মুসলমানরা
দাবী করে থাকে যে, তাদের ধর্মগ্রন্থ কুরআন স্বয়ং আল্লাহ কর্তৃক
লিখিত বই। আল্লাহ
কুরআন লিখে লাওহে মাহফুজে সংরক্ষন করে রেখেছিল এবং মুহাম্মদের ৪০ বছর পূর্ণ হবার পরে
জিব্রাইল ফেরেশতার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে মুহাম্মদের কাছে কুরআনের বাণীগুলো পাঠিয়েছে
দীর্ঘ ২৩ বছর যাবত। মুহাম্মদ
সেই বাণীগুলোকে সবার কাছে বলেছে এবং তারা সেই বাণীগুলো বিভিন্ন জায়গায় (পাথরে, খেজুর
পাতায় এবং অন্যান্য জায়গায়) লিখে রেখেছে। পরবর্তীতে
যথাক্রমে আবু বক্কর ও উসমান কুরআনকে
বই আকারে সংরক্ষন করেছিল। আবু
বক্কর কুরআনের বিভিন্ন খন্ডগুলোকে একত্রিত করে বই আকারে কুরআনকে সংরক্ষিত করে।
পরবর্তীতে উসমানের সময়ে কুরআন বিকৃত হয়ে যাবার পর কুরআনকে সংশোধন
করে পুনরায় সংকলিত করতে হয়। উসমান
কুরআনকে নতুন করে বই আকারে প্রকাশের সময় কুরআনকে সংশোধন করে নেয়।
এবং বাকী পূর্ববর্তী সংকলনগুলো এবং বিকৃত কুরআনের অংশগুলোকে
ধ্বংস করে দেয়। সুতরাং
মুসলমানরা যে দাবী করে কুরআন অবিকৃত আছে সেটার কোন ভিত্তি নেই।
আবু বক্কর কর্তৃক সংকলিত কুরআনের কোন হদিস পাওয়া যায় না।
আজ পৃথিবীতে যে কুরআন ছড়িয়ে আছে সেটা উসমান কর্তৃক সংকলিত, সংরক্ষিত
এবং সংশোধিত কুরআন।
কিন্তু
তবুও মুসলমানরা মনে করে কুরআন সম্পূর্ন অবিকৃত আছে এবং কুরআনকে স্বয়ং মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা
আল্লাহ সংরক্ষনের দায়িত্ব নিয়েছে। (ইতিমধ্যে
আমরা জেনে গেছি কুরআন সংরক্ষনে আল্লাহ পুরোপুরি ব্যর্থ।)
মুসলমানদের
দাবী যদি সত্য বলে ধরে নেওয়া হয় তবে কুরআনের বাণীগুলো স্বয়ং আল্লাহর এবং বাণীগুলো
পুরোপুরি অবিকৃত রয়েছে।
অর্থাৎ
কুরআনে বলা কথাগুলো, বাক্যগুলো, শব্দগুলো
এবং লেখাগুলো স্বয়ং আল্লাহর।
এই
পর্বগুলোতে পর্যায়ক্রমে কুরআনকে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে কুরআন আসলে কার বাণী, কুরআনের কথাগুলো কি রকম, কুরআন কি ধরনের বই? এবং কুরআন কি ঐষী গ্রন্থ নাকী কুরআন একটি
কৌতুক গ্রন্থ, গল্প
গ্রন্থ, কবিতা
গ্রন্থ, সন্ত্রাসী
গ্রন্থ, নাকি
কাম গ্রন্থ?
এই
পর্বে সূরা বাকারা নিয়ে আলোচনা করা হবে। সূরা
বাকারা (উসমান কর্তৃক সংশোধিত) কুরআনের দ্বিতীয় সূরা।
এটিই কুরআনের সব থেকে বড় সূরা।
বাকারা অর্থ গরু বা বাছুর।
এই সূরাটির বড় অংশ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে কিন্তু বাকী শেষ অংশ
মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে এই সূরাটিকে মাদানী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সূরাটিতে মোট ২৮৬টি
আয়াত রয়েছে।
সুরা
বাকারা
আল্লাহর
নামে শুরু করছি, যিনি
পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু।
এটি
বলে সূরাটি শুরু হলেও এটিকে অনেকেই আয়াত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে না।
যেহেতু কুরআন আল্লাহর বানী তাই ধরে নেওয়া যায় এটি কুরআনের আয়াত
নয়। কারণ এখানে বলা হচ্ছে
"আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি"; আল্লাহ
নিশ্চয় তার নিজের নামে আরম্ভ করবে না! তাই ধরে নেওয়া যায় এটি আল্লাহর বাণী নয়।
এটি মুহাম্মদের নিজের বাণী,
যাতে সে আল্লাহর অনুরক্ত হয়ে বলেছে, "আল্লাহর
নামে শুরু করছি"।
আয়াত
১
আলিফ-লাম-মীম;
ব্যাখ্যাঃ
এটি কুরআনের একটি আয়াত যা সূরা বাকারা'র
১ নাম্বার আয়াত হিসেবে কুরআনে সংযোজিত হয়েছে।
কুরআনের কিছু কিছু সূরায় এরকম আয়াত আছে কয়েকটি।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আলিফ, লাম, মীম দিয়ে কি বুঝানো হয়েছে সেটা কেউই সঠিক
করে বলতে পারে না। একেকজন
একেক ভাবে ব্যাখ্যা করে এই আয়াতটি।
কিন্তু
প্রশ্ন হলো এমন একটি আয়াত মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কেন পাঠালো? কুরআন হলো আল্লাহর বাণী; আল্লাহ মুহাম্মদকে কিছু কথা বলেছে সেগুলোই
হলো আয়াত। সুতরাং
কুরআনে সব আয়াতগুলোই মুহাম্মদকে বলা আল্লাহর কথা বা বাণী।
তাহলে প্রশ্ন হলো আল্লাহ কেন এমন একটি উদ্ভট আয়াত নাযিল করলো
যেটা মুহ্ম্মদ বুঝতেই পারলো না, তাই
কাউকেই এর অর্থ বলে যেতে পারলো না; কিন্তু
কেন?
আল্লাহ
কি মানুষের সাথে ফাইজলামী করেছে? নাকী
অন্য কিছু।
কুরআনের
কথা মানুষ মুহাম্মদের কাছ থেকেই শুনেছে। কুরআনের
কথা বা বানীগুলো সবাই মুহাম্মদের মুখ থেকেই শুনেছে।
মুহাম্মদ দাবী করেছে জিব্রাইল ফেরেশতা নামের অদৃশ্য এক দেবদুত
এসে মুহাম্মদকে এসব বাণী বলেছে সেটাই মুহাম্মদ সবাইকে বলেছে।
কিন্তু মুহাম্মদ ছাড়া অন্য কেউ জিব্রাইলকে দেখেনি।
সবাই
অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছে কথাগুলো বা বাণীগুলো স্বয়ং আল্লাহর।
অন্ধবিশ্বাস ছাড়া এর কোন প্রমাণই নেই।
কিন্তু
অবিশ্বাসীরা বলে থাকে যে, কুরআনের
কথাগুলো বা বাণীগুলো মুহাম্মদ নিজে তৈরী করেছে এবং আল্লাহর কথা বা বাণী বলে চালিয়ে
দিয়েছে।
যদি
অবিশ্বাসীদের কথা সত্যি হয়ে থাকে তবে এই আয়াতটির একটি অর্থ বা ব্যাখ্যা দাড় করানো
যায়। যেহেতু মুহাম্মদ নিজে
কুরআনের কথা বা বানীগুলো তৈরী করেছে তাই সে কুরআনকে আল্লাহর বাণী বলে যাতে সবাই বিশ্বাস
করে তাই এই আয়াতটির মতো আলিফ, লাম, মীম মার্কা কথা বলে সবাইকে অভিভুত করার জন্য
এরকম একটি আয়াতের অবতারনা করেছে। অনেকটা
অং বং ছং-এর মতো।
জাদুকরেরা
তাদের জাদুকে বিশ্বাস করানোর জন্য অং বং ছং জাতিও অর্থহীন শব্দ বলে সবার কাছে তার
জাদুকে বিশ্বাসযোগ্য করার চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু
এই অং বং ছং-এর কোন অর্থ থাকে না।
ঠিক
একই ভাবে মুহাম্মদ তার তৈরী করা কুরআনকে যাতে সবাই আল্লাহর বাণী বলে বিশ্বাস করে সেজন্য
সে আলিফ, লাম, মীম জাতিয় আয়াত এনেছে।
কিন্তু এর কোন অর্থ নেই।
ভেলকীবাজদের ভেলকী দেখানোর মত কিছু অর্থহীন শব্দ।
কুরআনের
এই আলিফ, লাম, মীম এই আয়াতটিও সেই অং বং ছং-এর মতো কিছু
অর্থহীন শব্দ মাত্র।
আয়াত
২
"এটা
ঐ গ্রন্থ যার মধ্যে কোনরুপ সন্দেহ নেই; আল্লাহ
ভীরুদের (পরহেজগারদের) জন্যে এ গ্রন্থ হিদায়াত বা মুক্তিপথের দিশারী।"
ব্যাখ্যাঃ
"এটা শেই গ্রন্থ যার মধ্যে কোনরুপ সন্দেহ নেই" এই কথাটি দিয়েই সন্দেহের
সুত্রপাত করেছে কুরআন লেখক। কেন
এই কথাটা বলা হলো যে, “এতে কোনই সন্দেহ নেই”? তাহলে নিশ্চয়ই কেউ কেউ এতে সন্দেহ পোষন
করেছিল। সব
চেয়ে বড় কথা “সন্দেহ
নেই” বললেই সন্দেহ চলে আসে
প্রথমেই।
সন্দেহ
নেই বললেই কেউ সেটাকে মেনে নেবে না, প্রমাণ না দেখানো পর্যন্ত। আমি একটা বই লিখে বললাম, এটিই
সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ যাতে কোনই সন্দেহ নেই, তাতেই
কি সেটা সৃষ্টিকর্তার গ্রন্থ হয়ে গেল?
তাহলে
কেন বলা হয়েছে যে, এটি এমন গ্রন্থ যাতে কোনই সন্দেহ নেই?
প্রতি উত্তরে বলতেই হয়, এটি
এমন এক গ্রন্থ যাতে প্রচুর সন্দেহের উপাদান আছে বলে লেখক প্রথমেই সন্দেহ করতে নিষেধ
করেছেন।
আল্লাহ
ভীরুদের জন্যে এ গ্রন্থ মুক্তিপথ প্রদর্শন করে; এর
কারণ হলো এই গ্রন্থের ক্ষমতা নেই যারা আল্লাহ নামের কাল্পনিক এক রুপকথার চরিত্রকে
ভয় করে না তাদেরকে পথ দেখানোর। যারা
কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অন্ধবিশ্বাসী এ গ্রন্থ শুধু তাদেরকেই পথ প্রদর্শন করে থাকে। তাই বিজ্ঞান মনস্ক, বিজ্ঞানী, এবং
বাস্তববাদীরা এই গ্রন্থ পড়ে কোন উপকার পাবে না। শুধু তারাই এই গ্রন্থ পড়ে পথ পাবে যারা অন্ধের
মতো এই গ্রন্থটিকে সত্য বলে বিশ্বাস করবে। ফলে
কুসংস্কারাচ্ছন্নরাই হলো এই গ্রন্থের ক্রেতা এবং উপকার প্রার্থী।
আয়াত
৩
"যারা অদৃষ্ট বিষয়গুলোতে
বিশ্বাস স্থাপন করে, এবং
নামায প্রতিষ্ঠিত করে ও আমি তাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করেছি তা হতে ব্যয় করে থাকে।"
ব্যাখ্যাঃ
যারা অদৃষ্ট বা অদৃশ্য বিষয়ে বিশ্বাস করে মানে অদৃশ্য জ্বীন, পরী, শয়তান, ভুত-প্রেত, ফেরেশতা, দেবতা, দেবদুত, আল্লাহ
বা সৃষ্টিকর্তা প্রভৃতি কাল্পনিক অদৃশ্য চরিত্রকে সত্য বলে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে, আর সেই অদৃশ্য সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ
পড়ে এবং সেই অদৃশ্য সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে দান খয়রাত করে তারাই শুধু কুরআন থেকে পথ
প্রদর্শীত হতে পারবে। যারা
বাস্তববাদী, বিজ্ঞানমনস্ক
এবং কাল্পনিক রুপকথার অদৃশ্য চরিত্রগুলোকে বাস্তব বলে মনে করে না (কারণ কোন প্রমান
নেই) তারা কুরআন থেকে কোন পথ দেখতে পাবে না। তারা শুধু কুরআনকে মানুষ লিখিত এক প্রাচীণ
ধ্যান ধারনা এবং প্রাচীণ রুপকথার গল্প বা কিচ্ছা কাহিনীর গ্রন্থ হিসেবে দেখবে।
ফলে
এই গ্রন্থটি শুধু কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধবিশ্বাসী মানুষদের জন্যই পথ প্রদর্শক হিসেবে
কাজ করবে। (আর
সেই পথটি হবে কুসংস্কারের পথ, অন্ধবিশ্বাসের
পথ।)
আয়াত
৪
"এবং
যারা তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে ও তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ করা হয়েছিল, তদ্বিষয়ে
বিশ্বাস স্থাপন করে এবং পরকালের প্রতি যারা দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।"
ব্যাখ্যাঃ
অর্থাৎ যারা মুহাম্মদের উপর অবতীর্ণ হওয়া কুরআনের উপর এবং তার পূর্বে অবতীর্ণ হওয়া
তওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল
ও অন্যান্য প্রাচীণ গ্রন্থসমুহকে যারা বিশ্বাস করে এগুলো সৃষ্টিকর্তার পক্ষে থেকে
নাযিলকৃত শুধু তারাই কুরআন থেকে পথ প্রদর্শিত হতে পারবে।
অর্থাৎ
যারা কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসী, প্রাচীণ
গল্পগাথা ও রুপকথার কাল্পনিক চরিত্রগুলোকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে তারাই শুধু কুরআন
থেকে পথ প্রদর্শিত হবে।
ইতিপূর্বে
যে সব গ্রন্থ বা সৃষ্টিকর্তার বাণীর সংকলন অবতীর্ণ হয়েছে সব গুলোতেই কুরআনের মতো
প্রাচীণ ধ্যান ধারণা এবং রুপকথার গল্প সংকলিত হয়েছে। আবার এই রুপকথার গল্পগুলোর অনেকটা অংশ কুরআনে
বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু
কুরআন লেখক দাবী করছে যারা এইসব প্রাচীণ গালগপ্প বিশ্বাস করবে অন্ধভাবে তারাই কুরআন
থেকে পথ প্রদর্শিত হবে।
অর্থাৎ
কুরআন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসীদের জন্যই পথ প্রদর্শক।
আয়াত
৫
"এরাই
তাদের প্রভুর পক্ষ হতে প্রাপ্ত হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে এবং এরাই সফলকাম।"
ব্যাখ্যাঃ
যারা অদৃশ্য কাল্পনিক চরিত্রগুলোকে সত্য বলে অন্ধের মতো বিশ্বাস করবে, অর্থাৎ
যারা অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং এই কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষগুলো যখন কাল্পনিক
সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়বে, কাল্পনিক
সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে ধন সম্পদ দান করবে এবং যারা কুরআনের গাল গপ্প এবং এর পূর্ববর্তী
ঐষী গ্রন্থকে সত্য বলে বিশ্বাস করবে এবং সেইসব কথিত ঐষী গ্রন্থের রুপকথা, কাল্পনিক
চরিত্র ও কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার নানা অলৌকিক কাজ কারবার যা ঘটেনি কিন্তু গল্প আকারে
সেই সব গ্রন্থে লেখা আছে সেগুলোকে অন্ধের মতো সত্য বলে বিশ্বাস করে শুধুমাত্র তারাই
কুরআন থেকে পথ প্রদর্শিত হবে এবং তারাই প্রকৃত সফলকাম।
কিন্তু
আমরা বর্তমান কালে লক্ষ করি যে, যারা কাল্পনিক চরিত্র, প্রাচীণকালের
কাল্পনিক গল্পগুলোকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে অর্থাৎ যারা অন্ধিবশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন
তারা পৃথিবীতে সব চেয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষ। জ্ঞান
বিজ্ঞানী পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোই অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তারা সফলকামী নয়। বরং যারা বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক তারাই
বিশ্বে সব থেকে সফলকাম। জ্ঞান
বিজ্ঞানে এগিয়ে যাওয়া মানুষগুলোই সব থেকে সফল। আর বিজ্ঞানীরা সব থেকে সফল ও সম্মানীত।
কিন্তু
জ্ঞান বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলো ঐসব কাল্পনিক গ্রন্থগুলোর কাল্পনিক চরিত্র ও
প্রাচীণ রুপকথার কাহিনীগুলোকে সত্য মনে করে। বিজ্ঞান সেই সব কাল্পনিক রুপকথার কাহিনী
এবং রুপকথার কাল্পনিক চরিত্রগুলোকে মিথ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে।
ফলে
পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোই সেই সব প্রাচীনকালের মানুষের তৈরী করা রুপকথার কাহিনীগুলো
বর্ণিত হওয়া গ্রন্থগুলোকে সত্য বলে অন্ধের মতো করে বিশ্বাস করে এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন
ও অন্ধবিশ্বাসী থেকে যায়।
ফলে
সেই অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষগুলো সফলকাম হয় না। অর্থাৎ এই আয়াতে কুরআন লেখকের এই কথাটি সত্য
নয়।
আয়াত
৬
"নিশ্চয়
যারা অবিশ্বাস করেছে, তাদের তুমি সতর্ক কর বা না কর, উভয়টা
তাদের জন্য সমান, তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না।"
ব্যাখ্যাঃ
অর্থাৎ যারা অবিশ্বাস করবে, কারণ তারা বাস্তববাদী
এবং বিজ্ঞানমনস্ক তাদের কাছে সেই সব কাল্পনিক কাহিনী, রুপকথার
গল্পগুলো এবং রুপকথার চরিত্রগুলোকে সত্য বলে প্রচার করলে তারা বিশ্বাস করবে না। তাদেরকে
কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার মিথ্যা ভয় দেখালেও তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না। কারণটা খুব পরিস্কার, যারা
বাস্তববাদী ও বিজ্ঞান মনস্ক তারা প্রাচীণ কালের রুপকথার কাহিনী বা কাল্পনিক গল্পগাথাকে
সত্য বলে বিশ্বাস করে না। এজন্যই
তারা বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক। তারা
কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসী মানুষদের ভ্রান্ত বিশ্বাসকে বিশ্বাস করে না। তারা জানে এগুলো প্রাচীণ কুসংস্কারাচ্ছান্ন
ও অন্ধবিশ্বাসী মানুষদের তৈরী করা প্রাচীণ রুপকথার কাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। এগুলোর কোন প্রমাণ নেই। এবং বাস্তবতার সাথে এসব রুপকথার কাহিনীগুলোর
কোন মিল নেই। তাই
এগুলো কুসংস্কার।
তাই
বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমনস্করা তথ্য প্রমাণ ছাড়া এসব কাল্পনিক রুপকথার কাহিনী ও চরিত্রগুলোকে
সত্য বলে মানবে না। কারণ
তারা বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক। ফলে
তাদের হাজার বার বললেও প্রমাণ ছাড়া তারা এসব বিশ্বাস করবে না।
আর
তাই কুরআন লেখক এই আয়াতে বলেছে, তাদেরকে (অর্থাৎ বাস্তববাদী
ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষগুলোকে) (কাল্পনিক) সৃষ্টিকর্তার বিষয়ে সতর্ক করলেও যা ফল দেবে, না করলেও সেই একই ফল দেবে। তারা প্রাচীণকালের কাল্পনিক রুপকথার গল্পগুলোকে
সত্য বলে বিশ্বাস করবে না (কারণ সেগুলো কুসংস্কার)।
আয়াত
৭
"আল্লাহ
তাদের অন্তরসমূহের উপর ও তাদের কর্ণসমূহের উপর মোহরাংকিত করে দিয়েছেন এবং তাদের চক্ষুসমূহের
উপর আবরণ পড়ে আছে এবং তাদের জন্য রয়েছে গুরুতর শাস্তি।"
ব্যাখ্যাঃ
মুহাম্মদ যখন কুরআনের বাণীগুলো তৈরী করে মানুষকে বললো সেগুলো আল্লাহর বাণী তখন মানুষ
তাকে বিশ্বাস করেনি। এবং
নবী হিসেবে মেনেও নেয়নি। মাত্র
কিছু সংখ্যক মানুষ মুহাম্মদকে আল্লাহর নবী হিসেবে মেনেছে। কিন্তু বড় অংশের মানুষ মুহাম্মদকে মিথ্যেবাদী
ও প্রতারক হিসেবে রায় দিয়েছে। ফলে
যখন মুহাম্মদ দেখলো কিছু সংখ্যক মানুষ তাকে বিশ্বাস করছে না এবং এতে করে যারা তাকে
অন্ধের মত বিশ্বাস করেছে তারাও সেটা নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দে পড়ছে, তখন সে বুদ্ধি বের করে বলে যে, সেই
সব অবিশ্বাসীদের অন্তরকে আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছে, তাদের
কান ও চোখের উপর পর্দা ফেলে দিয়েছেন বলে তারা তাকে নবী হিসেবে বিশ্বাস করছে না। ফলে তার অন্ধবিশ্বাসী অনুসারীরা আর তাকে
নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেনি। এতে
করে তার নবীয়ত্বকে বাঁচানো সম্ভব হয়।
কিন্তু
তার এই বাণীটিই যে দেড় হাজার বছর পরে এসে তার নবীয়ত্বকে মিথ্যে প্রমাণ করে দেবে সেটা
মুহাম্মদ চিন্তা করতে পারেনি বলেই এই আয়াতটি সে তৈরী করেছে। এই আয়াতটিতে কুরআন লেখক বলেছে, যারা
মুহাম্মদকে অবিশ্বাস করে তাদের অন্তরে এবং কানে আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছে, তাদের
চোখের উপর পর্দা ফেলে দিয়েছে বলে তারা মুহাম্মদকে নবী হিসেবে বিশ্বাস করে না এবং তার
দাবীকৃত কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করে না।
অর্থাৎ
যারা বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক তাদের অন্তরে ও কানে মোহর মেরে দেওয়া বলে এবং তাদের
চোখের উপর পর্দা দেওয়া বলে তারা সেইসব প্রাচীণ আমলের কাল্পনিক রুপকথার গল্পগুলোকে
বিশ্বাস করে না এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসীদের মতো কুসংস্কারকে বিশ্বাস করে
না।
অর্থাৎ
যারা বাস্তববাদী ও বিজ্ঞান মনস্ক তারা কুসংস্কারকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে না বলে তাদের
অন্তরে ও কানে মোহর মারা ও তাদের চোখের উপর পর্দা দেওয়া বলে কুরআন লেখক দাবী করেছে।
কিন্তু
বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যায় বিজ্ঞানমনস্ক ও বাস্তববাদী মানুষগুলোই পৃথিবীতে সব থেকে
এগিয়ে জ্ঞান বিজ্ঞানে। কিন্তু
যারা অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন তারাই জ্ঞান বিজ্ঞানে পিছিয়ে পড়া মানুষ; তাদের
অন্তরেই অন্ধবিশ্বাসের মোহর মারা, তাদের
কান ও চোখের উপরই কুসংস্কারের পর্দা দেওয়া। কিন্তু
এটা কোন অতিক্ষমতাবাণ সৃষ্টিকর্তা দেয়নি, এটি
করেছে মুহাম্মদ নিজে। অর্থাৎ
মুহাম্মদ মুসলমানদের অন্তরে অন্ধবিশ্বাসের মোহর মেরে দিয়েছে এবং তাদের কান ও চোখ
কুসংস্কারের পর্দা দিয়ে ঢেকে রেখেছে।
অর্থাৎ
অবিশ্বাসী বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষদের অন্তরে মোহর মারা হয়নি এবং তাদের কান
ও চোখের উপর কোন পর্দাও ফেলা হয়নি। বরং
এই আয়াতটি দিয়ে মুহাম্মদ নিজে মুসলমান অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষদের অন্তরে
অন্ধবিশ্বাসের মোহর মেরে দিয়েছে এবং তাদের কান ও চোখের উপর কুসংস্কারের পর্দা দিয়ে
ঢেকে দিয়েছে।
আর
তাই এই আয়াতে কুরআন লেখক বিজ্ঞানমনস্ক ও বাস্তববাদীদেরকে যে শাস্তির ভয় দেখিয়ে মুসলমান
অন্ধবিশ্বাসীদের মনে শান্তি এনেছে,
সেই শাস্তিকেও বিজ্ঞানমনস্ক ও বাস্তববাদীরা বিশ্বাস করে না। তাই সেই সব ভয়কে পাত্তা দেয় না তারা।
সৃষ্টিকর্তা
নামের রুপকথার কাল্পনিক অস্তিত্বটি কখনই বাস্তব জগতে এসে জ্ঞানী মানুষদেরকে শাস্তি
দিতে পারবে না। এবং অন্ধবিশ্বাসী, কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও ভ্রুমগ্রস্থ মানুষগুলোকে
পুরস্কৃত করার ক্ষমতাও সেই রুপকথার কাল্পনিক অদৃশ্য সৃষ্টিকর্তার নেই। সেই কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব শুধুই
অন্ধবিশ্বাসী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের মনে। তাই সে শুধু কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসী
মানুষদেরকেই ভয় দেখাতে পারবে। আর
এই ভয়টা মানুষিক রোগীর ভ্রান্তিমূলক ভয়।
বি.দ্র.:
এই পর্বগুলোতে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে কুরআনকে বিচার করা হয়েছে। বাস্তববাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে
কুরআনকে বাস্তবতার ও বিজ্ঞানের প্রেক্ষিতে বিচার করলে কুরআন যে রুপ ধারণ করবে এই পর্বগুলোতে
সেটাই পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment