রাত দিন সম্পর্কে কুরআনের অজ্ঞতা এবং অদ্ভুত
কথাবার্তা ।
কুরআন কোন অতি ক্ষমতাবান সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত
গ্রন্থ নয়, বরং এটি কোন এক স্বাধারণ মানুষের লেখা স্বাধারণ
মানের গ্রন্থ । কুরআনে নানা ভুল তথ্য এবং বাস্তবতা বহির্ভুত কথা থাকায় এটা কারো বুঝতে বাকি থাকে
না যে, কুরআন মুহাম্মদ লিখেছে বা মুহাম্মদ দ্বারা
প্রস্তুতকৃত ।
এর আগের পর্বগুলোতে সেটা আমি প্রমাণ করে
দিয়েছি এবং এই পর্বেও আরো একটা প্রমাণ হাজির করবো ।
কুরআনে আল্লাহ তথা মুহাম্মদ বলেছে,
সুরা রাদ, আয়াত ০৩
"...তিনি দিনকে রাত্রি দ্বারা আবৃত করেন
...।"
অর্থাৎ দিনকে রাত দ্বারা আবৃত করা হয় বা ঢেকে
দেয়া হয় ।
সুরা আন-নমল : আয়াত ৩৯ :
"... তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা আচ্ছাদিত
করেন এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন ...।"
আবৃত করা বা আচ্ছাদিত করা মানে কোন কিছুকে
অন্য কোন কিছু দিয়ে ঢেকে দেওয়া অথবা কোন কিছুকে অন্য কোন কিছু দিয়ে আবৃত করা ।
এখানে বলা হচ্ছে, রাত দিনকে ঢেকে দেয় বা দিন রাতকে ঢেকে দেয় । অর্থাৎ রাত দিন পরস্পরকে ঢেকে দেয় বা আবৃত
করে দেয় ।
যেভাবে মানুষ কাপড় দিয়ে শরীরকে ঢেকে দেয় বা
কাপড় দিয়ে কোন কিছুকে ঢেকে দেয় বা আবৃত করে দেয়, ঠিক সেভাবে রাত দিনকে ঢেকে দেয় এবং দিন রাতকে ঢেকে দেয় (চিত্র-১) ।
আবার
আল্লাহ তথা মুহাম্মদ বলেছে,
সুরা আল হাদীদ, আয়াত ০৬
"তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন
এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করেন রাত্রিতে । ...."
অর্থাৎ রাত দিনের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং দিন
রাতের মধ্যে ঢুকে পড়ে ।
সুরা আলে ঈমরান, আয়াত ২৭
"তুমি রাতকে দিনের ভেতরে প্রবেশ করাও
এবং দিনকে রাতের ভেতর প্রবেশ করিয়ে দাও ।
...."
এখানেও বলা হয়েছে, রাত দিনের ভিতরে ঢুকে যায় এবং দিন রাতের ভিতরে ঢুকে যায় ।
সুরা লোকমান, আয়াত ২৯
"তুমি কি দেখনা আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে
প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন ? ..."
অর্থাৎ রাত দিনের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং দিন
রাতের মধ্যে ঢুকে পড়ে ।
সুরা ফাতির; আয়াত ১৩ :
"তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন
এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন । .... "
এখানেও বলা হয়েছে, রাত দিনের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং দিন রাতের ভিতরে ঢুকে পড়ে ।
কোন কিছু অন্য কোন কিছুর ভিতরে বা মধ্যে
প্রবিষ্ট হওয়া বা প্রবেশ করা হচ্ছে, একটা জিনিস
অন্য জিনিসের মধ্যে ঢুকে পড়া ।
এই আয়াতগুলো অনুযায়ী রাত দিনের মধ্যে ঢুকে
পড়ে এবং দিন রাতের মধ্যে ঢুকে পড়ে । অর্থাৎ রাত দিন পরস্পরের মধ্যে ঢুকে যায় ।
আবার কুরআনে আল্লাহ তথা মুহাম্মদ বলেছে,
সুরা ইয়াসীন, আয়াত ৩৭
"তাদের জন্যে এক নিদর্শন রাত্রি,
আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি, তখনই তারা অন্ধকারে থেকে যায় ।"
এই আয়াত অনুযায়ী, রাত থেকে দিনকে অপসারিত করা হলে অন্ধকার নেমে আসে । অর্থাৎ রাত আর দিন মিশে থাকে কিন্তু যদি রাত
থেকে দিনকে সরিয়ে নেওয়া হয় তবে অন্ধকার নেমে আসে ।
উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারছি যে,
১. প্রথমে রাত দিনকে আবৃত করে বা ঢেকে দেয়
এবং দিন রাতকে আবৃত করে বা ঢেকে দেয় । (সুরা রাদ-এর ০৩ নং আয়াত এবং সুরা নমল-এর ৩৯ নং আয়াত অনুযায়ী)
২. পরে, রাত দিনের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং দিন রাতের ভিতরে ঢুকে পড়ে । (৫৭:৬, ৩:২৭, ৩১:২৯, এবং ৩৫:১৩ নং আয়াত অনুযায়ী)
৩. এবং রাত দিন পরস্পরের মধ্যে ঢুকে যাবার
পরে রাত থেকে দিন অপসারিত হয় এবং অন্ধকার নেমে আসে । এবং বিপরীত ক্রমে দিন থেকে রাত অপসারিত হলে
চারদিক আলোকিত হয়ে যায় । (সুরা ইয়াসীন, আয়াত ৩৭ অনুযায়ী)
অর্থাৎ কুরআনের বর্ননা অনুযায়ী, প্রথমে রাত দিনকে ঢেকে দেয় বা দিন রাতকে ঢেকে দেয় । পরে রাত দিনের ভিতরে
ঢুকে পড়ে এবং দিন রাতের ভিতরে ঢুকে পড়ে । যখন পরস্পর সম্পূর্নরুপে রাত দিন একে অপরের মধ্যে ঢুকে গিয়ে
দুটো মিলিত অবস্থায থাকে তখন রাত অপসারিত হয়ে দিন হয় অথবা বিপরীতক্রমে দিন অপসারিত
হয়ে রাত হয় ।
সহজ করে বললে দাড়ায় -
১. রাত প্রথমে দিনকে আবৃত করে এবং দিন রাতের
ভিতরে ঢুকে যায় । যখন এরা পরস্পরের মধ্যে সম্পূর্নরুপে প্রবেশ করে বা মিলিত অবস্থায় থাকে তখন আধো
আলো আধো ছায়ার সৃষ্টি হয় অর্থাৎ সন্ধা হয় । কিন্তু যখন এই মিশ্রিত অবস্থা থেকে দিনকে
অপসারন করা হয় তখন চারদিক অন্ধকার হয়ে রাত তৈরী করে ।
আবার
২. দিন প্রথমে রাতকে আবৃত করে এবং পরে রাত
দিনের ভিতরে ঢুকে যায় । যখন এরা পরস্পরের মধ্যে সম্পূর্নরুপে প্রবেশ করে বা মিলিত অবস্থায় থাকে তখন আধো
আলো আধো ছায়ার সৃষ্টি হয় অর্থাৎ সকাল হয় । এবং রাত অপসারিত হয়ে চারদিক সম্পূর্নরুপে আলোকিত হয়ে দিন তৈরী
হয় ।
অর্থাৎ কুরআন মতে তথা মুহাম্মদের ধারণা মতে,
রাত দিনের পরিবর্তন ঘটে রাত দিনের গতিশীলতার জন্য ।
রাত দিনকে আবৃত করছে এবং দিন রাতকে আবৃত করছে;
রাত দিনের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে এবং দিন রাতের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে
। রাত দিন থেকে অপসারিত
হচ্ছে এবং দিন রাত থেকে অপসারিত হচ্ছে । এরকম রাত দিনের পরস্পরের গতিশীল অবস্থার জন্য রাত দিনের পরিবর্তন
ঘটছে ।
রাত দিনের গতিশীলতার কথা কুরআনে আরও স্পষ্ট
করে বলা হয়েছে ।
সুরা আল আ'রাফ, আয়াত ৫৪
"....তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে
এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে l তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী ।..."
অর্থাৎ রাত দৌড়ে বা গতিশীল হয়ে রাতের পেছনে
আসে । এবং দিন দৌড়ে বা গতিশীল
হয়ে রাতের পেছনে আসে ।
সুরা ইয়াসীন; আয়াত ৪০
"সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের
এবং রাত্রি অগ্রে চলেনা দিনের, প্রত্যেকেই আপন আপন
কক্ষপথে সন্তরণ করে ।"
অর্থাৎ রাত দিনের আগে চলতে পারে না বা রাত
গতিশীল হয়ে দিনের আগে আসতে পারে না । পক্ষান্তরে দিন দৌড়ে বা গতিশীল হয়ে রাতের আগে আসতে পারে না । এবং রাত ও দিন,
সূর্য ও চন্দ্রের মতই নিজ নিজ কক্ষপথে গতিশীল ।
সুরা আল আম্বিয়া; আয়াত ৩৩ :
"তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং
সূর্য ও চন্দ্র l সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে l"
এখানেও রাত দিনকে সূর্য ও চন্দ্রের মতো গতিশীল
বলা হয়েছে ।
অর্থাৎ কুরআন মতে, রাত দিন নিজেরা গতিশীল থেকে রাত দিনের পরিবর্তন ঘটায় । রাত গতিশীল হয়ে দিনের পিছনে আসে । রাত দিনকে আবৃত করে
এবং দিনের ভিতরে ঢুকে পড়ে । এবং একটা আধো আলো আধো ছায়া বা সন্ধার সৃষ্টি করে । শেষে দিন রাত থেকে
অপসারিত হয়ে রাত তৈরী করে ।
আবার দিন গতিশীল হয়ে রাতের পিছনে আসে । দিন রাতকে আবৃত করে
বা ঢেকে দেয় এবং রাতের ভিতরে ঢুকে পড়ে । এবং একটা আধো আলো আধো ছায়ার সৃষ্টি হয় বা সকাল হয় । এবং শেষে দিন থেকে
রাত অপসারিত হয়ে সম্পূর্ন আলোকিত অবস্থার সৃষ্টি হয় বা দিন হয় ।
কিন্তু বাস্তব জগতে বা বাস্তব পৃথিবীতে এরকম
হয় না । বাস্তব পৃথিবীতে দিন রাতের পরিবর্তন ঘটে পৃথিবীর গতিশীলতার জন্য । পৃথিবীর আহ্নিক (অর্থাৎ
নিজ অক্ষে আবর্তন) গতির জন্য রাত দিনের পরিবর্তন ঘটে । বাস্তব পৃথিবীতে রাত দিন স্থির থাকে,
কিন্তু পৃথিবী গতিশীল থাকায় রাত দিনের পরিবর্তন ঘটে ।
অর্থাৎ কুরআন সম্পূর্ন অবাস্তব এবং বিজ্ঞান
বিরোধী কথা বলেছে । এবং রাত দিনের পরিবর্তনের অদ্ভুত এবং অবাস্তব পদ্ধতি বর্ননা করেছে, যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই ।
মুহাম্মদ সপ্তম শতাব্দিতে এই আয়াতগুলো লিখেছে
বলে তার পক্ষে জানা সম্ভব ছিলনা আসলে রাত দিনের পরিবর্তন কেন ঘটে ? সে দেথেছে সূর্য ও চন্দ্র গতিশীল এবং রাত দিনের পরিবর্তন ঘটে
। তাই সে ধরে নিয়েছে
যেহেতু সূর্য ও চন্দ্র গতিশীল থাকে (অর্থাৎ পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে গতিশীল থাকে)
তাহলে নিশ্চয়ই রাত দিনও গতিশীল থাকে বিধায় রাত দিনের পরিবর্তন ঘটে । অর্থাৎ সে কল্পনা করে
নিয়েছে যে রাত দিন গতিশীল থেকেই রাত দিনের পরিবর্তন ঘটায় । কারন মুহাম্মদের সেই সময়ে বসে জানা সম্ভব
ছিল না যে পৃথিবীই গতিশীল । মুহাম্মদ ভেবেছে পৃথিবী স্থির থাকে কিন্তু রাত দিন গতিশীল থেকে
রাত ও দিনের পরিবর্তন ঘটায় ।
আর তাই সে রাত দিনের পরিবর্তন সম্পর্কে কুরআনে
অদ্ভুত কথা বলেছে । এবং রাত দিন সম্পর্কে নিজে নিজেই অথবা কারো কাছ থেকে ধারণা নিয়ে কুরআনে এমন অদ্ভুত
পদ্ধতির বর্ননা দিয়েছে । আর এই ধারণার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই ।
কুরআন যদি কোন সৃষ্টিকর্তা লিখতো তবে রাত
দিনের পরিবর্তন সম্পর্কে এমন অদ্ভুত এবং অবাস্তব কথা বার্তা বলতো না ।
কুরআন মুহাম্মদ লিখেছে বলেই সে কুরআনে অবাস্তব
এবং সম্পূর্ন ভূল কথা বলেছে ।
অর্থাৎ কুরআন আল্লাহর বাণী নয় বরং কুরআন মুহাম্মদের
নিজের বাণী । (প্রমানিত)
অবিশ্বাসীদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে জাহান্নাম
ReplyDeleteফেরাউনের লাশ পাওয়ার সূত্র কি ছিল???
ReplyDeleteসুরা ইয়াছিনের ৪০ নং আয়াতে রাত দিনকে অতিক্রম করতে পারে না সে কথা বলা হয়েছে।
ReplyDeleteকয় ক্লাস পড়েছেন জানি না তবে আল্লাহর বাণী কুরআন মাজিদের কথা বাদই রাখলাম। কাউকে বুঝাতে বা কারু ভূল ধরতে আসলে সে বিষয়ে নূন্যতম জ্ঞান থাকা উচিত।
আপনি আপনার মায়ের পেটে কত দিনে কোন পর্যায়ে ছিলেন তা মোহাম্মদ সে সময় কি ভাবে জানত?