Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Tuesday, February 24, 2015

বিশ্বাস একটি মিথ্যে প্রক্রিয়া। বিশ্বাস কি সত্যের পরিপূরক, নাকি বিশ্বাসের প্রক্রিয়াটি মানুষকে মিথ্যের সাগরে ঢুবিয়ে দেয় ?


আস্তিকরা দাবী করে যে, সৃষ্টিকর্তাকে অনুধাবন করার মতো বা বোঝার মত শক্তি বা উপলব্ধি মানুষের নেইযেহেতু মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে অনুধাবন করতে পারবে না বা বোঝতে পারবে না (কারণ তাদের সে শক্তি নেই) তাই সৃষ্টিকর্তাকে বিনা যুক্তি প্রমাণে মেনে নিতে হবে এবং তাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে যেতে হবেঅন্ধবিশ্বাসের মাত্রা অনেক বেশী হলে অন্ধবিশ্বাসীদের কাছে সৃষ্টিকর্তা দর্শন দিতে পারে, অনুভুত হতে পারে বা প্রমাণ দিলেও দিতে পারেঅর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার বিষয়ে যুক্তি-প্রমাণ চাওয়া যাবে না, শুধু মাত্র তাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করতে হবে এবং বিনা শর্তে তার গোলামী করতে হবে

কিন্তু যুক্তিবাদী এবং বাস্তববাদী মানুষ আস্তিকদের এই দাবীকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হিসেবে গন্য করেযুক্তি ও বাস্তববাদী মানুষের কাছে চিরসত্য হলো, যার কোন প্রমাণ নেই তার কোনই অস্তিত্ব নেইযেমন- ইউনিকর্ন, ফেইরি (পরী), জ্বীন, ভূত, প্রেতপুরী, পাতালপুরী ইত্যাদির কোন বাস্তব প্রমাণ নেই তাই এগুলোর কোন অস্তিত্ত্বই নেইএগুলো মানুষের কল্পনা শক্তি দিয়ে তৈরী করা কিছু কাল্পনিক অস্তিত্ত্ব যার বাস্তব কোন ভিত্তি নেইঅর্থাৎ এই চরিত্রগুলো মানুষ কল্পনা করেছে মাত্র, এদের বাস্তব কোন অস্তিত্ত্বই নেই
ঠিক তেমনি মানুষ তার কল্পনা শক্তি ব্যবহার করে তৈরী করেছে সৃষ্টিকর্তা, স্বর্গ-নরক, শয়তার-ফেরেশতা বা দেবদূতদেরএগুলোর বাস্তব কোন অস্তিত্ত্ব নেই, এগুলোর অস্তিত্ত্ব আছে শুধুই মানুষের মনেবাস্তব জগতে এদের কোনই অস্তিত্ত্ব নেই


বাস্তববাদীদের দাবী যদি সৃষ্টিকর্তা, শয়তান- ফেরেশতা, দেবদূত, জীন-পরী ইত্যাদির বাস্তব অস্তিত্ত্ব থাকতোই তবে এগুলোর কোন না কোন প্রমাণ অবশ্যই পাওয়া যেতমানুষ আজ বিজ্ঞানের সাহায্য এমন সব কিছুর অস্তিত্ত্ব সনাক্ত করতে পারে যেগুলোর অস্তিত্ত্ব সনাক্ত করা মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব ব্যাপারমানুষ তার জ্ঞানকে এতো উন্নত করতে পেরেছে যে তারা ইলেক্ট্রন, প্রাটন, নিউটনের মতো অতি ক্ষুদ্র কণাগুলোর অস্তিত্ব নির্ণয় করতে পারে সফল ভাবেমানুষ বাতাসের অস্তিত্ত্ব নির্ণয় করেছে শত বছর আগেইমানুষ তাপ, বিদ্যুৎ, রাসায়নিক ও নিউক্লিয় শক্তিকে সনাক্ত করতে পারে, তৈরী করতে পারে এবং এদেরকে নানা কাছে ব্যবহার করতে পারে অবলীলায়এমন কি মানুষ তার জ্ঞানকে এতো উপরে নিয়ে গেছে যে মানুষ মহাবিশ্বের কোথায় কি আছে সেটা পৃথিবীতে বসেই বের করে ফেলতে পারেযেমন- বিশ্বজগতের বয়স, বিশ্বজগতের শুরু, বিশ্বজগতের পরিনতি ইত্যাদি অসম্ভব ব্যাপারগুলো মানুষ অবলীলায় আবিষ্কার করে চলেছে

অর্থাৎ মানুষের জ্ঞান এতো বেশী যে, যে কোন কিছুর অস্তিত্ত্বই সেটা যত ক্ষুদ্র বা সনাক্ত করা কঠিন হোক না কেন মানুষ সেসব আবিষ্কার করেছেঅর্থাৎ যা কিছুর অস্তিত্ত্ব আছে সেসব কিছুকেই মানুষ সনাক্ত করতে সক্ষম
সুতরাং যদি জ্বীন-ভুত-প্রেত, পাতালপুরী, প্রেতপুরী ইত্যাদির অস্তিত্ত্ব থাকতোই তবে মানুষ সেগুলোর অস্তিত্ত্ব আবিষ্কার করে ফেলতোকিন্তু এসব কিছুর অস্তিত্ত্ব নেই বলেই মানুষ সেগুলোর অস্তিত্ত্ব পায়নিঠিক তেমনি ভাবে শয়তান-ফেরেশতা, ইশ্বর বা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব যদি থাকতোই তবে মানুষ এগুলোর অস্তিত্ত্ব বের করে ফেলতো

তাই খুব সহজেই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, জ্বীন-পরী ও ভূত-প্রেতের যেমন অস্তিত্ত্ব নেই ঠিক তেমনি ইশ্বর-সৃষ্টিকর্তা, ফেরেশতা-শয়তানের কোন অস্তিত্ত্ব নেইএসব মানুষের কল্পনা

মানুষের হাজারটা ক্ষমতার মধ্যে একটি হলো তার কল্পনা শক্তিএই শক্তি ব্যবহার করে মানুষ যেকোন কিছুই কল্পনা করতে পারেনতুন নতুন গল্প, উপন্যাস বা নাটক মানুষ তৈরী করে তার কল্পনা শক্তি ব্যবহার করেসিনেমার ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর চরিত্র, সুপার হিরো, সুপারম্যান, স্পাইডারম্যান, হাল্ক ইত্যাদি চরিত্র মানুষ তৈরী করেছে শুধুমাত্র তার কল্পনা শক্তিকে ব্যবহার করেআমি আপনি সবাই কল্পনা করতে পারি অনেক কিছুইসেই ক্ষমতা মানুষের আছেতাই বলে কল্পনার সেই চরিত্রগুলো সত্যি হয়ে যায় না
ঠিক তেমনি প্রাচীন কালের মানুষেরও কল্পনা শক্তি ছিলসেও কল্পনা করতোসে সময় মানুষের জ্ঞান ছিল না খুব বেশীতারা তাদের স্বল্প জ্ঞান দিয়ে বিশ্বজগতকে নিয়ে ভেবেছেবিশ্বজগতের রহস্য উদঘাটন করতে চেয়েছেমানুষ কোথা থেকে আসলো, কোথায় যাবে এসব চিন্তাশীল চিন্তাগুলো প্রাচীনকালের মানুষকেও ভাবিয়ে তুলতোকিন্তু তাদের কাছে এসব ব্যাখ্যা করার মতো জ্ঞান ও প্রযুক্তি ছিল নাতাই তারা এসব প্রশ্নের উত্তর খুজতে ব্যবহার করেছে তাদের কল্পনা শক্তিকেতারা তাদের স্বল্প জ্ঞান দিয়ে কল্পনা করে নিয়েছে যে, এই বিশ্বজগতের একজন সৃষ্টিকর্তা আছেসেই সৃষ্টিকর্তা বিশ্বজগতকে সৃষ্টি করেছে আর সেই এই বিশ্বজগতকে পরিচালিত করেতাদের কল্পনার এই সৃষ্টিই তাদেরকে শান্তনা দিতে পেরেছিল যুগের পর যুগ ধরেফলে এই কল্পনার অস্তিত্ত্বগুলোকে মানুষ বয়ে নিয়ে এসেছে আজ পর্যন্ত
যদিও মানুষের এই কল্পনার সৃষ্টিগুলো মানুষকে শান্তনা দিতে পেরেছিল তার জানার ইচ্ছা শক্তিকে কিন্তু তাই বলে এই অস্তিত্ত্বগুলো কোনদিনই সত্যি হয়ে যায়নিএগুলো কল্পনাই থেকে গেছে সব সময়
কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী এবং শাসক শ্রেনী ছিল যারা তাদের ক্ষমতা প্রদর্শনে এই সব কাল্পনিক অস্তিত্ত্বগুলোকে ব্যবহার করেছে মানুষকে ভয় দেখাতেআর তাই ধর্ম ও ধর্মের কাল্পনিক চরিত্রগুলো আধুনিক কাল পর্যন্ত টিকে গেছেএখনও কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী ধর্মগুলোকে এবং ধর্মের কাল্পনিক চরিত্রগুলোকে জিইয়ে রেখেছে
কিন্তু তাই বলে সেই সব কাল্পনিক চরিত্রগুলো সত্য হয়ে যায়নি কখনই  

তাহলে মানুষ তাদেরকে বিশ্বাস করে কেন যদি তাদের বাস্তব কোন অস্তিত্ব নাই থাকে ?
এর উত্তর হলো তারা এসব অস্তিত্ত্বগুলোকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে বলে এদের বাস্তব কোন অস্তিত্ত্বের প্রয়োজন হয় নাকারণ মানুষ যা ইচ্ছা তাই বিশ্বাস করতে পারেবিশ্বাসের জন্য সত্যের কোন প্রয়োজন হয় নাসত্য আর বিশ্বাস দুটো বিপরীত ব্যাপার
মানুষ সৃষ্টিকর্তার মতো কাল্পনিক অস্তিত্ত্বগুলোকে বিশ্বাস করার আরেকটি বড় কারণ হলো, মানুষ তার এই বিশ্বাসগুলো সে স্বাধীনভাবে বেছে নেয় নাএই বিশ্বাসগুলো মানুষ মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়
কোন মানুষ যখন শিশু অবস্থায় থাকে তখন পরিবার ও সমাজ শিশুদের উপর সেই সব কাল্পনিক অস্তিত্ত্বগুলোকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেকোন শিশু বাস্তবতা জানে না, যুক্তি-বুদ্ধির ক্ষমতা তার থাকে না ঠিক সেই সময় বাবা-মা তার উপর ধর্মকে এবং ধর্মের কাল্পনিক বিশ্বাসকে শিশুটির উপর চাপিয়ে দেয়শিশু বিশ্বাস করে তার বাবা-মা তাকে যা বলেকারণ সে তার বাবা-মাকে বিশ্বাস করেবাবা-মা তাকে অনেক ভালো ও সত্যি ধারণা দেবার সাথে সাথে কিছু মিথ্যে ধারণা দিয়ে দেয় শিশুকেফলে সেই মিথ্যে ধারণাগুলো শিশুর মনে থেকে যায় সারা জীবনশৈশবের সেই বিশ্বাসগুলোই সারা জীবন তার চিন্তা ধারাগুলোকে নিয়ন্ত্রন করেআর তাই একজন মুসলমান পরিবারের সন্তান হয় মুসলমান, হিন্দু পরিবারে জন্ম নেওয়া কেউ হয় হিন্দু এবং খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নেওয়া শিশু হয় খ্রিস্টানএভাবেই কাল্পনিক অস্তিত্ত্বগুলোর কাল্পনিক অস্তিত্ত্ব টিকে থাকে সব বিশ্বাসীদের মনে
কিন্তু তাই বলে সেগুলো বাস্তব হয়ে যায় নাকারণ কল্পনার দারা সৃষ্টি হওয়া কোন কিছুর অস্তিত্ত্ব বাস্তব হয়ে যায় নাসেটি মানুষের মনেই থেকে যায়

কিন্তু মানুষ বিশ্বাস করলেই কি কল্পনার অস্তিত্বগুলোকে মিথ্যে বলা যাবে? এদের বাস্তব অস্তিত্ত্ব থাকবে না ?
বিশ্বাস আর সত্য এক নয়, এদুটো পরস্পর বিপরীতমুখী
জগতে যা কিছু সত্য সেগুলো বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল নয়সত্য স্বাধীন ও সার্বজনীনঅর্থাৎ যা কিছু সত্য তা সবার কাছেই সত্য এবং এটি কোন কিছুর উপরই নির্ভরশীল নয়বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল হয়ে সত্য টিকে থাকে নাবরং বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে টিকে থাকে মিথ্যে
বাংলাদেশের অস্তিত্ত্ব আছেআমার কাছে যেমন বাংলাদেশের অস্তিত্ত্ব আছে তেমনি সবার কাছেই এটির অস্তিত্ত্ব আছেযে কেউ, যে কোন সময় পরীক্ষা করে দেখতে পারে; তারা সবাই প্রমাণ পাবে যে বাংলাদেশের অস্তিত্ত্ব আছেপৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই পরীক্ষা করা হোক না কেন, দেখা যাবে যে আসলেই বাংলাদেশের বাস্তব অস্তিত্ব আছেসুতরাং এটি একটি বাস্তব অস্তিত্ত্বশীল কিছুএবং এটি স্বাধীন বলে কেউ এটি নিয়ে মিথ্যে বলতে পারবে না বা এটি নিয়ে ছলনা করা যাবে নাযে কেউ পরীক্ষা করে দেখতে পারবেএবং এটি সার্বজনীন, অর্থাৎ পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে যে কোন সময় বাংলাদেশের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ নির্ণয় করা যায়ফলে এটি একটি সত্য তাই এর অস্তিত্ত্বের প্রমাণ আছে
আবার সূর্য পূর্ব দিক থেকে উঠে এটি একটি সত্যতাই এটি স্বাধীন ও সার্বজনীনকেউ দেখতে পেল কিনা বা বিশ্বাস করলো কিনা সেটার উপর নির্ভর করে সূর্যের উদয় হওয়া এবং অস্ত যাওয়া নির্ভর করে নাএবং পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকেই পরীক্ষা করা হোক না কেন সবাই প্রমাণ পাবে যে সূর্য পূর্ব দিক থেকে উঠে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যায়তাই এটি একটি সত্য
ঠিক তেমনি বাতাসের অস্তিত্ব আছে এটি একটি সত্যতাই স্বাধীন ও সার্বজনীনযে কেউ যে কোন স্থানে ইচ্ছে করলে বাতাসের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পরীক্ষা করতে পারেআবার সবাই বাতাসের প্রবাহ উপলব্ধি করতে পারেঅর্থাৎ বাতাসের অস্তিত্ত্ব আছে
ইলেক্ট্রন, প্রোটন বা তাপ, আলো ইত্যাদির অস্তিত্ত্ব আছেতাই পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকেই পরীক্ষা করা হোক না কেন সবাই এদের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পাবেআলো দেখা যায়, তাপ অনুভব করা যায়; ফলে যে কেউ এদের অস্তিত্ত্ব যেকোন জায়গা থেকে, যেকোন সময়ে পরীক্ষা করলে এদের অস্তিত্বের প্রমাণ পাবেঅর্থাৎ এগুলোর অস্তিত্ত্ব আছে বলে এদের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়আর এদের অস্তিত্ত্ব বা অস্তিত্ত্বের প্রমাণ স্বাধীন ও সার্বজনীন
ঠিক তেমনি যা কিছুর অস্তিত্ত্ব আছে সেসব কিছুকে পরীক্ষা করে এদের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়প্রত্যেকটি অস্তিত্ত্বশীল স্বত্তার অস্তিত্ত্ব ভিন্ন ভিন্ন, তাই এদের সনাক্তের পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্নকিন্তু অস্তিত্ত্বশীল সব কিছুর অস্তিত্ত্বই পর্যবেক্ষনযোগ্য এবং প্রমাণযোগ্য
ফলে বিজ্ঞানীরা এবং পৃথিবীর তাবৎ জ্ঞানী মানুষ এই সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছে যে, যার অস্তিত্ত্ব আছে তার অস্তিত্ত্বের প্রমাণও আছেযার অস্তিত্ত্বের কোন প্রমাণ নেই, তার কোন অস্তিত্ত্বও নেই
বিশ্বজগতের এটিই নিয়ম এবং এটিই চিরসত্যএর ব্যতিক্রম হয় না, হবেও না

তাহলে আস্তিকদের দাবী সৃষ্টিকর্তাকে অনুধাবন করার বা বোঝার ক্ষমাতা মানুষের নেই, সেটার কি হবে ?
যার কোন অস্তিত্ত্ব নেই তাকে অনুভব করলেও সেটি অস্তিত্ত্বশীল হয়ে যাবে নাআবার যার অস্তিত্ত্ব আছে তাকে অনুভব না করতে পারলেও তার অস্তিত্ত্ব বিলীন হয়ে যাবে নাপ্রকৃতপক্ষে সত্য অনুভবের উপর নির্ভরশীল নয়সত্য প্রমাণের উপর নির্ভনশীলসুতরাং যারা দাবী করে সৃষ্টিকর্তাকে অনুধাবন করা যাবে না বলে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব মেনে নিতে হবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেসত্য স্বাধীন ও সার্বজনীনকেউ কোন অস্তিত্ত্বকে অনুভব করেছে বলে দাবী করলেই সেটি সত্য হয়ে যায় না যদি না সেটার উপযুক্ত প্রমাণ থাকেকোন অস্তিত্ত্বশীল কিছুর অস্তিত্ত্ব নির্ণয় করতে অনুভুতি নিষ্প্রয়োজনীয়ইলেক্ট্রন বা প্রোটনকে অনুভব করা যায় না কিন্তু তাদের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ আছে; তাই অনুভব করা যায় না বলে সেটি মিথ্যে হয়ে যায়নি
আবার তাপ, বা আলোকে অনুভব করা যায় বলেই সেটি সত্য হয়ে যায়নি বরং এদের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেই এদের অস্তিত্ত্ব প্রমাণিত হয়েছে  (কিন্তু ঠান্ডা বা অন্ধকারের কোন বাস্তব অস্তিত্ত্ব নেই তবুও মানুষ ঠান্ডা বা অন্ধকারকে অনুভব করতে পারেকিন্তু তাই বলে ঠান্ডা বা অন্ধকার অস্তিত্বশীল হয়ে যায়নিঠান্ডা হলো তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধির ফল; এখানে তাপ অস্তিত্ত্বশীল কিন্তু ঠান্ডার কোন অস্তিত্ত্ব নেই; তবুও মানুষ ঠান্ডাকে অনুভব করেআবার অন্ধকার হলো আলোর অনুপস্থিতির ফল, কিন্তু অন্ধকারের কোন বাস্তব অস্তিত্ত্ব নেইতবুও মানুষ অন্ধকারকে অনুভব করে বা দেখতে পায়কিন্তু তাই বলে ঠান্ডা বা অন্ধকার অস্তিত্ত্বশীল হয়ে যায়নি।)

একই ভাবে যদি সৃষ্টিকর্তা বা অন্যান্য অতিপ্রাকৃত কাল্পনিক অস্তিত্ত্ব যেমন- ভূত-প্রেত, জ্বীন-পরী, শয়তান-ফেরেশতা প্রভৃতি কাল্পনিক চরিত্রের আসলেই বাস্তব কোন অস্তিত্ত্ব থাকতো তবে অবশ্যই মানুষ তাদের অস্তিত্ত্ব সনাক্ত করতে পারতোকিন্তু বিজ্ঞানের আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে অনেক ক্ষুদ্র এবং অস্তিত্ত্ব সনাক্তকরণ অসম্ভব অনেক কিছুরই অস্তিত্ত্ব প্রমাণিত হয়েছে শুধু ধর্মগুলোর কল্পনাশক্তি দিয়ে তৈরী করা কাল্পনিক অস্তিত্ত্বগুলোরই কোন অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি
কিন্তু কেন ?
এর উত্তরটি খুব সহজ; কারণ এগুলো মানুষের কল্পনা শক্তি দিয়ে তৈরী করা এবং এদের কোন বাস্তব অস্তিত্ত্ব নেই বলেই এদের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় না
ঠিক একই ভাবে মানুষের কল্পনা শক্তি দারা সৃষ্ট সব চেয়ে বড় সৃষ্টি ধর্মের সৃষ্টিকর্তাগুলোর অস্তিত্ত্বও কাল্পনিক বলে এদের অস্তিত্ত্বের কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নাযদিও মানুষ বিশ্বজগতের অনেক অজ্ঞাত এবং সনাক্তকরণ অসম্ভব অস্তিত্ত্বশীল জিনিসগুলোও মানুষ প্রমাণ করছে কিন্তু সৃষ্টিকর্তাদের অস্তিত্ত্ব কেউ পাচ্ছে না
এর উত্তরও খুব সহজ; সৃষ্টিকর্তা আসলে মানুষের কল্পনার দারাই সৃষ্টি হয়েছে বলে এর কোন বাস্তব অস্তিত্ত্ব নেইআর তাই তার অস্তিত্ত্বের কোন প্রমাণও নেই

চিরন্তন সত্য হলো, অস্তিত্ত্বশীল সব কিছুরই অস্তিত্ত্বের প্রমাণ আছেযার অস্তিত্ত্ব নেই, তার অস্তিত্ত্বের কোন প্রমাণও নেইঅস্তিত্ত্বের প্রমাণ না থাকাই হলো অস্তিত্ত্বহীনতার প্রমাণ
তাই এটা প্রমাণিত সত্য যে সৃষ্টিকর্তার কোন অস্তিত্ত্ব বাস্তব পৃথিবীতে নেইসৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব আছে শুধুই মানুষের মনেবাস্তবজগতে নয়  

বিশ্বাস আর সত্য সম্পূর্ন বিপরীতযা সত্য তা স্বাধীন ও সার্বজনীনসত্যকে বিশ্বাসের উপর নির্ভর করতে হয় নাবিশ্বাসের উপর নির্ভর করতে হয় মিথ্যেকেকারণ মিথ্যে স্বাধীন ও সার্বজনীন নয়মিথ্যা যদি কারো কাছে সত্য হয় তবে সেটা শুধু তার কাছেই সত্যি অন্য কারো কাছে নয়যেমন হিন্দুরা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করেপুনর্জন্ম একটি মিথ্যে ধারণা, তাই এটি স্বাধীন ও সার্বজনীন নয়কারণ মুসলমানরা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে নাযেহেতু এটি একটি মিথ্যে ধারনা তাই এটিকে বিশ্বাসের উপর ভর করে টিকে থাকতে হয়যদি কোন হিন্দু তার অন্ধবিশ্বাস থেকে বেড়িয়ে আসে তবে সে আর পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে নাফলে বিশ্বাসের মৃত্যুর সাথে সাথে মিথ্যেরও মৃত্যু ঘটেঅর্থাৎ পুনর্জন্ম একটি মিথ্যে ধারণা তাই স্বাধীন নয়
আবার পৃথিবীর সবাই পুনর্জন্ম বিশ্বাস করে নাযারা নাস্তিক তারাতো বিশ্বাসই করে নাসুতরাং এটি সার্বজনীন নয়আর তাই পুনর্জন্মের এই ধারণাটি সত্য নয়কারণ যা সত্য তা স্বাধীন ও সার্বজনীন

আবার মুসলমান ও খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে মানুষের মৃত্যুর পরে একটি জীবন আছে যেটা অনন্তকালের জন্যঅর্থাৎ মানুষ মারা যাবে এবং পুনরায় জীবিত হয়ে একটি ভিন্ন জগতে প্রবেশ করবে যেখানে সে চিরকাল থাকবে, সেটাই হল পরকাল
কিন্তু হিন্দুরা আবার এই ধারণাকে বিশ্বাস করে নাআর যারা মুসলমান থেকে নাস্তিক হয় তারাও আর পরকাল বিশ্বাস করে না  (যেমন - আমি) সুতরাং বিশ্বাসের মৃত্যুর সাথে সাথে পরকালের মিথ্যে ধারণারও মৃত্যু ঘটছেঅর্থাৎ পরকালের ধারণাটি সম্পূর্ণরুপে মানুষের বিশ্বাস করা না করার উপর নির্ভরশীলঅর্থাৎ এই ধারণাটি স্বাধীন নয় তাই সত্য নয়আবার পৃথিবীর সব মানুষ পরকালে বিশ্বাস করে নাঅর্থাৎ পরকালের ধারণা সার্বজনীন নয়সুতরাং পরকালের ধারনাটি সত্য নয়এটি একটি মিথ্যে ধারনা বলে এটি বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে
কিন্তু সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র অর্থাৎ এই বিশ্বজগত সত্য ও বাস্তব অস্তিত্ত্বশীলতাই এটির অস্তিত্ত্বের প্রমাণ আছেএটি সত্য তাই স্বাধীন ও সার্বজনীনপৃথিবীর প্রাচীনকালের মানুষ থেকে আজ পর্যন্ত সব মানুষই বিশ্বজগতের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ দেখে আসছেসূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র এগুলো সব কালের সব মানুষের কাছেই অস্তিত্ত্বশীল ছিলএমনকি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের মানুষ যে কোন সময়েই সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র আর বিশ্বজগতের অস্তিত্ত্ব পর্যবেক্ষন করতে পারেঅর্থাৎ এটি বাস্তব সত্য, তাই স্বাধীন ও সার্বজনীন
যদি কেও বিশ্বজগতকে দেখতে না পায় বা এর অস্তিত্ত্ব অনুভব করতে না পারে অথবা কেউ বিশ্বজগতের অস্তিত্ত্বকে বিশ্বাস না করে তবে বিশ্বজগত অস্তিত্ত্বহীন হয়ে যাবে নাঅর্থাৎ বিশ্বজগতের অস্তিত্ত্ব কারোও উপর নির্ভরশীল নয়তাই এটি সত্য

মিথ্যাকে সব সময় কোন কিছুর উপর নির্ভরশীল হতে হয়তা না হলে তা বিলুপ্ত হয়ে যায়জগতে অনেক মিথ্যে ধারণা বিলিন হয়ে গেছেআর যা কিছু মিথ্যে কিন্তু এখনও অস্তিত্ত্বশীল সেগুলোও বিলীন হয়ে যাবেকারণ মিথ্যেকে সব সময়ই কোন না কোন কিছুর উপর নির্ভর করে বাঁচতে হয়
ধর্ম এবং ধর্মীয় ধারণাগুলো যেমন- সৃষ্টিকর্তা, শয়তান-ফেরেশতা প্রভৃতি মিথ্যে তাই এগুলোকে বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে টিকে থাকতে হয়কারণ ধর্মগুলো সত্য নয়; তাই স্বাধীন বা সার্বজনীন নয়
পৃথিবীতে বহু ধর্ম আছেতাদের ধারণাগুলোও একটি আরেকটির বিপরীত ধর্মীখ্রিস্টানরা যে সৃষ্টিকর্তাকে (ফাদার, জিজাস,  হোলি স্পিরিট) বিশ্বাস করে, মুসলমান বা হিন্দুরা তাকে বিশ্বাস করে নাআবার মুসলমান যাকে সৃষ্টিকর্তা (আল্লাহ) বলে বিশ্বাস করে, খ্রিষ্টান বা হিন্দু অথবা অন্যান্য ধর্মে বিশ্বাসীরা তাকে বিশ্বাস করে নাঠিক তেমনি হিন্দুরা যাকে সৃষ্টিকর্তা (ভগমান কৃষ্ণ) বলে বিশ্বাস করে তাকে খ্রিস্টান বা মুসলমানরা বিশ্বাস করে না
মুসলমানরা দাবী করে তারাই সঠিক সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করে এবং তারাই বেহেস্তে যাবেআর বাকীরা যাবে নরকেআবার হিন্দুরা বিশ্বাস করে তারাই সঠিক সৃষ্টিকর্তার পুঁজা করে তাই তারাই যাবে স্বর্গেআর বাকীরা যাবে নরকেএভাবে প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করে একমাত্র তারাই সঠিক
কিন্তু সত্য যেহেতু স্বাধীন ও সার্বজনীন তাই কোন ধর্মের কথাই সত্য নয়সবার দাবীই মিথ্যেকারণ সত্য বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে নাসুতরাং কারো কথাই সত্য নয়

ধর্মগুলো বেঁচে আছে বিশ্বাসের উপরআর সত্যকে বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল হতে হয় নাকিন্তু মিথ্যেকে নির্ভরশীল হতে হয়তাই সব ধর্মই মিথ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত

বিশ্বাস একটি মিথ্যে প্রক্রিয়াযা কিছু সত্য তাকে বিশ্বাস করতে হয় নাসত্য প্রমাণযোগ্য এবং স্বাধীন ও সার্বজনীন
কিন্তু সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করতে হয়তার অস্তিত্ত্বের কোন প্রমাণ নেইআর এই তথ্যটি বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীলপৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে সৃষ্টিকর্তার ধারণা বদলে যায়সৃষ্টিকর্তার কোন বাস্তব অস্তিত্ত্ব নেই বলেই তাকে যেমন ইচ্ছে তেমন সাজানো যায়; আর তা কল্পনায়
সৃষ্টিকর্তার ধারণাটি বেঁচে আছে বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে; বিশ্বাস বদলে গেলে সৃষ্টিকর্তাও বদলে যায়আর বিশ্বাসের মৃত্যু হলে সৃষ্টিকর্তারও মৃত্যু ঘটেসারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের ভিন্ন ভিন্ন মানুষের বিশ্বাসের ভিন্নতায় সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্বও বদলায় বিশ্বাস বদলের সাথে সাথেযেহেতু সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল তাই মিথ্যে

সুতরাং যারা দাবী করে সৃষ্টিকর্তাকে অনুভব করা যায় না, তাকে উপলব্ধির ক্ষমতা মানুষের নেই এবং তাকে বোঝা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় তারা এটা বলে তাদের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করেতাই তাদের ধারণা মিথ্যেযদি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব থাকতো তবে তাকে শুধু বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে টিকে থাকতে হতো নাতার অস্তিত্ত্বের কোন না কোন প্রমাণ পাওয়া যেতযেহেতু তার কোন প্রমাণই নেই তাই তার কোন অস্তিত্ত্ব্ও নেইকারণ অস্তিত্ত্ব থাকলে তার অস্তিত্ত্বের প্রমাণও থাকবেই


No comments:

Post a Comment