আল মুরআল
সুরা অন্ধবিশ্বাসী, আয়াত ৫৮৭ ও ৫৮৮
"তারা কি কখনও ভেবে দেখেছে, তাদের উপরের তাঁরকারাজির ব্যপারে ? তারা ভাবে ওগুলো আকাশের সুন্দর্যের জন্য তৈরী করা হয়েছে। তারা ভাবে ওগুলো আলোর চিহ্ন, ভাবে পথ প্রদর্শক । কিন্তু তারা চিন্তাও করতে পারেনি ওগুলোকে আমি কি বানিয়েছি ! বরং তারা তাদের কাল্পনিক
ধারণা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে।"
"তারা ভাবে তাদের বিশ্বাসই সবচে সত্যি, কিন্তু যদি তারা জানতো বিশ্বাস সত্যের কাছে কতটা অসহায় ! আমি কি যুগে
যুগে বহু বিশ্বাসকে মিথ্যে প্রমাণ করে দেয়নি ? তথাপি তারা তাদের অন্ধবিশ্বাস নিয়ে গর্ব করে। বিশ্বজগতের বিশালতা সম্পর্কে তারা কি ভেবেছে কখনও? অবশ্যই এতে কুসংস্কারাচ্ছন্ন গোঁড়া ব্যক্তিদের জন্য নিদর্শন রয়েছে!"
ব্যাখ্যাঃ অন্ধবিশ্বাসী
এবং কুসংস্কারাচ্ছন্নরা ভাবে তাঁরকাগুলোর কাজ আকাশের সুন্দর্য বর্ধন এবং মানুষের পথ
দেখানো ও শয়তানদের শাস্তি দেবার উপকরণ। কিন্তু তাঁরকাগুলো
কি, বা ওগুলো কেমন সেটা
তারা জানে না। কেউ ভাবতেই পারেনি একেকটা তারকা কত বিশাল আকুতির। মানুষ ভেবেছে বা কল্পনা করেছে ছোট ছোট দেখতে মিটিমিটি তারকাগুলোর কাজ আকাশের
সুন্দর্য রক্ষা করা। মানুষ ভেবেছে ও বিশ্বাস করে এসেছে তারকাগুলোর কাজ শুধু মানুষের
চলার পথ দেখানো এবং শয়তানদেরকে (একটি কাল্পনিক বা রুপকথার গল্পের কাল্পনিক চরিত্র)
শাস্তি দেবার জন্য আগুনের গোলা। কিন্তু একটা তারকার
আয়তন কত বড় সেটা মানুষের কল্পনাতেও আসেনি।
বাস্তবতা হলো এক একটা তারকার আয়তন লক্ষ লক্ষ পৃথিবীর আয়তনের চেয়েও বড়। তাই প্রাচীণ মানুষ ধারনা করেছে বা কল্পনা করে নিয়েছে যে তারকাগুলোর কাজ সুন্দর্য রক্ষা বা পথ প্রদর্শন করা। কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষগুলো কল্পনা করে নিয়েছে যে, তাঁরাগুলোর কাজ শয়তানদেরকে শাস্তি দেওয়া।
বাস্তবতা হলো এক একটা তারকার আয়তন লক্ষ লক্ষ পৃথিবীর আয়তনের চেয়েও বড়। তাই প্রাচীণ মানুষ ধারনা করেছে বা কল্পনা করে নিয়েছে যে তারকাগুলোর কাজ সুন্দর্য রক্ষা বা পথ প্রদর্শন করা। কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষগুলো কল্পনা করে নিয়েছে যে, তাঁরাগুলোর কাজ শয়তানদেরকে শাস্তি দেওয়া।
কিন্তু বাস্তবতা আসলে
এই ভ্রান্ত ধারনাগুলোর সাথে সম্পূর্ন ভিন্ন। প্রত্যেকটি তারকাই আসলে একেকটি বড় সূর্য। তাই এগুলো কখনই সুন্দর্য রক্ষা বা পথ প্রদর্শন অথবা শয়তানদেরকে শাস্তি দেবার জন্য বানানো হয়নি।
কিন্তু অন্ধবিশ্বাসী
ও কুসংস্কারাচ্ছন্নরা তাদের ভ্রান্ত ধারনা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চায় এবং থাকে। তারা ভাবে তাদের অন্ধবিশ্বাসই সত্যি। তারা তাদের অন্ধবিশ্বাসকে
সব চেয়ে বড় সত্যি মনে করে। তারা ধরেই নেয় তাদের
অন্ধবিশ্বাসগুলোই একমাত্র সত্য । ফলে তারা সত্য অনুসন্ধান
করে না এবং তাদের অজ্ঞতা ও অন্ধবিশ্বাস নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। তারা ভাবে তারা সত্যিটা জেনে গেছে, তাই তাদের আর সত্য অনুসন্ধান করার প্রয়োজন নেই। আর তাই তারা গোঁড়ামীপূর্ণ থেকে যায় এবং অন্ধবিশ্বাস নিয়ে কুসংস্কারাচ্ছন্নই থেকে
যায়। কিন্তু সেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন বা অন্ধবিশ্বাসীরা কখনই ভাবতেও
পারেনি যে এই বিশ্বজগত এতো বিশাল এবং তারকাগুলো কত বড় ও কত গুরুত্বপুর্ণ !
কিন্তু বাস্তব পৃথিবীতে
অনেক কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এবং অনেক অন্ধবিশ্বাস মিথ্যে প্রমাণ হচ্ছে।
বিশ্বজগত সম্পর্কে
কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসী মানুষদের ভ্রান্ত ধারনগুলো মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু তবুও তারা তাদের অন্ধবিশ্বাস নিয়ে যুগে যুগে সন্তুষ্ট থেকেছে ও অহংকার করেছে
এবং তারা এখনও সন্তুষ্ট থাকে ও অহংকার করে। ফলে তারা সব সময় কুসংস্কারাচ্ছন্ন
ও অন্ধবিশ্বাসী থেকে বিশ্বজগত সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারনা নিয়ে বেঁচে থাকে।
কিন্তু তবুও কিছু মুক্ত
চিন্তার মানুষ বিশ্বজগতের রহস্য সম্পর্কে অনুসন্ধান করেছে এবং এর রহস্য উদঘাটন করেছে। ফলে বিশ্বজগত সম্পর্কে মানুষ সত্য জানতে পেরেছে। মানুষ এখন জানে অন্ধবিশ্বাসীরা কতটা ভ্রান্তির ভিতরে থেকেছে যুগ যুগ ধরে।
এগুলো থেকে অন্ধবিশ্বাসীরা
শিক্ষা নিতে পারে। তাদের অন্ধবিশ্বাস তাদের জন্য অজ্ঞতাই বয়ে নিয়ে আসে । সৃষ্টিকর্তা এই আয়াতে এই কথাটিই বলেছে।
যারা তাদের অন্ধবিশ্বাস
ও কুসংস্কারগুলো নিয়ে অহংকার করেছে তাদের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারগুলো মানুষকে শুধু
অজ্ঞতা এবং ভ্রান্তিতেই রেখেছে যুগ যুগ ধরে। তাদের অন্ধবিশ্বাস
ও অজ্ঞতাগুলো
মানুষকে সত্য উদঘাটন থেকে বিরত রেখেছে। আর তাই যে জাতি যত
বেশী অন্ধবিশ্বাসী সে জাতি তত বেশী অজ্ঞতাসম্পন্ন, অনুন্নত এবং পশ্চাতপদ।
অনুসন্ধানী এবং জ্ঞানী
মানুষদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমেই অন্ধবিশ্বাসীদের অজ্ঞতা ও ভ্রান্তি দূর হয়েছে।
এগুলোতে অন্ধবিশ্বাসী
ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।
সৃষ্টিকর্তা এই আয়াতটির
মাধ্যমে অন্ধবিশ্বাস এবং বাস্তবতার মধ্যে পার্থক্যকেই নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
No comments:
Post a Comment