Translate

Search This Blog

বিশেষ সতর্কবার্তাঃ

এই ব্লগটি নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী, সন্দেহবাদী, মুক্তমনা এবং স্বাধীনচেতা মানুষদের জন্য। যারা যেকোন বিষয়ের সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা রাখে। যদি কোন ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিক এই ব্লগটিতে আসে তবে তার ধর্মানুভূতি নামের অদ্ভূত দূর্বল অনিভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ব্লগ লেখক দায়ী থাকবে না। ধার্মিক, গোড়া ধার্মিক আস্তিকদের নিজ দায়িত্বে তাদের দূর্বল ধর্মানুভূতিকে সংরক্ষনের দায়িত্ব নিতে হবে। কারো ধর্মানুভূতি নামের অযৌক্তিক অনুভূতি আহত হবার জন্য কোন ক্রমেই ব্লগার বা লেখককে দায়ী করা যাবে না। যদি কোন অতি দুর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগে ভূল করে ঢুকে পরেন এবং তিনি তার অনুভূতিকে দূর্বল ভাবেন অর্থাৎ যিনি তার ধর্মের উপযুক্ত সমালোচনা সহ্য করতে অপারগ, তাকে বিনীত ভাবে এই ব্লগটি থেকে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরেও যদি কোন দূর্বল ধর্মানুভূতি সম্পন্ন ব্যাক্তি এই ব্লগটিতে ঘুরাফেরা করেন এবং তার ফলে তার দূর্বল ধর্মানুভূতিতে আঘাত প্রাপ্ত হন তবে কোন ক্রমেই এবং কোন ক্রমেই ব্লগের মালিক, 'আমি নাস্তিক' দায়ী থাকবে না।

Thursday, January 8, 2015

আস্তিকদের কু-যুক্তি বা অপ-যুক্তি এবং অপ-বিজ্ঞানের প্রতিবাদ ।



আস্তিকরা অন্ধবিশ্বাসী এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন তারা তথ্য প্রমান ছাড়া কাল্পনিক কোন কিছুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের কল্পনাকেই সত্য বলে মনে করে ফলে একটা ভ্রমের মধ্যে তাদের সারা জীবন কাটে তারা কাল্পনিক ভাবে এক সৃষ্টিকর্তা তৈরী করেছে এবং তাকে বাস্তব বলে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব সত্য তাদের দাবীর পক্ষে কোন প্রমানই তারা দেখাতে পারেনি আজ পর্যন্ত তারা সৃষ্টিকর্তার প্রমান হিসেবে প্রাচীণ আমলে রচিত ভূলে ভরা কয়েকটা বই হাজির করে বইগুলো পড়ে এটা স্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হয় যে, বইগুলো প্রাচীণ কালের কোন স্বাধারণ মানুষ বা মানুষ সমষ্টির দ্বারা রচিত হয়েছে এছাড়া তারা কোন প্রমাণ হাজির করতে পারে না কিন্তু তারা কথার মারপ্যাঁচে জোর করে প্রমাণ করতে চায় যে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব আছে এবং তারা কোন প্রমাণ ছাড়াই শুধু কথার মাধ্যমে (চাপার জােরে) সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমাণ করতে ব্যর্থ চেষ্টা করে আর সেটা করতে যেয়ে তারা নানা রকম অপযুক্তি এবং মিথ্যের আমদানী করে যেমন-

১. আস্তিকদের দাবী বুদ্ধিমান কোন কিছু বা জটিল কোন সিস্টেম থাকলে অবশ্যই তার কোন সৃষ্টিকর্তা বা ডিজাইনার থাকতে হবে আর তাদের দাবী প্রমাণ করতে যেয়ে বুদ্ধিমান নকশা বা ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের মত অপ-যুক্তি বা অপ-বিজ্ঞান তৈরী করেছে তাদের দাবী যেখানেই কোন বুদ্ধিমান কিছু বা জটিল কোন সিস্টেম থাকে সেখানে সেই জটিল সিস্টেম তৈরী করতে অবশ্যই কোন অতিবুদ্ধিমান স্বত্ত্বার নকশা বা ডিজাইনারের প্রয়োজন আছে তাই এই বিশাল (জটিল) বিশ্বজগৎ এবং বুদ্ধিমান প্রাণীজগতের অবশ্যই একজন সৃষ্টিকর্তা থাকতে হবে আর তাই অবশ্যই একজন সৃষ্টিকর্তা আছে
তাদের এই যুক্তিটি যে একটা অপযুক্তি বা অপবিজ্ঞান সেটা তাদের দাবীটাই প্রমান করে
যদি জটিল কোন সিস্টেম বা ব্যবস্থাপনার জন্য কোন অতিবুদ্ধিমান এবং অতি ক্ষমতাধর কারো দরকার পড়ে তবে সেই অতিবুদ্ধিমান এবং অতি জটিল সৃষ্টিকর্তারও একজন নকশাকার বা ডিজাইনারের দরকার হবে কারণ সেই অতিবুদ্ধিমান এবং অতিক্ষমতাবান সৃষ্টিকর্তাও অতি জটিল কোন সিস্টেম বা নকশাঁ হবে, যে জটিল বিশ্বজগত সৃষ্টি করতে পেরেছে আর তাই আই ডি-এর (ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন) যুক্তি নিজেই নিজের যুক্তিকে অপযুক্তি প্রমাণ করে

২. আস্তিকরা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব প্রমাণ করতে আরো যে অপ-যুক্তিটির আমদানী করে সেটা হল ঘড়ি মেকার তত্ব আস্তিকদের দাবী যদি কোন নির্জন বন-এ কেউ একজন একটি ঘড়ি খুজে পায় তাহলে তার মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে ঘড়িটি কে তৈরী করলো একটি ঘড়ির গঠন অত্যন্ত জটিল আর ঘড়িটি তৈরী করতে এর একটা নকশাঁকারের (ডিজাইনারের) প্রয়োজন হয়েছে সে ঘড়িটিকে ডিজাইন তৈরী করেছে এবং সেই ডিজাইন মতো ঘড়িটি তৈরী করেছে ঠিক তেমনি এই বিশ্বজগতের গঠন অত্যন্ত জটিল আর এই জটিল বিশ্বজগত তৈরীতেও তেমনি একজন ডিজাইনারের প্রয়োজন হয়েছে আর তাই বিশ্বজগতের মতো একটা জটিল সিস্টেম তৈরী সম্ভব হয়েছে ঘড়ির মতো জটিল কোন কিছু তৈরী করতে এর একজন প্রস্তুত কারক বা ডিজাইনার দরকার তেমনি বিশ্বজগতের মত একটা জটিল সিস্টেম তৈরীতেও একজন সৃষ্টিকর্তার দরকার হয়েছে ঘড়ি যেমন কোন প্রস্তুতকারক ছাড়া এমনি এমনি তৈরী হতে পারে না, তেমনি বিশ্বজগৎ কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া তৈরী হওয়া সম্ভব নয়
আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় যুক্তিটি অনেক জুড়ালো কিন্তু একটু ভালো করে লক্ষ করলেই যুক্তিটির ভিত্তিহীনতা চোখে পড়ে
এক - আস্তিকরা বন-এ বা অপরিচিত কোন জায়গায় কোন কিছু খুজে পাওয়ার জন্য ঘড়ি বা এরকম চেনা জানা কোন কিছুকেই কল্পনা করে এর কারণ হচ্ছে তাতে প্রশ্ন করা যায় - ঘড়িটি বা চেনা জিনিসটি কে তৈরী করেছে ? কিন্তু যদি তারা কোন অচেনা জিনিস কল্পনা করে তবে তারা "এটি কে সৃষ্টি করেছে" এই প্রশ্নটি করতে পারবে না যেমন - যদি একটি গম্বুজ আকৃতির অদ্ভুত ডিজাইনের কোন কিছু দেখতে পাওয়া যায় তবে প্রথমেই প্রশ্ন আসবে "জিনিসটি কি?" ফলে এভাবে সৃষ্টিকর্তাকে আনা যায় না কারণ তখন প্রশ্ন আসবে এটি কোথা হতে আসলো ? কে আনলো ? ইত্যাদি আর তাই আস্তিকরা নির্জন জায়গায় পাওয়া জিনিসটিকে চেনা জানা জিনিসই কল্পনা করে যাতে তারা পরিকল্পিত ভাবে প্রশ্ন করতে পারে, এটি কে সৃষ্টি করেছে ? আর তাই তাদের এই সাজানো যুক্তিটি কোন কার্যকর যুক্তি নয় একজন স্বাধারণ মানুষ নির্জন বনে একটি ঘড়ি খুজে পেলে কখনই প্রশ্ন করবে না এটা কে সৃষ্টি করেছে ? বরং প্রথম প্রশ্নটি আসবে ঘড়িটি কিভাবে বনের মধ্যে আসলো ? নিশ্চই এখানে আগেই কেও এসেছে কিন্তু আস্তিকদের চিন্তা্শক্তির অসাড়তা বা পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা প্রশ্ন করবেই, এটা কে সৃষ্টি করলো ?
দুই- তাদের দাবী, কোন জটিল কিছুর অবশ্যই একজন প্রস্তুতকারক বা ডিজাইনার লাগবেই এটা যে একটা ঠুনকো যুক্তি সেটা তারা ভেবে দেখে না যদি কোন কিছু জটিল হলে তার একজন প্রস্তুতকারক বা ডিজাইনার লাগেই তবে সেই অতি জটিল সৃষ্টিকর্তারও একজন অতি-অতিজটিল সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন হবে ফলে সৃষ্টিকর্তার ধারণা অর্থহীন হয়ে যাবে । (কারণ এভাবে অসীম সংখ্যক সৃষ্টিকর্তার আমদানী ঘটবে ।)
তিন- আস্তিকরা কৃতিম এবং প্রাকৃতিক শব্দ দুটিকে পৃথক করতে পারে না কৃতিম হচ্ছে সেটা, যার একজন প্রস্তুতকারক বা সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন আছে আবার প্রাকৃতিক হচ্ছে সেই জিনিস, যার কোন সৃষ্টিকর্তা বা প্রস্তুতকারক নেই প্রাকৃতিক কিছু প্রকৃতিতে কারো হস্তক্ষেপ ছাড়াই তৈরী হতে পারে যেমন নদী, সাগর, গ্রহ, উপগ্রহ ইত্যাদি কারো হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজে নিজে সৃষ্টি হতে পারে বিজ্ঞানীরা ধারণা করে বিশ্বজগৎ সৃষ্টি হয়েছে কারো হস্তক্ষেপ ছাড়াই বিগ ব্যাং-এর মাধ্যমে ফলে কােন কিছু সৃষ্টি করতে সৃষ্টিকর্তা লাগেই কথাটি ঠিক নয় বাস্তব হচ্ছে কোন কিছু আসলে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না শুধু এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রুপান্তরিত করা যায় যেমন এনার্জি বা শক্তি পদার্থে রুপান্তিত হয় এবং পদার্থ শক্তি বা এনার্জিতে রুপান্তরিত হয় বিজ্ঞানীদের মতে বিগ ব্যাং -এর পরে এনার্জি পদার্থে রুপান্তরিত হয়েছে আর এনার্জিকে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না অর্থাৎ বিশ্বজগৎ আসলে কেউ সৃষ্টি করেনি বিশ্বজগৎ এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রুপান্তরিত হয়েছে মাত্র আবার যদি কোন কিছুকে সৃষ্টি করতে যদি সৃষ্টিকর্তার একান্তই প্রয়োজন হয় তবে সেই সৃষ্টিকর্তাকেও কোন বড় সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি করতে হবে কারণ সংজ্ঞা অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তাও কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারবে না কারণ কোন কিছুই সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারবে না
কোন কিছুই সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারে না, এই অপযুক্তিটা আস্তিকরা অন্ধভাবে বিশ্বাস করে এর কোন বাস্তব প্রমাণ নেই সব কিছুই কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হয় আসলে শব্দটি হবে রুপান্তরিত হয় কারণ কোন কিছুই আসলে সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না সব কিছুই বিদ্যমান থাকে শুধু এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রুপান্তরিত হয় কিন্তু সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না আর তাই কোন সৃষ্টি থাকলেই তাকে সৃষ্টি হতেই হবে এমন কোন কথা নেই কিন্তু আস্তিকরা সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি, কথাটা ভাবতেই পারে না তাদের অন্ধবিশ্বাস সৃষ্টি থাকলে সৃষ্টকর্তাকে থাকতেই হবে কিন্তু তারা একটু মুক্ত মনে চিন্তা করলেই বুঝতো যদি সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কোন কিছু থাকা অসম্ভব হয় তবে, সৃষ্টিকর্তারও একজন সৃষ্টিকর্তা থাকবে আবার সৃষ্টিকর্তা যদি কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হতে পারে তবে বিশ্বজগতও কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হওয়া সম্ভব আর যেহেতু বিশ্বজগত কেউ সৃষ্টি করেনি তাই কোন সৃষ্টিকর্তারই দরকার নেই আস্তিকদের বুঝতে হবে সৃষ্টিকর্তা ছাড়াও সৃষ্টি থাকা সম্ভব যদি সেটি সৃষ্টি না হয়ে থাকে আর বিশ্বজগতে আজ পর্যন্ত কেও কোন কিছু সৃষ্টি বা ধ্বংস হতে দেখেনি পারমানবিক বোমা বিষ্ফোরিত হয়ে যে ধ্বংশ জগ্গ হয় সেটা আসলে এক রুপ থেকে অন্য রুপে রুপান্তরিত হয় মাত্র কোন কিছু ধ্বংশ বা সৃষ্টি হয় না আর তাই সৃষ্টি থাকলে তার সৃষ্টিকর্তা থাকবে এই কথাটা ভিত্তিহীন এবং মিথ্যে তেমনিভাবে মানুষ কোন কিছু সৃষ্টি বা ধ্বংস করতে পারে না শুধু রুপান্তর করতে পারে আর যে কৃতিম জিনিস মানুষ বানায় সেগুলোর প্রস্তুতকারক থাকে বলেই সেগুলো কৃতিম কিন্তু প্রাকৃতিক কিছু তৈরী করতে কাউকে লাগে না বলেই সেগুলো প্রাকৃতিক তাই কৃতিম জিনিসের প্রস্তুতকারক প্রয়ােজনের সাথে প্রাকৃতিক জিনিসের প্রস্তুত কারকের তুলনা করা একটি ভুল সিদ্ধান্ত কৃতিম এবং প্রাকৃতিক ব্যপার দুটো সম্পূর্ন আলাদা আর তাই একটা দিয়ে অন্যটা বিচার কথা বোকামি কারণ কৃতিম জিনিসের প্রস্তুত কারক আবশ্যক দেখেই সেগুলোকে কৃতিম বলা হয় আবার প্রাকৃতিক জিনিসের কোন সৃষ্টিকর্তা বা প্রস্তুতকারক লাগে না বলেই সেগুলোকে প্রাকৃতিক বলা হয় আর তাই যারা দাবী করে কৃতিম কোন জটিল ব্যবস্থা তৈরীতে যেমন একজন প্রস্তুতকারক বা সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন হয়, তেমনি প্রাকৃতিক কোন জটিল ব্যবস্থারও একজন প্রস্তুত কারক বা ডিজাইনার লাগবে তারা আসলে যুক্তি এবং অপ-যুক্তির বা বিজ্ঞান এবং অপবিজ্ঞানের পার্থক্য বুঝে না আর তাই তিলকে আনারস এবং হাতীকে সাপ বলে চালিয়ে দিতে চায়

৩. আস্তিকরা সৃষ্টিকর্তার প্রমান দিতে যেয়ে আরেকটা অপযুক্তির আমদানী করেন সেটা হচ্ছে ভাঙ্গা অকার্যকর যন্ত্রপাতি থেকে বিমান বা জটিল মেশিন তৈরী হওয়া যেমন অসম্ভব তেমনি সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এই সুস্থির সুষোম বিশ্বজগত সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব আস্তিকদের দাবী বিশ্বজগত খুব সুস্থির এবং গঠন প্রনালী খুব সুক্ষ এবং প্রাণীজগত অত্যন্ত নিখুত আর তাই এই বিশ্বজগৎ এবং প্রাণীজগত কোন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া বা ডিজাইনার ছাড়া সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব এই সৃষ্টিকর্তার অস্তত্ব প্রমাণের যুক্তিটি যে ভুল সেটা আগেই বলা হয়েছে এখন তাহলে এই বিশ্বজগত কি সুক্ষ ডিজাইনের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছে নাকি ডিজাইন ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে ? আপাত দৃষ্টিতে দেখলে বিশ্বজগতকে খুব সুস্থির এবং বিশ্বজগতের গঠনপ্রণালী আসলেই খুব সুক্ষ বলে মনে হয় কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে বিশ্বজগতকে সুস্থির বা সুক্ষ গঠনের মনে হলেও এটি সুক্ষ বা সুস্থির নয় সৃষ্টির শুরুতে এই বিশ্বজগত খুব অস্থির প্রকৃতির ছিল এবং এটি যেকোন সময় অস্থির হয়ে যেতে পারে যদিও সৌরজগত বা গ্যালাক্সিগুলোকে সুস্থির বলে মনে হয কিন্তু এগুলো সুস্থির ছিল না এবং এখনো অস্থির ভাবে উল্কাপিন্ড ঘুরে বেরাচ্ছে এগুলো যেকোন সময় যে কোন গ্রহে আছড়ে পরে যেমন পৃথিবীতে এক ভয়ংকর উল্কা পতনে পুরো পৃথিবী উলট পালট হয়ে গিয়েছিল প্রাণীজগত বিপন্ন হয়ে গিয়েছিল তাহলে কিভাবে বিশ্বজগত সুস্থির বা সুক্ষ গঠনের হলো ? সৃষ্টির শুরুতে একটা উল্কাপিন্ড আরেকটার সাথে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষে লিপ্ত হতো আর এভাবেই একটার উপরে আরেকটা আছড়ে পরে গ্রহগুলো তৈরী হয়েছে আবার সৌরজগতের গ্রহগুলো তৈরী হয়েছে বড় একটা সৌর বিষ্ফোরণের কারণে আর এমন সৌর বা নক্ষত্র বিষ্ফোরণ হর হামেশাই ঘটে তারকা বিষ্ফোরিত হয়ে সুপানোভার সৃষ্টি হয় অর্থাৎ বিশ্বজগতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে যা আমরা এই বর্তমান সময়ে এসে পৃথিবী থেকে বুঝতে পারছি না আর তাই আমাদের কাছে বিশ্বজগতকে সুস্থির এবং সুক্ষ বলে মনে হয় কিন্তু আমাদের গ্যালাক্সী সৌরজগতকে এবং তারকাগুলোকে নিয়ে প্রচন্ড গতিতে ধা্বিত হচ্ছে অজানার উদ্দেশ্যে আবার যেকোন সময় সৌরজগতটি গ্যালাক্সীর কেন্দ্রে পতিত হতে পারে বা বাইরে ছিটকে পরতে পারে আবার পৃথিবী কখন সূর্যের উপর আছড়ে পরবে নাকি ছিটকে পড়বে সেটা সুনিশ্চিত বলা যায় না আসল কথা হচ্ছে বিশ্বজগতকে আপাতত সুস্থির বা সুক্ষ গঠনের মনে হলেও এটি সুস্থির বা সুক্ষ নয়
অন্য দিকে প্রাণীজগতকে অত্যন্ত সুক্ষ বা নিঁখুত গঠণের মনে হলেও আসলে প্রাণীজগত অতটা সুক্ষ বা নিঁখুত গঠনের নয় প্রকৃতিতে প্রতিনিয়ত প্রাণী বিলুপ্ত হচ্ছে প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারছে না বলে অসংখ্য প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে যারা প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে পেরে উঠেনি আর যারা পেরে উঠেছে তাদেরকে দেখলে মনে হয় প্রাণীজগত সুক্ষ এবং নিঁখুত গঠণের কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ন বিপরীত যেসব প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে তাদের গঠন প্রণালী সুক্ষ বা নিঁখুত ছিল না আর যারা টিকে আছে তারা বিবর্তনের ধারায় নিজেদেরকে সুক্ষ বা নিঁখুত করে নিয়েছে কিন্তু টিকে থাকার জন্য প্রাণীরা যতই নিজেদেরকে নিখুত করে নিক না কেন, তারা আসলে সুক্ষ বা নিখুত হতে পারেনি আর তাই প্রাণীজগতের অনেক প্রাণীই কালক্রমে বিলুপ্ত হয়ে যায় আবার বর্তমানে যেসব প্রাণী জীবিত আছে তাদের গঠন প্রণালী পুরোপুরি সুক্ষ বা নিখুত হয়নি যেমন মানুষের কিছু কিছু অঙ্গ আছে যেগুলোর কোন প্রয়ােজন নেই কিন্তু সেগুলো থাকাতে মানুষের সমস্যা তৈরী হয় যেমন এপেন্ডিক্স মানুষের তেমন কোন কাজে আসে না কিন্তু এটির জন্য এপেন্ডিসাইট হয়ে মানুষ মারা যায় কিন্তু এপেন্ডিক্স না থাকলে মানুষের কোন সমস্যাই হয় না এরকম অনেক খুত নিয়েই প্রাণীজগত প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে যারা পেরে উঠতে পারছে তারাই টিকে যাচ্ছে, আর যারা পারছে না তারা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রাণীর গঠন প্রণা্লী অত্যন্ত ঠুনকো একটু এদিক সেদিক হলেই প্রাণী মারা যায় যেমন তাপমাত্রার একটু বাড়লে বা কমলেই প্রাণী মারা যায় আর সামান্য আঘাতেও প্রাণি মারা যায় সুতরাং প্রাণি বা জীবের গঠন মোটেও সুক্ষ বা নিখুত নয় আর তাই সুক্ষ ও নিঁখুত গঠনের হওয়ায় এগুলো কোন সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছে ধারণাটা ভুল বরং প্রাণীজগত নিঁখুত গঠণের হতে পারেনি বলে এটাই প্রমাণ হয় এটি কোন সৃষ্টিকর্তা ডিজাইন করে বানায়নি তার জন্যই সৃষ্টিজগতে এতো বিসৃংঙ্খলা
আর আস্তিকদের দাবী এতো সুক্ষ ও নিঁখুত সৃষ্টিজগত এমনি এমনি সৃষ্টি হওয়া, ভাঙ্গা অকার্যকর যন্ত্রপাতি থেকে বিমান বা এরকম জটিল মেশিন তৈরী হওয়া একই রকম অসম্ভব; তাদের এই দাবীটি পুরোপুরি ভুল ভাঙ্গা অকার্যকর থেকে এমনি এমনি (নিজে নিজে) বিমানের মত মেশিন তৈরী হওয়া আর বিশ্বজগত তৈরী হওয়া এক কথা নয় তাই ভাঙ্গা অকার্যকর যন্ত্রপাতি থেকে বিমান বা এরকম জটিল মেশিন তৈরী হওয়া সম্ভব নয় বলে বিশ্বজগত এমনি এমনি নিজে নিজে তৈরী হতে পারবে না, এটা ঠিক নয় প্রথমত, বিমান তৈরী করা হলো কৃতিম প্রক্রিয়া কিন্তু বিশ্বজগত তৈরী হওয়া একটা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, আর তাই এদুটোর তুলনা চলে না দ্বিতীয়ত, পুরোনো যন্ত্রপাতিদের কোন নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম নেই কিন্তু প্রকৃতি চলে নিজস্ব প্রাকৃতিক নিয়ম (Natural law) মেনে যেমন শক্তি পদার্থে পরিনত হয় কারো সাহায্য ছাড়াই কিন্তু বিদ্যুৎ তৈরী করতে মানুষের হস্তক্ষেপ লাগে ইলেক্ট্রন কারো সাহায্য ছাড়াই নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘুরে কিন্তু বাড়ি বানাতে মানুষের হস্তক্ষেপ লাগে গ্রহগুলো মহাকর্ষ বলের সাহায্যে সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিন করে কারো সাহায্য ছাড়াই কিন্তু গাড়ি বানাতে মানুষের হস্তক্ষেপ লাগে বিজ্ঞানীদের দাবী বিগ ব্যাং থেকে শুরু করে পৃথিবী তৈরী এবং বসবাসের উপযোগি হওয়া পর্যন্ত কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয়নি এগুলো নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক নিয়মেই ঘটেছে আবার জড় পদার্থ থেকে জীব তৈরী হতেও কারো সাহায্য লাগেনি এগুলো প্রাকৃতিক নিয়মেই হয়েছে জীব থেকে উদ্ভিদ এবং প্রাণী এবং এক প্রাণী থেকে বিশাল প্রাণী জগত সৃষ্টি হয়েছে প্রাকৃতিক নিয়মেই আর প্রাণী জগত থেকে মানুষের মতো প্রাণী তৈরী হতে কারো সাহায্যই লাগেনি এসব ঘটেছে বিবর্তনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক নিয়ম মেনে প্রাকৃতিক ভাবে কোন সৃষ্টিকৃর্তার দরকার পড়েনি
বিগ ব্যাং ঘটার পর শক্তি মিলিত হয়ে গ্যালাক্সীগুলো তৈরী হয়েছে আর গ্যালাক্সীগুলোতে তারকা তৈরী হয়েছে শক্তি পদার্থে রুপান্তরিত হবার মাধ্যমে তারকাগুলোতে গ্রহগুলো তৈরী হয়েছে পদার্থের মধ্যে আকর্ষনের কারনে পৃ্থিবী সৃষ্টি হয়ে তাপ বিকিরন করে ঠান্ডা হয়েছে এবং বসবাসের উপযোগি হয়েছে জড় থেকে জীব তৈরী হয়েছে অজৈব জড় থেকে জৈব জড় এবং জৈব জড় পরস্পরের সাথে বিক্রিয়া করে প্রথম জীব কোষ তৈরী করেছে এককোষী জীব থেকে বহুকোষী জীব এবং প্রাণী বা উদ্ভিত তৈরী হয়েছে এককোষী প্রাণী থেকে বহুকোষী প্রাণী তৈরী হওয়া এবং অন্যান্য প্রাণী থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ তৈরী হওয়া পর্যন্ত কোন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াতেই কারো হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়নি অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার হস্তক্ষেপ ছাড়াই এই বিশ্বজগতের সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে
কিন্তু মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়া বিমান বা কোন মেশিনই তৈরী হতে পারে না কারণ যন্ত্রপাতিগুলো তৈরী হতে যে পদার্থগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য বিমান তৈরী হবার উপযোগি নয় বলে কৃতিম ভাবে বল প্রয়োগ করে সেগুলোকে বিমান বা মেশিন তৈরী করতে হয় আর তাই এমনি এমনি বিমান তৈরী হতে পারে না কিন্তু বিশ্বজগত বা প্রাণী জগত তৈরীতে পদার্থগুলোর নিজস্ব বৈশিষ্ট্যই প্রধান ভুমিকা রেখেছিল বলে এখানে কারো হস্তক্ষেপের দরকার পড়েনি এবং সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই এগুলো তৈরী হয়েছে যেমন তাপ কমে যাবার পরে মহাকর্ষ বলের জন্য গ্যালাক্সীগুলো তৈরী হয়েছিল পদার্ধগুলোর মহাকর্ষ বলের দ্বারা পরস্পর মিলিত হয়ে তারকা এবং গ্রহ-উপগ্রহ তৈরী হয়েছিল প্রাকৃতিক নিয়ম মেনে বা পদার্থের নিজস্ব ধর্মের বা বৈশিষ্ট্যের জন্য আর তাই বিমান তৈরীতে প্রস্তুতকারকের প্রয়োজন হলেও বিশ্বজগত তৈরীতে কোন প্রস্তুতকারক বা সৃষ্টিকর্তার প্রয়ােজন হয়নি

আস্তিকদের নানা কু-যুক্তি বা অপযুক্তি এবং বিজ্ঞানের নাম ভাংগিয়ে অপবিজ্ঞান প্রচার করে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের যেসব প্রমান উপস্থাপন করে থাকে সেগুেলো শুধু মিথ্যেই নয় বরং জঘন্যও বটে এরা যুক্তির বা বিজ্ঞানের নাম নিয়ে অপযুক্তি বা অপবিজ্ঞানের মাধ্যমে স্বাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে এগুলো সত্য নয় মিথ্যের প্রচার এগুলো যুক্তি নয় কু-যুক্তি বা অপ-যুক্তি এগুলো বিজ্ঞান নয় অপ-বিজ্ঞান

No comments:

Post a Comment