Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Sunday, November 22, 2015

কোরআনের বর্ণনায় সমতল পৃথিবী - পর্ব ৭


 পর্ব ৬-এর পর থেকে




তৃতীয় অধ্যায়
সমতল পৃথিবী এবং পাহাড়
সমতল পৃথিবীকে স্থির রাখতে স্থাপিত পাহাড়-পর্বতসমূহ

নিচের আয়াত টি লক্ষ করুন :
(৩৫) সুরা ফাতির; আয়াত ৪১ :
     "নিশ্চয় আল্লাহ আসমান যমীন স্থির রাখেন, যাতে টলে না যায় l যদি এগুলো টলে যায় তবে তিনি ব্যতিত কে এগুলোকে স্থির রাখবে ? তিনি সহনশীল, ক্ষমাশীল l"


(৩৫) সুরা ফাতির; আয়াত ৪১ :
      "আল্লাহ আকাশমন্ডলী পৃথিবীকে সংরক্ষণ করেন যাতে ওরা স্থানচ্যুত না হয়, ওরা স্থানচ্যুত হলে তিনি ব্যতিত কে ওদেরকে সংরক্ষণ করবে ? তিনি অতি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ন l"  (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)

(৩৫) সুরা আল-ফাতির; আয়াত ৪১ :
       "আল্লাহ আলবৎ মহাকাশমন্ডলী পৃথিবীকে ধরে রেখেছেন পাছে তারা কক্ষচ্যুত হয়; আর যদি বা তারা কক্ষচ্যুত হয় তাহলে তিনি ব্যতিত তাদের ধরে রাখবার মতো কেউ নেই l নি:সন্দেহ তিনি অতি অমায়িক, প্ররিত্রানকারী l"  (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)

SURA 35. Fatir
41. It is Allah Who sustains the heavens and the earth, lest they cease [to function]: and if they should fail, there is none - not one - can sustain them thereafter: Verily He is Most Forbearing, Oft-Forgiving. (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 35. FATIR
41. lo! Allah graspeth the heavens and the earth that they deviate not, and if they were to deviate there is not one that could grasp them after Him. lo! He is ever Clement, Forgiving.  (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াতটিতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ পৃথিবী আকাশমন্ডলীকে স্থির রাখেন বা সংরক্ষণ করেন অথবা ধরে রাখেন যেন এগুলো টলে না যায় বা কক্ষচ্যুত না হয় অথবা স্থানচ্যুত না হয় l আর যদি এগুলো টলে যায় বা স্থানচ্যুত বা কক্ষচ্যুত হয় তবে আল্লাহ ব্যতিত কেউ নেই যে এগুলোকে স্থির রাখবেন l তিনি সহনশীল ক্ষমাশীল l
অর্থাত আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীকে আল্লাহ স্থির রেখেছেন যেন এগুলো এদের স্থান থেকে বিচ্যুত না হয় l যদি এগুলো স্থানচ্যুত হয় বা নির্দিষ্ট স্থান থেকে সড়ে যায় তবে আল্লাহ ছাড়া কেউ এগুলোকে ধরে রাখতে পারবে না অর্থাত স্থির রাখতে পারবে না l
লক্ষ করুন এখানে বলা হচ্ছে যে আল্লাহ পৃথিবী আকাশমন্ডলীকে স্থির রাখছেন বা ধরে রাখছেন তাই এগুলো টলে যাচ্ছে না বা স্থানচ্যুত হচ্ছে না l যদি এগুলোকে তিনি স্থির না রাখতেন তবে এগুলো স্থানচ্যুত হতো বা কক্ষ থেকে সড়ে পড়তো l
অর্থাত আল্লাহই আকাশ পৃথিবীকে স্থির রাখছেন বা এদেরকে নির্দিষ্ট স্থানে ধরে রাখছেন যেন এগুলো এদের নির্দিষ্ট স্থান থেকে বিচ্যুত না হয় l
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে আকাশমন্ডলী পৃথিবী তাদের নির্দিষ্ট স্থানে স্থির রয়েছে বা স্থানচ্যুত হচ্ছে না l

এবার আরেকটা আয়াত লক্ষ করি:
২১). সুরা আল-আম্বিয়া; আয়াত ৩১:
     "আমি পৃথিবীতে ভারী বোঝা রেখে দিয়েছি যাতে তাদেরকে নিয়ে পৃথিবী ঝুকে না পরে এবং তাতে প্রশস্ত পথ রেখেছি, যাতে তারা পথ প্রাপ্ত হয় l"
২১). সুরা আল-আম্বিয়া; আয়াত ৩১:
     "এবং আমি পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছি সুদৃঢ় পর্বত যাতে পৃথিবী তাদেরকে নিয়ে এদিক ওদিক ঢলে না যায় এবং আমি তাতে করে দিয়েছি প্রশস্ত পথ যাতে তারা গন্তব্যস্থলে পৌছতে পারে l" (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
২১). সুরা আল-আম্বিয়া; আয়াত ৩১:
      "আর পৃথিবীতে আমরা পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছি পাছে তাদের সঙ্গে এটি আন্দোলিত হয়; আর ওতে আমরা বানিয়েছি চওড়া পথঘাট যেন তারা সৎপথ প্রাপ্ত হয় l" (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)

SURA 21. Anbiyaa
31. And We have set on the earth mountains standing firm, lest it should shake with them, and We have made therein broad highways [between mountains] for them to pass through: that they may receive Guidance.  (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 21. Al-ANBIYA (THE PROPHETS)
31. And We have placed in the earth firm hills lest it quake with them, and We have placed therein ravines as roads that haply they may find their way.  (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ পৃথিবীতে সুদৃঢ়ভাবে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যেন পৃথিবী মানুষকে নিয়ে ঝুকে না যায় বা এদিক ওদিক ঢলে না যায় অথবা এটি আন্দোলিত বা আলোড়িত না হয় l এবং এতে প্রশস্ত পথও সৃষ্টি করেছেন যেন মানুষ গন্তব্যস্থলে যেতে পারে l
অর্থাত আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যেন এটি কোনো দিকে ঝুকে বা ঢলে না যায় অথবা আন্দোলিত না হয় l
লক্ষ করুন বলা হচ্ছে পাহাড় স্থাপন করা হয়েছে যেন এটি কোনদিকে ঝুকে না পরে বা আন্দোলিত না হয় l পাহাড়-পর্বত স্থাপনের উদ্দেশ্য হলো পৃথিবীকে স্থির রাখা যেন এটি কোনদিকে ঢলে বা ঝুকে না যায় অথবা আন্দোলিত না হয় l অর্থাত পাহাড়-পর্বত না থাকলে পৃথিবী ঢলে পড়তো বা ঝুকে পড়তো মানুষকে নিয়ে অথবা আন্দোলিত হতো l তাহলে আল্লাহ পাহাড় পর্বত স্থাপন করলেন এবং এরফলে আর পৃথিবী কোনো দিকে ঝুকে বা ঢলে পড়ছে না অথবা আন্দোলিত হচ্ছে না l

আরেকটা আয়াত লক্ষ করি;
৩১). সুরা লোকমান; আয়াত ১০ :
     "তিনি খুটি ব্যতিত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ l তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পরে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্বপ্রকার জন্তু l আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছি, অতপর তাতে উদগত করেছি সর্বপ্রকার কল্যানকর উদ্ভিদরাজি l"

৩১). সুরা লোকমান; আয়াত ১০ :
     "তিনি আকাশমন্ডলী নির্মান করেছেন স্থম্ভ ব্যতিত, তোমরা এটা দেখছো; তিনিই পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা যাতে এটা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্বপ্রকার জীব-জন্তু এবং আমিই আকাশ হতে পানি বর্ষণ করে এতে উদগত করি সর্বপ্রকার কল্যানকর উদ্ভিদরাজি l"  (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
                
৩১). সুরা লোকমান; আয়াত ১০ :
      "তিনি মহাকাশমন্ডলীকে সৃষ্টি করেছেন কোনো খুটি ছাড়াই,- তোমরা তা দেখতেই পাচ্ছ; আর তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা পাছে এটি তোমাদের নিয়ে ঢলে পড়ে; আর এতে তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন হরেক রকমের জীবজন্তু l আর আকাশ থেকে তিনি বর্ষণ করেন পানি, তারপর তিনি এতে উত্পাদন করেন সব রকমের হিতকর জোড়া l"  (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)

SURA 31. luqman (the Wise)
10. He created the heavens without any pillars that ye can see; He set on the earth mountains standing firm, lest it should shake with you; and He scattered through it beasts of all kinds. We send down rain from the sky, and produce on the earth every kind of noble creature, in pairs.  (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 31. lUQMAN
10. He hath created the heavens without supports that ye can see, and hath cast into the earth firm hills, so that it quake not with you; and He hath dispersed therein all kinds of beasts. And We send down water from the sky and We cause [plants] of every goodly kind to grow therein.  (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন কোনো খুটি বা স্তম্ভ ছাড়াই, আর এটা মানুষ দেখতেই পায় l আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বতসমূহ সৃষ্টি করেছেন পৃথিবী যেন মানুষসহ ঢলে না পড়ে বা নড়ে না উঠে অথবা কেপে না উঠে l আর এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন
সব প্রকার জীব-জন্তু l আল্লাহই আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে উত্পন্ন করে সব রকম কল্যাণকর উদ্ভিত l
অর্থাত আল্লাহ আকাশ সৃষ্টি করেছেন খুটি ছাড়া আর পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত সৃষ্টি করেছেন যেন পৃথিবী মানুষকে নিয়ে ঢলে না পড়ে বা নড়েচড়ে না উঠে অথবা কেপে না উঠে l এতে সব ধরনের উদ্ভিদরাজি তৈরী করেছেন আকাশ হতে বৃষ্টির মাধ্যমে পানি বর্ষণের দ্বারা l
লক্ষ করুন বলা হচ্ছে আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত তৈরী করেছেন যেন পৃথিবী কোনো দিকে ঢলে না পড়ে বা নড়ে না উঠে অথবা কেপে না উঠে l অর্থাত যদি আল্লাহ পাহাড়-পর্বত তৈরী না করতো তাহলে পৃথিবী কোনো দিকে ঢলে পড়তো বা এটি নড়েচড়ে উঠতো অথবা এটি কেপে উঠতো l আর আল্লাহ পাহাড়-পর্বত তৈরী করেছেন আর তাই পৃথিবী ঢলে পড়ছে না বা নড়েচড়ে উঠছে না অথবা কেপে উঠছে না l

(১৬) সুরা আন-নাহল; আয়াত ১৫ :
      "এবং তিনি পৃথিবীর উপর বোঝা রেখেছেন যে, কখনো যেন তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে-দুলে না পড়ে এবং নদী পথ তৈরী করেছেন, যাতে তোমরা পথ প্রদর্শিত হও l"

(১৬) সুরা আন-নাহল; আয়াত ১৫ :
     "আর তিনি পৃথিবীতে সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে আন্দোলিত না হয় এবং স্থাপন করেছেন নদ-নদী পথ, যাতে তোমরা তোমাদের গন্তব্য স্থলে পৌছতে পার l"  (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)

(১৬) সুরা আন-নাহল; আয়াত ১৫ :
     "আর তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পাহাড়-পর্বত, পাছে তোমাদের নিয়ে তা কাত হয়ে যায়; আর নদ-নদী রাস্তাঘাট, যেন তোমরা সঠিক পথ লাভ কর l"  (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)

SURA 16. Nahl
15. And He has set up on the earth mountains standing firm, lest it should shake with you; and rivers and roads; that ye may guide yourselves; (Translation by Abdullah Yusuf Ali)

SURA 16. AN-NAHl (THE BEE)
15. And He hath cast into the earth firm hills that it quake not with you, and streams and roads that ye may find a way. (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)

এই আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যাতে পৃথিবী মানুষকে নিয়ে হেলেদুলে না উঠে, কাত হয়ে না পড়ে, নড়েচড়ে না উঠে, কেপে না উঠে অথবা আন্দোলিত না হয় l আর এতে নদ-নদী রাস্তা তৈরী করেছেন যেন মানুষ পথ চলতে পারে l
অর্থাত আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পবত স্থাপন করেছেন যেন পৃথিবী কাত হয়ে বা ঢলে না পড়ে,  কেপে বা আন্দোলিত হয়ে না উঠে l
লক্ষ করুন এখানে বলা হচ্ছে যে পাহাড়-পর্বত সৃষ্টি করা হয়েছে যেন পৃথিবী কোনো দিকে কাত হয়ে বা ঢলে না পড়ে অথবা এটি নড়ে বা আন্দোলিত না হয় l অর্থাত পাহাড় পর্বত না থাকলে পৃথিবী কোনো একদিকে কাত হয়ে বা ঢলে পরতো অথবা এটি কেপে বা আন্দোলিত হয়ে উঠতো l আর তাই আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত সৃষ্টি করলেন তাই পৃথিবী কোন একদিকে ঢলে বা কাত হয়ে পড়ছে না অথবা এটি আর কেপে বা আন্দোলিত হয়ে উঠছে না l

এখন উপরে উল্লেখিত আয়াতগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করি :

সুরা ফাতির-এর ৪১ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী
আল্লাহ পৃথিবীকে আকাশকে স্থির রাখেন বা ধরে রাখেন যেন এগুলো টলে না যায় বা স্থানচ্যুত হয় না l
২১:৩১ অনুযায়ী 
আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যেন পৃথিবী কোনো দিকে ঢলে না পরে বা কোনো দিকে ঝুকে না যায় অথবা এটি আন্দোলিত না হয় l
৩১:১০ অনুযায়ী
আল্লাহ পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পাহাড়-পর্বত যেন পৃথিবী কোনদিকে ঢলে বা ঝুকে না পরে অথবা নড়েচড়ে বা কেপে অথবা আন্দোলিত না হয় l
১৬:১৫ অনুযায়ী
আল্লাহ পৃথিবীর উপর পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যেন পৃথিবী হেলেদুলে বা নড়েচড়ে না উঠে, বা কোনো দিকে কাত হয়ে না পড়ে অথবা আন্দোলিত না হয় l

সুতরাং উপরিউক্ত আয়াত গুলো থেকে বুঝা যাচ্ছে যে আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যাতে পৃথিবী এর স্থান বা কক্ষ থেকে বিচ্যুত না হয় l অথবা এটি কোনদিকে ঢলে বা ঝুকে না যায় বা কাত হয়ে না যায় কোনো দিকে l অথবা পৃথিবী এদিক ওদিক হেলে দুলে না উঠে অর্থাত আন্দোলিত হয়ে না উঠে l
তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে যদি আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন না করতো তাহলে পৃথিবী কোনো একদিকে কাত হয়ে বা ঢলে বা ঝুকে পড়তো অথবা এটি কেপে বা আন্দোলিত হয়ে উঠতো l আর যেহেতু আল্লাহ পাহাড় পর্বত স্থাপন করে দিয়েছেন পৃথিবীতে তাই এটি আর কোনো দিকে কাত হয়ে পরছে না বা কোনো দিকে ঢলে বা ঝুকে পরছে না এবং এটা কেপে বা আন্দোলিত হচ্ছে না l
তাহলে আপনারা ভালো করে চিন্তা করে দেখুন যে এখানে কোন পৃথিবীর কথা বলা হয়েছে ! যদি গোলক আকার পৃথিবীর কথা বলা হত তাহলে কখনই বলা হত না যে পৃথিবী কাত হয়ে বা কোনো দিয়ে ঢলে বা ঝুকে যাবে l কারণ গোলক আকার পৃথিবীর কোনো সম্ভাবনা নেই যে এটি কোনো দিরে ঝুকে যাবে বা ঢলে পড়বে l কারণ আমাদের পৃথিবী প্রচন্ড গতিতে এর নিজের অভ্যন্তরীণ অক্ষে ঘুরছে এবং এটি সূর্যের চার পাশেও ঘুরছে প্রচন্ড গতিতে l কিন্তু তবুও এটির কোনো দিকে ঝুকে বা ঢলে পরার সম্ভাবনা নেই l অর্থাত গোলক আকার পৃথিবী কোনো দিকে কাত হয়ে বা ঢলে বা ঝুকে পরা অসম্ভব l কিন্তু এখানে বলা হচ্ছে পৃথিবী কোনো দিকে ঝুকে বা ঢলে অর্থাত কাত হয়ে পড়ছে না কারন পাহাড়-পর্বত স্থাপনের ফলে l যদি পাহাড়-পর্বত স্থাপন না করা হত তবে পৃথিবী কোনদিকে ঢলে বা ঝুকে পরতো অথবা কাত হয়ে পরতো l
এখন আপনারা চিন্তা করে দেখুন এখানে কোন আকৃতির পৃথিবীর কথা বলা হয়েছে l
এর উত্তর খুব সহজ; এখানে সমতল পৃথিবীর কথা বলা হচ্ছে l অর্থাত যদি সমতল পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত না স্থাপন করা হত তবে সমতল পৃথিবী কোনো একদিকে কাত হয়ে বা ঢলে বা ঝুকে পরতো l কারণ সমতল পৃথিবীর ক্ষেত্রেই কোনো দিকে ঢলে বা ঝুকে অথবা কাত হয়ে পরা সম্ভব l গোলক আকার পৃথিবীর ক্ষেত্রে সম্ভব নয় l
সুতরাং এই আয়াতে সমতল পৃথিবীর কথাই বলা হয়েছে l
অর্থাত পৃথিবী সমতল l

আর এই আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে পৃথিবীর কাত হয়ে বা ঢলে অথবা কোনো দিকে ঝুকে যাওয়ার l সমতল পৃথিবী কোনো দিকে ঝুকে যেত যদি আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত না স্থাপন করতেন l এবং আল্লাহ পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন বলে পৃথিবী আর কোনো দিকে ঝুকে বা ঢলে অথবা কোনদিকে কাত হয়ে পরছে না l অর্থাত পৃথিবী সমতল বলেই এভাবে পাহাড়-পর্বত স্থাপনের ফলে স্থির হয়ে আছে অর্থাত কোনো দিকে কাত হয়ে বা ঢলে পরছে না l
আর তাই সুরা ফাতির-এর ৪১ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে যে আল্লাহ আকাশ পৃথিবীকে স্থির রাখেন যেন এটি কোনো দিকে ঢলে বা ঝুকে না পড়ে বা কক্ষচ্যুত বা স্থানচ্যুত না হয় l
আর এখানে সমতল পৃথিবীর কথাই বলা হচ্ছে l অর্থাত সমতল পৃথিবীকে এবং আকাশকে আল্লাহ স্থির রেখেছেন l
অর্থাত এই আয়াতগুলো অনুযায়ী পৃথিবী সমতল l

আবার ধরি উপরিউক্ত আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যেন পৃথিবী কেপে বা আন্দোলিত হয়ে না উঠে l অর্থাত আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড় পর্বত যদি স্থাপন না করতো তবে পৃথিবী কেপে উঠতো অথবা আন্দোলিত বা আলোড়িত হত l কিন্তু আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড় পর্বত স্থাপন করার ফলে পৃথিবী আর কেপে উঠছে না বা আন্দোলিত হচ্ছে না l
এখানেও সমতল পৃথিবীর কথাই বলা হচ্ছে l অর্থাত সমতল পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করার ফলেই এটি আর কেপে বা আন্দোলিত হয়ে উঠছে না l নয়তো পৃথিবী কেপে উঠতো বা আন্দোলিত হত l এখানে, সমতল পৃথিবীতেই পাহাড় স্থাপনের ফলে এটি পাহাড়-পর্বতের ভারে আর কেপে উঠবেনা বা আন্দোলিত হবে না l কারণ সমস্ত সমতল পৃথিবীতে ভারী পাহাড় স্থাপন করলেই এটি আর কেপে উঠবে না বা আন্দোলিত হবে না l অর্থাত এখানে সমতল পৃথিবীর কথাই বলা হচ্ছে l কারণ গোলক আকার পুরো পৃথিবী কেপে বা আন্দোলিত হওয়া সম্ভব নয় l আর গোলক আকার পৃথিবীতে পাহাড় পর্বতের কোনো ভুমিকা নেই এর নিজের চারপাশে এবং সূর্যের চার পাশে ঘুর্ণনে  l এবং গোলক আকার পৃথিবী কখনই কেপে বা আন্দোলিত হবে না যেটা পাহাড়-পর্বত থামাতে পারে l কারণ পৃথিবী গোলকের মত আর ঘুর্নায়মান গোলক কিভাবে কেপে উঠবে বা আন্দোলিত হবে যেটা পাহাড়-পর্বত থামাতে পারবে ? এখানে এটা অসম্ভব ব্যাপার !
সমতল পৃথিবীর পক্ষেই কেপে উঠা বা আন্দোলিত হওয়া সম্ভব l এবং ভারী পাহাড়-পর্বত স্থাপন করার মাধ্যমে সেই কাপাকাপি বা আলোড়ন থামানো সম্ভব l
অর্থাত সমতল পৃথিবী যেন কেপে না উঠে বা আন্দোলিত না হয় অথবা এটি কোনো দিকে ঝুকে বা ঢলে না পড়ে সেই জন্যই আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন এবং তারফলে সমতল পৃথিবী স্থির হয়ে আছে l অর্থাত এটি কোনো দিকে ঝুকে বা ঢলে পরছেনা মানুষকে নিয়ে আবার এটি আন্দোলিতও হচ্ছে না পাহাড়-পর্বত স্থাপনের ফলে l
অর্থাত পৃথিবী সমতল l

অনেক মুসলমান বলে এবং অনেক অনুবাদক এই আয়াত গুলোর অনুবাদ করে যে, এখানে ভুমিকম্পের কথা বলা হয়েছে l অর্থাত ভূমিকম্প যেন না হয় সেজন্য আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন l
তাহলে উপরের আয়াতগুলো অনুযায়ী অর্থ হবে;
"আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন যেন পৃথিবীতে ভূমিকম্প না হয় l"
অর্থাত আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন পৃথিবীতে ভূমিকম্প না হওয়ার জন্য l তাহলে যদি আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত না স্থাপন করতো তাহলে ভূমিকম্প হত l আর তাই আল্লাহ পৃথিবীতে এই পাহাড়-পর্বতগুলো স্থাপন করেছেন l
তাহলে এই অর্থ অনুযায়ী বুঝা যায় যে, আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড়-পর্বত স্থাপন করার পর পৃথিবীতে আর ভূমিকম্প হচ্ছে না l
এখন দেখুন, কথাটা কি সঠিক হলো ? আমরা জানি যে পৃথিবীতে অনেক অনেক পাহাড়-পর্বত আছে l তবুও পৃথিবীতে হর-হামেশাই ভূমিকম্প হচ্ছে ব্যাপক আকারে l তাহলে কি হলো ? আল্লাহর কথা মিথ্যে হয়ে যাচ্ছে না কি ? আল্লাহ পৃথিবীতে ভূমিকম্প ঠেকানোর জন্য পাহাড়-পর্বত স্থাপন করলো কিন্তু ভূমিকম্পতো থামল না উপরন্তু ভূমিকম্প হতে থাকলো এবং বেড়ে গেল !
সুতরাং এই আয়াতগুলোতে কেপে উঠা বা আন্দোলিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে সম্পূর্ণ পৃথিবীর একসাথে l অথবা এখানে পৃথিবীর কোনো এক দিকে ঝুকে বা ঢলে পরার কথা বলা হয়েছে l আর এটা সমতল পৃথিবীর ক্ষেত্রেই সম্ভব l
অর্থাত এখানে কোনো ভুল নেই যে এই আয়াতগুলোতে সমতল পৃথিবীর কথাই বলা হয়েছে l
সুতরাং নি:সন্দেহে পৃথিবী সমতল কথাই বলা হয়েছে কোরআনে l

(চলবে....)



(বি.দ্র.: লেখাটি এমকেএ আহমেদ রচিত "কোরআনের বর্ণনায় সমতল পৃথিবী- ১ম খন্ড" থেকে ধারাবাহিক ভাবে নেওয়া হচ্ছে।)

No comments:

Post a Comment