মুসলমানদের দাবী কুরআন আল্লাহ নামের এক আরবীয় সৃষ্টিকর্তার কথা বা বাণী। আল্লাহ (মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা) তার কথাগুলোকে জিব্রাইল নামের এক ফেলেশতা বা দেবদুতের মাধ্যমে মুহাম্মদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। জিব্রাইল আল্লাহর কথাগুলো মুহাম্মদের কাছে হুবহু তুলে ধরেছে। মুহাম্মদ সেই কথাগুলো তার সাহাবা বা সাথীদেরকে বলেছে এবং সাহাবারা সেই কথাগুলো লিখে রেখেছে। পরবর্তীতে সেই কথাগুলোকে বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছে যথাক্রমে আবু বক্করের অধীনে এবং উসমানের অধীনে। কুরআনের খন্ড খন্ড অংশগুলো বিকৃত হয়ে গেলে ইসলামের তৃতীয় খলিফা (রাজা বা সম্রাট) উসমান নতুন করে কুরআনকে সংকলন এবং সংশোধন করে গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করেছে। এভাবেই আজকের দিনের কুরআন সংকলিত ও সংশোধিত হয়েছে।
কিন্তু মুসলমানদের
দাবী কুরআন অবিকৃত আছে এবং কুরআন সংরক্ষনের দায়িত্বে আছে স্বয়ং আল্লাহ। তাই কুরআনকে বিকৃত
করার সাধ্য কারোরই নেই। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় কুরআনকে বিকৃত করা হয়েছিল এবং উসমান
সেই বিকৃত কুরআনের খন্ড খন্ড অংশ থেকে কুরআনকে সংশোধন করেছে এবং তার নিজের মতো করে
কুরআনকে সাজিয়েছে। এমনকি কুরআনের আগের সংকলন এবং কথিত বিকৃত অংশগুলোকে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ কুরআনকে আল্লাহ
সংরক্ষনে ব্যর্থ হয়েছিল বলে মানুষকেই সেই কুরআনকে সংকলন, সংরক্ষন এবং সংশোধন করতে হয়েছে। আল্লাহ কুরআন সংরক্ষনে
কোন ভুমিকাই রাখতে পারেনি। একবার কুরআনকে লিখিত আকারে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করার পরে এটির
বিকৃত হবার সম্ভাবনা আর ছিল না। এটা পৃথিবীর সব গ্রন্থ ও পুস্তকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যে অর্থে কুরআন অবিকৃত
রয়েছে বলে মুসলমানরা দাবী করে থাকে, ঠিক সেই অর্থে পৃথিবীর তাবৎ গ্রন্থ বা বই অবিকৃত আছে। এর জন্য কোন সৃষ্টিকর্তার
আমদানী করতে হয়নি।
কুরআনের বাণী আল্লাহর
কাছ থেকে শুনে এসে হুবহু মুহাম্মদের কাছে বর্ণনা করেছে জিব্রাইল ফেরেশতা। মুহাম্মদ জিব্রাইলের
কাছ থেকে আল্লাহর বাণীগুলো শুনে সবাইকে বলেছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো মুহাম্মদের কোন
সাহাবা বা আত্বীয় স্বজনই জিব্রাইল ফেরেশতাকে দেখেনি কখনই। মুহাম্মদ ছাড়া আর কেউই জিব্রাইলের উপস্থিতি
টের পায়নি, তার কথাও কখনও শুনতে পায়নি কেউই। একমাত্র মুহাম্মদই জিব্রাইলের উপস্থিতি টের পেয়েছে, দেখেছে, এবং তার কথা শুনেছে। সবাই কুরআনের কথা মুহাম্মদের
মুখ থেকেই শুনেছে। তারা মুহাম্মদের মুখ থেকে কুরআনের কথা শুনেছে এবং অন্ধভাবে সেগুলোকে আল্লাহর বাণী
বলে বিশ্বাস করেছে। এ ছাড়া আর কোনই প্রমাণ নেই যে কুরআনের বাণী আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে। অর্থাৎ কুরআনের বাণী
আল্লাহর নাকি মুহাম্মদের নিজের সে সম্পর্কে অন্ধবিশ্বাস করা ছাড়া আর কোনই প্রমাণ নেই।
কিন্তু তবুও মুসলমানরা
কুরআনকে আল্লাহর বানী বলে দাবী করে থাকে। তাদের যুক্তি হলো কুরআনের বানী কোন মানুষের দ্বারা লেখা সম্ভব
নয় এবং কুরআনে এমন কিছু কথা উল্লেখ করা আছে যা মানুষের জানার কথা নয়।
কিন্তু মুসলমান ছাড়া
অন্য কেউ যখন কুরআন পড়ে তখন তারা দেখতে পায় কুরআনের লেখনি, বিষয় বস্তু, বর্ণনার ধরণ এগুলো কোন এক মানুষের। এটি কোন ক্রমেই কোন
সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে না। কিন্তু মুসলমানরা কারো কথাকেই তুয়াক্কা করে না। তারা গলার জোরে দাবী
করতেই থাকে যে কুরআন আল্লাহর বাণী এবং কোন মানুষের পক্ষে কুরআনের মতো লেখা সম্ভব
নয়। তারা আরো দাবী করে
থাকে যে, কুরআনে সব বিজ্ঞানের কথা উল্লেখ করা আছে। এবং কুরআন হলো বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ। কিন্তু মুসলমান ছাড়া
অন্য কেউ যখন কুরআন পড়ে তখন দেখা যায় কুরআনে নানা বিজ্ঞান বিরোধী এবং অবাস্তব,
অবৈজ্ঞানিক কথাতে ভর্তি।
কিন্তু কুরআনের সেই
ভুলগুলোকে মুসলমানদের কাছে তুলে ধরা হলে তারা কুরআনের অর্থকে পরিবর্তন করে দিয়ে দাবী
করে যে কুরআন বিজ্ঞানময়। কিন্তু মুসলমানরা যেভাবে কুরআনের অর্থের পরিবর্তন করে সম্পূর্ণ
ভিন্ন অর্থ এনে কুরআনকে বিজ্ঞানময় করে উপস্থাপন করে সেটার সাথে মুল কুরআনের কোন সম্পর্ক
নেই। বরং মুল কুরআনে নানা অবৈজ্ঞানিক
কথা বলা হয়েছে। কুরআনে অবাস্তব, অবৈজ্ঞানিক এবং নানা ভুল ও মিথ্যা কথা উপস্থাপিত হয়েছে। ফলে এটা সবাই বুঝতে পারে যে, কুরআন কোন অতি ক্ষমতাবান সৃষ্টিকর্তার বাণী নয়। বরং কুরআনের কথাগুলোকে
বিশ্লেষন করলে দেখা যায় কুরআন মুহাম্মদই লিখেছে বা মুহাম্মদের সমসাময়ীক কেউ লিখেছে। কারণ কুরআনে মুহাম্মদের
সমসাময়ীক কালের ধ্যান ধারণা বর্ণিত হয়েছে। মুহাম্মদের সমসাময়ীক কালের ধ্যান ধারণা, ভুল ও অন্ধবিশ্বাসজনীত
কথাগুলোই কুরআনে বর্নিত হয়েছে। আর তাই এটা স্পষ্ট যে কুরআন কোন সৃষ্টিকর্তার নয় বরং কোন এক
সাধারণ মানুষের লেখা।
কিন্তু মুসলমানরা কুরআনের
কথাগুলোকে পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে এবং বিজ্ঞানের সাথে
সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবর্তিত কুরআনের সেই কথাগুলোকে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে দাবী
করে কুরআন বিজ্ঞানময় তাই এটি সৃষ্টিকর্তার বানী।
কিন্তু যখন সবাই কুরআনকে
পরীক্ষা করে দেখে যে, কুরআন আসলেই সৃষ্টিকর্তার বাণী কিনা এবং কুরআনে আসলেই বিজ্ঞানের কথাগুলো বলা আছে
কিনা তখন তারা দেখতে পায় কুরআনে বিজ্ঞানময় কোন কথাই নেই বরং কুরআনে বিজ্ঞান বিরোধী
কথা বলা আছে। তবে মুসলমানরা কুরআনের অর্থকে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে পরিবর্তন করেছে। যদি কুরআনের ভূল গুলোকে
পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন করে অর্থ করা হয় তবে সেটাতো বিজ্ঞানময়
হবেই। কারণ মুসলমানরাতো
বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখেই নতুন
অর্থ করেছে এবং কুরআনের ভূলগুলোকে সংশোধন করে নিয়েছে। তখন এটা এমনিতেই বিজ্ঞানময় হয়ে যাবে। কারণ কুরআনের অর্থ
পরিবর্তন করার সময় মুসলমানরা বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখেই নতুন অর্থ করেছে। এতে কুরআনের কোন কৃতিত্ব
নেই; কৃতিত্ব সেই সব মুসলমানের
যারা কুরআনের অর্থকে পরিবর্তন করে কুরআনকে বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন রেখে সংশোধন
করেছে। আসল কুরআন ভুল ছিল, ভুলই আছে। কিন্তু কুরআনের কথা গুলোকে পরিবর্তন করার
ফলে কুরআন লেখকের ভুলগুলো আগেই সংশোধন করা হয়ে গেছে। ফলে সংশোধিত কুরআনে আর ভুল থাকবে না। কারণ কুরআনের ভুলকে
সংশোধন করা হয়ে গেছে নতুন অর্থ করার মাধ্যমে।
এই পর্বগুলোতে দেখানো
হয়েছে মুসলমানরা কেন কুরআনের আগের অর্থকে পরিবর্তন করে এবং বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে
কুরআনের নতুন নতুন অর্থ করে? মুসলমানদের কুরআনের অর্থকে পরিবর্তন করার কারণ কি কি সেটা দেখানই
এই পর্বগুলোর উদ্দেশ্য।
এই পর্বটিতেও দেখানো
হবে কেন মুসলমানরা কুরআনের অর্থকে পরিবর্তন করে কুরআনের নতুন নতুন অর্থ করে এবং সেই
সংশোধিত অর্থ দিয়ে কিভাবে এবং কেন কুরআনকে বিজ্ঞানময় দাবী করে।
কুরআনে নানা অবৈজ্ঞানিক
এবং অবাস্তব কথা বলা হয়েছে। রাত দিন সম্পর্কে কুরআন এমন এমন কিছু কথা বলেছে যার সাথে বাস্তবতার
কোন মিল নেই। চাঁদের আলো এবং সূর্যের আলো সম্পর্কে কুরআনে ভুল কথা বলা হয়েছে এবং মুসলমানরা
সেই ভুলগুলো সংশোধন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করেছে।
চাঁদের আলোকে কুরআন
কি বলেছে এবং মুসলমানরা কুরআনের সেই কথাকে কেন পরিবর্তন করে নতুন অর্থ করেছে সেটা নিচে
আলোচনা করা হলো।
মুসলমানরা কুরআনের
সূরা ফুরকানের ৬১ নাম্বার আয়াতটি উল্লেখ করে দাবী করে যে, এখানে চাঁদের আলোকে প্রতিফলিত আলো বলা হয়েছে। তারা এই আয়াতটির অর্থ
করে এভাবে,
"কল্যাণকর তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র
সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও চন্দ্র যার রয়েছে ঋন করা আলো।"
মুসলমানরা দাবী করে
এই আয়াতটিতে চাঁদের আলোকে ঋণ করা আলো বলা হয়েছে এবং বিজ্ঞানও আবিষ্কার করেছে যে, চাঁদের আলোটা সূর্যের
আলো থেকে ঋণ করে নেওয়া আলো। তাই কুরআনে ১৪০০ আগেই চাঁদের ঋণ করা আলোর কথা বলা হয়েছে। তাই কুরআন বিজ্ঞানময়।
মুসলমানরা আরো দাবী
করে, সুরা ইউনুস-এর ৫ নাম্বার আয়াতে চাঁদের আলোকে
প্রতিফলিত আলো বলা হয়েছে। তারা আয়াতটির অর্থ করেছে এভাবে,
"তিনি আল্লাহ, যিনি সূর্যকে দীপ্তিমান
করেছে এবং চন্দ্রকে করেছে প্রতিবিম্বিত আলো।"
মুসলমানরা দাবী করে
এই আয়াতটিতে চাঁদের আলোকে প্রতিফলিত আলো বলা হয়েছে সেই ১৪০০ বছর আগেই; তাই কুরআন হলো বিজ্ঞানময় গ্রন্থ। তাই কুরআন সৃষ্টিকর্তার
বাণী।
কিন্তু প্রশ্ন হলো আসলেই কি কুরআনে ওই আয়াত দুটোতে চাঁদের আলোকে প্রতিফলিত আলো
বলা হয়েছে? নাকি ওই আয়াতে চাঁদের নিজের আলোর কথা বলা হয়েছে?
সূরা ফুরকান,
৬১ নাম্বার আয়াতের প্রকৃত অনুবাদ হলো,
"কল্যাণকর তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র
সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র।"
দেখা যাচ্ছে প্রকৃত অনুবাদে চাঁদকে দীপ্তিময় বলা হয়েছে। অর্থাৎ চাঁদের নিজের আলো আছে।
কিন্তু মুসলমানরা সেই অর্থকে পরিবর্তন করে নতুন অর্থ করেছে বিজ্ঞানের সাথে মিল
রেখে। অর্থাৎ যদিও কুরআনে বলা হয়েছে “চাঁদের নিজের আলো আছে” সেই অর্থটিকে মুসলমানরা পরিবর্তন করে নতুন
অর্থ করেছে যে, “চাঁদের আলোটা প্রতিফলিত আলো”। কেন এই পরিবর্তন সেটা জানার আগে সূরা ফুরকান-এর ৬১ নাম্বার আয়াতটির
অন্যান্য অনুবাদগুলো দেখে নেওয়া যাক।
সূরা ফুরকান, আয়াত ৬১
"কত মহান তিনি যিনি আকাশে সৃষ্টি করেছেন বড় বড় তারকাপুঞ্জ এবং তাতে স্থাপন
করেছেন প্রদীপ (সূর্য) ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র !" (অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান)
"কত মহান সেই সত্তা, যিনি আসমানে অসংখ্য্ গম্বুজ বানিয়েছেন, এরই মাঝে তিনি (আবার) পয়দা করেছেন প্রদীপ
(সম একটি সূর্য) এবং একটি জ্যোতির্ময় চাঁদ।" (অনুবাদ- হাফেজ মুনির
উদ্দীন আহমদ)
"মহামহিম তিনি যিনি মহাকাশে তারকারাজি
সৃষ্টি করেছেন, আর তাতে বানিয়েছেন
এক প্রদীপ ও এক চন্দ্র- দীপ্তিদায়ক।" (অনুবাদ- ডঃ জহুরুল
হক)
"কত মহান তিনি যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি
করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপ ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।"
"Blessed is He Who made constellation in the skies,
and placed therein a Lamp and a Moon giving light;"
(অনুবাদ- Ministry of Religious Affairs of Bangladesh)
"Blessed is He Who made constellations in the skies,
and placed therein a Lamp and a Moon giving light;" (অনুবাদ- Abdullah Yusuf Ali)
"Blessed be He Who hath placed in the heaven
mansions of the stars, and hath placed therein a great lamp and a moon giving
light!" (অনুবাদ- Mohammad Marmaduke
Pickthal)
"Blessed is He Who has placed in the sky great stars
and placed therein a (burning) lamp and luminous moon." (অনুবাদ- Saheeh International)
দেখা যাচ্ছে প্রত্যেকটি
অনুবাদ বলছে কুরআনের এই আয়াতটিতে চাঁদের আলোকে তার নিজের আলো বলা হয়েছে। অর্থাৎ কুরআন মতে চাঁদের
নিজের আলো আছে।
কিন্তু আমরা জানি চাঁদের
নিজের কোন আলো নেই। চাঁদে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে পৃথিবীতে আসে বলে মনে হয় চাঁদ নিজে আলো দেয়। কিন্তু আসলে চাঁদ নিজে
আলো দেয় না; সে শুধু সূর্যের আলো
প্রতিফলন করে।
কিন্তু কুরআন বলেছে
চাঁদের নিজের আলো আছে। অর্থাৎ কুরআন বিজ্ঞান বিরোধী কথা বলেছে; তাই কুরআন মিথ্যে। মুহাম্মদ মনে করতো চাঁদের নিজের আলো আছে তাই সে কুরআনে সেটা
লিখেছে। ফলে এই আয়াতটি কুরআনকে ভুল প্রমান করছে।
এজন্যই মুসলমানরা কুরআনের
এই আয়াতটিকে পরিবর্তন করে নতুন অর্থ করেছে এবং ভুলটাকে সংশোধন করেছে একদম বিজ্ঞানের
সাথে মিল রেখে। কুরআনে বলা হয়েছে “চাঁদের নিজের আলো আছে” এই ভুলটাকে “চাঁদের প্রতিফলিত আলো” দিয়ে সংশোধিত করে ফেলেছে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের
সাথে হুবহু মিল রেখে। ফলে কুরআনের ভুলটা শুদ্ধ হয়ে গেল এবং ভুল কুরআন বিজ্ঞানময় হয়ে গেল।
অর্থাৎ কুরআনকে বাঁচাতেই
কুরআনের আয়াতের অর্থ পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে।
সুরা ইউনুস-এর ৫ নাম্বার
আয়াতটির প্রকৃত অনুবাদ হলো,
"তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সূর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরুপে...।"
আমরা দেখি সূর্যের
আলোটা অত্যন্ত উজ্জল আর চাঁদের আলোটা স্নিগ্ধ। মুহাম্মদ এটা দেখেছে এবং সেটাই কুরআনে লিখে
দিয়েছে। অর্থাৎ মুহাম্মদ সূর্য ও চাঁদের আলোকে যেমনটি দেখেছে ঠিক তেমনটিই কুরআনে লেখা
আছে। কিন্তু সূর্যের আলোকে
উজ্জল এবং চাঁদের আলোটা স্নিগ্ধ মনে হলেও আসলে দুই আলোই সূর্যের আলো যেটা মুহাম্মদের
জানা ছিল না। তাই সে ভেবেছে সূর্যের আলো অত্যন্ত উজ্জল হলেও চাঁদের আলো স্নিগ্ধ বা আরামদায়ক। কিন্তু চাঁদের যে নিজের
আলো নেই সেটা কুরআন লেখকের জানা ছিল না বলে কুরআনে চাঁদের আলোকে তার নিজের আলো বলে
ভুল করেছে। অর্থাৎ এই আয়াত অনুযায়ী চাঁদের নিজের আলো আছে।
কিন্তু কুরআনের এই
ভূলটাকে মুসলমানরা সংশোধন করে নিয়ে নতুন অর্থ করেছে যে, চাঁদের আলোটা আসলে প্রতিফলিত আলো। অর্থাৎ মুসলমানরা "চাঁদের নিজের আলো
আছে" এই ভুলটিকে "চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো" এই নতুন অর্থ দিয়ে কুরআনের
ভুলকে সংশোধন করেছে। ফলে কুরআনের ভুলটাই বিজ্ঞানময় হয়ে দাড়িয়েছে। এতে অবাক হবার কিছু নেই । কারণ কুরআনের ভুলটাকে
বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে মিল রেখেই নতুন অর্থ করা হয়েছে। তাই সেটা এমনিতেই বিজ্ঞানময় হয়ে গেছে।
এভাবে সব ধর্মগ্রন্থগুলোকেই
বিজ্ঞানময় বানানো যাবে। শুধু ভুলটিকে সঠিক অর্থ দিয়ে নতুন করে অর্থ করে বিজ্ঞানময় বানানো
হবে। তাহলে এভাবে পৃথিবীর
সব ধর্মগ্রন্থই বিজ্ঞানময় হয়ে যাবে। কিন্তু ভুলটাকে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে সংশোধন
করে সেটাকে বিজ্ঞানময় দাবী করা কতটা নৈতিক সেটা নিয়ে তর্ক করা যেতে পারে। কিন্তু তার আগে দেখে
নেওয়া যাক সুরা ইউনুস-এর ৫ নাম্বার আয়াতটির অন্যান্য অনুবাদগুলো।
সুরা ইউনুস,
আয়াত ৫
"তিনি (আল্লাহ), যিনি সূর্যকে
দীপ্তিমান এবং চন্দ্রকে আলোকময় বানিয়েছেন...." (অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ
মুজীবুর রহমান)
"মহান আল্লাহ
তায়ালা যিনি সূর্যকে (প্রখর) তেজোদ্দীপ্ত বানিয়েছেন এবং চাঁদকে (বানিয়েছেন)
জ্যোতির্ময়,..."
(অনুবাদ- হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
"তিনিই তো সূর্যকে
করেছেন তেজস্কর,
আর চন্দ্রকে জ্যোতির্ময়,..." (অনুবাদ- ডঃ জহুরুল
হক)
"তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে
জ্যোতির্ময় করিয়াছেন...."
"It is He Who made the sun to be a shining glory and
the moon to be a light (of beauty),...."
(অনুবাদ- Ministry of Religious Affairs of Bangladesh)
It is He Who made the sun to be a shining glory and the
moon to be a light
[of beauty], (অনুবাদ- Abdullah Yusuf Ali)
He
it is Who appointed the sun a splendour and the moon a light, (অনুবাদ- Mohammad Marmaduke Pickthal)
সবগুলো অনুবাদই বলছে
কুরআন চাঁদের আলোকে তার নিজের আলো বলে দাবী করেছে। অর্থাৎ কুরআনে ভূল কথা বলা আছে যেটা বিজ্ঞানের
সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। যেহেতু কুরআনে ভুল কথা বলা হয়েছে তাই কুরআন আল্লাহর বাণী নয়। যেহেতু কুরআনে মুহাম্মদের
ভ্রান্ত ধারণা লেখা হয়েছে তাই বুঝা যায় কুরআন মুহম্মদের নিজের বাণী। এজন্য কুরআনকে বাঁচাতে
মুসলমানরা কুরআনের অর্থকে পরিবর্তন করে নতুন অর্থ করেছে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে
মিল রেখে। যেহেতু কুরআনের অর্থকে পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখেই নতুন অর্থ করা হয়েছে
তাই কুরআনের নতুন অর্থটি বিজ্ঞানময় হবে এটাই স্বাভাবিক। এতে বিস্মিত হবার কিছুই নেই। কারণ কুরআনের ভুলকে
বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখেই সংশোধন করা হয়েছে। তাই কুরআনকে বিকৃত করে নতুন অর্থ করলে সেটা
বিজ্ঞানময় হবে এটা বুঝতে আইনস্টাইন হতে হয় না।
ভুল কুরআনকে বিজ্ঞানের
সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে তাকে বিজ্ঞানময় বানাতে মুসলমানরা নানা কৌশল অবলম্বন করে
থাকে। তারা কুরআনের আয়াতে
ব্যবহৃত শব্দগুলো থেকে কিছু নির্দিষ্ট শব্দের অর্থ পরিবর্তন করে নেয় এবং পুরো বাক্যটির
অর্থকে পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে। এটা করতে যেয়ে তারা কোন একটি আয়াতে ব্যবহৃত
শব্দগুলো থেকে এমন একটি শব্দকে বেছে নেয় যে শব্দটির অন্যান্য অর্থগুলো থেকে একটি
অর্থ ব্যবহার করে সেই আয়াতটির ভুল সংশোধন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রাখা যায়। ফলে তারা সেই শব্দটির
অর্থ পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে আয়াতের অর্থ পরিবর্তন করে দেয়। এভাবেই তারা কুরআনের
অর্থকে পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানায়।
কিন্তু এভাবে কুরআনের
আয়াতগুলোর ভুল ঢাকতে তারা যে কৌশলের আশ্রয় নেয় সেটাতে কুরআনের কোন গুরুত্ব থাকলো
না। কারণ আসল কুরআন ভুলই
ছিল। কিন্তু মুসলমানরা সেই
ভুলকে কুরআনের আয়াতে ব্যবহৃত কোন এক শব্দের ভিন্ন অর্থ এনে যে নতুন অর্থ করা হয় এবং
কুরআনকে সংশোধন করা হয়
সেটা আর প্রকৃত কুরআন
থাকলো না। প্রাচীণকালের রচিত কুরআনের অর্থ অনুযায়ী কুরআনের যে অর্থ ছিল সেই অর্থকে মুসলমানরা
পরিবর্তন করে দিয়ে যদি নতুন অর্থ করে তবে সেই প্রাচীণ কুরআন আর থাকলো না। কারণ মুসলমানদের দাবী
অনুযায়ী আল্লাহ কিছু কথা বা বাণী মুহাম্মদকে বলেছে। সেই বাণীগুলো জিব্রাইল মুহাম্মদের কাছে অবিকৃত
ভাবে বলেছে। আল্লাহর সেই কথাগুলোকে মুহাম্মদ সবার কাছে বলেছে এবং সেই কথাগুলোই কুরআনে লেখা
হয়েছে। অর্থাৎ কুরআনের কথাগুলো
স্বয়ং আল্লাহর। আল্লাহ তার কথাগুলো বলার জন্য কিছু শব্দ ব্যবহার করেছে। আর সেই শব্দগুলো দিয়ে সে একটা অর্থ বুঝিয়েছে
যে অর্থটা মুহাম্মদ বুঝেছিল। অর্থাৎ আল্লাহ তার কথাগুলো বুঝাতে কিছু শব্দ ব্যবহার করে তার
বানী মুহাম্মদের কাছে পেশ করেছে এবং মুহাম্মদ সেই অর্থগুলো বুঝেছিল। সেই অর্থটিই (মুহাম্মদ
যে অর্থটা বুঝেছিল) কুরআনের বাণী বা আল্লাহর বাণী।
কিন্তু মুসলমানরা যদি
কুরআনের সেই অর্থকে পরিবর্তন করে দেয় তবে সেটা আর আল্লাহর বাণী থাকবে না। কারণ কুরআনে ব্যবহৃত
শব্দগুলো আল্লাহর নয়। বরং আল্লাহ তার বাণীগুলো বুঝাতে কিছু নির্দিষ্ট শব্দকে ব্যবহৃত করেছিল। অর্থাৎ আল্লাহ যে কথাগুলো
মুহাম্মদকে বলেছে সেই কথাগুলোই বুঝাতে কিছু শব্দ ব্যবহার করে কুরআন লেখা হয়েছে। এখন কুরআনের সেই আয়াতগুলোতে
ব্যবহৃত শব্দগুলোর যদি অন্যান্য অর্থ এনে নতুন অর্থ করা হয় তবে আল্লাহর বলা কথাগুলো
পরিবর্তিত হয়ে যাবে। কারণ কুরআনের আয়াতে ব্যবহৃত শব্দগুলো দিয়ে শুধু সেই অর্থই বুঝায় যে অর্থে আল্লাহ
শব্দগুলো ব্যবহার করেছে। কুরআনের আয়াতে ব্যবহৃত শব্দগুলোর শুধু একটি নির্দিষ্ট অর্থই
প্রকাশ করবে যে অর্থটা আল্লাহ মুহাম্মদকে বুঝিয়েছে। কিন্তু যদি সেই শব্দগুলোর অন্য অর্থ এনে
আয়াতের অর্থকে পরিবর্তন করে দেওয়া হয় তবে সেটা আর আল্লাহর বাণী থাকবে না। তখন শব্দের অর্থের
পরিবর্তের সাথে সাথে আয়াতের অর্থও পরিবর্তিত হয়ে যাবে।
এখানে উল্লেখ্য যে, একটি শব্দের অনেকগুলো অর্থ থাকতে পারে। কিন্তু যখন কোন লেখক
তার কথা বলার জন্য কোন শব্দকে বেছে নেয় তখন সে সেই শব্দটির একটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ
করতেই শুধু সেই শব্দটিকে ব্যবহার করে। অর্থাৎ বাক্যে ব্যবহৃত শব্দগুলোর শুধুমাত্র একটিই অর্থ হতে
পারবে যে অর্থটা লেখক প্রকাশ করেছে। কিন্তু যদি বাক্যে ব্যবহৃত শব্দের ভিন্ন ভিন্ন অর্থগুলো থেকে
ভিন্ন অর্থ এনে বাক্যের অর্থকে পরিবর্তন করা হয় তবে সেটা আর লেখকের কথা থাকে না। সেটা তখন অর্থ পরিবর্তনকারীর
নিজের কথা হয়ে যায়।
ঠিক একই ভাবে যখন কুরআনের
আয়াতে ব্যবহৃত শব্দগুলো দিয়ে যে অর্থ প্রকাশ করা হয়েছে সেই অর্থকে যদি পরিবর্তন করে
সেই শব্দটির অন্যান্য অর্থ এনে আয়াতের অর্থকে পরিবর্তন করা হয় তবে সেটা আর কুরআন রচয়িতার
কথা বা বাণী থাকবে না। সেটা হয়ে যাবে কুরআনের অর্থ পরিবর্তনকারীর কথা বা বাণী।
কিন্তু মুসলমানরা এই
কাজটি করে থাকে নির্লজ্জের মত। কারণ এটা ছাড়া ভুলে ভরা কুরআনকে বাঁচানোর অন্য কোন পথ নেই। তাই তারা আয়াতে ব্যবহৃত
শব্দের অন্যান্য অর্থগুলো এনে আয়াতের ভিন্ন অর্থ করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে কুরআনের
যে নতুন অর্থ করে সেটা আর কুরআন লেখন আল্লাহর বাণী থাকে না। সেটা কুরআনকে পরিবর্তনকারী সেই মসুলমানদের
বাণী হয়ে যায়।
ফলে মুসলমানরা যদি
উপরিউক্ত আয়াতে ব্যবহৃত "চাঁদের নিজস্ব আলো আছে" অর্থটি পরিবর্তন করে দিয়ে
বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে বলে এখানে "চাঁদের প্রতিফলিত আলোর"
কথা বলা হয়েছে তবে সেটা আর আল্লাহর বাণী থাকলো না। কারণ আল্লাহ বলেছে, চাঁদের নিজস্ব আলো আছে যেটা অবৈজ্ঞানিক এবং অবাস্তব। ফলে এই ভুলটিকে যদি
বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করে শুদ্ধ করা হয় তবে সেটা আল্লাহর বলা কথাকেই শুদ্ধ
করা হলো। কিন্তু তাতে আল্লাহর কথাটা সঠিক হয়ে গেল না বরং আল্লাহর ভুলটাকে আরো প্রকট ভাবে
প্রকাশ করলো। কারণ তখন মুসলমানরা আল্লাহর কথাকেই সংশোধন করেছে; অর্থাৎ আল্লাহর কথা ভুল ছিল বলেই মুসলমানরা সেটাকে সংশোধন করে
দিয়েছে। মুসলমানদের এই সংশোধন করাটা আল্লাহর অক্ষমতাকেই প্রকাশ করে। আল্লাহ ভুল করেছিল
বলেই মুসলমানদের সেটা সংশোধন করতে হয়েছে।
মুসলমানদের দাবী সূরা
ফুরকান-এর ৬১ নাম্বার আয়াতে এবং সুরা ইউনুস-এর ৫ নাম্বার আয়াতে চাঁদের আলো বুঝাতে
মুনির এবং নূর শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ ধার করা আলো, অথবা কোন প্রতিফলিত আলো। কিন্তু মুনির এবং নূর অর্থ ধার করা আলো বা প্রতিফলিত আলো নয়। বরং মুনির মানে আলো দেয়া বা বিকীরন অথবা
উজ্জল বা দীপ্তি, আর নূর মানে হল আলো
বা আলো প্রদানকারী।
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে
মুনির বা নূর শব্দটি দিয়ে কুরআন চাঁদের নিজের আলোর কথাই বুঝিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞান যখন
আবিষ্কার করলো যে চাঁদের নিজস্ব আলো নেই এবং চাঁদ সূর্যের আলো প্রতিফলন করে বলে
মানুষের কাছে মনে হয় চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে চাঁদের নিজের কোন আলো
নেই। কুরআন লেখক (মুহাম্মদ)
ছিল দেড় হাজার বছর আগের মানুষদের মতো ধ্যান ধারনা সম্পন্ন মানুষ। তাই সে জানতো না যে
চাঁদের নিজের আলো নেই। সবার মতো সেও ভেবেছিল যে চাঁদের নিজেরই আলো আছে এবং তার নিজের আলো থেকেই পৃথিবীতে
আলো দেয়। ফলে কুরআনের এই আয়াতগুলো থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে কুরআন কোন সৃষ্টিকর্তার বাণী
নয় কুরআন কোন মানুষ কর্তৃক তৈরী কৃত। ফলে কুরআন মিথ্যে হয়ে যায়।
আর তাই মুসলমানরা কুরআনকে
বাঁচাতে মুমির এবং নূর শব্দটির একটি নতুন অর্থ করে নেয় যে, মুনির বা নুর অর্থ প্রতিফলিত আলো। এখানে মুসলমানদের চালাকিটা খুব নিকৃষ্ট মানের।
যতদিন মানুষ জানতে
পারেনি যে চাঁদের আলোটা আসলে চাঁদের নিজের আলো নয়; ততদিন মুনির এবং নূরের অর্থ করা হয়েছে আলো প্রদানকারী বা
আলো দাতা। কিন্তু যখনই বিজ্ঞান আবিষ্কার করে ফেললো যে চাঁদের আলোটা তার নিজের আলো নয় বরং
চাঁদের আলো হলো সূর্যের আলোর প্রতিফলিত আলো তখন তারা দেখলো কুরআন মিথ্যে হয়ে গেছে। তারপর তারা কুরআনকে
বাঁচাতে মুনির এবং নুর-এর নতুন অর্থ তৈরী করলো বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে। তারা মুনির এবং নূর-এর
নতুন অর্থ করলো প্রতিফলিত আলো। কি চমৎকার যাদু,
বিজ্ঞানের আবিষ্কারের
সাথে মিল রেখে মুনির আর নুর-এর নতুন অর্থ করার ফলে ভুল ও মিথ্যা কুরআন রাতারাতি বিজ্ঞানময়
হয়ে গেলো। এতে করে যে মুসরমানদের অসততা প্রমানিত হলো সেটার দিকে তাদের কোন খেয়াল নেই। কুরআন ভুল তাই শব্দের
নতুন অর্থ কর বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে আর প্রচার করো কুরআন কতটা বিজ্ঞানময়।
এখানে উল্লেখ্য মুনির
এবং নুর-এর অর্থ সবগুলো অনুবাদে আলো প্রদানকারী। কিন্তু নতুন অনুবাদগুলোতে মুনির আর নুর-এর
অর্থ করা হয়েছে প্রতিফলিত আলো। আর এই শব্দ দুটোর নতুন অর্থ করা হয়েছে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের
পরে কুরআনকে বাঁচাতে। সুতরাং কুরআন বিজ্ঞানময় এটা শুধু মিথ্যেই নয় বরং চরম প্রতারণা।
মুসলমানরা আরও দাবী
করে যে সূর্যের আলোকে দিয়া বলা হয় এবং সূর্যকে সিরাজ বা প্রদীপ, ওয়াহাজ বা প্রজ্জলিত প্রদীপ বলা হয়। কিন্তু চাঁদের আলোকে মুনির ও নূর বলা হয়। কাজেই একথা স্পষ্ট
যে কুরআনে চাঁদের আলোকে এবং সূর্যের আলোকে আলাদা ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাই সূর্যের
আলো হলো তার নিজের আলো এবং নুর ও মুনির মানে প্রতিফলিত আলো।
আপাত মুসলমানদের দাবীকে
সত্যি বলে মনে হবে কিন্তু এতেও ফাঁকি রয়েছে। কারণ আরবরা দুই রকম আলোর কথা বলে থাকে। একপ্রকার আলো হলো
যা দহনের ফলে উৎপন্ন হয়; যেমন- প্রদীপের আলো
যেটা পোড়ানোর মাধ্যমে তৈরী হয় এবং অন্যপ্রকার আলো হলো যা দহনের মাধ্যমে তৈরী হয়
না। যেমন- রেডিয়াম বা তেজস্ক্রিয়
পদার্থ থেকে যে আলো বের হয়। অর্থাৎ মুনির এবং নুর হলো এমন আলো যা কোন কিছু পোড়ানোর
মাধ্যমে তৈরী হয় না অর্থাৎ আগুনের মাধ্যমে তৈরী হয় না কিন্তু তা এমনিতেই আলো দিতে
থাকে। যেমন রুপকথার গল্পগুলোতে
এমন হিরে মানিকের বর্ননা পাওয়া যায় যা থেকে আলো বের হয় কোন প্রকার দহন ছাড়াই। সেই আলোকেই মুনির
বা নুর বলা হয়েছে।
আর তাই কুরআনে সূর্যের
আলোকে দিয়া বা উজ্জল আলো এবং চাঁদের আলোকে নূর বা মুনির অর্থাৎ আলো বা সিগ্ধ আলো
বলা হয়েছে।
মুহাম্মদ মনে করেছিল
সূর্যের আলোটা প্রদীপের আলোর মতো। কারণ সে জানতো সূর্যের আলোতে তাপও আসে যেমনটা প্রদীপের আলো
থেকে তাপ পাওয়া যায়। আর তাই সে সূর্যের আলোকে উজ্জল আলো এবং চাঁদের আলোকে স্নিগ্ধ আলো বলেছে। কারণ চাঁদের আলো থেকে
তাপ আসে না। বরং চাঁদের আলোটা অনেক হালকা আলো। এজন্যই চাঁদের আলোকে নুর বা মুনির বলা হয়েছে কুরআনে। কিন্তু সূর্যকে সিরাজ
বা একটা প্রদীপ, ওয়াহাজ বা একটা প্রজ্জলিত প্রদীপ, অথবা দিয়া বা উজ্জল দ্যুতি বলা হয়েছে।
আগের দিনে মানুষ ভাবতো
চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। কিন্তু চাঁদের আলোটা সূর্যের আলোর মত নয়। সূর্যের আলো অনেক
তীব্র, ফলে তারা ধরে নিয়েছিল যে সূর্য একটা প্রদীপ
যে জ্বলতে থাকে এবং এর ফলে সে আলো প্রদান করে । কিন্তু চাঁদের আলো অনেক হালকা এবং আরামদায়ক
হওয়ায় তারা ভাবতো চাঁদ জ্বলতে থাকে না কিন্তু এটি আলো দিতে পারে। তাই কুরআনে এভাবে বলা হয়েছে।
একই কারণে সূরা নুহ্-এর ১৬ নাম্বার আয়াতের চাঁদকে আলো বলা হয়েছে এবং সূর্যকে প্রদীপ।
সূরা নুহ্-এর ১৬ নাম্বার আয়াতের অনুবাদগুলো হলো,
"এবং সেখানে চাঁদকে
আলো ও সূর্যকে প্রদীপরুপে স্থাপন করেছেন," (অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর
রহমান)
"আর তাদের মধ্যে
তিনি চন্দ্রকে করেছেন একটি আলোক আর সূর্যকে বানিয়েছেন একটি প্রদীপ।" (অনুবাদ- ডঃ জহুরুল হক)
"এবং সেখানে
চন্দ্রকে স্থাপন করিয়াছেন আলোরুপে ও সূর্যকে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপরুপে;"
"And made the moon a
light in their midst, and made the sun as a (Glorios) Lamp ;"
(অনুবাদ- Ministry of Religious Affairs of Bangladesh)
"And made the moon a light in their midst, and made
the sun as a [Glorious] Lamp," (অনুবাদ- Abdullah Yusuf Ali)
"And hath made the moon a light therein, and made
the sun a lamp," (অনুবাদ- Mohammad Marmaduke Pickthal)
দেখাই যাচ্ছে মুসলমানদের
মিথ্যে দাবী কতটা ভিত্তিহীন।
নুর মানে যে প্রতিফলিত
আলো নয় সেটা বুঝা যায় সূরা আহযাব-এর ৪৬ নাম্বার আয়াত এবং সূরা নূর-এর ৩৫ নাম্বার আয়াত
দেখলে। সূরা আহযাব-এর ৪৬ নাম্বার
আয়াতে বলা হয়েছে মুহাম্মদ হলো প্রদীপ। কিন্তু সূরা নূর-এর ৩৫ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ হলো
নূর। যদি নূর মানে প্রতিফলিত
আলো হয় তবে আল্লাহ হবে প্রতিফলিত আলো এবং মুহাম্মদ হবে প্রদীপ। অর্থাৎ মুহাম্মদ হবে
আলোর উৎস এবং আল্লাহ হবে তার আলো। অর্থাৎ এভাবে মুহাম্মদ হলো প্রধান এবং আল্লাহ হলো মুহাম্মদ
থেকে উৎপন্ন হওয়া। (মুসলমান বাদে সারা পৃথিবীর মানুষ অবশ্য এটাকেই সত্য বলে মনে করে।)
সূরা আহযাব,
আয়াত ৪৫ ও ৪৬
"হে নবী! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরুপে এবং সুসংবাদদাতা ও
সতর্ককারীরুপে।"
"আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারী রুপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ রুপে।"
অর্থাৎ মুহাম্মদ হলো
প্রদীপ।
আবার সূরা নূর-এর ৩৫ নাম্বার আয়াতে আছে
"আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর (আলোকিতকারী) জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির
উপমা (মুমিনদের অন্তরে) যেন একটি দীপাধার (তাক), যার মধ্যে আছে এক প্রদীপ, প্রদীপটি একটি
কাঁচের আভরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আভরণটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ; এটা প্রজ্বলিত করা
হয় বরকতময় যয়তুন বৃক্ষের তৈল দ্বারা যা পূর্বেরও নয়, পশ্চিমও নয়, (বরং উভয়ের
মধ্যবর্তী) অগ্নি ওকে স্পর্শ না করলেও যেন ওর তৈল উজ্জ্বল আলো জ্যোতির উপর
জ্যোতি! আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ নির্দেশ করেন তাঁর জ্যোতির দিকে; আল্লাহ মানুষের
জন্যে উপমা দিয়ে থাকেন আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।"
এই আয়াতটিতে বলা হয়েছে
যে, আল্লাহ হলো আলো বা নূর। সে এমন একটা আলো যার
সাথে তুলনা করা যায় এমন একটি প্রদীপ রাখার পাত্রের যার নিচের তেল থেকেও আলো বের হয়, একে ঢেকে রাখা কাঁচ থেকেও আলো বের হয় এবং প্রদীপের অগ্নিশীখা
থেকেও আরো বের হয়। অর্থাৎ আল্লাহ এমন একটা নূর বা আলো যার সব জায়গা থেকেই আলো নির্গত হয়।
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে
যে, আল্লাহকে নূর বলা হয়েছে এবং সেই নূর বা আলোটা
তার নিজস্ব আলো।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে
নূর মানে হলো আলো এবং কুরআন চাঁদের নিজের আলো প্রদানের কথাই বলেছে। অর্থাৎ কুরআন চাঁদের
নিজের আলোর কথা বলেছে যা অবৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবতার সাথে মিল নেই। অর্থাৎ কুরআন চাঁদের
আলো সম্পর্কে মিথ্যে কথা বলেছে। তাই কুরআন মিথ্যে এবং কুরআন লিখেছে মুহাম্মদের মতো কোন সাধারণ
মানুষ।
মুসলমানরা তাই কুরআনের
১৪০০ বছর ধরে চলে আসা অর্থকে পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ করেছে। এর কারণ আর কিছুই নয়। মানুষের তৈরী মিথ্যে
ও ভুলে ভরা কুরআনকে সুষ্টিকর্তার বানী বলে সবার কাছে তুলে ধরা।
কুরআনকে বাঁচাতে এবং
মানুষের তৈরী মিথ্যে ধর্মকে বাঁচাতেই মুসলমানরা ১৪০০ বছর ধরে চলে আসা কুরআনের অর্থকে
পরিবর্তন করে দিয়ে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বানানোর চেষ্টা করেছে।
কুরআনকে এবং ধর্মকে
বাঁচাতেই মুসলমানরা ১৪০০ বছর পরে এসে কুরআনের ১৪০০ বছর ধরে চলে আসা অর্থের পরিবর্তন
করেছে।
বি.দ্র.: কোন একটি
শব্দের একাধিক (১০টা, ৫০টা বা ১০০টা) অর্থ
থাকতে পারে। কিন্তু যখন কোন বাক্যে কোন একটি শব্দ ব্যবহৃত হবে তখন ওই বাক্যে ওই শব্দটি শুধু
মাত্র একটি নির্দিষ্ট অর্থই বহন করবে। যদি সেই শব্দটির সেই নির্দিষ্ট অর্থকে পরিবর্তন করে ভিন্ন অর্থ
আনা হয় তবে সম্পূর্ন বাক্যটির অর্থই বদলে যাবে। কিন্তু সেটা আর বাক্যের প্রকৃত অর্থ বহন করবে
না। ফলে অনেক আগের বাক্যের
কোন শব্দের নতুন অর্থ দিয়ে সেই বাক্যটির অর্থ করাটা হবে বোকামী এবং এটি মূল বাক্য
থেকে বিকৃত হয়ে যাবে সম্পূর্ন ভাবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “কত মহান তিনি যিনি আকাশে সৃষ্টি করেছেন বড় বড় তারকাপুঞ্জ এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ (সূর্য) ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র”
ReplyDelete📖
সূরাহ ফুরক্বনঃ ৬১।
📖
➡
আল্লাহ তা‘আলা বিজ্ঞানময় কুরআনে চন্দ্র এবং সূর্যকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন এবং দু’টিরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্টের বর্ণনা দিয়েছেন। যার বাস্তব রহস্য তথ্য গত কয়েক বছর আগেও মানুষের জানা ছিল না।
আমরা জানি সূর্যের নিজস্ব আলো আছে, কিন্তু চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। সূর্যের আলো চাঁদে প্রতিফলিত হয় মাত্র। সূর্যের আভ্যন্তরীণ দহন ক্রিয়ার দরুন তার মধ্যে তীব্র উত্তাপ ও আলো উৎপন্ন হয়ে থাকে। আর চন্দ্রের আলো উৎপাদনের কোন ক্ষমতা নেই বরং সূর্য থেকে যে আলো পায় তাই প্রতিফলন করে মাত্র।
মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ উপরোক্ত আয়াতসহ কুরআনের আরও বিভিন্ন জায়গায় সূর্যকে জলন্ত প্রদীপ বলে উল্লেখ করেছেন যেখানে আগুন রয়েছে। আর বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান সূর্য সম্বন্ধে যে তথ্য দিয়েছে তাতে আল-কুরআনের উল্লিখিত প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট প্রযোজ্য। যা তার নিজস্ব জ্যোতি দ্বারা প্রজ্জ্বলিত।
আর চাঁদকে আল্লাহ তা‘আলা জ্যোতির্ময় এবং নূর অর্থাৎ শুধু আলো বলে উল্লেখ করেছেন। আর আধুনিক বিজ্ঞান চন্দ্র সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছে তাতেও উল্লিখিত বৈশিষ্টগুলো বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য। যার নিজস্ব কোন আলো নেই, বরং তাতে যে আলো পরিলিক্ষিত হয় তা সূর্যেরই প্রতিচ্ছবি।
সূর্য একটি তেজস্কর আভা (দিইয়া) এবং চন্দ্র একটি আলোক (নূর) । এ অনুবাদই অধিক নির্ভুল মনে হয়। অনেকে অন্যভাবে যে অনুবাদ করে থাকেন, সেখাএন দুটি শব্দ প্রায় একই অর্থ বহন করে থাকে। ‘দিইয়া’ শব্দটি স্ব ধাতু থেকে এসেছে। কাজী মিরস্কি রচিত আরবী-ফরাসি অভিধানে তাঁর অর্থ বলা হয়েছে ‘উজ্জ্বল হওয়া’ ‘আলোকিত হওয়া’ (আগুনের মত) । অবশ্য ‘আলোক’ শব্দটিও ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে অর্থের দিক থেকে সূর্য ও চন্দ্রের প্রকৃতিগত পার্থক্য তেমন বড় হয়ে ধরা পড়ে না। তবে এ পার্থক্য নির্ণয়ের জন্য আমরা মূল কুরানেরই সাহায্য নিতে পারি।
ReplyDeleteসূরা ২৫ (ফুরকান) আয়াত ৬১:”কত মহান তিনি যিনি নভোমন্ডল সৃষ্টি করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন সূর্য ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।”
সূরা ৭১ (নূহ) আয়াত ১৫-১৬:”তোমরা কি লক্ষ্য কর নাই আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টি করিয়াছেন সপ্ত স্তরে বিন্যস্ত আকাশমন্ডলী, এবং সেথায় চন্দ্রকে স্থাপন করিয়াছেন আলোকরূপে ও সূর্যকে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপরূপে?”
সূরা ৭৮ (নাবা) আয়াত ১২-১৩:”আমি তোমাদিগের উর্ধদেশে সুস্থিত সপ্ত আকাশ নির্মাণ করিয়াছি, এবং প্রোজ্জল দীপ সৃষ্টি করিয়াছি।”
প্রোজ্জল দীপ বলতে স্পষ্টতই সূর্য বুঝানো হয়েছে। আর চন্দ্রকে বলা হয়েছে এমন একটি জ্যোতিষ্ক যে আলোক দেয় (মুনির) । মুনির শব্দটি এসেছে ‘নূর’ ধাতু থেকে। তাহলে অর্হ দাড়াচ্ছে, যে আলো (নূর) চন্দ্রের (মুনির) ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। সূর্যকে অবশ্য প্রদীপ (সিরাজ) বা প্রোজ্জল (ওয়াহহাজ) দীপের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
মুহাম্মদের (সঃ) আমলের যে কোন মানুষের পক্ষে এ পার্থক্য উপলব্ধি করা খুবই সহজ ছিল। কারণ মরুভূমির বাসিন্দাদের কাছে সূর্যের তেজস্কর প্রোজ্জল রূপ এবং চন্দ্রের শীতল আলোক খুবই পরিচিত ছিল। সুতরাং কুরআনে এ দুটি জ্যোতিষ্ক বুঝানোর জন্য যে তুলনা ব্যবহার করা হয়েছে তা খুবই স্বাভাবিক হয়েছে। তবে লক্ষণীয় যে, এ তুলনায় এমন কিছু ব্যবহার করা হয়নি, যা তৎকালে ছিল কিন্তু এখন নেই। ফলে ব্যাপারটি উপলব্ধি করতে এতদিন পরে আমাদেরও কোন অসুবিধা হচ্ছে না।
আমরা জানি যে, সূর্য এমন একটি নক্ষত্র যা আন্তরিকভাবে জেওলন্ত হয়রা ফলে তাপ ও আলো বিকিরণ করে থাকে। পক্ষান্তরে চন্দ্র নিজস্ব কোন আলো দেয় না, বরং একটি অসাড় বস্তু হিসেবে (অন্তত বাইরের আবরণের দিক থেকে) সূর্য থেকে পাওয়া আলো প্রতিফলন করে মাত্র।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, বিজ্ঞানের মারফত আমরা এখন সূর্য ও চন্দ্র সম্পর্কে না জানি, কুরানে তাঁর বিপরীত কোন কথা নেই।