Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Tuesday, November 17, 2015

কোরআনের বর্ণনায় সমতল পৃথিবী - পর্ব ৩

কোরআনের বর্ণনায় সমতল পৃথিবী - পর্ব  
পর্ব -এর পর থেকে...
আর পৃথিবী যে সমতল সেটা নিচের আয়াত থেকে আরো স্পষ্ট হওয়া যাবে ;
(১৮). সুরা আল কাহফ; আয়াত ৮৬ ৯০ :
         "অবশেষে যখন সূর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন l আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন l"
      "অবশেষে  তিনি যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্য সূর্যতাপ থেকে আত্বরক্ষার কোনো আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি l"
 

(১৮). সুরা আল কাহফ; আয়াত ৮৬ ৯০ :
       "চলতে চলতে যখন তিনি সূর্য ডোবার স্থানে পৌছলেন তখন তিনি সূর্যকে এক পংকিল (কর্দমাক্ত) জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি তথায় এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন; আমি বললাম: হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার l"
        "চলতে চলতে যখন তিনি সূর্যোদয় স্থলে পৌছলেন তখন তিনি দেখলেন ওটা এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদিত হচ্ছে যাদের জন্যে সূর্যতাপ হতে আত্বরক্ষার কোনো অন্তরাল আমি সৃষ্টিকরি নাই l"  (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
 
 
(১৮). সুরা আল কাহফ; আয়াত ৮৬ ৯০ :
        "পরে যখন তিনি সূর্য অস্ত যাবার স্থানে পৌছলেন, তিনি এটিকে দেখতে পেলেন এক কালো জলাশয়ে অস্তগমন করছে, আর তার কাছে পেলেন এক অধিবাসী l আমরা- বললাম 'হে যুলকারনাইন, তুমি শাস্তি দিতে পার অথবা এদের সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার l"
       "পরে যখন তিনি সূর্য উদয় হওয়ার যায়গায় পৌছলেন, তিনি এটিকে দেখতে পেলেন উদয় হচ্ছে এক অধিবাসীর উপরে যাদের জন্য আমরা এর থেকে কোনো আবরণ বানাই নি,- "  (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)
 
SURA 18. Kahf, or the Cave.
86. “Until, when he reached the setting of the sun, he found it set in a spring of murky water: Near it he found a People: We said: "O Zul-qarnain! [thou hast authority,] either to punish them, or to treat them with kindness." 
90. “Until, when he came to the rising of the sun, he found it rising on a people for whom We had provided no covering protection against the sun.”
(Translation by Abdullah Yusuf Ali)
 
SURA 18. Al-KAHF
86. “Till, when he reached the setting-place of the sun, he found it setting in a muddy spring, and found a people thereabout. We said: O Dhu'l-Qarneyn! Either punish or show them kindness.” 
90. “Till, when he reached the rising-place of the sun, he found it rising on apeople for whom We had appointed no shelter therefrom.” (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)
Sura 18: Surah al-Kahf
86. “until, when he reached the setting of the sun [i.e.: the west], he found it [as if] setting in a spring of dark mud, and he found near it a people. We [i.e.:allah] said, ‘O Dhul-Qarnayn, either you punish [them] or else adopt among them [a way of] goodness’.”
90. “Until, when he came to the rising of the sun [i.e, the east] he found it rising on a people for whom We had not made against it any shield.” (Translated by Saheeh International)
 
এই আয়াত দুটোতে বলা হয়েছে যে যুলকারনাইন ভ্রমন করতে করতে সূর্য অস্ত যাবার স্থানে (পশ্চিম প্রান্তে) যখম পৌছল তখন সে সূর্যটাকে এক জলাশয়ে বা জলাশয়ের ধারে ডুবতে দেখল l এবং সেখানে এক অধিবাসীদের দেখা পেল l তখন আল্লাহ বা ফেরেস্তারা তাকে বলল সে যদি চায় তবে সে সেই আদিবাসীদের কে শাস্তি দিতে পারে অথবা ভালো ভাবে গ্রহণ করতে পারে l
আবার যখন সে সূর্যের উদয়াচলে (পূর্ব প্রান্তে) পৌছল তখন সে এমন এক অধিবাসীর দেখা পেল যে সূর্য তাদের মাথার উপর দিয়ে বা তাদের খুব কাছ থেকে উদিত হয় l আর তাদের জন্য সুর্যতাপের থেকে রক্ষা পাবার জন্য কোনো আবরণ আল্লাহ তৈরী করেননি l
 
অর্থাত এখানে বলা হয়েছে যে যুলকারনাইন যখন সূর্যের অস্তাচল মানে পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তের একদম শেষ সীমানায় পৌছলেন তখন সে সূর্যকে জলাশয়ের ধারে অস্ত যেতে দেখলেন l আর সেখানে এক অধিবাসীর দেখা পেলেন l যেটা পৃথিবীর পশ্চিমের একদম শেষ প্রান্তে l
আবার সে যখন সূর্যের উদয়াচল অর্থাত পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তের শেষ সীমানায় পৌছলেন তখন সে সূর্যকে এক অধিবাসীর খুব কাছ থেকে উদয় হতে দেখলেন l যাদের সূর্য তাপের হাত থেকে রক্ষা পাবার কোনো ব্যবস্থা নেই l আর সেটা পূর্বের একদম শেষ প্রান্তে l
এখানে লক্ষ করুন বলা হচ্ছে যুলকারনাইন পৃথিবীর পশ্চিমের শেষ প্রান্ত পূর্বের শেষ প্রান্তে পৌছেছিলেন l অর্থাত পৃথিবীর দুইটি শেষ প্রান্ত আছে l এর মানে দাড়ায় পৃথিবী সমতল এবং এর পশ্চিমের শেষ প্রান্ত আছে আর পূর্বের শেষ প্রান্ত আছে l তাহলে এর উত্তরের শেষ প্রান্ত থাকবে এবং দক্ষিনেরও শেষ প্রান্ত থাকবে l অর্থাত পৃথিবী পুরোপুরি সমতল l
তাহলে কোরানের বর্ণনায় পৃথিবী সমতল!
 
আমার লেখাটা এই পর্যন্ত পরে আস্তিক ভাইয়েরা যাবেন ক্ষেপে l তারা বলবেন যে "না কোরানে এরকম বলা হয়নি , আপনি মিথ্যা কথা বলছেন, কোরানের ভুল ব্যাখ্যা করছেন l" ইত্যাদি ইত্যাদি l
তারা বলবে যে কোরানে বলা হয়েছে যুলকারনাইন সূর্যাস্তের সময় পৌছেছেন আর তার কাছে মনে হয়েছে যে সূর্য জলাশয়ে অস্ত গেছে l কোরানে কখনোই বলা হয়নি যে সে পৃথিবীর শেষ প্রান্তে গিয়েছিল l
হ্যা আমিও তার সাথে একমত যে কোরানে সরাসরি বলা হয়নি যে সে পৃথিবীর শেষ প্রান্তেই গিয়েছিল l
আর আমি তাদেরকে অনুরোধ করব যেন তারা সেই সুরাটি (আল কাহফ) তারা ভালো ভাবে পড়ে l
আসুন আমরা ভালো করে বোঝার চেষ্টা করি সেই আয়াত দুটিতে আসলে কি বলা হয়েছে l
এই আয়াতে যে আরবি শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা হলো মাগরিব l আর এর দুটি অর্থ হতে পারে l সূর্যাস্তের স্থান অথবা সূর্যাস্তের সময় l এখন আসুন এই দুটি শব্দ দিয়ে আয়াতটির অর্থ করে দেখি কোনটা মানানসই l
                    "অবশেষে যখন সে সূর্য অস্ত যাবার সময়ে পৌছলেন; তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন (তার মনে হলো) এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন l আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন l"
এখানে লক্ষ করুন বলা হচ্ছে সূর্য অস্ত যাবার সময়ে পৌছলেন এবং সূর্যকে অস্ত যেতে দেখলেন l কিন্তু সে কোথায় গেল সে কথা বলা নেই l তাহলে সে কোন জায়গায় গিয়ে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল তার কোনো বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে না l অর্থ হয়ে যাচ্ছে সে সূর্যাস্তের সময়ে গেল; কিন্তু কোথায় গেল ? আর যদি এখানে মাগরিব-এর অর্থ ধরা হয় সূর্যাস্তের স্থান তাহলে অর্থ হচ্ছে যুলকারনাইন সূর্যাস্তের স্থানে পৌছল l তবে বাক্যটি পূর্ণ হয় অর্থাত মানানসই হয় l তাই এখানে মাগরিবের অর্থ হবে সূর্যাস্তের স্থান, সূর্যাস্তের সময় নয় l একটু বুদ্ধি থাকলেই ধরা যাচ্ছে এখানে কোন অর্থ ব্যবহার হয়েছে l
 
আবার অন্য আয়াতটির অর্থ হবে :
         "অবশেষে  তিনি যখন সূর্যের উদয়ের সময় পৌছলেন, তখন তিনি তাকে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন, যাদের জন্য সূর্যতাপ থেকে আত্বরক্ষার কোনো আড়াল আমি সৃষ্টি করিনি l"
 
এখানেও একই ব্যাপার হচ্ছে l যখন সে সূর্য উদয়ের সময়ে পৌছলেন তিনি সূর্যকে এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখলেন l যাদের সূর্যতাপ থেকে রক্ষার কোনো আবরণ রাখা হয়নি l
এখানে তাহলে জগাখিচুড়ি হয়ে যাচ্ছে l যখন সে পৌছল আবার সূর্যাস্তের সময়ে পৌছল l এটা দিয়ে তাহলে কি অর্থ হলো ? তার পরেও প্রশ্ন থেকে যায়, সে সূর্য উদয়ের সময়ে কোথায় পৌছল যেখানে সে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল ?  (তাও আবার তাদের সূর্য তাপ থেকে রক্ষার কোনো আবরণ নেই l সেই জায়গাটা গোলক আকার পৃথিবীতে কোথায় আছে ?)
কিন্তু এখানে যদি মাগরিবের অর্থ করা হয় সূর্যাস্তের স্থান তাহলে বাক্যটিতে কোনো সমস্যা থাকে না l তখন অর্থ হয় যখন সে সূর্য উদয়ের স্থানে পৌছল l তাহলে এখানে মাগরিবের অর্থ সূর্যাস্তের স্থান এটাই ১০০% সঠিক l
সুতরাং এটার অন্য অর্থ করা বোকামি (ত্যাড়ামী) ছাড়া আর কিছুই নয় l.
 
আবার যদি সুরাটি (সুরা আল কাহফ) ভালো করে দেখেন তাহলে দেখতে পাবেন যে ৬০ নাম্বার আয়াত থেকে ৮২ নাম্বার আয়াত পর্যন্ত মুসা (:) এবং খিযির নামে একজন মহামানবের (সুপারম্যান বা সুপারহিউমান-এর)  কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে (সংক্ষেপে) l যেখানে মহামানবটি এতই ক্ষমতাশালী যে ভবিষ্যত জানে অর্থাত ভবিষ্যতে কি হবে সেটা আগে থেকেই জানে l এবং তার গায়ে অনেক শক্তি (সে বাকা দেয়াল একাই সোজা করে দেয়) l
আর এরপরে সেই সুরাটির ৮৩ নাম্বার আয়াত থেকে ৯৮ নাম্বার আয়াত পর্যন্ত যুলকারনাইন-এর কাহিনী সংক্ষেপে বলা হয়েছে l এখানে যুলকারনাইন নিজেও একজন মহামানব (বা সুপারম্যান) l যুলকারনাইন সূর্যের অস্তাচল এবং উদয়াচল পর্যন্ত পরিভ্রমন করে l আর সেখানে একটা সম্প্রদায়কে সে একাই শাস্তি দিয়ে মেরে ফেলে এবং তাদেরকে আল্লাহর কাছে পাঠিয়ে দেয় l  শুধু তাই নয় সে দুই পর্বতের মাঝে একটা শক্ত প্রাচীর তৈরী করে দেয় সেখানের আরেকটা সম্প্রদায়ের মানুষদের সাহায্য নিয়ে l
সুতরাং তার মত সুপারম্যান বা মহামানব পৃথিবীর(সমতল) দুই প্রান্ত ভ্রমন করবে এতে অবাক হবার কি আছে ?
তাই এই আয়াত দুটি এবং এর আগে পরের আয়াতগুলো বিবেচনা করলেই বোঝা যায় যে সূর্যের অস্ত যাওয়ার স্থান (পৃথিবীর পশ্চিমের শেষ প্রান্ত) এবং উদয়ের স্থানেই(পৃথিবীর পূর্বের শেষ প্রান্ত) পৌছেছিল যুলকারনাইন l এবং সূর্যকে পঙ্কিল জলাশয়ে বা জলাশয়ের ধারে অস্ত যেতে দেখেছিল l আর এক সম্প্রদায়ের উপর দিয়ে সূর্য উদয় হতে দেখেছিল অর্থাত সূর্যের খুব কাছে ছিল তারা l তাদের সূর্য তাপ থেকে রক্ষা পাবার কোনো ব্যবস্থা আল্লাহ করে দেননি ?
 
 

চিত্র : পৃথিবীর শেষ সীমানায় পৌছানো যথাক্রমে পূর্ব ও পশ্চিমে l
 
পর্যন্ত এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে কোরআনের বর্ণনায় আমাদের এই পৃথিবী সম্পূর্ণ রূপে সমতল l
 
আর যারা এর পরও নাক কুচকে বলবেন যে না পৃথিবী মোটেও সমতল নয় l কোরানে একথা বলাই হয়নি l
আমি বলবো আসুন তাহলে আরেকটু আলোচনা করি l
নিচের আয়াতটি দেখুন :
(০২). সুরা আল বাক্বারাহ ; আয়াত ১৪৮; ১৪৯ ১৫০ :
       "আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে , যে দিকে সে মুখ করে (এবাদত করবে) l কাজেই সত্কাজে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে এগিয়ে যাও l যেখানেই তোমরা থাকবে, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সমবেত করবেন l নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল l"
        "আর যে স্থান থেকে তুমি বের হও, নিজের মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফেরাও, নিঃসন্দেহে এটাই হলো তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্ধারিত বাস্তব সত্য l বস্তুত : তোমার পালনকর্তা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনবহিত নন l"
    "আর তোমরা যেখান থেকেই বেরিয়ে আস এবং যেখানেই অবস্থান কর, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে করে মানুষের জন্য তোমাদের সাথে ঝগড়া করার অবকাশ না থাকে l অবশ্য যারা অবিবেচক, তাদের কথা আলাদা l কাজেই তাদের আপত্তিতে ভিত হয়ো না l আমাকেই ভয় কর l যাতে আমি তোমাদের জন্যে আমার অনুগ্রহ সমূহ পূর্ণ করে দেই এবং তাতে যেন তোমরা সরলপথ প্রাপ্ত হও l"
 
(০২). সুরা আল বাক্বারাহ ; আয়াত ১৪৮; ১৪৯ ১৫০ :
           "প্রত্যেকের জন্যে এক একটি লক্ষস্থল রয়েছে, ঐদিকেই সে মুখমন্ডল প্রত্যাবর্তিত করে, অতএব তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও; তোমরা যেখানেই থাক না কেন, আল্লাহ তোমাদের সকলকেই একত্রিত করবেন, নিশ্চই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান l"
           "এবং তুমি যেখান হতেই বের হবে, তোমার মুখ মসজিদে হারামের দিকে প্রত্যাবর্তিত কর এবং নিশ্চয়ই এটাই তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে সত্য, এবং তোমরা যা করছো তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন l"
           "আর তুমি যেখান হতেই বের হও না কেন, তোমার মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরাও যে যেখানে আছ তোমাদের মুখমন্ডল সেদিকেই প্রত্যাবর্তিত কর যেন তাদের অন্তর্গত অত্যাচারীগণ ব্যতিত অন্য কেউ তোমাদের সাথে বিতর্ক করতে না পারে, অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকেই ভয় কর যেন আমি তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করি এবং যেন তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হও l"  (অনুবাদ- প্রফেসর : মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান)
 
(০২). সুরা আল বাক্বারাহ ; আয়াত ১৪৮; ১৪৯ ১৫০ :
           "আর প্রত্যেকের জন্য একটি কেন্দ্রস্থল আছে যে দিকে সে ফেরে, কাজেই সৎ কর্মে  একে অন্যের সাথে তোমরা প্রতিযোগিতা করো l যেখানেই তোমরা থাক না কেন, আল্লাহ তোমাদের সবাইকে একত্রিত করবেন l নি:সন্দেহে আল্লাহ সব কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান l"
           "আর যেখান থেকেই তুমি আস, তোমরা মুখ পবিত্র মসজিদের দিকে ফেরাও l নি:সন্দেহ এটি তোমার প্রভুর কাছ থেকে সত্য l আর অবশ্যই আল্লাহ বেখেয়াল নন তোমরা যা করো সে-সম্বন্ধে l"
           "আর যেখান থেকেই তুমি আস, তোমার মুখ পবিত্র মসজিদের দিকে ফেরাবে l আর যেখানেই তোমরা থাকো, তোমাদের মুখ সেই দিকেই ফেরাবে l যাতে তোমাদের বিরুদ্ধে লোকজনদের কোনো হুজ্জত না থাকে- তাদের মাঝে যারা অন্যায় করে তারা ব্যতিত l অতএব তাদের ভয় করো না, বরং ভয় করো আমাকে l আর যাতে আমি তোমাদের উপরে আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করতে পারি, আর যাতে তোমরা সুপথগামী হতে পারো,- "  (অনুবাদ:- : জহুরুল হক)
 
SURA 2. Al-BAQARA
148. To each is a goal to which Allah turns him; then strive together [as in a race] Towards all that is good. Wheresoever ye are, Allah will bring you Together. For Allah Hath power over all things.
149. From whencesoever Thou startest forth, turn Thy face in the direction of the sacred Mosque; that is indeed the truth from the lord. And Allah is not unmindful of what ye do.
150. So from whencesoever Thou startest forth, turn Thy face in the direction of the sacred Mosque; and wheresoever ye are, Turn your face thither: that there be no ground of dispute against you among the people, except those of them that are bent on wickedness; so fear them not, but fear Me; and that I may complete My favours on you, and ye May [consent to] be guided; (Translation by Abdullah Yusuf Ali)
 
SURA 2. Al-BAQARA
148. And each one hath a goal toward which he turneth; so vie with one another in good works. Wheresoever ye may be, Allah will bring you all together. lo! Allah is Able to do all things.
149. And whencesoever thou comest forth [for prayer, O Muhammad] turn thy face toward the Inviolable Place of Worship. lo! it is the Truth from thy lord. Allah is not unaware of what ye do.
150. Whencesoever thou comest forth turn thy face toward the Inviolable Place of Worship; and wheresoever ye may be [O Muslims] turn your faces toward it [when ye pray] so that men may have no argument against you, save such of them as do
injustice - Fear them not, but fear Me! - and so that I may complete My grace upon you, and that ye may be guided.  (Translation by Mohammad Marmaduke Pickthal)
 
এই আয়াত তিনটি অনুযায়ী আল্লাহ বলছেন যে সবার জন্য কেবলা একেকদিকে অর্থাত সবারই একটা কেন্দ্র আছে আর সেটা একেক জনের কাছে একেক দিকে l আর সে দিকেই সে ইবাদত করে l আর আল্লাহ সবাইকে সত্কাজে অর্থাত ইবাদতের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করতে বলেছেন বা সেদিকেই ইবাদত করতে বলছেন l সবাই যেখানেই থাকুক না কেন আল্লাহ তাদের এভাবেই একত্রিত করেন l আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান এটা নিশ্চিত l
আর মানুষ যে জায়গা থেকেই বের হোক অর্থাত যেখানেই থাকুক না কেন তাকে কেবলার দিকে মুখ ফেরাতে বা কেবলার দিকে ইবাদত করতে আদেশ দিচ্ছেন l এটাই আল্লাহর নির্ধারিত সত্য বা নিয়ম l আল্লাহ মানুষের সব বিষয়েই অবগত আছেন l
আর মানুষ যেদিক থেকেই বেরিয়ে আসুক না কেন অর্থাত যেদিকেই যাক না কেন বা যেদিকেই থাকুক না কেন, আল্লাহ তাদের কে কেবলার দিকেই মুখ ফেরাতে বলছেন অর্থাত তাদেরকে কেবলার দিকে মুখ ফিরিয়ে ইবাদত করতে বলছেন l আর এটা করলেই কেও এই বিষয়ে সমালোচনা বা বিতর্ক করবে না যারা বেশি খারাপ তারা ব্যতিত l সেই সব মানুষদেরকে ভয় করতে নিষেধ করেছেন আল্লাহ এবং আল্লাহকেই ভয় করতে বলেছেন যেন তিনি মানুষকে তার নিয়ামত বা রহমত দান করতে পারেন l যাতে মানুষ সুপথ বা সত্যের পথ খুঁজে পেতে পারে l
 
অর্থাত আল্লাহ মানুষের জন্য একটা কেবলা বা কেন্দ্র নির্ধারণ করে দিয়েছেন l আর সেই কেন্দ্রকে কেন্দ্র করেই সবাই ইবাদত করে l যার কাছে কেবলা পশ্চিম দিকে সে পশ্চিম দিকে মুখ ফিরিয়ে ইবাদত বা নামাজ আদায় করে l আর যার কাছে কেবলা পূর্ব দিকে সে পূর্ব দিকে ইবাদত করে l আবার যার কাছে কেবলা দক্ষিন দিকে সে দক্ষিন দিকে ইবাদত করে l এভাবেই আল্লাহ মানুষ কে ইবাদত করতে বলছেন l আর এভাবেই আল্লাহ সবাইকে একসাথে করেন বা একত্রিত করেন l
মানুষ যেখানেই থাকুক বা যেখানেই যাক, শুধুমাত্র কেবলার দিকে মুখ করেই ইবাদত করতে বলেছেন l এটাই আল্লাহর নির্ধারিত একমাত্র নিয়ম l মানুষ যেখানেই থাকুক বা যেখান থেকেই আসুক সে যেন একমাত্র কেবলার দিকে মুখ করেই ইবাদত করে l সে যদি কেবলার দক্ষিনে থাকে তবে উত্তর দিকে, পশ্চিমে থাকলে পূর্ব দিকে l এমনকি যদি সে উত্তর-পূর্বের কোনার দিকে থাকে তবুও সে যেন কেবলার দিকে মুখ করে অর্থাত কোনাকোনি ভাবে ইবাদত করে l এভাবে সবগুলো দিকের কোনাকোনি স্থানে থাকলেও মানুষ যেন  শুধুমাত্র কেবলা মুখী হয়েই ইবাদত করে l অন্য কোনো দিকে যেন ইবাদত না করে l এটা করলেই মানুষ মুসলমানদের এভাবে ইবাদত করার জন্য সমালোচনা বা বিতর্ক করতে পারবে না ; যারা খুব খারাপ বা অবিবেচক তারা বাদে l আর মানুষ যেন আল্লাহকে ভয় করে এভাবেই ইবাদত করে l এতেই আল্লাহ তার রহমত দান করবে মানুষ কে যেন তারা সঠিক পথ প্রাপ্ত হয় l
 
এখানে লক্ষ করুন বলা হচ্ছে যে একটা কেন্দ্রকে বা কেবলাকে কেন্দ্র করে ইবাদত করতে l যে যেখানেই থাকুক না কেন শুধুমাত্র কেবলার দিকে মুখ করেই ইবাদত করার কথা বলা হয়েছে l অন্য দিকে মুখ করে ইবাদত করা যাবে না l মানুষ যেখানেই থাকুক না কেন , সে যদি কোনাকোনি দিকেও থাকে তবুও যেন সে কোনাকোনি হয়েই ইবাদত করে l এটা আল্লাহর নিয়ম অর্থাত এর ব্যতিক্রম হওয়া যাবে না l কারণ আল্লাহ এভাবেই সবাইকে একত্রিত করবেন l মানে সারা পৃথিবীর সবাইকে একত্রিত করবেন l এবং যদি কেও কোনাকোনি অথবা ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে ইবাদত করার জন্য সমালোচনা বা আপত্তি অথবা বিতর্ক করে সেটাকে ভয় করতে নিষেধ করেছেন l উপরন্তু আল্লাহকেই ভয় করতে বলেছেন l
আর এটা তখনি সম্ভব হবে অর্থাত সারা পৃথিবীর মানুষের কেবলার দিকে ইবাদত করে একত্রিত হওয়া তখনি সম্ভব হবে যদি পৃথিবী সমতল হয় l যদি পৃথিবী গোলক আকার বা অর্ধ-গোলকাকার হয় তবে এটা কখনই সম্ভব হবে না যে সারা পৃথিবীর সব মানুষ কেবলার দিকে ফিরে ইবাদত করতে পারবে l যে গ্রিন ল্যান্ডে আছে সে কিছুতেই কেবলা মুখী হতে পারবে না , অস্ট্রেলিয়াতে থেকে কেবলা মুখী হওয়া সম্ভব নয় , যদি কেও এন্টার্কটিকা থাকে সে পারবেনা কেবলা মুখী হয়ে ইবাদত করতে l আর যদি কেও মেরুর দিকে থাকে সে কখনই পারবে না কেবলা মুখী হয়ে ইবাদত করতে l এই কেবলা মুখী ইবাদত তত্বটা তখনি প্রয়োগ করা যায় যদি পৃথিবী সমতল হয় l একমাত্র সমতল হলেই পৃথিবীর সব মানুষ একত্রিত হতে পারবে কেবলা মুখী ইবাদতের মাধ্যমে l তা না হলে গোলকাকার পৃথিবীতে কেবলার বিপরীত দিকে (পৃথিবীর অন্য পাশে) থেকে কেবলা মুখী হয়ে সারা পৃথিবীর সব মানুষের একত্রিত হওয়া কখনই সম্ভব নয় l কিন্তু এটা খুব ভালো ভাবে সম্ভব হবে যদি পৃথিবী সমতল হয় l
অর্থাত এই আয়াত অনুযায়ী পৃথিবী সমতল l এবং সম্পূর্ণ ভাবেই সমতল l
 
কিন্তু এখনো অনেক মুসলমান ভাইয়েরা বলবেন যে না এভাবে পৃথিবীর সব জায়গায় থেকে ইবাদত করা সম্ভব l এটাই সব চেয়ে উত্তম পন্থা আর তাই আল্লাহ স্বয়ং এই ব্যবস্থা করে দিয়েছেন l এই নিয়েমই হচ্ছে একমাত্র উপায় l
তখন আমি বলব ভাই একটু ভালো ভাবে চিন্তা করে দেখুন l এই নিয়মে অর্থাত কেবলা মুখী হয়ে ইবাদত করাটাই কি সব চেয়ে ভালো উপায় l এর থেকে কি ভালো উপায় ছিল না ?
আচ্ছা ভেবে দেখুন তো এই নিয়মে আমাদের এই পৃথিবীতেই ইবাদত করতে এত ঝামেলা l দুই মের অঞ্চলে থেকে ইবাদত করা কি সম্ভব যেখানে বছরে ছয় মাস দিন আর ছয় মাস রাত থাকে l সেখানে কিভাবে দিনে পাচবার নামাজ পরা সম্ভব ? আর রোজা করাইবা কিভাবে সম্ভব ? আর যেসব জায়গাতে দিন ছোট তারা খুব সহজেই রোজা করতে পারছেন; আর যেখানে দিন খুব বড় সেখানের মানুষ একই সময়ে খুব কষ্টে রোজা রাখছে l এটা কি বৈষম্য নয় ? আবার শীত প্রধান দেশে রোজা রাখা কত সহজ আর আরামদায়ক l আবার প্রক্ষান্তরে গ্রীষ্ম প্রধান দেশে রোজা রাখা কত কষ্টকর একবার ভেবে দেখেছেন কি ? যদি আল্লাহ সর্ব জ্ঞানীই হবে তবে এরকম বৈষম্য রাখবেন কেন ? কিন্তু যদি আরব কেন্দ্রিক সমতল পৃথিবীর কথা চিন্তা করেন তবে দেখবেন যে এই বৈষম্যটা আর থাকছে না l অর্থাত সমতল পৃথিবীতে রোজা এবং নামাজ খুব সহজে পড়া যাচ্ছে l
 
আবার চিন্তা করুন যদি কেও মেরুর কাছাকাছি থাকে তবে সে কিভাবে কেবলা মুখী হবে ? সারা পৃথিবীর মানুষ ভিন্ন ভিন্ন রিজিওনে থেকে কি ইবাদতের মাধ্যমে একত্রিত হতে পারবে ? অথচ সমতল পৃথিবীর কথা চিন্তা করে দেখেন যে খুব সহজেই সারা পৃথিবীর মানুষ একটা কেন্দ্রকে বা কেবলাকে কেন্দ্র করে কত সহজে একসাথে মিলিত হতে পারে ! কিন্তু সারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে থেকে কখনই একসাথে মিলিত হতে পারবে না l যেখানে সময়ের ব্যবধান থাকে প্রত্যেক স্থানের আলাদা আলাদা l যখন পৃথিবীর এক পাশে দিন কিন্তু অন্য পাশে রাত l আবার যখন একপাশে সকাল তখন অন্য আরেক পাশে বিকেল বা দুপুর l তাহলে কিভাবে সারা পৃথিবীর মানুষকে আল্লাহ একসাথে করবেন ? অথচ যদি সমতল পৃথিবীর কথা চিন্তা করেন তবে পৃথিবীর কোথাও সময়ের পার্থক্য থাকবে না l সারা পৃথিবীর সব মানুষ খুব সহজেই একসাথে হতে পারবে l এবং সারা পৃথিবীতে নামাজ রোজার সময় হবে এক এবং সমান l কারণ তখন পুরো পৃথিবীতেই সময় থাকবে এক l আর পৃথিবী গোলকাকার বলেই বিভিন্ন স্থানে সময় বিভিন্ন l
আর তাই ইবাদতের যে নিয়ম এই আয়াত তিনটিতে বলা হয়েছে সেটা সমতল পৃথিবীর কথাই বলা হয়েছে l
 
তারপর সেই আস্তিক ভাই বলবেন যে না ভাই আপনি ভুল কথা বলছেন; পৃথিবী গোল তার পরেওতো মানুষ ইবাদত করছে !
আমি বলব হ্যা করছে ইবাদত করছে কিন্তু তাদের নিজেদের নিয়মে করছে l এই আয়াত অনুযায়ী যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবে করছে না l তারপরেও যারা করছে তারা এই বৈষম্য মেনে নিয়েই করছে l কোরানের কথা মত তারা কখনই একসাথে বা একই সময়ে ইবাদত করতে পারছে না l কারণ হলো এই নিয়মটা করা হয়েছে সমতল পৃথিবীর কথা চিন্তা করে l যেখানে সময়ের ব্যবধান নেই মানে পৃথিবীর সব জায়গায় একই সময় l আর সব জায়গায় একই সাথে গ্রীষ্ম এবং শীতকাল থাকে l এবং পৃথিবীর সব জায়গায় রাত এবং দিন একই সময়ে সমান থাকে l আর এই তত্ত্বটা আপনি সমতল পৃথিবীর ক্ষেত্রেই মিলাতে পারবেন l আমাদের গোলকাকার পৃথিবীতে এটা সবচেয়ে বড় অনিয়ম l যদি আল্লাহ সত্যি গোলকাকার পৃথিবীর কথা চিন্তা করে এই নিয়ম করতেন তবে অবশ্যই এর থেকে অনেক ভালো নিয়ম করে দিতেন l
আল্লাহ সমতল পৃথিবীর জন্যই এই নিয়ম করেছেন l তার মানে হলো পৃথিবী সমতল!
 
তারপরও সেই ভাই টি বলবে না ভাই আপনি ঠিক কথা বলছেন না l এটাই সব চেয়ে ভালো নিয়ম l স্বয়ং আল্লাহ এই নিয়মটি করেছেন, তাই এর কোনো ভুল হতে পারেনা l
তখন আমি তাকে বলব- ভাই ভালো করে ভেবে দেখেন ! যেখানে আমাদের এই পৃথিবীতেই এই নিয়ম চলছে না সেখানে যখন মানুষ মহাশুন্যে থাকবে যেমন ধরুন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, সেখান থেকে কিভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে মানুষ l সেখানে না দিন না রাত অবস্তা সব সময় l এমন কি সৌর জগতের বাইরে সবসময়ই রাত l সেখানে মানুষ কিভাবে ইবাদত করবে ? কিভাবে কেবলা মুখী হবে ? আর কিভাবেই আল্লাহ তাদেরকে পৃথিবীর মানুষের সাথে একত্রিত করবেন l
আর ধরুন মানুষ যখন চাদে বসবাস শুরু করবে অথবা সেখানে মহাকাশের ট্রানজিশন জুন তৈরী করবে সেখানে মানুষ ইবাদত করবে কিভাবে তাও আবার কেবলা মুখী হয়ে ?
২০২৩ সালে মানুষ মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছে বসবাসের জন্য l আগামী একশ বছরে সেখানে একটা সভ্যতা গড়ে উঠবে l তাহলে তারা কিভাবে সেখানে ইবাদত করবে সেই নিয়ম কিন্তু দেয়া হয়নি সমস্ত কোরানে l তারা কি কেবলা মুখী হতে পারবে? নাকি ইবাদতের সময়ে আল্লাহ তাদের কে একত্রিত করতে পারবেন পৃথিবীর মানুষের সাথে? যেখানে সময়ের পার্থক্য এবং পরিবেশের পার্থক্য থাকবে অনেক বেশি পৃথিবীর সাথে l তাহলে কি দেখছেন না যে এই নিয়মটা মোটেও কোনো ভালো নিয়ম হয়নি l আর এটা করা হয়েছে সমতল পৃথিবীর কথা চিন্তা করেই !
পৃথিবী এবং এই মহাবিশ্বের কথা চিন্তা করে নয়!
 
তারপরও সেই মুসলিম ভাইটি বলতে চাইবেন যে না যেহেতু এই নিয়মটা আল্লাহ করেছেন তাই এটিই সবচেয়ে ভালো নিয়ম ! আপনি কি এর থেকে ভালো কোনো নিয়ম বের করতে পারবেন ?
তখন আমি তাকে বলব ভাই আমিতো মানুষ l আমার বুদ্ধি মান্সুশের চেয়ে বেশি নয় l কিন্তু আপনাদের আল্লাহ সর্ব জ্ঞানী l
তারপরও সেই মুসলিম ভাইটি বলতে চাইবেন যে না যেহেতু এই নিয়মটা আল্লাহ করেছেন তাই এটিই সবচেয়ে ভালো নিয়ম ! আপনি কি এর থেকে ভালো কোনো নিয়ম বের করতে পারবেন ?
তখন আমি তাকে বলব ভাই আমিতো মানুষ l আমার বুদ্ধি মানুষের চেয়ে বেশি নয় l কিন্তু আপনাদের আল্লাহ সর্ব জ্ঞানী l তাহলে সে কি পারত না এর চেয়ে অনেক ভালো একটা নিয়ম করে দিতে l তার নিয়মে এরকম বড় ত্রুটি থাকে কি করে l সে কেন মানুষের মতই একটা বোকার মত নিয়ম করে দিয়েছেন l যদি সে মানুষের চেয়ে ভালো কোনো নিয়ম নাই বের করতে পারে তবে সে সর্ব জ্ঞানী হয় কি করে ? নাকি মনে করেন এটাই সর্ব উত্কৃষ্ট নিয়ম l এর চেয়ে ভালো নিয়ম আল্লাহ করতে পারতেন না l এমন একটা নিয়ম তিনি করলেন সেটা শুধু সমতল পৃথিবীর জন্যই সর্ব উত্কৃষ্ট l
হ্যা আল্লাহর এই নিয়মটি সমতল পৃথিবীর জন্য ১০০% সঠিক কিন্তু গোলক আকার পৃথিবীর জন্য খুব বাজে একটা নিয়ম !
 
আসুন তবুও আমি আমার মানুষের জ্ঞান দিয়ে দেখি এর চেয়ে ভালো কোনো নিয়ম হতে পারে কিনা l
মুসলমানরা যেহেতু বলে যে আল্লাহ সব জায়গায় বিরাজ করে; আকাশ এবং পৃথিবীর এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে আল্লাহ বিরাজ করে না l তাহলে সব জায়গায় আল্লাহ বিদ্যমান l আর তাই কোনো কেন্দ্রকে বা কেবলা কে কেন্দ্র করে ইবাদত না করে যে যেখানেই থাকবে সে সেখানেই আল্লাহর ইবাদত করবে l আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করবে l অথবা তার সামনে আল্লাহ কে কল্পনা করে ইবাদত অর্থাত নামাজ পড়বে l তার মন যদি পবিত্র হয়ে থাকে এবং সে যদি সত্যি আল্লাহকে ভয় করে তবে সে আল্লাহকেই মন থেকে সিজদা করবে l এবং আল্লাহ সেটা ঠিকই বুঝতে পারবে যেহেতু আল্লাহ মানুষের মনের কথাও বুঝেন l
আবার যদি আল্লাহ আকাশের উপরে আরশে বসে বিশ্বজগতকে পর্যবেক্ষণ করে থাকে তবেতো কেবলা মুখী নামাজ পরা সম্পূর্ণ অর্থহীন! কারণ তাহলে আল্লাহ আছে মহাকাশের সবার উপরে (কিন্তু মহাকাশে উপরে নিচে বলে কিছু নেই) l আর তাই যদি আল্লাহকে সিজদা করতে হয় অথবা তার ইবাদত করতে হয় তবে আল্লাহ উপরে আছে সে কথা চিন্তা করেই যেকোনো জায়গায় ইবাদত করা যায় l আর এর জন্যই একটা কেন্দ্র বা কেবলা মুখী হওয়া সম্পূর্ণ অর্থহীন l
তাই আল্লাহ মাথার উপরে আছে এবং থাকে সেজদা করা বা তার ইবাদত করা যায় যেকোনো দিকে যেকোনো জায়গায় l কারণ আল্লাহ সবার উপরেই আছেন l তাই যেকোনো জায়গায় দাড়িয়ে যেকোন দিকে তার ইবাদত করাই সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি l
তাহলে নির্দিষ্ট কোনো কেন্দ্র থাকতে হলো না আর সেই কেন্দ্র কে কেন্দ্র করেও ইবাদতের ঝামেলা থাকলো না l ফলে পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন সে ঠিকই আল্লাহর ইবাদত করতে পারবে l
আবার কেবলা এটা কি এমন ব্যাপার যে এটাকেই সেজদা করতে হবে ? আল্লাহ তো নিরাকার তাহলে কেবলার দিকে হয়েই কেন ইবাদত করতে হবে ? এটা শুধু একটা পাথর মাত্র l আর আল্লাহ তো পাথর নয় l বরং আল্লাহ নিরাকার একটা সত্বা l এবং সে সর্বত্র বিরাজ করে l তাহলে কেবলার দিকে মুখ করে কেন ইবাদত করতে হবে ? বরং সে ধরে নিবে আল্লাহ তার সামনেই আছে l আর সে আল্লাহকে সেজদা করবে l এটাইতো সব চেয়ে ভালো পদ্ধতি আল্লাহর ইবাদতের l তাহলে কেন একটা পাথরকে কেন্দ্র করে আল্লাহকে সীমাবদ্ধতার মাঝে আটকে রাখা ? বরং সর্ব ব্যাপী আল্লাহর ইবাদত হবে তার সব জায়গায় l কারণ আল্লাহ সব জায়গায় আছেন l
আর রোজা পালন করবে তার পারিপার্শিক পরিবেশের সুবিধা অনুযায়ী l একটা নির্দিষ্ট মাসে নয় বরং তার চার পাশের আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভালো আবহাওয়া থাকে এমন কোনো একটা মাসে l এবং পৃথিবীর প্রত্যেক এলাকায় তার সুবিধানুযায়ী যে কোনো একটা মাসে যেটা তাদের জন্য সুবিধাজনক সেই মাসে রোজা রাখবেl তাহলে আর সারা পৃথিবীর মানুষের রোজা পালনের বৈষম্যটা আর থাকবে না l আবার নামাজের ক্ষেত্রেও কেবলা নিয়ে আর জামেলা থাকবে না l
তাহলে দেখতে পাচ্ছি যে আল্লাহর প্রদত্ত নিয়মের থেকেও ভালো নিয়ম হওয়া সম্ভব l আমি মানুষের বুদ্ধি দিয়ে দেখালাম এর চেয়ে ভালো নিয়ম থাকা সম্ভব l আর সৃষ্টিকর্তা বলে কেও একজন যদি থাকে যে সর্ব জ্ঞানী সে এর চেয়ে শতগুণ ভালো একটা নিয়ম করতে পারার কথা l
তাহলে কেন আল্লাহ এমন একটা নিয়ম করলো যেটাতে খুব বেশি সমস্যা ?
এর কারণ আল্লাহ সমতল পৃথিবীর কথা চিন্তা করেই এই নিয়ম করেছেন l আপনি যদি খুব ভালো করে চিন্তা করে দেখেন তবে দেখবেন যে ইবাদতের এই ব্যবস্থা বা নিয়মটা সমতল পৃথিবীর ক্ষেত্রেই সর্ব উত্কৃষ্ট l অর্থাত সমতল পৃথিবীর জন্য এই নিয়মে কোনো সমস্যা থাকেনা l কিন্তু গোলক আকার পৃথিবীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মটাতে সমস্যা দেখা দেয় প্রচুর l কিন্তু সমতল পৃথিবীতে এই নিয়মের কোনো সমস্যা থাকে না l অর্থাত এই আয়াত তিনটি দিয়ে স্পষ্ট ভাবে বোঝানো হয়েছে যে পৃথিবী সমতল l গোলক আকার নয় l
সুতরাং কোরানের এই আয়াত তিনটি দ্বারা প্রমানিত যে পৃথিবী সমতল l
 

 

চিত্র : কাবাকে কেন্দ্র করে ইবাদত করা যেটা শুধু সমতল পৃথিবীর ক্ষেত্রে সম্ভব l গোলাকার পৃথিবীর ক্ষেত্রে সম্ভব নয় l
 
 (চলবে....)
 
 
(বি.দ্র.: লেখাটি এমকেএ আহমেদ রচিত "কোরআনের বর্ণনায় সমতল পৃথিবী- ১ম খন্ড" থেকে ধারাবাহিক ভাবে নেওয়া হচ্ছে।)
 

No comments:

Post a Comment