মুসলমানদের দাবী, কুরআন একজন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গ্রন্থ যার নাম আল্লাহ । তো আল্লাহ তার কর্মী জিব্রাইলকে দিয়ে আরবের
একজন মানুষের কাছে তার বাণী বা কথা পাঠিয়েছে সুদীর্ঘ ২৩ বছর ধরে । আরবের সেই মানুষটির
নাম মুহাম্মদ । জিব্রারাইলের কথা কেউ শুনতে পায়নি একমাত্র মুহাম্মদ শুনতে পেয়েছে বলে মুসলমানদের
দাবী । তাদের দাবী মতে,
মুহাম্মদ ছিল সেই সময়ের একমাত্র ব্যক্তি যে জিব্রাইলের কথা শুনতে
পেতো, তাকে দেখতে পেতো এবং তার সাথে কথপোকথন করতে
পারতো । মুহাম্মদ ছাড়া জিব্রাইলকে কেও দেখেনি, তার কথাও কেউ
শুনতে পায়নি ।
জিব্রাইলকে দিয়ে আল্লাহ যে সব বাণী মুহাম্মদের
কাছে পাঠাতো সেগুলোই পরবর্তীতে সংকলিত হয়ে একটি গ্রন্থ তৈরী করেছে মুসলমানরা, যার নাম আল কুরআন । এটাই মুসলমানদের নিকট পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ ।
আল্লাহ কিছু কথা বলেছে সেগুলো জিব্রাইল এসে
মুহাম্মদকে বলেছে এবং মুহাম্মদ সেই সব কথাগুলোকে সবার কাছে প্রকাশ করেছে । আর এভাবেই কুরআনের
বাণী বা কথা গুলো সবার কাছে পৌছেছে । কিন্তু কুরআনের বাণীগুলো বিগত ১৪০০ বছর ধরে মানুষের কাছে এক
রকমের অর্ধ বহন করেছে । অর্থাৎ কুরআনে যে কথা গুলো বর্ণনা করা হয়েছে সেই কথাগুলোর অর্ধ বিগত ১৪০০ বছর
ধরে এক রকম অর্থ বহন করে এসেছে । কিন্তু বিংশ শতকের শেষ দিকে বা একবিংশ শতকে এসে কুরআনের অর্থগুলো
পরিবর্তিত হতে থাকে ।
অর্থাৎ কুরআনের বাণী বা কথাগুলোর যে অর্থ মুসলমানরা বুঝতো সেই অর্থের পরিবর্তন করা হয়েছে । এরকম পরিবর্তিত নতুন অর্থ এবং পুরাতন অর্থ নিয়ে এই সিরিজে আলোচনা করা হবে ধারাবাহিক ভাবে ।
অর্থাৎ কুরআনের বাণী বা কথাগুলোর যে অর্থ মুসলমানরা বুঝতো সেই অর্থের পরিবর্তন করা হয়েছে । এরকম পরিবর্তিত নতুন অর্থ এবং পুরাতন অর্থ নিয়ে এই সিরিজে আলোচনা করা হবে ধারাবাহিক ভাবে ।
প্রথম পর্বে একটা নির্দিষ্ট আয়াত নিয়ে আলোচনা
করবো যেটার অর্থ মুসলমানরা পরিবর্তন করে ফেলেছে এবং এর নতুন অর্থ করেছে যেটা মুহাম্মদ
বর্নিত অর্থ থেকে সম্পুর্ন ভিন্ন । অর্থাৎ যে আয়াতটির অর্থ মুহাম্মদ বুঝতো এক ভাবে এবং গত ১৪০০
বছর ধরে যে অর্থ বহন করেছে সেই আয়াতটির সেই অর্থকে আমুল পরিবর্তন করে সম্পূর্ন ভিন্ন
অর্থ করে ফেলা হয়েছে ।
আয়াতটি হলো, সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াত । আয়াতটি হলো-
"এবং পৃথিবীকে এরপর বিস্তৃত করেছেন ।"
এই আয়াত অনুযায়ী, মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তি আল্লাহ পৃথিবীকে বিস্তৃত বা প্রসারিত করে সৃষ্টি করেছে
। অর্থাৎ পৃথিবীকে আল্লাহ
বিস্তৃত করেছে ।
গত ১৪০০ বছর ধরে কুরআনের এই আয়াতের অর্থ বিস্তৃত
পৃথিবী হিসেবে সবার কাছে বিবেচিত হয়ে এসেছে । এবং কুরআনের সব অনুবাদে একে বিস্তৃত অর্থেই
বর্ণনা করা হযেছে । কিন্তু একবিংশ শতাব্দিতে এসে মুসলমানরা এর অর্থ পরিবর্তন করে সম্পূর্ন নতুন অর্থ
করেছে । নতুন অর্থ অনুযায়ী এই আয়াতের নতুন অনুবাদটি হলো-
"এরপর পৃথিবীকে করেছেন ডিম্বাকৃতির ।"
লক্ষ করুন পুর্বের অর্থ থেকে এই আয়াতের অর্থকে
আমূল পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে । বিস্তৃত করা এবং ডিম্বাকৃতির করার মধ্যে আকাশ পাতালের ব্যবধান
রয়েছে । কারণ বিস্তৃত করা হচ্ছে সমতল করা বা প্রসারিত করা । দুটোই সমতলে বিস্তৃত করা বোঝায় । আর ডিম্বাকৃতি করা
মানে হচ্ছে ডিমের মতো বর্তুলাকার বা গোলকাকার করা । বিস্তৃত করা এবং ডিম্বাকৃতি করা সম্পূর্ন
বিপরীত অর্থক ।
কিন্তু কেন এই আমূল পরিবর্তন ? যাকে তারা সৃষ্টিকর্তা বলে বিশ্বাস করে তার কথাকে কেন এমন ভাবে
পরিবর্তন করা হয়েছে ? এর উত্তর পাওয়া খুব সহজ । কিন্তু তার আগে আমাদেরকে
কুরআনের কিছু বাণী বা আয়াত জানতে হবে এবং সুরা নাযিয়াতের সবগুলো অনুবাদ দেখতে হবে
বিষয়টা পরিষ্কার হবার জন্য ।
প্রথমে আমরা সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতটির
সবগুলো অনুবাদ লক্ষ করি ।
"এবং তিনি পৃথিবীকে এরপর বিস্তৃত করেছেন
। " (অনুবাদ- প্রফেসর ডঃ
মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান ।)
"এরপর যমীনকে তিনি (বিছানার মতো করে)
বিছিয়ে দিয়েছেন । " (অনুবাদ- হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ)
"আর পৃথিবী- এর পরে তাকে প্রসারিত করেছেন
।" (অনুবাদ- ডঃ জহুরুল
হক)
" And the earth, moreover,
hath He extended [to a wide expanse];" (অনুবাদ- Abdullah
Yusuf Ali)
"And after that He spread
the earth," (অনুবাদ- Mohammad Marmaduke
Pickthal)
"And after that He spread
the earth." (অনুবাদ- Saheeh International)
এছাড়াও কুরআনের যতগুলো অনুবাদ আছে (নতুনগুলো
ছাড়া যেগুলোর অর্থ পরিবর্তন করা হয়েছে) সবগুলোতেই পৃথিবীকে বিস্তৃত করা হয়েছে বা
প্রসারিত করা হয়েছে এই কথাটিই বলা আছে । আগের কোন অনুবাদেই বলা নেই যে পৃথিবীকে ডিম্বাকার করা হযেছে
। সবগুলো অনুবাদেই বলা
হয়েছে পৃথিবীকে বিস্তৃত করা হয়েছে বা প্রসারিত করা হয়েছে । বিস্তৃত করা এবং প্রসারিত করা এই কথা দুটোর
অর্থ একই । কিন্তু ডিম্বাকৃতির করা কথাটা সম্পূর্ন ভিন্ন এমনকি বিপরীতার্থক । যাকে প্রসারিত বা বিস্তৃত
করা যায় প্রশস্তভাবে তাকে কখনই ডিম্বাকৃতির করা যায় না । কারণ প্রশস্তভাবে বিস্তৃত করা বা প্রসারিত
করা হচ্ছে সমতল প্রক্রিয়া । কিন্তু ডিম্বাকার করা হচ্ছে গোলকাকার প্রক্রিয়া । অর্থাৎ একটি আরেকটির
সম্পূর্ন বিপরীত ।
তাহলে এখন প্রশ্ন হলো - কেন কুরআনের অর্থ
সম্পূর্ন বিপরীতার্থক করা হলো ?
এই প্রশ্নের উত্তর বের করার আগে আমাদের জানতে
হবে কুরআনের অন্যান্য আয়াতে পৃথিবীর আকৃতি সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ?
আসুন দেখি কুরআনের অন্যান্য আয়াতে পৃথিবীর
আকৃতি সম্পর্কে কি বলা হয়েছে !
সুরা বাকারা; আয়াত ২২ :
"যে পবিত্র সত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ
স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন,
সুরা আল হিজর; আয়াত ১৯ :
"পৃথিবীকে আমি বিস্তৃত করেছি এবং ওতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি;
"
সুরা ক্বাফ; আয়াত ৭ :
"আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি ও তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি …”l"
সুরা আন- নাবা ; আয়াত ৬ :
"আমি কি পৃথিবীকে বিছানা বানিয়ে দেইনি ?"
সুরা আল গাশিয়াহ ; আয়াত ২০ :
"এবং ভুতলের দিকে যে, কিভাবে ওটাকে সমতল করা হয়েছে ?"
সুরা আয-যারিয়াত; আয়াত ৪৮:
"এবং আমি পৃথিবীকে বিছিয়ে দিয়েছি, সুতরাং আমি কত সুন্দরভাবে বিছিয়েছি !"
সুরা রাদ; আয়াত ৩ :
"তিনিই ভুতলকে বিস্তৃত করেছেন এবং ওতে পর্বত ও নদী সৃষ্টি করেছেন
সুরা ত্ত্বায়াহা; আয়াত ৫৩:
"যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে করে দিয়েছেন
তোমাদের চলবার পথ,
সুরা নূহ; আয়াত ১৯ ও ২০ :
"এবং আল্লাহ তোমাদের জন্যে ভূমিকে করেছেন বিস্তৃত-"
"যাতে তোমরা এর প্রশস্ত পথে চলাফেরা করতে পারো l"
সুরা আয-যুখরুফ; আয়াত ১০:
"যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন শয্যা এবং ওতে করেছেন তোমাদের
চলার পথ যাতে তোমরা সঠিক পথ পেতে পারো;
সুরা আন-নাযিয়াত; আয়াত ৩০,
"এবং পৃথিবীকে এরপর বিস্তৃত করেছেন l"
সুরা আশ-শামস; আয়াত ৬ :
"শপথ পৃথিবীর এবং তার যিনি তা বিস্তৃত করেছেন, "
উপরে বর্ণিত সবগুলো আয়াতের সবগুলো অনুবাদেই
পৃথিবীর আকৃতি সম্পর্কে বলা হয়েছে পৃথিবীকে বিছানা বা কার্পেটের মতো করে সমতলে বিছানো
হয়েছে বা একে প্রসারিত করা হয়েছে প্রশম্তভাবে । অর্থাৎ কুরআনের সবগুলো আয়াতে বিছানা বা কার্পেটের
মতো সমতল বুঝিয়েছে অথবা বলা হযেছে পৃথিবী প্রশস্তভাবে বিস্তৃত । সবগুলো আয়াত অনুযায়ী
পৃথিবীর আকৃতি সমতল ।
কিন্তু বাস্তব পৃথিবী সমতল নয় । আমরা জানি পৃথিবী গোলাকার
বা গোলকাকার । কিন্তু কুরআন বলছে পৃথিবী বিছানা বা কার্পেটের মত সমতল । অর্থাৎ কুরআনের বর্ণনার সাথে বাস্তবতার সংঘর্ষ
বাধছে । আর এই বিষয়গুলো মানুষ যেনে যাওয়ায় কিছু মুসলমান তাদের ধর্মের সংকট বুঝতে পারে
। এবং তারাই বিভিন্ন
উপায়ে ধর্মকে রক্ষা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে । আর তারা কুরআনের ৭৯ নাম্বার সুরার (সুরা নাযিয়াত)
৩০ নাম্বার আয়াতের অর্থটি পরিবর্তন করে দিয়ে দাবী করে কুরআনে পৃথিবীকে ডিমের মত গোলাকার
বলা হয়েছে । তাদের দাবী যে ওই আয়াতটিতে আরবি "দাহাহা" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যা আরবি
"দুইয়া" শব্দটি থেকে উৎপত্তি হয়েছে । আর "দুইয়া" শব্দটির অর্থ হলো ডিম
বা উটপাথির ডিম । আর তাই দাহাহা মাসে ডিম্বাকৃতির ।
আবার তার আগেই বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করে ফেলেছে
যে পৃথিবী পুরোপুরি সুষম গোলাকাকার নয় । এটার বিষুবীয় অঞ্চলের তুলনায় মেরু অঞ্চলে কিছুটা চাপা । ফলে পৃথিবী ১০০% সুষম
গোলক আকৃতির নয় বরং পৃথিবী ৯৫-৯৬% সুষম গোলক আকৃতির । অর্থাৎ পৃথিবী কিছুটা অসম গোলক আকৃতির ।
এই সুত্র ধরে মুসলমানরা পৃথিবীকে ডিম্বাকৃতির
বলে প্রচার করতে থাকলো । কারণ তাতে সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতের অর্থ পরিবর্তন করে
এর নতুন অর্থ ডিম্বাকৃতির করায় তাদের পক্ষে ধর্মকে রক্ষা করা সম্ভব হয় । আর তাই তারা সব জায়গায়
প্রচার করে পৃথিবী ডিম্বাকৃতির এবং কুরআনেও সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতে পৃথিবীকে
ডিম্বাকৃতির বলা হয়েছে ।
এখানে মুসলমানদের ভন্ডামীর প্রতি লক্ষ করুন,
প্রথমত- কুরআনের সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার
আয়াতে পৃথিবীকে ডিম্বাকৃতির বলা হয়নি বরং পৃথিবীকে বিস্তৃত বলা হয়েছে । এবং
দ্বিতীয়ত- পৃথিবী ডিম্বাকৃতির নয় । পৃথিবী প্রায় ৯৫% সুষম
গোলাকাকৃতির । অর্থাৎ পৃথিবী সম্পুর্নভাবে ফুটবল আকৃতির বা কমলার আকৃতির বা কিছুটা আপেল আকৃতির
। কিন্তু ডিম্বাকৃতি
অনেক বেশী অসম আকৃতির হওয়ায় পৃথিবী মোটেও ডিম্বাকৃতির নয় । কারণ ডিম প্রায় ৫০-৫৫% অসম গোলক আকৃতির । অর্থাৎ বর্তুলাকার
। কিন্তু পৃথিবী গোলক
আকার । অর্থাৎ মুসলমানরা পৃথিবীর
আকৃতি নিয়ে দুই জায়গাতেই মিথ্যে কথা বলছে, বিজ্ঞানে এবং
কুরআনে । বিজ্ঞান বলে পৃথিবী গোলকাকার বা কমলার আকৃতির । কিন্তু মুসলমানরা মিথ্যে করে বলছে বর্তুলাকার
বা ডিমের মতো বর্তুলাকার ।
এখানে উল্লেখ্য, পৃথিবীর মেরু অঞ্চল বিষুবীয় অঞ্চলের তুলনায় সামান্য পরিমাণ কম । কিন্তু সেই পরিমানটা
এত সামান্য যে পৃথিবীকে পুরোপুরি সুষম গোলকের মতই দেখায় । আর তাই মহাশুন্য থেকে দেখলে পৃথিবীকে সম্পুর্ন
ফুটবলের মত গোলক আকৃতির দেখায় । কারণ পৃথিবী আসলেই গোলক আকৃতির ।
কিন্তু মুসলমানরা সেই সত্যটা প্রকাশ না করে
মিথ্যে প্রচার করে যে পৃথিবী ডিম্বাকার । কথাটা সম্পূর্ন মিথ্যে ।
এতক্ষনে নিশ্চয়ই পরিষ্কার হয়ে গেছে যে কেন
মুসলমানরা সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতে বর্ণিত "বিস্তৃত পৃথিবী" পরিবর্তন
করে "ডিম্বাতৃকির পৃথিবী" এই নতুন অর্থটি করেছে । কারণ তাতে কুরআনে বর্ণিত সমতর পৃথিবী কথাটাকে
ধামা চাপা দেয়া যায় । কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এই দিনে মানুষ কিন্তু ঠিকই জানতে পারে খুব সহজেই যে কুরআনে
পৃথিবীকে ডিম্বাকৃতির বলেনি বরং কুরআনকে বিস্তৃত বা বিছানার মত সমতল বলা হয়েছে ।
আর এ জন্যই আপনি যদি পুরাতন যে কোন অনুবাদ
দেখেন তাহলে দেখবেন যে সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতের অর্থ হচ্ছে "পৃথিবীকে
বিস্তৃত করা হয়েছে" । কিন্তু আপনারা যদি নতুন কুরআনের অনুবাদ দেখেন তবে দেখবেন যে
অনেক অনুবাদে এই আয়াতের অর্থ বিকৃত করে নতুন অর্থ করা হয়েছে "পৃথিবীকে করা হয়েছে
ডিম্বাকৃতির" ।
তাহলে আপনারা এতক্ষন পরে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন
কেন কুরআনের অর্থের এমন আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে ।
মুসলমানদের উদ্দেশ্যে দুটো কথা বলা যায় যারা
প্রতিবাদ করে বলবে, না সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতে পৃথিবীকে
ডিম্বাকৃতিরই বলা হয়েছে, কারন দাহাহা অর্থ ডিকশনারি
অনুযায়ী ডিম্বাকৃতির । তাই এখানে বিস্তৃত পৃথিবী হবে না বরং ডিম্বাকৃতির পৃথিবী হবে ।
তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, দেখুন, দাহাহা অর্থ ডিম্বাকৃতির
হতে পারে । কিন্তু দাহাহা-এর আরেকটা অর্থ আপনারা ডিকশোনারীতে নিশ্চয়ই দেখেছেন যে,
দাহাহা মানে বিস্তৃত করা ।
আর কুরআনের সবগুলো আয়াতে দেখবেন পৃথিবীকে
বিস্তৃত করা হয়েছে এই কথাটিই বলা হয়েছে বারবার । কিন্তু কোথাও পৃথিবীকে ডিম্বাকৃতির বলা হয়নি
। কিন্তু সুরা নাযিয়াতের
৩০ নাম্বার আয়াতে পৃথিবীকে বিস্তৃত করা বুঝাতে দাহাহা শব্দটি নেয়া হয়েছে, যার অর্থ বিস্তৃত করা । আর তাই ওই আয়াতে যদি দাহাহা-এর অর্থ বিস্তৃত
করা বলা হয় তবে কুরআনের অন্যান্য আয়াতের সাথে সম্পূর্নরুপে মিলে যায় । কারণ কুরআনের সবগুলো
আয়াতেই পৃথিবীর আকৃতি বুঝাতে বিস্তৃত পৃথিবী বলা হয়েছে । আবার সুরা নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতে বিস্তৃত
বুঝাতে দাহাহা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ বিস্তৃত
করা । আপনারা ডিকশোনারীতে
দেখতে পারেন । অথবা নেটে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন । গত ১৪০০ বছর ধরে কুরআনের সবগুলো আয়াতে এবং সবগুলো অনুবাদে
পৃথিবীকে বিস্তৃত বা প্রসারিত বলা হয়েছে । আর নাযিয়াতে বর্নিত দাহাহা শব্দিটির অর্থ বিস্তৃত করা, এই অর্থটি কুরআনের সবগুলো আয়াতে বর্ণিত হয়েছে এবং নাযিয়াতের ৩০ নাম্বার আয়াতেও
ব্যবহৃত হয়েছে গত ১৪০০ বছর যাবত ।
তাহলে প্রশ্ন আশা স্বাভাবিক যে, কেন গত ১৪০০ বছর ধরে চলে আশা কুরআনের এই অর্থ পরিবর্তন করা হলো?
১৪০০ বছর পরে কি এমন হলো যে কুরআনের অর্থ পরিবর্তন করে সম্পূর্ন
ভিন্ন অর্থ করে ফেলা হলো ?
কারণ খুব সহজ । তাতে কুরআনকে এবং ধর্মকে বাঁচানো সম্ভব ।
আর তাই মুসলমানরা কুরআনের সুরা নাযিয়াতের
৩০ নাম্বার আয়াতের অর্থ পরিবর্তন করে সম্পূর্ন বিপরীতমুখী অর্থ করা হয়েছে । এমনকি বিজ্ঞানকে ভুল
ভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরে কুরআনকে বিজ্ঞানময় প্রমানের ব্যর্থ চেষ্টা করেছে । এর জন্য যে তারা প্রতারণার
আশ্রয় নিয়েছে এবং কুরআনের গত ১৪০০ বছর ধরে চলে আশা অর্থ পরিবর্তন করে ফেলেছে তাতে তাদের
অনুশোচনার দরকার হয়নি । ভন্ডামী করে হলেও ধর্মকে তথা কুসংস্কারকে রক্ষা করতে হবে যেকোন
মূল্যেই ।
বি.দ্র.: কোন একটি শব্দের অনেকগুলো অর্থ
বা প্রতিশব্দ থাকতে পারে, কিন্তু যখন সেই শব্দটি
কোন একটি বাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন শুধু মাত্র একটি নির্ধারিত অর্থই বহন করে । বাক্যে যে অর্থে শব্দটিকে
ব্যবহার করা হয় সেই শব্দটি শুধু মাত্র সেই নির্দিষ্ট একটি অর্থই প্রকাশ করে । সব ভাষার ক্ষেত্রেই
এটি প্রযোজ্য । আর তাই সেই শব্দটির অর্থ যদি পরিবর্তন করা হয় তবে সেই বাক্যটির সম্পূর্ন অর্থই
বদলে যায় ।
কোরআন হল উপদেশের জন্যে সহজ।আর মানুষেরা এটা ভাল ভাবে অনুবাদ করতে পারে নাই। আপনি আরবী ব্যকারাওন ভাল ভাবে জানবেন তারপর নিয়ে বসবেন আসলে কোন টা সঠিক। সমর্থন শব্দ গুলো নিয়ে বসুন। যদি কোন ভুল পান এবং তা প্রতিষ্ঠিত িডকশেনারি থেকে প্রমান করতে পারেন তা ভুল অর্থ করা হয়েছে তা আমি আজকে নাস্তিক হয়ে যাব। আপনি যদি সোদি আরবে যান তবে তাদের কাছ থেকে উক্ত ভাষা জেনে দেখবেন কোন অর্থ টি সঠিক। অনুবাদের ভুলের কারণে আজ আপনাদের মত পাবলিক নাচে।
ReplyDelete@@@@@@যদি কোন ভুল পান এবং তা প্রতিষ্ঠিত িডকশেনারি থেকে প্রমান করতে পারেন তা ভুল অর্থ করা হয়েছে তা আমি আজকে নাস্তিক হয়ে যাব।@@@@
Deleteআমার উদ্দেশ্য আপনাদের মতো অন্ধবিস্বাসীদেরকে মিথ্যে ধর্মগুলোকে নিয়ে একটু ভাবানো। কিন্তু আপনারাতো আস্তিক, তাই নিজেদের মাথা খাটাবেন না। উল্টো আমাদেরকে উপদেশ দিবেন আপরা যেন অনুবাদের উইকিপেডিয়া নিয়ে বসি। কিন্তু নিজে একটু কষ্ট করে আপনাদের ধর্মগ্রন্থ পড়বেন না।
অনুবাদের পার্থক্য নিয়ে কথা বলার আগে আপনার উচিত হবে আগে অনুবাদ কাকে বলে, অনুবাদ কিভাবে করা হয়, এবং অনুবাদের সময় অনুবাদকদেরকে কোন কোন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হয়ে এসব বিষয় সম্পর্কে ভালো ভাবে জানা। কিন্তু আস্তিকরাতো কোন কিছু জেনে বুঝে যাচাই করতে অনিচ্ছুক। তাই আপনাদের মতো আস্তিকরা আমাদেরকেই উল্টো উপদেশ দেয় যেন আমরা আরো ভালো করে মুসলমান ধর্ম ব্যবসায়ীদের মন গড়া ব্যাখ্যা পড়ি এবং আপনাদের মতো অন্ধের মতো বিশ্বাস করি।
আপনাকে একবার অনুরোধ করছি আপনার ধর্ম গ্রন্থকে নিজের বুদ্ধি দিয়ে পড়বেন। অন্যের ধার করা বুদ্ধিতে না পড়ে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে একটু কষ্ট করে হলেও সত্য মিথ্যা যাচাই করে দেখবেন।
তারপর আমাদেরকে উপদেশ দিতে আসবেন অনুবাদের কারিশমা নিয়ে।
আমরা কিন্তু একটা অনুবাদ দেখে কোন কিছু বলি না। আপনি হয়তো লক্ষ করেছেন ব্যাপারটা।
অনুবাদ নিয়ে যারা লাফালাফি করে তারা অনুবাদের ব্যাপারে জানে না বা স্বার্থের জন্য ভন্ডামী করে।
অনুবাদের ক্ষেত্রে অনুবাদকগন খুব সাবধান থাকে মুল লেখার অর্থের সাথে অনুবাদের যেন অর্থের পার্থক্য না থাকে। আর অনুবাদের সময় অনুবাদকরা সব সময়ই আসল লেখার অর্থের সাথে ১০০% অর্থের মিল রেখে অনুবাদ করেন। আর তাই অনুবাদের ক্ষেত্রে মূল লেখায় উল্লেখ করা আসল অর্থই অনুবাদে বর্ণিত হয়।
অর্থাত অনুবাদ এবং মূল লেখার অর্থ একই থাকে। আর তাই সব অনুবাদে একই অর্থ পরিলক্ষিত হয়।
আপনি যখন কুরআনের অনেকগুলো অনুবাদ দেখবেন তখন লক্ষ করলে দেখতে পারেন যে সব অনুবাদেই অর্থ একই রাখা হয়েছে। একেক অনুবাদক একেক রকম শব্দ ব্যবহার করে এবং একেক ভাবে উপস্থাপিত করে কিন্তু সব অনুবাদেই অর্থ মূল লেখার অনুরুপই থাকে। আর তাই সব অনুবাদেই মূল অর্থটা একই রকম পাওয়া যায়।
আমি পোস্টে আগেই বলে দিয়েছি প্রতিশব্দ এনে অনুবাদের ভিন্ন অর্থ আনা যাবে না। একটা শব্দের অনেকগুলো অর্থ থাকবে এটাই সাভাবিক। কিন্তু অনুবাদের সময় কোন শব্দের সেই অর্থটিই নিতে হবে যে অর্থটা মূল লেখায় লেখক ব্যবহার করেছেন।
তাই প্রতিশব্দ এনে অন অনুবাদের অর্থ পরিবর্তন করলে মূল লেখাটাই বদলে যাবে।
এই কাজটি মুসলমানরা করে থাকে। যখন কোন আয়াত ভুল প্রমানিত হয়, অমনি তারা বাক্যে ব্যবহৃত কোন একটি শব্দের অন্য প্রতিশর্ব্দ এনে মুল অর্থকে বদলে দিয়ে নিজেদের সুভিধা মত অর্থ করে নিয়ে মুল অর্থকে বদলে দেয়। ফলে কুরআনের ভুলটা শুদ্ধ হয়ে যায়। আর তারা দাবী করে কুরআন বিজ্ঞানময়।
কিন্তু মুসলমানরা এটা বুঝতে চায়না তারা যে প্রতিশব্দ এনে বাক্যের মূল অর্থকে পরিবর্তন করলো এবং বাক্যটিকে সংশোধন করলো আর তাতে বিজ্ঞানের সাথে মিলে গেল, ফলে কুরআনের ভুল আর থাকলো না। কারণ ততক্ষনে আল্লাহর বলা ভুল কথাটি ইতিমধ্যে মুসলমানদের দারা শুদ্ধ হয়ে গেছে। কারণ তারা ভুলটা সংশোধন করেই নতুন অর্থ এমন ভাবে করেছে যেন সেটাতে আর ভূূল না থাকে।
আর তাই মূল অর্থ পরিবর্তন করে অনুবাদ পরিবর্তন করার মাধ্যমে নতুন অর্থ করার ফলে যে বিজ্ঞানের সাথে মিলে গেল সেটা কোন আল্লাহর কথা থাকলো না। সেটা মানুষ কর্তৃক পরিবর্তিত হয়েছে বলে সেটি সঠিক অর্থ প্রদান করছে। এর কৃতিত্ত আল্লাহর নয় বরং আল্লাহর ভুলকে সংশোধন করা মুসলমানদের। কিন্তু তাতে কুরআন সঠিক হয়ে যায় না। কারণ কুরআনের ভুল মুসলমানরাই সংশোধন করে ফেলে বলে আল্লাহর লেখা কুরআন ভুলই থেকে যায়।
তাই মুসলমানদের দাবী শুধু ভন্ডামীই নয়বরং মানুষের সাথে প্রতারণা।
প্রথমত: আপনি বললেন মুসলমানরা বলেছে পৃথিবী ডিম্বাকৃতি। তার রেফারেন্স দেননি। আর বিস্তৃত করেছেন, মানে: পৃথিবীটা কমলাকৃতি হওয়া সত্ত্বেও আমাদের কাছে সমতল মনে হয়। https://versebyversequranstudycircle.wordpress.com/2014/06/06/tafseer-surah-an-naziat/
ReplyDelete