Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Thursday, January 14, 2016

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নের যৌক্তির ও বৈজ্ঞানিক উত্তর। (পর্ব ৭)



আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
কোরআনের কোথাও বলা হয় নাই যে হাড় তৈরি হবার পরে মাংস তৈরি হয়, কেবল কি কি ভ্রুন অবস্থাতে মানব শিশু তৈরি হয় সেটা বলা হয়েছে। তাই নাস্তিকরা যেমনটি দাবি করে যে কুরআনে হাড় তৈরী হবার পরে মাংস তৈরী হয় বলা হয়েছে সেই দাবিটি মিথ্যা।


যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
আপনি বুঝতে পারেন নি মানেই কি আমি মিথ্যে কথা বলেছি?
 সূরা মুমিনুন-এর ১০ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
"পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি রক্তপিন্ডে, অতঃপর রক্তপিন্ডকে পরিণত করি গোশতপিন্ডে এবং গোশতপিন্ডকে পরিণত করি হাড়সমূহে; অতঃপর হাড়সমূহকে ঢেকে দিই গোশত দ্বারা; অবশেষে ওকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টিরুপে;"
এই আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, আল্লাহ প্রথমে শুক্রবিন্দু বা শুক্রানুকে রক্তে পরিণত করে। সেই রক্তকে পরে মাংসে পরিণত করে। তারপর সেই মাংসকে হাড়ে পরিণত করে। এবং শেষে হাড়কে মাংস দিয়ে ঢেকে দেয়। যেহেতু কুরআনে হাড়কে ঢেকে দেওয়া মাংস শুক্রানু থেকে তৈরী হয় না বলা হয়েছে তাই এই মাংস বাইরে থেকে এনে হাড়কে ঢেকে দেয় এটাই বুঝানো হয়েছে।

প্রথমে শুক্রানু রক্তে পরিণত হয় আর রক্তে পরিনত হওয়ার পরে এটা আর শুক্রানু থাকে না কারণ ওটি ইতি মধ্যে রক্তে পরিণত হয়ে গেছে আবার রক্ত যখন মাংসে পরিণত হয় তখনও এটি আর রক্ত থাকে না রক্ত পরিবর্তন হয়ে মাংসে পরিণত হয় আর তারপর যখন মাংস হাড়ে পরিণত হয় তখন এটি আর মাংস থাকে না বরং পুরোপুরি হাড়ে পরিনত হয় কারণ পরিবর্তন মানে হচ্ছে রুপান্তর একটা বস্তু যখন রুপান্তিত হয় বা পরিবর্তিত হয় তখন এটি আর আগের অবস্থায় থাকে না যেমন অক্সিজেন যখন কাঠকে পুড়িয়ে দিয়ে ধুয়া, আগুন এবং ছাইয়ে পরিনত করে এবং নিজেও রুপান্তিত হয়ে কার্বনডাইঅক্সাইডে পরিনত হয়। তারপর সেটা আর অক্সিজেন, বা কাঠ থাকে না অন্য বস্তুতে পরিণত হয়
ঠিক তেমনি মাংস যখন হাড়ে রুপান্তিত বা পরিবর্তিত হবে তখন সেটা আর মাংস থাকবে না সেটা পুরোপুরি হাড়ে পরিনত হবে
কুরআনে বলা হয়েছে যখন মাংস পরিবর্তিত হয়ে হাড়ে পরিনত হয়, তারপর হাড়ের চারপাশে মাংস এসে (এটি বাইরে থেকে আসে) হাড়কে ঢেকে দেয় দেখুন বলা হয়েছে, মাংস হাড়ে পরিনত হয় এবং তারপর হাড়ের চারপাশে মাংস আসে এখানে তারপর দিয়ে বুঝানো হয়েছে হাড় তৈরী হবার পরে মাংস আসে বা তৈরী হয় আবার বলা হয়েছে শুক্রানু রক্তে পরিণত হয়, সেই রক্ত মাংসে পরিণত হয় এবং সেই মাংস হাড়ে পরিণত হয়। অর্থাৎ স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে যে মাংস তৈরী হবার পর হাড় তৈরী হয়। এখন আপনি যদি বুঝতে না পারেন বা আপনার যদি বুঝার মতো জ্ঞান তৈরী হয়ে না থাকে তার জন্য কি আমাকে মিথ্যাবাদী বলাটা ঠিক?
কুরান বর্ণিত এই স্টেপ গুলো আমি আবিষ্কার করিনি এটা করেছে বিথ্যাত মানুষেরা
কুরআনে বর্ণিত ধাপগুলোর সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই।  বাস্তবে শুক্রানু কখনই রক্তে পরিণত হয় না। আবার মাংসও হাড়ে পরিণত হয় না। আবার কুরআনে যেভাবে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে মাংস হাড়ে পরিণত হবার পরে এই হাড়ের চারপাশে মাংস (বাইরে থেকে) এসে হাড়কে ঢেকে দেয় কথাটি পুরোপুরি মিথ্যা। প্রকৃত সত্য হলো মাংস তৈরি হবার পরে হাড় তৈরী হয় না। বরং মাংস এবং হাড় একই সাথে তৈরী হয়। আবার মাংস হাড়ে পরিণত হয় না বা মাংস হাড়ে রুপান্তর হয় না। ভ্রুণ থেকে হাড় এবং মাংস একই সাথে তৈরী হয়।
অর্থাৎ কুরআনের কথা পুরোপুরি মিথ্যা। তাই কুরআন একটি মিথ্যা গ্রন্থ। অর্থাৎ কুরআন প্রাচীণ মানুষ লিখেছে।
আপনি পড়াশুনা করে দেখতে পারেন জাকির নায়েকদের মতো মিথ্যাবাদী ভন্ডদের কথা বিশ্বাস করবেন না নিজে যাচাই করুন

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
সৃষ্টিকর্তাকে বুঝার মতো ক্ষমতা মানুষের নেই। মানুষ কখনই জানতে পারবে না সৃষ্টিকর্তা কেমন? মানুষের সে ক্ষমতা নেই। সবচেয়ে বড় কথা এত ছোট মস্তিস্ক ক্ষমতা দিয়ে স্রস্টার উপর হাইপোথিসিস দাড় করানো কপটতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
আপনার কথাটাকে একটু বাস্তবিক ভাবে বললে কেমন হয় দেখি-
এত ছোট মস্তিস্ক ক্ষমতা দিয়ে আকাশ পৃথিবীর মতো বিশাল কিছুর উপর হাইপোথিসিস দাড় করানো কপটতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এত ছোট মস্তিস্ক ক্ষমতা দিয়ে বিশ্বজগতের মতো বিশাল কিছুর উপর হাইপোথিসিস দাড় করানো কপটতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সবাই যদি আপনাদের মতো করে চিন্তা করতো তবে মানুষকে এখনো বনে জঙ্গলে পশু শিকার করে বেড়াতে হতো কিন্তু মানুষ ওভাবে চিন্তা করতে চায় না এক সময়ের ছোট মন পরবর্তিতে পুরোপুরি তৈরী হয়ে বিশাল বিশ্বজগতকে বুঝতে চায় মাল্টিভার্সের স্বপ্ন দেখে আর সৃষ্টিকর্তাতো খুব সিম্পল (মামুলি) কল্পনা মাত্র একদিন দেখবেন মানুষ সৃষ্টিকর্তা রোগের চিকিৎসা পর্যন্ত আবিষ্কার করে ফেলেছে মানুষের ক্ষমতাকে ছোট করে দেখবেন না বনের এক সাধারণ পশু থেকে আজকের এই সভ্য এবং উন্নত মানুষে পরিনত হয়েছে মানুষ আর এখনতো পৃথিবী জয় করে বিশ্বজগতকে জয় করার জন্য হাত বাড়িয়েছে মানুষ সৃষ্টিকর্তার মতো কাল্পনিক চরিত্রকে সৃষ্টি করেছে। সুপারম্যান, স্পাইডারম্যানদের সৃষ্টিকর্তাও এই মানুষই এক্সম্যানদের মতো গড পাওয়ারের মানুষদের ধারনাও এই ছোট মস্তিষ্কের মানুষই সৃষ্টি করেছে সৃষ্টিকর্তাদেরকে সৃষ্টিকরার মতই। এই যে এতো সৃষ্টি মানুষ করছে, (মাল্টিভার্সের মতো অসীম বিশ্বজগত ধারনার আবিষ্কার সব থেকে বড় আবিষ্কার বলে আমি মনে করি ) কিন্তু বিশ্ময়ের ব্যপারটা হচ্ছে, মানুষ এতো সব কিছু আবিষ্কার করেছে তাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতার মাত্র দশ ভাগ ব্যবহার করে
তাহলে চিন্তা করুন মানুষ যখন তার মস্তিষ্কের ক্ষমতার ৫০% বা ৯০% ব্যবহার করতে শিখবে তখন কি হবে ?
প্রত্যেক মানুষ এক একটা সৃষ্টিকর্তায় পরিণত হবে। আপনি চিন্তা করতে পারেন? মানুষ এতোটাই ক্ষমতাবাণ।
মানুষ বিশ্বজগতের রহস্য যেমন বের করে ফেলেছে ঠিক সেভাবে মানুষ কিভাবে ধর্ম এবং সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করেছে তাদের কল্পনা শক্তি দ্বারা সেটার রহস্যও বের করে ফেলেছে। সৃষ্টিকর্তা কে, সে কি রকম, সে কোথায় থাকে, মানুষ কেন সৃষ্টিকর্তার মতো এক কাল্পনিক চরিত্রকে সৃষ্টি করেছে, তার অবস্থান কোথায় (অন্ধবিশ্বাসীদের কল্পনায়), সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কিত আরো অনেক রহস্যই মানুষ বের করে ফেলেছে। তাই আপনার মতো কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসী মানুষের পক্ষেই এটা বলা সম্ভব যে মানুষ কখনই সৃষ্টিকর্তার মতো এক কাল্পনিক চরিত্র সম্পর্কে  জানতে পারবে না। আসলে মানুষের মস্তিষ্ক এবং ক্ষমতা সম্পর্কে আপনাদের কোন ধারণাই নেই। মানুষ কোথা থেকে কোথায় এসে পৌছে গেছে সেটা লক্ষ করলেই বুঝতে পারতেন মানুষের মস্তিষ্ক এবং ক্ষমতা সম্পর্কে। আপনার কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের ক্ষমতা দেখলেই সেটা বুঝতে পারতেন। চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটা উন্নতি সাধন করেছে সেটা কি সবার অজানা? কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে বেড়িয়ে আসতে পারলেই সেটা বুঝতে পারতেন। কিন্তু আপনারা যে পরিমান কুসংস্কারগ্রস্থ এবং অন্ধবিশ্বাসী তাতে মনেতো হয় না এসব বুঝবেন!  

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
স্রস্টা নিরাকার, এটা প্যাগানিস্টদের দুর্বল মস্তিস্কের ধারনা, স্রস্টা আকার নিরাকারের উর্ধে।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
এক অবাস্তব ধারনাকে ঢাকতে আরেক অবাস্তব ধারণার আমদানী করছেন। আকার নিরাকারের উর্ধে কোন কিছু হয় কি করে ? কল্পনারো তো একটা লিমিটেশন থাকা উচিত এমন কোন বস্তু বাস্তবে সম্ভব নয় যে আকার নিরাকারের উর্ধ্বে থাকতে পারে এর জন্যই বড় বড় মনিষীরা বলে, ইশ্বরের কোন অস্তিত্ব নেই; শুধু মনে বা কল্পনায় ব্যতিত মানে ইশ্বরদের অস্তিত্ব শুধু কল্পনাতেই সম্ভব, বাস্তবে নয়
ঈশ্বর যদি বুদ্ধিমান হয়ে থাকে তবে তার বুদ্ধিকে ধারণ করার জন্য কোন বস্তুর আশ্রয় নিতে হবে। অর্থাৎ কোন বস্তুতে তার বুদ্ধিমত্তাকে মজুদ রাখতে হবে। আর আমরা জানি যে সৃষ্টিকর্তা বুদ্ধিমান প্রাণী। অর্থাৎ তার একটি আকৃতি বা আকার থাকতে হবে। যদি ধরে নেই যে সৃষ্টিকর্তা বায়বীয় পদার্থ দ্বারা তৈরী তবে সেই পদার্থেরও একটি আয়তন থাকতে হবে। কিন্তু বায়বীয় পদার্থ দ্বারা সৃষ্টিকর্তার মস্তিষ্ক গঠিত হয়ে থাকলে তবে তার স্মৃতি ভ্রষ্টতা দেখা দেবে অচিরেই। কারণ আমরা জানি বায়বীয় পদার্থের ধরণ সব সময়ই পরিবর্তনশীল। আমরা খুব ভালো করেই জানি যে বায়বীয় পদার্থের কোন নির্দিষ্ট আকার বা আকৃতি না থাকলেও বায়বীয় পদার্থের একটা অনির্দিষ্ট আকৃতি থাকে। কিন্তু বায়বীয় পদার্থের আকৃতি সব সময়ই পরিবর্তিত হতে থাকে। তাই বলে এটা বলা যাবে না যে বায়বীয় পদার্থের কোনই আকৃতি নেই। বায়বীয় পদার্থের অবশ্যই আকৃতি আছে তবে সেটা নির্দিষ্ট নয়; বরং সব সময় পরিবর্তনশীল। আবার বায়বীয় পদার্থের অনুগুলোর সব সময়ই একটি নির্দিষ্ট আকৃতি থাকে। কিন্তু বায়বীয় পদার্থের সমগ্র উপাদানের কোন নির্দিষ্ট আকার নেই।
যদি সৃষ্টিকর্তা বায়বীয় পদার্থ দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে তবে তার একটি অনির্দিষ্ট বা অস্থায়ী আকৃতি থাকতে হবে। যেমন বায়ু বেলুনে থাকলে বায়বীয় পদার্থ বেলুনের আকৃতি ধারণ করে। আবার গ্যাস টিউবে রাখলে টিউবের আকৃতি ধারণ করে। ঠিক একই ভাবে সৃষ্টিকর্তা বায়বীয় পদার্থের হলে তার বায়বীয় উপাদানগুলো যেখানে রাখা হয়েছে তার আকৃতি ধারণ করবে। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তাকে আকৃতি সম্পন্ন হতে হবে।
ঈশ্বর যদি বায়বীয় পদার্থের না হয়ে থাকে তবে তাকে শক্তির দ্বারা (এনার্জির দ্বারা) তৈরী হতে হবে।
কারণ বিশ্বজগতে যা কিছু অস্তিত্বশীল রয়েছে তার সব কিছুই হয়তো পদার্থ তা না হলে শক্তি হিসেবে বিরাজমান। এদুটোর বাইরে যা কিছু রয়েছে তা হলো শুন্যতা বা অস্তিত্বহীনতা। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যদি অস্তিত্বহীন হয় তবে সৃষ্টিকর্তার কোন অস্তিত্ব থাকবে না। তাই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব যদি থেকে থাকে তবে অবশ্যই সেটা পদার্থ অথবা শক্তি। আর তাই যদি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব পদার্থে না হয়ে থাকে তবে অবশ্যই তার অস্তিত্ব শক্তি বা এনার্জিতে থাকতে হবে।
যদি সৃষ্টিকর্তা এনার্জি বা শক্তি দিয়েই তৈরী হয়ে থাকে তবে তার বুদ্ধিমত্তা তৈরী হতে পারবে না। কারণ বুদ্ধিমত্তা তৈরী হবার জন্য শক্তিকে একটি কঠিন পদার্থের মধ্যে রাখতে হবে। তাহলেও সৃষ্টিকর্তার একটি আকার তৈরী হবে। অর্থাৎ যেভাবেই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব কল্পনা করা হোক না কেন তাকে অবশ্যই একটি আকৃতি ধারণ করতে হবে। নয়তো সে বুদ্ধিমান হতে পারবে না।
কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যদি বুদ্ধিমান না হয়ে থাকে তবে সে শক্তিতে বিরাজমান হতে পারবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে যে বুদ্ধিমান সৃষ্টিকর্তার কথা ধর্মগুলো বলে থাকে সেটি মিথ্যে হয়ে যাবে। আবার শক্তি দিয়ে তৈরী এই সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টি করতে পারবে না সুপরিকল্পিত ভাবে (যেভাবে ধর্মগ্রন্থগুলোতে বলা হয়েছে)।
আর তাই বুদ্ধিমান সৃষ্টিকর্তা বলে যদি কেউ থেকে থাকে তবে তাকে অবশ্যই একটি আকৃতি ধারণ করতে হবে।
কিন্তু আপনি বলছেন ঈশ্বর আকার নিরাকারের উর্ধ্বে, বাস্তবে এমনটি ঘটা কখনই সম্ভব নয়। কারণ বুদ্ধিমান সৃষ্টিকর্তাকে অবশ্যই আকারযুক্ত হতে হবে। আবার আকার নিরাকারের উর্ধ্বে কোন কিছু হতে পারে না। এটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী মানুষের কল্পনা মাত্র। সে তার কল্পনার জগতে সৃষ্টিকর্তার এরকম আকৃতি কল্পনা করেছে। আর এটা মানুষই করেছে বলে মানুষই সৃষ্টিকর্তার চেয়ে অনেক বেশী বুদ্ধিমান এবং ক্ষমতাবাণ। আর তাই মানুষই পারে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে হাউপোথিসিস নয় বরং থিউরী দিতে। এটা কপটতা নয়, এটা মানুষের মানবিক সততা।
আপনি যেমনটি দাবী করেছেন (সৃষ্টিকর্তা আকার নিরাকারের উর্ধ্বে) তার কোন প্রমাণ নেই। আপনি আপনার অন্ধবিশ্বাস থেকেই এমনটি কল্পনা করেছেন। আপনার দাবীটির কোন ভিত্তিই নেই। আপনি একটি ভূল এবং ভ্রান্তিকর কথা বলেছেন।
আপনার যুক্তিগুলো এরকম-
আল্লাহ সত্য, কারণ কুরআনে কথা বলা আছে
কুরআন সত্য, কারণ মুহাম্মদ কথা বলেছে
মুহাম্মদ সত্য, কারণ কুরআনে আল্লাহ কথা বলেছে
অর্থাত একটা অপ্রমানিত বিষয় দিয়ে আরেকটা অপ্রমানিত বিষয়কে সত্য প্রমান করার চেষ্টা
একটা মিথ্যেকে আনেকটা মিথ্যে দিয়ে সত্য প্রমাণ করার চেষ্টা

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
অনেকে দাবী করে যে, সৃষ্টিকর্তার কোন আকার নেই অর্থাৎ নিরাকার কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো সৃষ্টিকর্তার অবশ্যই আকৃতি আছে। কুরআনের সূরা বাকারা পড়ে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় কেউ যদি বলে সৃষ্টিকর্তা নিরাকার তবে এটা কুফরির পর্যায়ে পড়ে। সৃষ্টিকর্তার আকার অবশ্যই আছে; তবে তার আকৃতি কেমন সেটা আমরা জানি না। আল্লাহর আকৃতি আল্লাহর মতো।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
তাহলে সৃষ্টিকর্তার আকারটা কি রকম ? যদি আকার থাকে তবে তার ধ্বংস হবার ভয় থাকবে কারণ আকার থাকতে হলে তাকে কোন না কোন পদার্থ দিয়ে গঠিত হতে হবে আর সেই পদার্থটি যাই হোকনা কেন সেটা পরিবর্তিত হবে কারণ পদার্থ সদা পরিবর্তনশীল আর পদার্থ সব সময় শক্তিতে পরিনত হয়ে থাকে এবং শক্তি সব সময় পদার্থে পরিনত হতে থাকে এটা ঘটতে যদি প্রায় অসীম সময়ও ব্যয় হয় তবু তারা পরিবর্তন হবেই তার মানে সৃষ্টিকর্তাও সদা পরিবর্তিত হবে বা ধ্বংস হবে
আমরা জানি বিশ্বজগতে যা কিছু আছে তা দুটো অবস্থাতে বিদ্যমান রয়েছে। একটি হলো পদার্থ অন্যটি হলো শক্তি। সৃষ্টিকর্তার যদি নির্দিষ্ট আকার থেকেই থাকে তবে তাকে পদার্থ দিয়ে তৈরী হতে হবে। কারণ পদার্থেরই (কঠিন পদার্থের) শুধু নির্দিষ্ট আকার বা আকৃতি রয়েছে। আবার আমরা জানি যে বিশ্বজগতের সমস্ত পদার্থ শক্তি থেকে তৈরী হয়েছে। অর্থাৎ শক্তি রুপান্তরিত হয়ে পদার্থে পরিণত হয়েছে। যদি সৃষ্টিকর্তার আকৃতি বা আকার থাকে তবে সে পদার্থ দিয়ে তৈরী। আর পদার্থ তৈরী হয় শক্তি থেকে। ফলে আকার সম্পন্ন সৃষ্টিকর্তাকেও শক্তি থেকে সৃষ্টি হতে হবে। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি হতে হবে। তখন আর সৃষ্টিকর্তা অনন্ত অসীম হতে পারবে না। সে হবে সীমিত এক সৃষ্টি হওয়া সৃষ্টিকর্তা। ফলে প্রচলিত সৃষ্টিকর্তার ধারণাগুলো তখন এমনিতেই ভিত্তিহীন হয়ে যাবে।
আমরা জানি যে পদার্থ এবং শক্তি সব সময়ই পরিবর্তিত হয়। পদার্থ শক্তিতে পরিণত হয় আবার শক্তি পদার্থে পরিণত হয়। ফলে আকার সম্পন্ন সৃষ্টিকর্তাও সব সময় পরিবর্তনশীল থাকবে। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা তখন নির্দিষ্ট স্বত্বা থাকতে পারবে না। তার অস্তিত্বও পরিবর্তনশীল হয়ে যাবে। এবং সর্বক্ষমতাবাণ এবং চিরন্তন সৃষ্টিকর্তার ধারণা মিথ্যে হয়ে যাবে।
অর্থাৎ কোন ভাবেই প্রচলিত বুদ্ধিমান সৃষ্টিকর্তা আকার সম্পন্ন হতে পারবে না। আর তাই নিরাকার সৃষ্টিকর্তা যেমন ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক ঠিক সেভাবেই আকার সম্পন্ন সৃষ্টিকর্তাও ভিত্তিহীন কাল্পনিক।
আপনি কুরআন থেকে উদৃতি দিয়ে সত্য মিথ্যার প্রমাণ হাজির করেছেন। কিন্তু বাস্তবে একটি গ্রন্থ কোন ক্রমেই কোন কিছুর প্রমাণ হতে পারে না। কুরআনের কথাগুলো তখনই গুরুত্ব পাবে যখন কুরআনে বলা কথা গুলোর প্রমাণ বাস্তব জগতে থাকবে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব বাস্তব জগতে নেই। আর তাই কুরআনে বলা সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কিত দ্বাবীগুলোর কোন ভিত্তিই থাকবে না যদি না এর বাস্তব জগতে কোন প্রমাণ থাকে।
বাস্তব জগতে উপস্থিত কোন প্রমাণ না থাকা কোন বই কখনই কোন বাস্তব কিছুর প্রমাণ হিসেবে গন্য হয় না। কুরআনে নানা কথা বা রুপকথার উল্লেখ থাকলেও সেটাকে প্রমাণ হিসেবে গন্য করা হবে না যদি না কুরআনের কথার সাথে বাস্তব জগতের কোন মিল পাওয়া যায়।
আর তাই কুরআন সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে যাই বলুক না কেন এর কোন গুরুত্ব নেই।কারন এসব কথা বাস্তবে প্রমাণ পাওয়া যায় না। (এমনটি হলে সুপারম্যান স্পাইডারম্যান হাল্ক-এর মতো গড মানুষের অস্তিত্বকেও সত্য বলে মেনে নিতে হবে যাদের বাস্তব জগতে কোন অস্তিত্ব নেই তাদের অস্তিত্ব শুধু কিছু বইয়ের মধ্যে স্বীমাবদ্ধ।)
সুতরাং কুরআনে এটা বলা হয়েছে তাই এটা সত্য অথবা কুরআনে ওটা বলা হয়েছে তাই ওটা সত্য এই কথাগুলো অর্থহীন। কুরআন একটা স্বাধারণ বই ছাড়া কিছুই নয়। কুরআন কোন প্রাণী নয় যে তাকে সাক্ষি হিসেবে দাড় করানো যায়। সুতরাং (জড়বস্তুর) একটি বই কখনই কোন কিছুর প্রমাণ হতে পারে না যদি না তার বাস্তবিক কোন প্রমাণ থাকে। (যেমন সাইন্সের বইগুলো কোন প্রমাণ হিসেবে গ্রহনযোগ্য হতো না, যদি না সাইন্সের বইয়ের সাথে বাস্তব জগতের ঘটনাগুলো না মিলতো। প্রকৃতপক্ষে সাইন্সের বইগুলো এজন্যই প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয় কারণ এর বাস্তব প্রমাণ আছে। যে কেউ পৃথিবীর যেকোন স্থানে বসেই সাইন্সের বইগুলোতে বলা কথা গুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারে। এজন্যই সাইন্সের বইকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহন করা হয় (এটি আগেই পরীক্ষা করা হয়েছে বলে) কিন্তু ধর্মগ্রন্থের কথাকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহন করা হয় না। কারণ এটি সর্বসম্মতিতে প্রমাণিত নয়। এটি শুধু অন্ধবিশ্বাসীরা তাদের অন্ধবিশ্বাস দিয়ে এটিকে সত্য বলে মেনে নেয় কোন প্রমাণ ছাড়াই।)

আস্তিকদের অযৌক্তিক, কুযৌক্তিক, অপযৌক্তিক এবং অপ-বৈজ্ঞানিক প্রশ্নঃ
ধবংস শুধু তারই হয় যে সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্ কারো থেকে সৃষ্ট হননি (কুরআন 112:3) তাই তিনি ধ্বংস হবেন না।

যৌক্তির এবং বৈজ্ঞানিক উত্তরঃ
আল্লাহ কারো থেকে সৃষ্টি হয়নি আর আল্লাহ সৃষ্টি হয়নি কথা দুটোর মধ্যে আকাশ পাতালের পার্থক্য রয়েছে। কারো থেকে সৃষ্টি হওয়া মানে একটা বস্তু বা অন্য কিছু থেকে সৃষ্টি হওয়া। যেমন- বাবা মা থেকে সন্তান জন্ম নেওয়া; কাঠ থেকে চেয়ার হওয়া; পানি থেকে জলীয় বাষ্প হওয়া; শক্তি থেকে পদার্থ তৈরী হওয়া ইত্যাদি। কিন্তু সৃষ্টি হওয়া মানে শুন্য থেকে কোন কিছু সৃষ্টি হওয়া। তাই আল্লাহ কারো থেকে সৃষ্টি হয়নি বলে যে সে সৃষ্টিই হতে পারবে না তার কোন ভিত্তি নেই।
আবার আল্লাহ যে সৃষ্টি হননি তার কোন প্রমাণ নেই। এটি মুসলমানদের অন্ধবিশ্বাস যার কোন বাস্তব প্রমাণ নেই। আবার মানুষ কোন কিছু সৃষ্টি হতে দেখেনি এবং কোন কিছুকে ধ্বংস হতেও দেখেনি। তবে বিজ্ঞানীরা শুন্য থেকে কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে অল্প সময়ের জন্য শুন্য থেকে শক্তি এবং পদার্থ সৃষ্টি ও ধ্বংস হবার প্রমাণ পেয়েছেন। অর্থাৎ শুন্য থেকে কোন কিছু সৃষ্টি হয়ে আবার তা ধ্বংস হবার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
কিন্তু মানুষের কাছে আল্লাহ সৃষ্ট নাকি সৃষ্ট নয় তার কোন প্রমাণই নেই। (আল্লাহর অস্তিতেরই কোন প্রমাণ নেই।)
অন্য দিকে আল্লাহ সৃষ্টি হয়নি এটা যেমন প্রমাণশূন্য ঠিক তেমনি আল্লাহ ধ্বংস হবে না এটাও প্রমাণশূণ্য। সৃষ্টি নয় বলে কিছু ধ্বংস হতে পারবে না তারও কোন ভিত্তি নেই। বরং বিজ্ঞানীদের দাবী যে বিশ্বজগত শুন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে, কুয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে শুন্য থেকে অল্প সময়ের জন্য যেভাবে কিছু সৃষ্টি হয়ে আবার ধ্বংস হয়ে যায় ঠিক সেভাবেই এই বিশ্বজগত সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি ধ্বংস হবে। তাই আল্লাহ সৃষ্টি হয়নি তাই তার ধ্বংস হবে না কথাটির বিন্দু মাত্রও ভিত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজগত কোন সৃষ্টিকর্তাহীন শুন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে এবং বিশ্বজগত শুন্যতায় বিলীন হয়ে যাবে বলেই বিজ্ঞানীরা মনে করে থাকেন। এর বাস্তব ভিত্তি হলো কুয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন। কিন্তু আল্লাহর অস্তিত্ব বা সৃষ্টি হওয়া অথবা ধ্বংস হবার কোন প্রমাণই নেই। এটি কুরআন নামক প্রাচীণ মানুষের দ্বারা তৈরী হওয়া একটি স্বাধারণ বইয়ের কিছু কাল্পনিক কথাবার্তা।
আমরা আগেই জেনেছি যে কোন বইয়ের কথা কখনই গ্রহনযোগ্য নয় যতক্ষন পর্যন্ত সেই বইয়ের কথার সাথে বাস্তবতার মিল না হয়। কুরআনের কথার যেহেতু কোন বাস্তব ভিত্তি নেই তাই কুরআনে লেখা থাকলেই সেটি সত্য হয়ে যাবে না। আর তাই কোন কিছুর প্রমাণ স্বরুপ কুরআনের উদৃতির কোন গ্রহনযোগ্যতা নেই।

আল্লাহ সৃষ্টি হয়নি তবে সে কোথা থেকে আসলো ? কোথায় ছিল এবং কোথায় যাবে ? মানে তার কি পরিণতি হবে ?
যদি আল্লাহ সৃষ্টি না হয়েই বিরাজমান থাকতে পারে তবে অন্য কিছু কেন থাকতে পারবে না ?

No comments:

Post a Comment