিত হয় যে কুরআন ভালো মন্দের ধারণাকারী এবং নৈতিকতার উৎসতো নয়ই বরং কুরআন ভালো মন্দের ধারণার ধারকারী এবং কিছু অনৈতিকতার উৎস। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, নারীর অধিকার হনন নারী অবমাননা, বাল্যবিবাহ বৈধকারী, হত্যা এবং যুদ্ধের মতো খারাপ কাজকে বৈধতাদানকারী, পশুহত্যার উৎসবের মতো ঘৃন্য প্রথাকে বৈধতা দানকারী, এবং মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরী কারী।
কুরআন সহ সব ধর্মগ্রন্থই ততকালীন সমাজ ব্যবস্থা দ্বারা প্রভাবিত বলে (অর্থাৎ ধর্মগ্রন্থগুলো ততকালীন মানুষ লিখেছে বলে) সেই সময়ের নৈতিকতা ফুটে উঠেছে। কিন্তু বাস্তবতার বিচারে দেখা যায় ততকালীন মানুষের প্রচলিত নৈতিকতাবোধ এবং ভালো মন্দের সীমারেখা এবং বর্তমানের নৈতিকতাবোধ এবং ভালো মন্দের সীমারেখার মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতালের পার্থক্য। ফলে ততকালীন বৈধ, নৈতিক এবং ভালো কাজগুলোর অনেক কিছুই বর্তমানের ক্ষেত্রে অবৈধ, অনৈতিক এবং মন্দ কাজ। আর তাই ধর্ম এবং ধর্মগ্রন্থগুলো যেমন নৈতিকতা এবং ভালো মন্দ তৈরী করেনি ঠিক তেমনি ভাবে ধর্ম এবং ধর্মগ্রন্থগুলো নৈতিকতার উৎসতো নয়ই বরং ধারক বাহকও নয়। নৈতিকতা, ভালো মন্দের পার্থক্য যেমন সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষই তৈরী করেছে ঠিক সেভাবে মানুষই সমাজ ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে নৈতিকতাবোধ এবং ভালো মন্দের সীমারেখাকে উন্নত থেকে উন্নততর করেছে।
আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
কেন আপনি খারাপ মেয়েকে বিবাহ করবেন না, ভালো মেয়েকে বিবাহ করবেন আপনি কি এই দুজনের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করছেন না?
ঠিক এই কারণটির জন্যই ইসলাম হিন্দু খ্রিস্টান মেয়েকে বিয়ের অনুমতি দিচ্ছে না। এমনকি ইসলাম হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টানের সাথে বিবাহে বাধা দিচ্ছে না ইসলাম বলে মুসরেক মুসরেককে বিবাহ করবে আর বিশ্বাসীরা বিশ্বাসীদের বিবাহ করবে।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
ভালো মানে উপকারী । আর খারাপ মানে ক্ষতিকারক । যে মেয়েকে বিয়ে করলে ক্ষতি হবে তাকে কেউ বিয়ে করতে চাইবে না । আর তাই মানুষ ভালো মেয়েকেই বিয়ে করতে চায় যাতে তার ভালো হয় । যাকে বিয়ে করলে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা আছে তাকে কেউ বিয়ে করতে চায় না । এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু একজন মুসলমান যদি একজন হিন্দু ভালো মেয়েকে বিয়ে করে তবে কোন সমস্যা হবার কথা নয় । যদি তাদের মধ্যে পারস্পারিক বুঝাপড়া থাকে তবে ভিন্ন ধর্মের হলেও বিয়েটা ভালোই ফল দিবে । এখানে ধর্ম কোন বাধা নয় । যার যার ধর্ম সেই সেই পালন করবে । কেউ কাউকে বাধা দেবে না । তাহলে সমস্যা কোথায়? যদি ধর্ম মানুষের মধ্যে পার্থক্য নাই সৃষ্টি করে থাকে তবে স্বামী-স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম পালন করে সংসার করলে সমস্যা থাকার কথা নয়। তাহলে সন্তান তার নিজের ধর্ম বেছে নেবার সুযোগ পাবে, যে সুযোগ পরিবার সন্তানকে দেয় না। বরং সন্তানের উপর বাবা-মা ধর্ম চাপিয়ে দেয় ।
আপনি যে আপনার ধর্ম সম্পর্কে খুব কম জানেন এটা তার একটা প্রমান । ইসলামতো বিধর্মির সাথে সম্পর্ক চরম ভাবে নিষেধ করেছে (কুরআনের আয়াত দিয়ে) । আর বিয়েতো অনেক দুরের ব্যাপার । কুরআন হাদিস অনুযায়ী মুসলমানরা শুধু মুসলমানদেরকেই বিয়ে করতে পারবে। অন্য ধর্মের অনুসারীদেরকে বিয়ে করতে ইসলামে সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি মুসলমানদের মধ্যে যদি কেউ জেনা করে অর্থাৎ বিয়ে বহির্ভূত অবৈধ যৌন সম্পর্ক করে তবে সেই জেনাকারীদেরকে কোন মুমিন বিয়ে করতে পারবে না। এটাই ইসলামের বিধান। আর বিধর্মীদেরকে বিয়ে করা সম্পূর্ণ হারাম।
মুশরেক মুশরেককে বা জিনাকারী জিনাকারীকে বিয়ে করতে পারবে । ঠিক তেমনি বিধর্মী কখনই কোন বিশ্বাসী মুমিনকে বিয়ে করতে পারবে না । এটাই ইসলামের (তথা মুহাম্মদের) নিয়ম।
অর্থাৎ ইসলাম মানুষের মধ্যে বৈষম্য তৈরী করে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরী করেছে।
মুশরেক মুশরেককে বিয়ে করবে আর মুমিন মুমিনকে বিয়ে করতে পারবে। মুশরেক মুমিনকে বিয়ে করতে পারবে না এবং মুমিন মুশরেককে বিয়ে করতে পারবে না। এটাই সব চেয়ে বড় বৈষম্য।
বৈষম্য হলো মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরী করা। যেটা ইসলাম এবং মুহাম্মদ খুব ভালো ভাবেই তৈরী করে গেছে। ভালো খারাপ যেমন ধর্ম অনুযায়ী হয় না ঠিক তেমনি মুসলমানরাই ভালো আর বিধর্মীরা খারাপ এমন একটি ধারনা প্রচলন করাটাই সব থেকে বড় বৈষম্য তৈরী করা। খারাপ মেয়েকে বিয়ে না করার কারণ খারাপ মেয়েকে বিয়ে করলে সংসার সুখের হবে না। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে খারাপ মেয়ের প্রতি বৈষম্য দেখানো হচ্ছে। পৃথিবীতে অনেক খারাপ মেয়েকে ভালো করা সম্ভব হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে খারাপ মেয়ে বলতে স্বাধারণত অসৎ মেয়েকে বুঝানো যায়। আর তাই খারাপ মেয়েকে বিয়ে না করাতে কোন বৈষম্য তৈরী করা হবে না। যদি সে মেয়েটি ভালো হয় বা তাকে ভালো করা যায় তবে তাকে বিয়ে করাতে কোন বাধা নেই। সে যে ধর্মেরই হোক না কেন। কিন্তু ধর্ম দাবী করে যে সেই ধর্ম বাদে বাকী সব ধর্মের মানুষই খারাপ তাই তাদেরকে বিয়ে করা যাবে না। কিন্তু ভালো খারাপের পার্থক্য সেভাবে নির্ণয় করা হয় না। আর তাই ভালো খারাপ যেমন ধর্ম তৈরী করেনি ঠিক সেভাবে ধর্মের মতে বিধর্মীকে বিয়ে করা যাবে না এটি একটি অনৈতিক, এবং মন্দ কাজ। প্রকৃত পক্ষে ভালো খারাপ ধর্ম অনুযায়ী নির্ণিত হয় না। আর তাই যারা প্রকৃত খারাপ তাদেরকে বিয়ে করলে সংসারের ক্ষতি হবে এজন্যই মানুষ তাদেরকে বিয়ে করতে চায় না। মানুষ চায় একজন সৎ, বিশ্বাসী, কর্মঠ মেয়েকে বিয়ে করতে যে সংসারের দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করবে। সে কোন ধর্মের সেটা কোন মুখ্য বিষয় নয় বরং সে কেমন সেটাই মুখ্য বিষয়। তাহলে কারো প্রতি বৈষম্য দেখানো হবে না। যার যার বাস্তবিক কর্মের দ্বারা এবং বাস্তবিক অবস্থা অনুযায়ী তার সাথী নির্বাচিত করার অধিকার যে কোন মানুষের আছে। আর সেটি ভিন্ন ধর্মের মধ্যে হলেও কোন সমস্যা নেই। কারণ সব মানুষই একই রকম, একই রকম উপাদান দিয়ে তৈরী এবং তারা সবাই মানুষ। আর তাই মানুষে মানুষ কোন ধরণেরই পার্থক্য নেই। মানুষে মানুষে পার্থক্য মানুষ তৈরী করেছে। আর ধর্ম হলো মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরীকারী একমাত্র উৎস।

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
আমি মানুষ খুন করে টাকা কামাই করি। এখন আপনি আমাকে একটা যুক্তি সঙ্গত কারণ দেখাতে পারবেন যে মানুষ খুন আমার জন্য খারাপ?
মানুষ খুন অন্যের জন্য খারাপ, আমার জন্য নয়। বরং আমার জন্য উপকারী। আমার প্রশ্ন হল কেন এটা আমার জন্য খারাপ? অন্যদের কথা আমি বলিনি।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
মানুষ খুন চরম ভাবে খারাপ। কারণ এতে চরম ক্ষতি হয়। পেশাদার খুনি কাউকে খুন করলে হয়তো তার এবং তার পরিবাবের কয়েকজন মানুষের সাময়িক উপকার হয় কিন্তু সেটা মানব জাতির জন্য খুব বেশী পরিমানের ক্ষতি হয় । এক পরিবার তার আপনজন হারায় । সন্তান হারায় বাবা-মাকে, বাবা-মা হারায় সন্তানকে। অর্থনৈতিক ভাবে পরিবারটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, এমনকি মানষিক ভাবেও পরিবারটি হয় ক্ষতির স্বীকার। আর এর প্রভাব পড়ে রাষ্ট্রে।
তাই খুন একটা অপরাধ। কিন্তু কোন সন্ত্রাসী যদি খুন হয় তবে অনেক প্রাণ বেঁচে যেতে পারে । এবং অর্থনৈতিক ও মানুষিক উপকার হয় বলেই সন্ত্রাসীদেরকে খুন করার বিধান প্রত্যেক রাষ্ট্রেই আছে । আর এটা খারাপ নয় ।
কিন্তু একজন সন্ত্রাসী যখন খুন করে সে অন্যের ক্ষতি করছে । আর তাই সবার কাছেই খুন একটা খারাপ কাজ । আর খুনি হচ্ছে অপরাধী ।
খারাপ ভালো বিবেচিত হয় অন্যের ভালো বা ক্ষতি করার উপর । নিজের ভালো বা ক্ষতি করার উপর মানুষ ভালো খারাপের পার্থক্য করেনি ।
খুনি খুন করলে সে নিজে উপকৃত হলেও অন্যের ক্ষতি স্বাধন করে । আর সংজ্ঞানুযায়ী অন্যের ক্ষতি করাই খারাপ কাজ । তাই খুন একটা খারাপ কাজ ।
ভালো মন্দ আমাকে দিয়ে বিচার হয় না; হয় অন্যকে দিয়ে । অন্যের উপকার ও অপকার দিয়ে । আমার মিথ্যে কথা বলতে ভালো লাগে তাই মিথ্যে কথা বলি। কিন্তু আমার এই ভালো লাগার জন্য যার কাছে মিথ্যে বললাম তার ক্ষতি হলো । এতে আমার কোন ক্ষতি হলো না । বরং আমি তার ক্ষতি দেখে মজা পেলাম । তাই বলে এটা কোন ভালো কাজ নয় । মিথ্যে বলা খারাপ কারন এটা অন্যের ক্ষতি করে এবং মানুষের মধ্যে বিশ্বাসহীনতা দেখা দেয়।
আমার টাকার দরকার তাই আমি রাস্তায় দাড়িয়ে কোন মানুষের কাছ থেকে ছিনতাই করলাম । এতে আমার ভালো হলো । তাই বলে ছিনতাই ভালো কাজ হলো না । কারন ভালো খারাপ নির্ধারিত হয় অন্যকে উপকার বা অপকারের মধ্য দিয়ে । কারো উপকার করা ভালো; আবার কারো ক্ষতি করা খারাপ । এখানে আমার ভালো হলো নাকি খারাপ হলো সেটা মুল্যহীন ভালো খারাপ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ।
আমি যার কাছ থেকে ছিনতাই করলাম তার বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল । আর তাই ছিনতাই বা ঘুষ খাওয়া খারাপ ।
খুনি যখন খুন করে তখন তার ভালো হয় বলে সেটা ভালো কাজ হয়ে যায় না । বরং খুনি কাউকে হত্যা করার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করে বলেই হত্যা বা খুন একটা খারাপ কাজ ।

আস্তিকদের কাছে ভালো খারাপ নিজের উপর নির্ভর করে। কারণ তারা বিশ্বাস করে যে কাজ করলে পাপ হবে সেটা খারাপ। তাদের যুক্তি হলো যেহেতু পাপ করলে মরার পরে সে নরকে যাবে তাই পাপ করা তার জন্য খারাপ। আবার পূন্য করলে স্বর্গে যাওয়া যাবে তাই পূন্য ভালো কাজ। আগেই বলেছি ভালো মন্দ নিজের লাভ বা ক্ষতির উপর নির্ভর করে না। প্রকৃতপক্ষে অন্য কারও উপকার করা হলো ভালো কাজ। এতে নিজের লাভ না হলেও সেটি ভালো কাজ। আবার অন্য কারও ক্ষতি করা খারাপ কাজ যদিও এতে নিজের লাভ হয়। স্বার্থহীন নৈতিকতা বোধ স্বার্থযুক্ত নৈতিকতা বোধের চেয়ে শতগুন মহৎ। কিন্তু আস্তিকরা স্বার্থ ছাড়া কিছুই কল্পনা করতে পারে না। তারা ধরেই নেয় তাদেরকে ভালো কাজ করা উচিত যাতে তারা পুন্য উপার্জন করতে পারে যাতে তারা স্বর্গে যেয়ে আরাম আয়েশ করতে পারে। আবার তারা খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে কারণ খারাপ কাজ করলে পরকালে শাস্তি পেতে হবে। অর্থাৎ তারা নিজেদের লাভ ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবতে পারে না। আর সে জন্যই তারা মনে করে যে ডাকাতি করা বা মানুষ হত্যা করা খারাপ কাজ কারণ এতে সৃষ্টিকর্তা শাস্তি দেবে। অর্থাৎ শাস্তির ভয় এবং স্বর্গের লোভই এদের কাছে প্রকৃত নৈতিকতা। আর তাই প্রশ্নকারী ভেবে নিয়েছে যে মানুষ খুন করা নিজের জন্য খারাপ কারণ এতে সৃষ্টিকর্তা পরকালে শাস্তি দেবে। প্রশ্নকর্তার কাছে শাস্তির ভয়টিই ভালো খারাপের কারণ।
কিন্তু প্রকৃত নৈতিকতা বোধ এভাবে নিজের স্বার্থের উপর নির্ভর করে না। নৈতিকতা নির্ভর করে পরের স্বার্থ রক্ষার উপর। এখানেই ধার্মিক এবং মানবতাবাদীদের পার্থক্য।
যদি পরকালের শাস্তিই ভালো খারাপের মূল চাবিকাঠি হয় তবে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে শাস্তি শুধু কাল্পনিক পরকালেই হয় না, আমাদের বাস্তব জগতেও অন্যায়কারীর শাস্তির ব্যবস্থা আছে।
যে যুক্তিতে আস্তিকদের কাছে খুন করা খারাপ (কারণ তাতে পরকালে শাস্তি পেপে হবে) ঠিক একই কারণে খুন করলে জেলে যেতে হবে, ফাঁসি হবে তাই খুন করা খারাপ। যে কথা কাল্পনিক পরকালের ক্ষেত্রে খাটে একই কথা বাস্তব জগতের ক্ষেত্রেও খাটে।
আর তাই বলা যায় খুন করা নিজের জন্য খারাপ কারণ জেলে যেতে হয় এবং ফাঁসি হয় তাই খুন করা খারাপ।
কিন্তু নৈতিকতার দিক থেকে সব সময়ই মনে রাখতে হবে ভালো এবং খারাপের ব্যপারটা নিজের স্বার্থের উপর হওয়া উচিৎ নয়। পরের উপকার করা এবং উন্নয়নমুলক কাজ করাই ভালো কাজ। অন্যের ক্ষতি করা এবং ধ্বংসাত্বক কাজ করাই খারাপ কাজ।

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
যখন সত্য এসে মিথ্যার সামনে দাঁড়ায়, তখন মিথ্যা বিলুপ্ত হয়কারণ মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই যোগ্য কুরআনের সত্য এসে গেছে তাই মিথ্যা বিলুপ্ত হবে।
কুরআনই বাবা-মেয়ের এবং মা-ছেলের মধ্যে যৌন সম্পর্ক করতে নিষেধ করেছে। আর তাই এটি খারাপ। অন্যথায় এটি খারাপ হতো না।
এই নীতি চর্চা করে মা-বোনের সাথে কি স্ত্রীর বৈষম্য করছেন না?

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
একটা প্রাচীন কথার আমদানী করেছেন যেটা মানুষ কুরআনেরও হাজার বছর আগেই তৈরী করেছে । সত্য আসলে মিথ্যে বিলুপ্ত হয় এটা মানুষ অনেক আগে থেকেই জানতো । এখানে কুরআনের মতো একটা স্বাধারণ মানুষের লেখা বইয়ের উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই ।
হাজার হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ জেনেছে সত্য প্রকাশ হলে মিথ্যে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
আর তাইতো বিজ্ঞান (অর্থাৎ সত্য) এসে পড়াতে মিথ্যে ধর্মগুলো এবং মানুষ সৃষ্ট কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে । কারণ মানব সৃষ্ট মিথ্যে ধর্ম এবং মানব সৃষ্ট কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাগুলো (অর্থাৎ মিথ্যেগুলো) বিলুপ্ত হবারই যুগ্য ।

যতই আমি ব্যপারটা এড়িয়ে যেতে চাইছি ততই আপনি বারবার বলছেন । বারবার মা বোন নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলছেন কেন? আমি আপনার সাথে তর্ক করতে আসিনি । (তর্ক হয় সমানে সমানে) । আমি এসেছি বুঝাতে ।
আপনার নৈতিক শিক্ষা নিম্ন মানের বলে বারবার মা-বোনকে টেনে আনছেন । মানুষের একটা নৈতিকতা আছে যেটা মানুষ উন্নত মানুষিকতা শেখার সাথে সাথে নৈতিকতার উন্নতি স্বাধন করেছে । মানুষ মাকে সম্মান করে এবং বোনকে সম্মান ও স্নেহ করে বলে তাদের সাথে মানুষের আত্বিক (মানুষিক) সম্পর্কটা ভিন্ন ধরনের । আর মানুষ সেই নৈতিকতার বাইরে যাওয়াকে অনৈতিক মনে করে । আর এই নৈতিকতা এক দিনে তৈরী হয়নি । হাজার হাজার বছর ধরে এই নৈতিকতা মানুষ চর্চা করে এসেছে । আর তাই মা বোনের সম্মান এবং স্ত্রীর সম্মান এক নয় ।
কিন্তু তার মানে এটা নয় যে মানুষ মা-বোন আর স্ত্রীর মাঝে বৈষম্য তৈরী করেছে । মানুষ মা-বোনের সাথে স্ত্রী বা প্রেমিকার একটা স্পষ্ট পার্থক্য তৈরী করেছে এবং সম্মানের সাথে সেটা মেনে চলেছে । কিন্তু কখনই মা-বোনের সাথে স্ত্রী বা প্রেমিকার মধ্যে বৈষম্য তৈরী করেনি । আপনি বৈষম্য এবং পার্থক্য এই শব্দ দুটির মধ্যকার পার্থক্য বুঝতে পারেন নি বলে বারবার বৈষম্য বৈষম্য করছেন। পার্থক্য শব্দটির মানে হচ্ছে একটার সাথে অন্যটার অমিল থাকা । যেমন কালো এবং লাল রংয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে । দুটি ভিন্ন রং যেমন- কালো এবং লাল, এক রকম নয় । অর্থাৎ লাল রংয়ের সাথে কালো রংয়ের পার্থক্য আছে । কিন্তু তাই বলে এটা বলা যাবে না যে লাল রংকে মানুষ কালো রংয়ের সাথে বৈষম্য করছে । কারণ বৈষম্য শব্দটির মানে হচ্ছে একটাকে অন্যটা থেকে কম গুরুত্ব দেয়া বা একটাকে অন্যটার থেকে কম মানের মনে করা বা নিম্নমানের দেখানো । কিন্তু কেউ লাল রংকে কালো রংয়ের থেকে নিম্নমানের বা কম মানের মনে করে না । তাই এখানে পার্থক্য শব্দটি ব্যবহৃত হবে, বৈষম্য নয় ।
আগে কালো বা নিগ্রদেরকে কম মূল্যায়ন করা হত । ওদেরকে মানুষ হিসেবেই মুল্যায়ন করা হতো না। অর্থাৎ কালো মানুষদেরকে সাদা মানুষদের থেকে কম মূল্যায়ন করা হতো বলে এখানে কালো সাদার বৈষম্য করা হতো। কিন্তু বর্তমানে মানুষ কালো আর সাদা চামড়ার মানুষের মধ্যকার মানের ব্যবধান দুর করেছে এবং সব মানুষকে সমান মর্যাদা দিয়েছে বলে এখানে বলা হয় কালো আর সাদা মানুষের মধ্যে কোন বৈষম্য নেই । কিন্তু কালো মানুষ আর সাদা মানুষের মধ্যকার গায়ের রংয়ের পার্থক্য এখনও আগের মতই আছে । শুধু তাদের মধ্যে বৈষম্য দুর করা হয়েছে ।
ঠিক তেমনি আগে মেয়েদেরকে ছেলেদের থেকে কম মুল্যায়ন করা হতো (যেমন কুরআনে মেয়েদেরকে অর্ধেক মানুষ হিসেবে দেখানো্ হয়েছে) । কিন্তু বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে মেয়েদের এবং ছেলেদের মর্যাদা এবং সুযোগ সুবিধা সমান করা হয়েছে । অর্থাৎ ছেলেতে মেয়েতে বৈষম্য দুর করা হয়েছে । কিন্তু তার মানে এটা নয় যে ছেলেতে মেয়েতে যে পার্থক্য সেটা নেই। বরং ছেলেতে মেয়েতে পার্থক্য (গঠনগত এবং কার্যগত পার্থক্য) আগের মতোই আছে কিন্তু তাদের মধ্যকার বৈষম্য দুর করা হয়েছে । (এবার নিশ্চই পার্থক্য ও বৈষম্য ব্যপারটা বুঝতে পেরেছেন ।)
মানুষ মা-বোনদেরকে স্ত্রী বা প্রেমিকার থেকে আলাদা মর্যাদায় বা দৃষ্টিতে দেখে অর্থাৎ মা-বোনের সাথে স্ত্রীকে ভিন্ন মূল্যবোধে (নৈতিকতায়) দেখে । এদের মধ্যকার নৈতিক ব্যবহারের পার্থক্য মানুষ তৈরী করেছে এবং সেটা মেনে চলে এসেছে । আর তাই মানুষ অন্য মেয়েকে স্ত্রী বা প্রেমিকা বানায় এবং তাকে স্ত্রী বা প্রেমিকার মর্যাদা দেয় । কিন্তু মা-বোনের ক্ষেত্রে ওভাবে আচরণ বা সম্মান করে না । কারণ এটা মানুষের নৈতিকতা বিরোদ্ধ । কিন্তু তার মানে এটা নয় যে মানুষ মা-বোন এবং স্ত্রী বা প্রেমিকার মধ্যে বৈষম্য তেরী করেছে (অর্থাৎ একজনকে অন্য জনের থেকে কম মুল্যায়ন বা নিম্ন মানের মনে করছে) । বরং মা-বোনকে প্রেমিকা বা স্ত্রীর সাথে ভিন্ন দৃষ্টি কোণে রেখেছে । আর তাই এটা বৈষম্যমুলক আচরণ নয় ।
মানুষ মা-বোনের প্রতি যে নৈতিক সম্পর্ক তৈরী করেছে সেটা সব ধর্মের (সম্ভবত ধর্মের উৎপত্তিরও আগে থেকে) মানুষ মেনে চলে । এটা মানুষের সামাজিক মুল্যবোধ । আর এর বিরোদ্ধ আচরণ মানুষের নৈতিকতা বহির্ভুত কাজ । তাই মানুষ মা বোনকে স্ত্রী বা প্রেমিকার থেকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে । এবং আলাদা আলাদা মুল্যায়ন করে ।
কিন্তু এই মূল্যবোধ কোন নির্দিষ্ট ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । এটা সার্বজনীন সামাজিক রীতিনীতি।
কিন্তু ভিন্ন ধর্মের মেয়েকে বিয়ে করা যাবে না বলে যে নিষেধ ধর্মগুলো করেছে সেটি বৈষম্যমুলক। কারণ এখানে এক ধর্ম অন্য ধর্মকে নিম্ন মানের বা নিচু পর্যায়ের মনে করে । এবং তাদের মধ্যে কৃতিম বৈষম্য তৈরী করে রেখেছে ।
একজন মুসলমান অনায়াসে একজন হিন্দুকে বিয়ে করে দুই জনে আলাদা আলাদা ধর্ম পালন করতে পারে । আর এতে যেহেতু কারো কোন ক্ষতি হয় না তাই এটি কোন অন্যায় নয় । বরং এটি মানবতার জন্য উপকারি বলে এটা একটা ভালো কাজ ।
কিন্তু ধর্মগুলো মানুষের মধ্যে কৃতিম পার্থক্য তৈরী করেছে এবং মানুষকে পরস্পরের প্রতি বৈষম্যমুলক আচরন বজায় রাখার আদেশ দিয়েছে । যেটা অর্থহীন, অন্যায় এবং চরম অনৈতিক।

কুরআন তৈরীরও বহু আগে থেকেই মানুষ সামাজিক এই নৈতিকতাবোধগুলো চর্চা করে এসেছে। আর তাই কুরআনই এই পার্থক্য সৃষ্টি করেছে এই কথাটি পুরোপুরি মিথ্যে।





No comments:

Post a Comment