জাকির নায়েক একজন বিখ্যাত ইসলামিক বক্তা। তিনি অনেক দেশে জনপ্রিয় বক্তা। তার কথা এবং বক্তব্যের ধরন মানুষকে আকৃষ্ট করে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় তিনি তার বক্তব্যে অনেক মিথ্যে কথা বলেন এবং কু-যুক্তি
ও গোঁজামিল দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করেন। তার মিথ্যেবাদিতা অনেকে ধরিয়ে দিয়েছে এবং আমিও আগের পর্বগুলোতে তার কিছু মিথ্যেবাদিতা
এবং প্রতারনা ধরিয়ে দিয়েছি। এই পর্বেও তার একটি
মিথ্যেবাদিতা এবং প্রতারণা ধরিয়ে দেব বা প্রমাণ করবো।
জাকির নায়েক তার 'কুরান ও আধুনিক বিজ্ঞান- বিরোধ নাকি সাদৃশ্য’
লেকচারে চাঁদ ও সূর্যের আলোর ব্যাপারে নিম্নুক্ত কথাগুলো বলেছেন।
জাকির নায়েকের বক্তব্যটি ছিল-
"আগে আমরা মনে করতাম যে, চাঁদের আলোটা তার নিজস্ব আলো। কিছু দিন আগে আমরা
জানতে পেরেছি যে, চাঁদের আলো আসলে সূর্যের আলোর প্রতিফলিত
আলো। পবিত্র কুরআনের সূরা ফুরকানের ৬১ নাম্বার
আয়াতে উল্লেখ করা আছে যে,
"কত মহান তিনি, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ এবং
চাঁদ যাহার রহিয়াছে ঋন করা আলো।"
পবিত্র কুরআনে সূরা ইউনুসের ৫ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ করা আছে
যে,
“আল্লাহ সুবাহানুতালাই
এই সূর্যকে করেছেন তেজস্বক ও চন্দ্রকে করিয়াছেন প্রতিবিম্বিত আলো।“
একই কথা পবিত্র কুরআনের সূরা নূহের ১৫ ও ১৬ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ
করা আছে যে,
সূর্যের আরবি শব্দ হল সামস্ এটাকে সব সময় বলা হয়ে থাকে সিরাজ
অর্থাৎ একটা প্রদীপ, নয়তো ওয়াহাজ একটা প্রজ্জলিত প্রদীপ, অথবা দিয়া অর্থাৎ উজ্জল দ্যুতি। চাঁদের আরবী শব্দ হলো
কামার, এটাকে সব সময় বলা হয় মুনির অর্থাৎ ধার করা আলো, অথবা নূর যেটা হল প্রতিফলিত আলো। চাঁদ বুঝাতে গিয়ে কখনই
বলা হয়নি যে, সিরাজ, ওয়াহাজ অথবা দিয়া। বলা হয়েছে মুনির বা নূর অর্থাৎ ধার করা আলো, অথবা কোন প্রতিফলিত আলো।
পবিত্র কুরআনের সূরা তারিখের ৩ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ করা আছে
যে,
আন্নাজ মুসাফির, এখানে নক্ষত্র এর আরবী
হল নাজাম, এটাকে বলা হয়েছে সাকিব, এর আলোকে বলা হয়েছে সাকিব। এটা অন্ধকারকে ছিদ্র
করে আর নিজের শক্তি গ্রহণ করে। “
এটাই ছিল জাকির নায়েকের চাঁদ ও সূর্যের আলো সম্পর্কিত বক্তৃতার
অংশ। এখন আমরা দেখাবো জাকির নায়েক কি কি মিথ্যে
কথা বলেছে আর কি কি প্রতারনামূলক কথা বলেছে।
জাকির নায়েক যেসব আয়াতের উল্লেখ করেছে সেই আয়াতগুলোর আসল অনুবাদ
লক্ষ করি,
সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ৬১
"কল্যাণকর তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র।"
এই আয়াতের কোথাও বলা হয়নি চাঁদের ঋণ করা আলোর কথা। বরং বলা হয়েছে দীপ্তিমান চাঁদের কথা অর্থাৎ চাঁদের নিজের আলো
আছে।
কিন্তু জাকির নায়েক দাবী করেছে যে, এখানে চাঁদের ঋন করা আলোর কথা বলা হয়েছে। অনুবাদ দেখে বুঝাই যাচ্ছে সব সময়ের মত জাকির নায়েক মিথ্যে কথা বলছে।
জাকির নায়েক যে মিথ্যে বলেছে সেটা সূরা ফুরকানের ওই আয়াতের অন্যান্য
অনুবাদ দেখলেই স্পষ্ট হওয়া যাবে।
সূরা ফুরকান, আয়াত ৬১
"কত মহান তিনি যিনি আকাশে সৃষ্টি করেছেন বড়
বড় তারকাপুঞ্জ এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ (সূর্য) ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র !" (অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ
মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান)
"কত মহান সেই সত্তা, যিনি আসমানে অসংখ্য্ গম্বুজ বানিয়েছেন, এরই মাঝে তিনি (আবার) পয়দা করেছেন প্রদীপ
(সম একটি সূর্য) এবং একটি জ্যোতির্ময় চাঁদ।" (অনুবাদ- হাফেজ মুনির
উদ্দীন আহমদ)
"মহামহিম তিনি যিনি
মহাকাশে তারকারাজি সৃষ্টি করেছেন, আর তাতে বানিয়েছেন এক প্রদীপ ও এক চন্দ্র- দীপ্তিদায়ক।" (অনুবাদ- ডঃ জহুরুল হক)
"কত মহান তিনি যিনি
নভোমন্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপ ও জ্যোতির্ময়
চন্দ্র।"
"Blessed is He Who made
constellation in the skies, and placed therein a Lamp and a Moon giving
light;"
(অনুবাদ- Ministry of Religious Affairs of Bangladesh)
"Blessed is He Who made
constellations in the skies, and placed therein a Lamp and a Moon giving
light;" (অনুবাদ- Abdullah Yusuf Ali)
"Blessed be He Who hath
placed in the heaven mansions of the stars, and hath placed therein a great
lamp and a moon giving light!" (অনুবাদ- Mohammad Marmaduke Pickthal)
"Blessed is He Who has
placed in the sky great stars and placed therein a (burning) lamp and luminous
moon." (অনুবাদ- Saheeh International)
সুতরাং দেখা যাচ্ছে উপরে উল্লেখিত কোন অনুবাদেই বলা হয়নি যে
চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো। বরং সব অনুবাদেরই বলা হয়েছে চাঁদ আলো দেয় বা চাঁদের নিজস্ব
আলো আছে।
বুঝাই যাচ্ছে সব সময়ের মতো জাকির নায়েক মিথ্যে কথা বলছে। কুরআনের সূরা ফুরকানের ৬১ নাম্বার আয়াতের কোথাও বলা হয়নি চাঁদের
আলোটা প্রতিফলিত আলো; বরং সব জায়গায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে চাঁদের আলোটা তার নিজস্ব
আলো। সব অনুবাদেই বলা হয়েছে চাঁদ জ্যোতির্ময় বা
আলো প্রদানকারী।
অর্থাৎ জাকির নায়েক মিথ্যে কথা বলে এবং কুরআনের আয়াতের অর্থ
পরিবর্তন করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে। যেটা তিনি সব সময়ই করে থাকেন।
এছাড়াও জাকির নায়েক সুরা ইউনুসের ৫ নাম্বার আয়াতটি উল্লেখ করেছেন।
আয়াতটি হলো,
"তিনিই সে সত্তা,
যিনি বানিয়েছেন সূর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ
আলো বিতরণকারীরুপে...."
এই আয়াতটির অন্যান্য অনুবাদগুলো হল,
সুরা ইউনুস, আয়াত ৫
"তিনি (আল্লাহ),
যিনি সূর্যকে দীপ্তিমান এবং চন্দ্রকে আলোকময় বানিয়েছেন...."
(অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান)
"মহান আল্লাহ তায়ালা যিনি সূর্যকে (প্রখর) তেজোদ্দীপ্ত বানিয়েছেন এবং চাঁদকে (বানিয়েছেন)
জ্যোতির্ময়,..."
(অনুবাদ- হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
"তিনিই তো সূর্যকে করেছেন তেজস্কর, আর চন্দ্রকে জ্যোতির্ময়,..." (অনুবাদ- ডঃ জহুরুল হক)
"তিনিই সূর্যকে তেজস্কর
ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করিয়াছেন...."
"It is He Who made the
sun to be a shining glory and the moon to be a light (of beauty),...."
(অনুবাদ- Ministry of Religious Affairs of Bangladesh)
It is He Who made the sun to
be a shining glory and the moon to be a light
[of beauty], (অনুবাদ- Abdullah Yusuf Ali)
He it is Who appointed the sun a splendour and the
moon a light, (অনুবাদ- Mohammad Marmaduke Pickthal)
দেখা যাচ্ছে এই আয়াতটিতেও কোথাও চাঁদের প্রতিফলিত আলোর কথা
বলা হয়নি। কিন্তু জাকির নায়েক দাবী করেছে যে এই আয়াতটিতে
প্রতিফলিত আলোর কথা বলা হয়েছে । এমনকি সে এই আয়াতের
অর্থ পরিবর্তন করে নিজের মত করে অর্থ করেছে।
অর্থাৎ জাকির নায়েক কুরআন বিকৃত করে মানুষকে বোকা বানিয়েছে। অর্থাৎ মিথ্যে বলে মানুষের কাছে প্রতারণা করেছে।
এছাড়া জাকির নায়েক সূরা নূহ-এর ১৫ ও ১৬ নাম্বার আয়াতের কথা উল্লেখ
করেছে। ১৬ নাম্বার আয়াতটি হল,
"এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরুপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরুপে।"
অর্থাৎ এই আয়াতটিতেও চাঁদকে বলা হয়েছে এর নিজস্ব আলো আছে।
সূরা নুহ্-এর ১৬ নাম্বার আয়াতের অন্যান্য অনুবাদগুলো হলো,
"এবং সেখানে চাঁদকে আলো ও সূর্যকে প্রদীপরুপে স্থাপন করেছেন," (অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান)
"আর তাদের মধ্যে তিনি চন্দ্রকে করেছেন একটি আলোক আর সূর্যকে বানিয়েছেন একটি প্রদীপ।" (অনুবাদ- ডঃ জহুরুল হক)
"এবং সেখানে চন্দ্রকে স্থাপন করিয়াছেন আলোরুপে ও সূর্যকে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপরুপে;"
"And
made the moon a light in their midst, and made the sun as a (Glorios) Lamp
;"
(অনুবাদ- Ministry of Religious Affairs of Bangladesh)
"And made the moon a
light in their midst, and made the sun as a [Glorious] Lamp," (অনুবাদ- Abdullah Yusuf Ali)
"And hath made the moon
a light therein, and made the sun a lamp," (অনুবাদ- Mohammad Marmaduke Pickthal)
এই আয়াতটিরও অনুবাদগুলোতে দেখা যাচ্ছে কোথাও বলা হয়নি যে,
চাঁদের আলোটা প্রতিফলিত আলো। বরং সব জায়গায় বলা হয়েছে চাঁদ নিজেই একটি আলো। অর্থাৎ চাঁদ আলো কিন্তু সূর্য প্রদীপ। সূর্য প্রদীপের মতো
আলো দেয় কিন্তু চাঁদ প্রদীপ নয় কিন্তু এটিও আলো দেয়।
দেখাই যাচ্ছে জাকির নায়েক কুরআনের অর্থ নিজের মত করে পরিবর্তন
করে নতুন করে অর্থ করেছে এবং তার নিজের করা অর্থ দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, চাদের আলোটা প্রতিফলিত আলো।
কিন্তু তার বর্ণিত আয়াতগুলোতে কোথাও চাঁদকে প্রতিফলিত আলো
বলা হয়নি। সব জায়গায় বলা হয়েছে চাঁদ হচ্ছে জ্যোতির্ময়
অর্থাৎ আলো প্রদানকারী। আর সূর্য হচ্ছে প্রদীপ। অর্থাৎ সূর্যকে প্রদীপ বলা হয়েছে যেটা জ্বলতে থাকে আর চাঁদেকে
আলো বলা হয়েছে অর্থাৎ চাঁদের নিজস্ব আলো আছে কিন্তু সেই আলোটা প্রদীপের মত নয়। অর্থাৎ চাঁদ এমন একটি আলো যার আলোটা প্রদীপের মত জ্বলতে থাকে
না কিন্তু এর মধ্য থেকে আরো বের হয় (অনেকটা রেডিয়ামের মত)।
কিন্তু জাকির নায়েক কুরআনকে বিজ্ঞানময় প্রমান করতে যেয়ে কুরআনের
অর্থকে পরিবর্তন করেছে এবং তার মত করে নতুন অর্থ করে কুরআনকে বিকৃত করে ফেলেছে। এবং সে দেখাতে চেয়েছে কুরআন মানুষের আধুনিক বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক
আবিষ্কারের সাথে মিলে যায়।
কিন্তু সে কুরআনের অর্থের এই পরিবর্তনটা করেছে আবিষ্কার হয়ে
যাবার পরে যে চাঁদের নিজের কোন আলো নেই চাঁদ সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে বলে মনে
হয় চাদেরও নিজস্ব আলো আছে।
কুরআনের আয়াতের এই পরিবর্তনটা কিন্তু বিজ্ঞানের এই আবিষ্কারের
পূর্বে করা হয়নি । কারণ তখন কেউ জানতো
না যে চাঁদ আসলে নিজে আলো দেয় না শুধু সূর্যের আলো প্রতিফলন করে।
যখন মানুষ যেনে গেল যে চাঁদের আলোটা আসলে সূর্যের আলোর প্রতিফলিত
আলো তখন জাকির নায়েক কুরআনের অর্থ পরিবর্তন করে নতুন ভাবে অর্থ করলো যে চাঁদের আলোটা
ধার করা বা প্রতিফলিত আলো।
কিন্তু এর আগে কুরআনের ওই আয়াতগুলোর অর্থ করা হয়েছে যে চাঁদের
নিজস্ব আলো আছে। আর তাই উপরিউক্ত কোন
অনুবাদেই চাঁদের আলোকে প্রতিফলিত আলো বলা হয়নি। বরং সব জায়গায় বলা হয়েছে চাঁদ জ্যোতির্ময় বা আলো প্রদানকারী।
এখানে একটা ব্যাপার উল্লেখ করা খুব জরুরী যে, আগের দিনে মানুষ ভাবতো চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। কিন্তু চাঁদের আলোটা সূর্যের আলোর মত নয়। সূর্যের আলো অনেক তীব্র, ফলে তারা ধরে নিয়েছিল যে সূর্য একটা প্রদীপ
যে জ্বলতে থাকে এবং এর ফলে সে আলো প্রদান করে । কিন্তু চাঁদের আলো অনেক হালকা এবং আরামদায়ক হওয়ায় তারা ভাবতো চাঁদ জ্বলতে থাকে
না কিন্তু এটি আলো দিতে পারে।
কুরআনে চাঁদের আলোকে নুর বলা হয়েছে; আর নুর মানে আলো। এই আলোটা এমন আলো
যে কোন বস্তু থেকে নির্গত হয় কিন্তু সেটা জ্বলে না বা পুড়ে যায় না। যেমন রুপকথার কাহিনীতে কল্পনা করা হতো হিরে-মানিক থেকে আলো নির্গত হয়। নুরের আলোটা ঠিক সেরকম
আলো।
আর তাই আরবীতে নুরের আলো এবং প্রদীপের আলোর পার্থক্য করা হয়।
চাঁদের আলোকে আরবীতে বলা হয় নুর এবং এর অর্থ হলো আলো। কুরআনে চাঁদকে নুর বলা হয়েছে অর্থাৎ আলো বলা হয়েছে। উইকিপেডিয়াতে নুর এর অর্থ দেয়া হয়েছে আলো। জাকির নায়েক যেভাবে নুর অর্থ প্রতিফলিত আলো বলে দাবী করেছে কিন্তু কোথাও নুর
মানে প্রতিফলিত আলো এই কথাটি বলা নেই ।
সব জায়গায় নুর মানে আলোকে বুঝানো হয়েছে।
মুনির অর্থ আলো দেয়া বা বিকীরন অথবা উজ্জল বা দীপ্তি। কিন্তু জাকির নায়েক সাহেব দাবী করছে মুনির অর্থ ধার করা আলো।
বুঝাই যাচ্ছে জাকির নায়েক সব সময়ের মতই মিথ্যে কথা বলে নিজের
মিথ্যে দাবী প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে। আর এতে করে কুরআনের
অর্থ পরিবর্তন করে নতুন অর্থ করে দেখানোর চেষ্টা করেছে সে।
কিন্তু নুর অর্থ প্রতিফলিত আলো এই অর্থটিও যদি সত্যি বলে ধরে
নেওয়া হয় তবুও কুরআনে অন্য আয়াত অনুযায়ী এই অর্থটির অসাড়তা প্রমানিত হয়। অর্থাৎ নুর মানে যে প্রতিফলিত আলো নয় এটির প্রমান কুরআন নিজেই।
সূরা আহযাব, আয়াত ৪৫ ও ৪৬
"হে নবী! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরুপে এবং
সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরুপে।"
"আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারী রুপে এবং উজ্জ্বল
প্রদীপ রুপে।"
এই আয়াত অনুযায়ী নবী মুহাম্মদ হলো একটা প্রদীপ। আবার সূর্যকেও বলা হচ্ছে প্রদীপ।
আবার সূরা নূর-এর ৩৫ নাম্বার আয়াতে আছে
"আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর (আলোকিতকারী) জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উপমা
(মুমিনদের অন্তরে) যেন একটি দীপাধার (তাক), যার মধ্যে আছে এক প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচের
আভরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আভরণটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ; এটা প্রজ্বলিত করা
হয় বরকতময় যয়তুন বৃক্ষের তৈল দ্বারা যা পূর্বেরও নয়, পশ্চিমও নয়, (বরং উভয়ের মধ্যবর্তী)
অগ্নি ওকে স্পর্শ না করলেও যেন ওর তৈল উজ্জ্বল আলো জ্যোতির উপর জ্যোতি! আল্লাহ যাকে
ইচ্ছা পথ নির্দেশ করেন তাঁর জ্যোতির দিকে; আল্লাহ মানুষের জন্যে উপমা দিয়ে থাকেন আল্লাহ
সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।"
এই আয়াতটি একটু কাব্যিক হওয়ায় এর অর্থটি একটু গোলমেলে। কিন্তু বুঝার সুবিধার জন্য এটিকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে উপস্থাপন করছি।
"আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর (আলোকিতকারী) নূর বা জ্যোতি,"
অর্থাৎ আল্লাহ নিজেই একটি নূর বা জ্যোতি বা আলো।
"তাঁর জ্যোতির উপমা (মুমিনদের অন্তরে) যেন একটি দীপাধার
(তাক),"
অর্থাৎ আল্লাহর জ্যোতিটা একটা প্রদীপ রাখার পাত্রের মত,
"যার মধ্যে আছে এক প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচের
আভরণের মধ্যে স্থাপিত,"
অর্থাৎ সেই দীপাধারের মধ্যে একটি প্রদীপ রাখা আছে, আর সেই প্রদীপটি একটি
কাঁচের আভরণ দিয়ে ঢাকা।
"কাঁচের আভরণটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ,"
অর্থাৎ কাঁচের আভরনটিও কোন উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আলো ছড়ায়। অর্থাৎ কাঁচের আভরণটিও আলো দেয়।
"এটা প্রজ্বলিত করা হয় বরকতময় যয়তুন বৃক্ষের তৈল দ্বারা
যা পূর্বেরও নয়,
পশ্চিমও নয়, (বরং উভয়ের মধ্যবর্তী)"
অর্থাৎ প্রদীপটি জ্বালানো হয় যয়তুন বৃক্ষের (আরবীয় গাছ) তৈল
দিয়ে। আর এই তেলটি পূর্ব বা পশ্চিমের (আরবের) নয়
বরং এদের মাধামাঝি জায়গার।
"অগ্নি ওকে স্পর্শ না করলেও যেন ওর তৈল উজ্জ্বল আলো, জ্যোতির উপর জ্যোতি!"
অর্থাৎ প্রদীপের আগুন সেই তেলকে স্পর্শ করে না কিন্তু তবুও সেই
তেল নিজেই আলো ছড়ায়। তেলের আলো এবং তাঁর
উপর জ্বলতে থাকা প্রদীপের আলো তাই বলা হয়েছে জ্যোতির উপর জ্যোতি।
"আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ নির্দেশ করেন তাঁর জ্যোতির দিকে; আল্লাহ মানুষের জন্যে
উপমা দিয়ে থাকেন আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।"
অর্থাৎ আল্লাহ যে নিজেই জ্যোতি বা আলো তাই তিনি তাঁর দিকে
যাকে ইচ্ছা পথ দেখায়। আর আল্লাহ উপমা দেয়
কারণ তিনি সব বিষয়ই জানেন।
সুতরাং উপরের আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ নিজে নূর অর্থাৎ
আলো ছড়ানো আলো। আর তাঁর আলো এমন একটা
প্রদীপ রাখার পাত্রের মত যেটা নিজেও আলোকিত থাকে । সেই প্রদীপ রাখার পাত্রের মধ্যে একটি প্রদীপ রাখা থাকে সেটিও আলো দেয় এবং এর তেলও
আলো দিতে পারে । আর তাই আল্লাহর আলোটা
এমন এক প্রজ্জ্বলিত আলোর মত যা চতুর্দিক থেকেই আলো ছড়ায়।
অর্থাৎ আল্লাহ নিজে আলো ছড়ায় আর তাঁর আলোটা এমন এক প্রদীপ
রাখার পাত্রের মত যে পাত্রের প্রদীপ, প্রদীপকে ঢেকে দেওয়া কাঁচ এবং প্রদীপের তেল
এই সবগুলো উপাদান থেকেই আলো ছড়ায়।
অর্থাৎ আল্লাহ এমন এক আলো যা চারপাশ থেকেই আলোকিত থাকে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে কুরআন বলছে, মুহাম্মদ হলো প্রদীপ এবং আল্লাহ হলো নূর
বা আলো।
যদি নূর অর্থ প্রতিফলিত আলোই হয় তবে একই আয়াত দুটো অনুযায়ী
নবী মুহাম্মদ হলো প্রদীপ যে আলো ছড়ায় এবং আল্লাহ হলো প্রতিফলিত আলো।
অর্থাৎ মুহাম্মদই প্রধান আর আল্লাহ হলো মুহাম্মদ থেকে সৃষ্ট। (এটিকেই বিধর্মীরা সত্য বলে মনে করে। বিধর্মীদের ধারণা মুহাম্মদ রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করার জন্য আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে। আর জাকির নায়েকের অর্থ অনুযায়ী এটাই প্রমানিত হয়।)
কিন্তু মুহাম্মদ প্রদীপ এবং আল্লাহ তার প্রতিবিম্ব হতে পারে
না। তাই নূর অর্থ প্রতিফলিত আলো হতে পারে না।
নূর অর্থ যদি আলো প্রদানকারী হয় তবে এই আয়াত দুটোর অসাড়তা
দুর হয়।
আমরা যুগ যুগ ধরে জেনে আসছি যে নূর অর্থ আলো । নূর এমন একটি আলো যেটি কোন কিছু পুড়িযে তৈরী হয় না, কিন্তু এটি থেকে এমনিতেই আলো বের হয়।
অর্থাৎ চাঁদের আলোটা এমন আলো যে চাঁদ প্রদীপের মত জ্বলে না
বা পুড়ে যায় না কিন্তু এর মধ্যে থেকে আলো নির্গত হয়। কিন্তু সূর্যের আলো এমন আলো যা জ্বলে বা কোন কিছু পুড়ে আলো নির্গত হয়।
আর তাই কুরআনে সূর্যকে প্রদীপ এবং চাঁদকে নূর বলা হয়েছে।
অর্থাৎ জাকির নায়েক যেটা দাবী করেছে যে, কুরআনে চাঁদের আলোকে প্রতিফলিত আলো বলা
হয়েছে সেটি সম্পূর্ন মিথ্যে কথা। বরং কুরআনে কোথাও
বলা হয় নি যে চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো। বরং বলা হয়েছে চাঁদের
আলো তার নিজের আলো।
অর্থাৎ জাকির নায়েক মিথ্যে কথা বলেছে এবং কুরআনের অর্থ পরিবর্তন
করে উপস্থাপন করে মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে।
এবার জাকির নায়েকের বক্তব্যকে একটু বিশ্লেষন করা যাক।
জাকির নায়েক বলেছে, সূরা ফুরকানের ৬১ নাম্বার
আয়াতে বলা হয়েছে,
"কত মহান তিনি, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ এবং
চাঁদ যাহার রহিয়াছে ঋন করা আলো।"
কিন্তু সূরা ফুরকানের ৬১ নাম্বার আয়াতে মোটেই বলা হয়নি যে চাঁদ
যার রয়েছে ঋন করা আলো। বরং এই আয়াতে বলা হয়েছে, চাঁদ জ্যোতির্ময়। অর্থাৎ আলো প্রদানকারী
চাঁদ।
আবার জাকির নায়েক সূরা ইউনুসের ৫ নাম্বার আয়াতকে উপস্থাপন করেছে
সম্পূর্ন ভুল ভাবে।
জাকির নায়েকের মতে এখানে বলা হয়েছে
“এবং চন্দ্রকে করেছেন
প্রতিবিম্বিত আলো।“
কিন্তু আয়াতটিতে কোথাও ‘প্রতিবিম্বিত আলো’ বলা হয়নি। বরং বলা হয়েছে আলো প্রদানকারী বা জ্যোতিদানকারী
চাঁদ।
এরপর জাকির নায়েক সূরা নূহ্-এর ১৫ ও ১৬ নাম্বার আয়াতের কথা উল্লেখ
করে বলেছে, সিরাজের আরবী শব্দ হলো সামস্ আর একে সব সময়
বলা হয়েছে সিরাজ বা একটা প্রদীপ, নয়তো ওয়াহাজ বা একটা প্রজ্জলিত প্রদীপ, অথবা দিয়া বা উজ্জল দ্যুতি।
আমরা জানি সূর্য একটা প্রদীপের মতো আলো বা তাপ প্রদানকারী
মাধ্যম। প্রদীপ যেমন পোড়ে বা জ্বলে ঠিক তেমনি সূর্যও
পোড়ে বা জ্বলতে থাকে। অর্থাৎ কুরআন সূর্যের
ক্ষেত্রে ঠিক কথাই বলেছে।
জাকির নায়েক আরোও বলেছে, চাঁদের আরবী শব্দ হলো
কামার, এটাকে সব সময় বলা হয় মুনির অর্থাৎ ধার করা আলো, অথবা নূর যেটা হল প্রতিফলিত আলো।
আমরা আগেই দেখেছি মুনির বা নূর মানে ধার করা আলো বা প্রতিফলিত
আলো নয়। বরং মুনির মানে আলো দেয়া বা বিকীরন অথবা
উজ্জল বা দীপ্তি, আর নূর মানে হল আলো বা আলো প্রদানকারী।
অর্থাৎ জাকির নায়েক কুরআনের অর্থকে তার নিজের মতো করে পরিবর্তন
করে নিয়েছে ।
জাকির নায়েক আরো বলেছে, চাঁদ বুঝাতে গিয়ে কখনই
বলা হয়নি যে, সিরাজ, ওয়াহাজ অথবা দিয়া। বলা হয়েছে মুনির বা নূর অর্থাৎ ধার করা আলো, অথবা কোন প্রতিফলিত আলো।
চাঁদকে সূর্যের মতো সিরাজ, ওয়াহাজ বা দিয়া না
বলার কারণ হলো চাঁদের আলো এবং সূর্যের আলোর মধ্যে একটা পার্থক্য সেই প্রাচীন কাল
থেকেই করা হয়ে আসছে। মানুষ মনে করতো চাঁদের
আলোটা এমন যে এটি প্রদীপের আলোর মত নয়। প্রদীপের আলো যেমন
তাপ প্রদান করে কিন্তু চাঁদের আলো সেরকম তাপ প্রদান করে না। আর তাই কুরআনেও সূর্যের আলো বুঝাতে প্রদীপ বলা হয়েছে। কিন্তু চাঁদের আলো যেহেতু তাপ প্রদান করে না তাই মানুষ মনে করতো চাঁদ যে আলো
নির্গত করে সেটা জ্বলে বা পোড়ার মাধ্যমে করে না। চাঁদের আলা এমনিতেই ছড়ায়। আর তাই আরবী ভাষায়
নূরকে এমন আলো বুঝানো হয় যেটা জ্বলে বা পোড়ার মাধ্যমে আলো দেয় না, বরং এটি এমনিতেই আরো প্রদান করতে পারে। যা এমনিতেই আলো প্রদান
করতে পারে এমন একটা কিছুকেই নূর বলা হয়।
আর সেজন্যই চাঁদ বুঝাতে মুনির বা নূর শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে
। এবং সূর্যের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে সিরাজ, ওয়াহাজ এবং দিয়া শব্দগুলো।
কিন্তু জাকির নায়েক যেভাবে দাবী করেছে যে চাঁদের আলোকে প্রতিফলিত
আলো বুঝাতে মুনির ও নূর শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়েছে আসলে সেটা ঠিক নয়। জাকির নায়েক কিন্তু ঠিকই জানে যে নূর আসলে কোন ধরণের আলো। কিন্তু সে মানুষের সাথে প্রতারণা করে মুনির ও নূর-এর ভুল অর্থ
ব্যবহার করেছে। মানুষ যুগ যুগ ধরে নূর বলতে এমন বস্তুকে বুঝে
এসেছে যেটা আলো প্রদান করতে পারে এমনি এমনিই। আর মানুষ ভেবে এসেছে চাঁদের আলোটা নূরের আলোর মতো এমনি এমনি আলো প্রদানকারী
আলো। আর তাই চাঁদকে নূর বলা হয়েছে।
যদিও জাকির নায়েক একথাটি খুব ভালো ভাবেই জানতো তবুও সে মিথ্যে
কথা বলে এবং প্রতারণা করে কুরআনকে বিজ্ঞানময় বলে দাবী করেছে।
এরপর জাকির নায়েক বলেছে,
পবিত্র কুরআনের সূরা তারিখের ৩ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ করা আছে
যে,
আন্নাজ মুসাফির, এখানে নক্ষত্র এর আরবী
হল নাজাম, এটাকে বলা হয়েছে সাকিব, এর আলোকে বলা হয়েছে সাকিব। এটা অন্ধকারকে ছিদ্র
করে আর নিজের শক্তি গ্রহণ করে। “
কেন সে সূরা তারিখের ৩ নাম্বার আয়াতের উল্লেখ করেছে সেটা বুঝা
যাচ্ছে না। জাকির নায়েকের কথা মতো নক্ষত্রের আলো হল
সাকিব এবং এটার অর্থ হল অন্ধকারকে ছিদ্র করে নিজের শক্তি গ্রহন কারী আলোকে সাকিব বলে। কিন্তু অন্ধকারকে ছিদ্র করার কথাটা অর্থহীন, কারণ অন্ধকারের বাস্তব অস্তিত্ব না থাকায় একে ছিদ্র করা যায় না।
সূরা তারিখের ৩ নাম্বার আয়াতটি হল-
"ওটা দীপ্তিমান নক্ষত্র।"
অর্থাৎ নক্ষত্র দীপ্তিমান।
যেহেতু প্রাচীন কালের মানুষ মনে করতো সূর্য জ্বলন্ত আলো এবং
চাঁদের আলোটা প্রজ্জ্বলিত নয়। আর নক্ষত্র হলো ছোট
ছোট আলোক বিন্দু। তারা বিশ্বাস করতো
সূর্যের আলো, চাঁদের আলো এবং নক্ষত্রের আলো ভিন্ন ভিন্ন। আর তাই কুরআন লেখকও এই আলো প্রদানকারী সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্রের আলোকে ভিন্ন ভিন্ন শব্দ দিয়ে প্রকাশ করেছে। কুরআন লেখক বুঝতে পারেননি যে নক্ষত্রের আলো, চাঁদের আলো এবং সূর্যের আলো আসলে একই রকম
আলো। আর তাই সূর্য, চন্দ্র ও সক্ষত্রের আলোকে ভিন্ন ভিন্ন শব্দ দিয়ে বুঝিয়েছে।
অর্থাৎ কুরআন লেখকের সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্রের
আলো সম্পর্কে স্পর্ষ্ট ধারণা ছিলনা বলে সে ভিন্ন ভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্রের আলো বুঝিয়েছে।
কিন্তু জাকির নায়েক এভাবে উপস্থাপন করে দেখানোর চেষ্টা করেছে
যে কুরআন চাঁদের আলোকে প্রতিফলিত আলো বলেছে। কিন্তু সত্যিটা আসলে অন্য রকম।
কুরআন বলেছে চাঁদের নিজস্ব আলো আছে। কিন্তু বাস্তবতা হল চাঁদের নিজস্ব আলো নেই । অর্থাৎ কুরআন মিথ্যে কথা বলছে।
কিন্তু প্রতারক জাকির নায়েক মিথ্যে বলে এবং কুরআনের অর্থকে ভুল
ভাবে উপস্থাপন করে দেখানোর চেষ্টা করেছে যে কুরআনে চাঁদের আলোটা প্রতিফলিত আলো। আর এটা প্রমাণ করতে যেয়ে সে কুরআনের আয়াতের অর্থকে পরিবর্তন
করেছে বা বিকৃত করে নিজের মতো করে অর্থ করেছে।
কিন্তু জাকির নায়েকের বলা কথাগুলো মিথ্যে ও প্রতারণমুলক।
অর্থাৎ জাকির নায়েক কুরআনকে বিজ্ঞানময় প্রমাণ করতে যেয়ে মিথ্যে
কথা বলেছে এবং মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে।
জাকির নায়েকের কি ব্যাখ্যা ! কুরআনে যেখানে চাঁদের
নিজের আলো বলা হয়েছে সেখানে ‘নিজের আলো’ পরিবর্তন করে, ‘প্রতিফলিত আলো’ বসিয়ে দাও আর কুরআরকে
বিজ্ঞান বানাও। কি যুক্তি,
শব্দের অর্থ পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে নতুন অর্থ
করা হবে আর দাবী করা হবে এটা বিজ্ঞানময়।
কুরআনে বিজ্ঞান বিরোধী কথা বলা হয়েছে। কুরআন বলেছে চাঁদের নিজস্ব আলোর কথা। অর্থাৎ কুরআন ভূল।
আর জাকির নায়েক সেই ভূলকে শুদ্ধ করতে কুরআনের ওই আয়াতের ওই শব্দটির
অর্থ পরিবর্তন করেছে বিজ্ঞানের সাথে মিল রেখে। তাহলেতো বিজ্ঞানময় হয়েই উঠবে। কারণ সেটাতো কুরআনের
কথা নয়, সেটা বিজ্ঞানের কথা। জাকির নায়েক শুধু কুরআনের ভূল কে বিজ্ঞান অনুযায়ী শুদ্ধ করে নিয়েছে। ফলে জাকির নায়েকের প্রতারণা বিজ্ঞান হিসেবে প্রমানিত হয়েছে কিন্তু
কুরআন নয়। কারণ কুরআন চাঁদের প্রতিফলিত আলোর কথা বলেনি, বলেছে চাঁদের নিজের আলোর কথা । কিন্তু জাকির নায়েক কুরআনের সেই ভূলকেই পরিবর্তন করে দিয়েছে। চাঁদের প্রতিফলিত আলোর কথা কুরআনের নয়, বরং জাকির নায়েকের।
এটাই জাকির নায়েকের মিথ্যেবাদিতা ও প্রতারণা।
বি.দ্র.: কেন জাকির নায়েকের প্রতারণা এবং মিথ্যেবাদিতা প্রকাশ
করা?
এর কারণ জাকির নায়েক শুধু ব্যক্তি জাকির নায়েক নয়। জাকির নায়েক হল আধুনিক মডারেট মুসলিমদের প্রতিনিধি। অসখ্য মুসলমান জাকির নায়েককে অনুসরন করে। কিন্তু তারা জানে না যে জাকির নায়েক শুধু একজন মিথ্যেবাদিই নয় উপরন্তু একজন প্রতারক। সে প্রতারনা করে ধর্মকে ব্যবসার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে। এবং এতে করে মুসলমানরা হয় ক্ষতিগ্রস্থ। জাকির নায়েক সাধারণ মুসলমানদের কাছ থেকে পটিয়ে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় আর নিজের পকেট
ভারী করে। একটা টেলিভিশন চ্যানেল খুলেছে যাতে সে ক্রমাগত
মিথ্যাচার করে চলে এবং মানুষের কাছে যাকাতের নাম করে এবং অন্যান্য উপায়ে টাকা হাতিয়ে
নিতে থাকে। জাকির নায়েকের মিথ্যাচার এবং প্রতারণার মুখোশ
খুলে দেবার কারণ হলো জাকির নায়েকদের মত ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে যেন সাধারণ মানুষ প্রতারিত
না হয়।
পাছে না বলে জাকির নায়েকের সামনা-সামনি বলেন তাহলেই লেটা চুকে যায়
ReplyDeleteআপসোস হয়! আপনার জন্য
ReplyDeleteআমি মনে করি আপনার মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। আপনি আরবী ভাষা বোঝেন? অন্য একজনার ভাষাকে বাংলা করেছি সেটা শুনে আপনি আপনার বক্তব্য চালিয়ে গেলেন।
ReplyDeleteমানুষ বলতেই ভুল।
ডাক্তার জাকির নায়েক দেখিয়েছেন আরবি ভাষাকে বাংলায় তাফসীর করেছেন যারা তাদের ভুল আছে। তিনি ভুল শিক্ষা দেননি বরং তিনি ভুল ধরিয়ে দিতে চেয়েছেন। যেমন : সূরা ত্বহার 25 নাম্বার আয়াতে যেখানে বক্ষ বলেছে সেখানে বক্ষ না বুঝিয়েছেন জ্ঞানকে এমন আরও আছে।
ব্লক তৈরি করে লুকিয়ে লুকিয়ে চোরের মত কেন বলছেন আপনি সরাসরি যান সরাসরি বলেন আপনার মত অনেক লোক আছে যাদের ভুল ধারণা কে তিনি সঠিক করে দিয়েছেন।
ReplyDelete