আস্তিকের সাথে নাস্তিকের আলোচনা :
আস্তিক :- আপনি কোথা হতে এসেছেন মানে আপনার
জন্ম হয়েছে কোথা থেকে ??
নাস্তিকঃ আমার বাবা মার কাছ থেকে।
আস্তিক - ok ঠিক আছে,তাহলে আপনার
বাবা মা??
নাস্তিকঃ ভাই, সহজ কথা, আমার
বাবা মা তাদের বাবা মায়ের কাছ থেকে এসেছে,
আবার তাদের বাবা মা উনাদের বাবা মায়ের
কাছে থেকে...............l
আস্তিক :- তার মানে সবাই তাহলে একটা পূর্বতমপুরুষ
এবং একটা পূর্বতম-নারী থেকে সৃষ্টি হয়েছে,তাহলে তাদের
পূর্বতম ২ জনকে কে সৃষ্টি করল??
নাস্তিকঃ - ভাই প্রকৃতি থেকে সেই
২জন সৃষ্টি হয়েছে ?
আস্তিক:-তাহলে প্রকৃতি কে সৃষ্টি করেছে????
নাস্তিকঃ ভাই প্রকৃতিকে কেউ সৃষ্টি করে নাই।
আস্তিক :- তাহলে প্রকৃতি আসলো কিভাবে ??
নাস্তিক:- প্রকৃতিকে আসতে হয়নি ওটা আগে থেকেই
ছিল l
আস্তিক:- সেটা কিভাবে হয় কোন কিছুইতো এমনি
এমনি সৃষ্টি হতে পারে না l প্রত্যেক জিনিসেরই
কোন না কোন সৃষ্টিকর্তা লাগে l সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কোন
কিছু সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব l
নাস্তিক :- তাহলে আপনি বলছেন যে প্রকৃতিকে
সৃষ্টি করেছে কোন এক সৃষ্টিকর্তা ?
আস্তিক:- হ্যা হ্যা ঠিক তাই !
নাস্তিক :- কিন্তু আপনিতো বলেছেন সব কিছুরই
একজন সৃষ্টিকর্তা আছে তাহলে সেই সৃষ্টিকর্তারও নিশ্চই একজন সৃষ্টিকর্তা আছে ?
আস্তিক :- সেরকমই তো মনে হচ্ছে !
নাস্তিক:- তাহলে আবার সেই সৃষ্টিকর্তারও একজন
সৃষ্টিকর্তা আছে ?
আস্তিক :- সেরকমই তো মনে হচ্ছে !
নাস্তিক :- আবার সেই সৃষ্টিকর্তারও একজন সৃষ্টিকর্তা
থাকবে, এভাবে একটার পরে একটা সৃষ্টিকর্তা আসতেই থাকবে
তাইতো ?
আস্তিক:- যুক্তিতে তো তাই বোঝা যাচ্ছে !
আস্তিক :- না তাহলেতো একজন সৃষ্টিকর্তা থাকলো
না বহু সৃষ্টিকর্তা থাকলো !
নাস্তিক :- ঠিক সেরকম করে মানুষের কোন একজন
নির্দিষ্ট পূর্বতম-পুরুষ এবং পূর্বতম-নারী বলে কিছু নেই ! মানুষ পৃথিবীতে অন্য কোন
প্রাণী থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ হয়েছে ! এবং বংশগতির মাধ্যমে প্রকৃতিতে বেচে আছে
!
আস্তিক :- তাহলে সেই অন্য প্রানীটা কোথা থেকে
এসেছে ?
নাস্তিক:- সেটা এসেছে অন্য একটা প্রাণী থেকে
বিবর্তিত হয়ে l
আস্তিক :- আবার তাহলে ওই অন্য প্রানীটা কোথা
থেকে এসেছে ?
নাস্তিক :- ওই অন্য প্রানিটাও অন্য আরেকটা
প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়ে এসেছে l এভাবে একটা প্রাণী
থেকে অন্য আরেকটা প্রাণী বিবর্তিত হয়ে আজকের প্রাণী জগত তৈরী হয়েছে l মানুষ নিজেও একটা প্রাণী l আর তাই মানুষও অন্য কোন এক প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়ে এসেছে l
আস্তিক :- তাহলেতো সব প্রাণীর কোন না কোন
পূর্বতম-প্রাণী থাকবে যে হবে একা অর্থাত একটা !
নাস্তিক :- ঠিক তাই ! সব প্রাণী এসেছে পূর্বতম
একটা প্রাণী থেকে l আর সেই একটা প্রাণী কোন বড় প্রাণী ছিল না
! সেটা ছিল একটা এককোষী প্রাণী l এই এককোষী প্রাণী পরে বিভাজিত হয়ে বহুকোষী প্রাণী সৃষ্টি হয়েছে
l এবং এভাবেই একটা প্রাণী বিবর্তিত হয়ে অন্য প্রাণীতে পরিবর্তিত
হয়ে বহু প্রজাতির প্রাণীজগত সৃষ্টি করেছে l
আস্তিক :- তাহলে সেই এককোষী প্রানীটা আসলো
কোথা থেকে ?
নাস্তিক :- সেই এককোষী প্রানীটা তৈরী হয়েছে
জৈব পদার্থ প্রোটিন থেকে আবার প্রোটিন তৈরী হয়েছে জৈব যৌগ এমাইনো এসিড থেকে l
আবার এই এমাইনো এসিড তৈরী হয়েছে জড় পদার্থ কার্বন, হাইড্রুজেন এবং অক্সিজেন থেকে l এভাবেই জড় জগত থেকে জীব জগত সৃষ্টি হয়েছে l
আস্তিক :- তাহলে ওই জড় পদার্থ কার্বন,
হাইড্রুজেন এবং অক্সিজেন কোথা থেকে আসলো ?
নাস্তিক:- এগুলো এসেছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনিকা
ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউটন থেকে l এগুলো আবার তৈরী হয়েছে আলোক কনিকা ফোটন থেকে l
আস্তিক:- তাহলে এই ফোটন কোথা থেকে আসলো ?
নাস্তিক :- ফোটন তৈরী হয়েছে এনার্জি বা শক্তি
থেকে l এই শক্তিই হচ্ছে প্রকৃতির একমাত্র উপাদান
যেগুলোকে সৃষ্টি করা যায়না এবং ধ্বংসও করা যায়না l এরা প্রকৃতিতে সবসময় ধরে বিদ্যমান থাকে ! এগুলো সৃষ্টি হয়না আবার ধ্বংসও হয়না শুধু
এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তর হয় কিন্তু কখনই ধ্বংশ হয় না l
আস্তিক:- ও তাহলে এই এনার্জি বা শক্তিগুলোই
প্রকৃতিতে চিরদিন ধরে থাকে ? আর এরাই সব কিছু সৃষ্টি
করে ?
নাস্তিক :- অনেকটা তাই !
আস্তিক :- তাহলে এরাই হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা ?
নাস্তিক :- এদেরকে সৃষ্টিকর্তা বলা যায় কিন্তু
প্রকৃতপক্ষে এরাও সৃষ্টিকর্তা নয় l কারণ এগুলো নিজেরাই
পরিবর্তিত হয়ে যায় l এবং এগুলোই পরিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি করে এই বিশ্বজগত
l তাই যদিও এরা সৃষ্টি করে তবুও এরা সৃষ্টিকর্তা নয় l কারণ এগুলো তো কোন কিছু সৃষ্টি করতে নিজেরাই রুপান্তরিত হয়ে
যাচ্ছে ফলে কোন সৃষ্টিকর্তা অবশিষ্ট থাকছে না l তাই এগুলো সৃষ্টিকর্তা
নয় l এরাই চিরদিন ছিল এবং এরাই চিরদিন থাকবে l
আস্তিক:- তাহলে এই বিশ্বজগতের কোন সৃষ্টিকর্তা
নেই ?
নাস্তিক :- না; এই বিশ্বজগতের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই l
আস্তিক :- তাহলে যে সবাই সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টিকর্তা
বলে চিত্কার করে আর নানা প্রমান উপস্থাপন করে সেগুলো তাহলে মিথ্যা ?
নাস্তিক:- হ্যা সেগুলো সব মিথ্যে কথা l যদি কোন কিছুর সৃষ্টিকর্তা থাকতেই হয় তবে সেই সৃষ্টিকর্তারও
একজন সৃষ্টিকর্তা থাকতে হবে l ফলে আসলে কোন সৃষ্টিকর্তাই
থাকবে না l আর তাই কোন সৃষ্টিকর্তা নেই বাস্তবে l যারা বলে সৃষ্টিকর্তা আছে তারা মিথ্যে কথা বলে অথবা না বুঝে
বলে l
আস্তিক :- এবার আমি বুঝতে পেরেছি !
আর এভাবেই আস্তিক সত্যিটা বুঝতে পারে l সে বোকা আস্তিক থেকে বুদ্ধিমান নাস্তিকে পরিনত হয় l
তাই আসুন সব আস্তিক বুদ্ধিমান হয়ে জ্ঞানী
নাস্তিকে পরিনত হয়ে যান !
No comments:
Post a Comment