আস্তিকরা বৈজ্ঞানিক থিউরী বা তত্ব, বৈজ্ঞানিক ফ্যাক্ট বা প্রমান এবং বৈজ্ঞানিক ‘ল’ বা সুত্র সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে বলেই বিবর্তনকে মিথ্যা মনে করে। আর তারা প্রতিনিয়ত বলতে থাকে এই থিউরীটা মিথ্যা, এটা শুধু মাত্র থিউরী কিন্তু বাস্তব সত্য নয় কারণ এটি কোন ফ্যাক্ট নয়; এটিকে বিজ্ঞান প্রশ্রয় দিলেও এটি আসলে সত্য নয় কারণ বিবর্তনবাদের বইগুলোতে কখনও বিবর্তনের ফ্যাক্ট নামে কোন বই নেই; কেউ বলতে পারবে না যে বিবর্তনের ল' বা সুত্র আছে। যদি বিবর্তনবাদ সত্যই হতো তবে অবশ্যই এটির কোন বৈজ্ঞানিক 'ল' বা সুত্র থাকতো। বিবর্তনবাদ মিথ্যা বলেই এটির কোন 'ল' বা সুত্র নেই।
আস্তিকদের
এসব দাবী শুনে এটা স্পষ্ট বুঝা যায় যে তারা আসলে
বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখে না। যদি তারা জানতো বিজ্ঞানে থিউরী বা তত্ত্ব কাকে
বলে, ফ্যাক্ট বা প্রমাণ কি,
বৈজ্ঞানিক 'ল' বা সুত্র
কাকে বলে, তবে তারা এসব উদ্ভট দাবী করতো না।
বিজ্ঞান
সম্পর্কে আস্তিকদের এই অজ্ঞানতাকে কাজে
লাগিয়ে কিছু অসাধু ধর্ম ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত মানুষকে করছে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত। তারা
নানা কুযুক্তির অবতারনা করে মানুষকে বিজ্ঞান সম্পর্কে ভূল ধারণা দিয়ে চলেছে অবিরতভাবে। যেহেতু সাধারণ আস্তিকরা বিজ্ঞান সম্পর্কে খুব কমই ধারণা রাখে তাই তারা খুব সহজেই ধর্ম ব্যবসায়ী ধর্মবেদ্যাদের মিথ্যা কথাকে সত্য বলে বিশ্বাস করছে।
সমস্যা
হচ্ছে সাধারণ মুসলমান বিজ্ঞানের মুল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানে না বলে তারা
বিবর্তন সম্পর্কে মিথ্যা কথাগুলোকেই সত্য বলে বিশ্বাস করছে ধর্মবাদীদের নানা অপপ্রচারের কারণে। এসব অপপ্রচারকে বিশ্বাস করে সাধারণ আস্তিকরা মনে করে এবং প্রায়ই এসব দাবী উত্থাপন করে এবং বলে, বিবর্তনবাদ সত্য নয় কারণ এটি
শুধুমাত্র একটি থিউরী, এটা ফ্যাক্ট নয়; বিবর্তনবাদ যদি সত্য হতো তবে বিবর্তনবাদের ফ্যাক্ট নামের কোন বই থাকতো; সবচেয়ে
বড় কথা বিবর্তনবাদ সত্য নয় কারণ বিবর্তনবাদের
কোন সুত্র বা 'ল' নেই; তাই
বিবর্তনবাদ একটি থিউরী মাত্র এটি কোন প্রমাণিত সত্য বা ফ্যাক্ট নয়।
আগেই
বলা হয়েছে আস্তিকরা এসব ভ্রান্তিমূলক ধারণা রাখে এবং অর্থহীন প্রশ্ন করে কারণ তারা বিজ্ঞানের থিউরী, ফ্যাক্ট এবং 'ল' সম্পর্কে কোন
ধারণাই রাখে না। তারা ধর্মবাদীদের মিথ্যা অপপ্রচারকে সত্য বলে বিশ্বাস করে। আর এসব ভ্রান্ত
ধারণাগুলোই বারবার উপস্থাপন করে।
বৈজ্ঞানিক
থিউরী কি?
সাধারণ
অর্থে থিউরী বলতে যা বুঝায় বিজ্ঞানের
ভাষায় তাকে হাউপোথিসিস বলে। সাধারণ ভাবে যাকে প্রমানিত সত্য বা ফ্যাক্ট বলে
বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে থিউরী বলে। বিজ্ঞানের ভাষায় ফ্যাক্ট হলো এমন কিছু যা প্রকৃতিতে প্রতিনিয়ত
ঘটে চলে এবং বাস্তবিক ভাবে সেগুলোকে পর্যবেক্ষক করা যায়। যেমন মহাকর্ষ বল, প্রকৃতিতে প্রতিটি বস্তু একে অন্যকে আকর্ষন করে বলেই বস্তু উপর থেকে নিচে পড়ে যায়। যেমন নিউটনের আপেল গাছ থেকে পৃথিবীর মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। এই উপর থেকে
বা গাছ থেকে কোন কিছু মাটিতে পড়ে যাওয়াটা হলো একটি ফ্যাক্ট। আর এই ফ্যাক্টটির
কার্যপ্রনালীর একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যাকে থিউরী বলে। যেমন মহাকর্ষ তত্ত্ব বা থিউরী। অর্থাৎ যে
হাউপোথিসিস বা অনুকল্পটি প্রকৃতির
কোন ফ্যাক্ট বা ঘটনাকে সঠিক
ভাবে ব্যাখ্যা করে তাকেই থিউরী বলে। অর্থাৎ থিউরী হচ্ছে প্রকৃতিতে ঘটমান নানা ফ্যাক্টগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা। আর সঠিক ব্যাখ্যাকে
বিজ্ঞানের থিউরীতে উত্তির্ন হতে নানা রকম পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যখন বিভিন্ন বিজ্ঞানী কোন ব্যাখ্যাকে (হাইপোথিসিসকে) নানা রকম পরীক্ষার মাধ্যমে সেটাকে সত্য বলে রায় দেয় তাকেই বিজ্ঞানের ভাষায় থিউরী বলে।
সুতরাং
যারা দাবী করে বিবর্তনবাদ কোন থিউরী নয় তারা এই
কথাটি জানে না বা জানলেও
প্রতারণার আশ্রয় নেয়।
বৈজ্ঞানিক
সূত্র বা 'ল' কি?
বৈজ্ঞানিক
'ল' বা সুত্র হলো
থিউরীর অভ্যন্তরীণ একটি বিষয় যা ওই থিউরীটিতে
ঘটমান কোন ঘটনা (যা সব সময়ই
একই রকম আচরণ করে) প্রক্রিয়ার মান নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ 'ল' কোন থিউরীর
অংশ এবং এটি ওই থিউরীটির একটি
নির্দিষ্ট বিষয়কে গণনা করতে পারে কারণ ওই ঘটনাটি সর্বত্র
একই রকম আচরণ করে। যেমন নিউটনের মহাকর্ষ বল তত্ত্বের মহাকর্ষ
সুত্রটি দ্বারা কোন স্থানের দুটি বস্তুর মধ্যে ক্রিয়াশীল মহাকর্ষ বলের মান নির্ণন করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। আবার কোন ঘটনা সর্বত্র একই রকম হলে সেটাও প্রকাশ করার জন্য বৈজ্ঞানিক 'ল' বা সুত্র
ব্যবহার করা হয়। যেমন নিউটনের গতির তৃতীয় সুত্র থেকে আমরা সরাসরি কোন গণনা করতে পারি না যেমনটি মহাকর্ষ
সুত্র থেকে পারা যায়। কিন্তু গতির তৃতীয় সুত্রটি একটি ঘটনা বর্ণনা করে যা প্রকৃতির সর্বত্র
একই রকম। কারণ গতির তৃতীয় সুত্রের ভাষ্য মতে প্রকৃতির যেকোন দুটো বস্তুর মধ্যে ঘটমান ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া পরস্পরের
সমান কিন্তু বিপরীত মুখি। যেমন কারো মুখে ঘুষি দিলে মুখে যেমন হাতের ক্রিয়ার ফলে ব্যাথা লাগে তেমনি হাতও মুখের প্রতিক্রিয়ার ফলে ব্যাথা পায়। এই ক্রিয়া আর
প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারটি বিশ্বজগতের সর্বত্রই একই রকম। এজন্যই রকেট দিয়ে চাঁদ বা মঙ্গলে যাওয়া
যায়।
সুতরাং
দেখা যাচ্ছে বৈজ্ঞানিক 'ল' বা সুত্র
শুধুমাত্র গণনা এবং একই রকম ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করতেই ব্যবহৃত হয়। আর তাই যে
থিউরীতে গণনা থাকে না এবং তাতে
একই রকম ঘটনার বর্ণনা থাকে না তাতে কোন
'ল' বা সুত্র থাকে
না। যেমন জার্ম থিউরী বা রোগ তত্ত্বে
কোন সুত্র বা 'ল' থাকে না।
কিন্তু এই থিউরীটি প্রকৃতির
একটি ফ্যাক্টকে ব্যাখ্যা করে। যেমন রোগ কিভাবে হয়, এটির ফলে শরীরে কি কি প্রতিক্রিয়া
হয় এবং এর থেকে কিভাবে
মুক্তি পাওয়া যায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। আমরা জানি জার্ম থিউরী বা রোগ তত্ত্বে
কোন বৈজ্ঞানিক 'ল' বা সুত্র
নেই। কিন্তু এটি একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠিত থিউরী বা তত্ত্ব কারণ
এটি প্রকৃতির একটি ফ্যাক্ট অর্থাৎ রোগ সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা দান করে।
আস্তিকরা
যখন দাবী করে বিবর্তনবাদ কোন ফ্যাক্ট নয়, কারণ বিবর্তন শুধুই একটি থিউরী; এর কোন 'ল'
বা সুত্র নেই তাই এটি সত্য নয় ইত্যাদি ইত্যাদি
অযৌক্তিক দাবী যারা করে তারা বিজ্ঞানের জ্ঞান সম্পর্কে পুরোপুরিই অজ্ঞ।
বিবর্তনবাদ
একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠিত সত্য। কারণ এটি প্রকৃতির তথা পৃথিবীর প্রাণীকুলের উৎপত্তি এবং ক্রমবিকাশ সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা দেয়। প্রকৃতিতে বিবর্তন তথা প্রাণী থেকে প্রাণীর বৈচিত্রের উত্থান এবং বিভিন্নতা তৈরা করার ঘটনা বা ফ্যাক্টকে সঠিক
ভাবে ব্যাখ্যা করতে পেরেছে। এবং এটি বিজ্ঞানের যতগুলো পরীক্ষা পদ্ধতি রয়েছে সবগুলোই সঠিক ভাবে উত্তীর্ণ হতে পেরেছে সফল ভাবে। তারপরেই বিবর্তনবাদকে বৈজ্ঞানিক থিউরী বা তত্ত্বের মর্যাদা
দেওয়া হয়েছে।
আস্তিকরা
প্রায়ই দাবী করে সম্পূর্ণ অজ্ঞানতা থেকে এবং বলে থিউরী হলো সেটাই যা সত্য নয়।
আর যা সত্য সেটা
হলো ফ্যাক্ট। অথচ তারা জানেই না কোনটা থিউরী
আর কোনটা ফ্যাক্ট। মনে রাখতে হবে ফ্যাক্ট হলো প্রকৃতিতে বিদ্যমান নানা বস্তু বা নানা ঘটনা
প্রণালী। প্রক্ষান্তরে বৈজ্ঞানিক থিউরী হলো ওই ফ্যাক্টকে সঠিক
ভাবে ব্যাখ্যা করা কোন তত্ত্ব।
যেকোন
বিজ্ঞানী কোন হাইপোথিসিস প্রদান করার পরে তার প্রধাণ লক্ষ থাকে এটিকে বৈজ্ঞানিক থিউরীতে উত্তীর্ণ করা। কারণ থিউরী হলো বিজ্ঞানের চুরান্ত লক্ষ। বিজ্ঞানে থিউরীকে সর্বচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়। কারণ কোন হাইপোথিসিস যখন বিজ্ঞানী মহলে প্রবেশ করে তখন সেই হাইপোথিসিসকে বিজ্ঞানীগণ নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এর সত্যতা যাচাই
করে নেন। যদি দেখা যায় হাইপোথিসিসটি প্রকৃতির কোন ঘটনার সাথে মিলছে না, তবে সেই হাইপোথিসিসটিকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু যদি সেই হাইপোথিসিসটি বিজ্ঞানের সমস্ত পরীক্ষায় টিকে যায় তবেই তাকে থিউরীর মর্যাদা দেওয়া হয়। এজন্যই সমস্ত বিজ্ঞানীর প্রধান লক্ষ থাকে তার হাইপোথিসিসটি যেন বৈজ্ঞানিক থিউরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞান এভাবেই কাজ করে।
বেশির
ভাগ আস্তিকই বৈজ্ঞানিক হাইপোথিসিস আর থিউরীকে গুলিয়ে
ফেলে। তারা ভাবে হাইপোথিসিস আর থিউরী বুঝি
একই ব্যাপার। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো হাইপোথিসিসি হলো সেই তত্ত্ব যা এখনও প্রমাণিত
হয়নি। প্রক্ষান্তরে থিউরী হলো সেই তত্ত্ব যা প্রমাণিত হয়েছে।
বিজ্ঞানের
এইসব সাধারণ তথ্য না জেনে যদি
কোন আস্তিক বিবর্তনকে থিউরী মানে সত্য নয় বলে দাবী
করতে থাকে এবং নানা রকম অযৌক্তিক দাবী তুলে মানুষকে বিবর্তনবাদ সম্পর্কে ভূ্ল তথ্য দিয়ে, মিথ্যে বলে বিভ্রান্ত করে তবে সেটা সমাজের জন্য অজ্ঞতার অন্ধকার ছাড়া কিছুই নিয়ে আসে না।
যারা
ধর্মীয় অন্ধতা এবং গোঁড়ামীর জন্য বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত সত্য কে মেনে নিতে
পারে না তারাই শুধু
বিবর্তনবাদ সম্পর্কে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এরা এগুলো করে না জেনে অথবা
ধর্ম ব্যবসার খাতিরে।
বিবর্তনবাদ
কি শুধুই একটি থিউরী? এটি কি কোন প্রতিষ্ঠিত
সত্য নয়?
বিবর্তনবাদের
যাত্রা শুরু হয়েছে অনেক আগে। প্রায় দুই আড়াই শত বছর আগে
থেকে বিবর্তনবাদ আস্তিক সমাজে বিধ্বংসী আক্রমন করেছিল ধর্মের মিথ্যাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করার মাধ্যমে। সেই থেকে ধর্মান্ধ আস্তিকরা বিবর্তনের পিছনে লেগে আছে এটিকে মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য। ডারউইন থেকে বিবর্তনবাদ বিজ্ঞান মহলে প্রবেশ করলেও দু'শ বছরের
বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিবর্তনবাদ আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য।
বিজ্ঞানের নানা পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে বিবর্তনবাদ থিউরীর মর্যাদা পেয়েছে। বর্তমানের ৯৫%-এরও বেশী বিজ্ঞানী আজ একমত যে
বিবর্তনবাদ প্রকৃতিতে ঘটে (অর্থাৎ এটি একটি ফ্যাক্ট) এবং বিবর্তনবাদ তত্ত্বটি একটি প্রতিষ্ঠিত থিউরী (অর্থাৎ বিবর্তন ফ্যাক্টটিকে সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করতে পেরেছে)।
বিবর্তনবাদ
প্রকৃতির একটি ঘটমান ফ্যাক্টকে সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করতে পেরেছে। কিন্তু বিবর্তনবাদ তত্ত্বটি প্রকৃতিতে বিবর্তনের কোন সর্বত্র একই রকম ঘটমান কোন কিছু পায়নি বলে এর কোন সুত্র
বা 'ল' দিতে হয়নি।
যদি দেখা যেত যে বিভিন্ন প্রাণীর
বিবর্তন একটি নির্দিষ্ট্য পদ্ধতিতে হচ্ছে তবে সেই পদ্ধতিটিকে 'ল'
বা সুত্রের মাধ্যমে বর্ণনা করা হতো। কিন্তু দেখা গেছে বিবর্তন ঘটে সম্পূর্ণ এলোমেলো ভাবে। বেশীল ভাগ ক্ষেত্রেই বিবর্তন কোন দিকে ঘটবে সেটা বুঝার কোন উপায় নেই। এজন্যই বিবর্তনবাদ থিউরীটিতে কোন 'ল' বা সুত্র
দিতে হয়নি।
মনে
রাখতে হবে যে 'ল' বা সুত্র
হচ্ছে থিউরীর ভিতরের একটি অংশ। যে থিউরীতে সুত্র
প্রয়োগ করা যায় যেখানে সুত্র প্রয়োগ করা হয়েছে। অপরদিকে যে থিউরীতে সুত্র
প্রয়োগ করা যায় না সেখানে সুত্র
প্রয়োগ করা হয়নি। বিবর্তনবাদ এমনই একটি থিউরী যাতে কোন সুত্রের দরকার পড়েনি।
বিজ্ঞানের
এসব খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ কোন ধর্মান্ধ আস্তিক যদি দাবী করে বসে যে যেহেতু বিবর্তনবাদ
কোন ফ্যাক্ট নয় ( লক্ষ করুণ সে জানে না
ফ্যাক্ট কি) এবং এটির কোন 'ল' বা সুত্র
নেই তাই এটি কোন প্রমাণিত সত্য নয়, তাকে মুর্খ বললেও কম বলা হবে।
যে
সকল আস্তিক বিজ্ঞানের এসব বিষয় জানে না তারা ধর্মান্ধ
বা ধর্মব্যবসায়ী আস্তিকদের দারা খুব সহজেই প্রতারিত হবে এবং হয়ও। যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে জানেন এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা রাখেন তারা কখনই বলবে না যে যেহেতু
বিবর্তনবাদ শুধু একটি থিউরী তাই এটি সত্য নয়। তারা এটাও বলবে না যে, যেহেতু
বিবর্তনবাদের ফ্যাক্ট নামে কোন বই নেই এবং
বিবর্তনবাদের কোন সুত্র নেই তাই বিবর্তনবাদ কোন প্রমাণিত সত্য নয়।
বরং
যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ অথবা সামান্য ধারণা রাখে শুধু তারাই এসব অযৌক্তিক দাবী করে বারংবার; যদিও তাদেরকে বারবার এসব বিষয়গুলো বুঝানো হয়। অন্ধবিশ্বাসী এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন আস্তিকরা তাদের অন্ধবিশ্বাসের দরুণ বিবর্তনবাদকে মেনে নিতে পারে না। কারণ তাদের ধর্মকে সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়েছে এই বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত
সত্যটি। যদি এই থিউরীটি তাদের
ধর্মকে সরাসরি মিথ্যা প্রমাণ না করতো তবে
তারা এই থিউরীটি মেনে
নিতো। যেমন খ্রিস্টান, মুসলমান এবং ইহুদিরা এই থিউরীটিকে সত্য
বলে মেনে নিতে পারছে না যদিও প্রায়
সব বিজ্ঞানী এটিকে সত্য বলে দেখিয়েছে এবং সত্য বলে রায় দিয়েছে। অপরদিকে হিন্দু বা বৌদ্ধরা এই
থিউরীটিকে মেনে নিতে দ্বিধা করেনি। কারণ এই থিউরীটি তাদের
ধর্মকে আঘাত করেনি। যদি এই থিউরীটি তাদের
ধর্মকেও আঘাত করতো তবে তারাও মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদীদের মতো বিবর্তনবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতো। কারণ ধর্মান্ধ অন্ধবিশ্বাসী কুসংস্কারাচ্ছন্নরা তাদের কুসংস্কারময় ধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাস থেকে বিরত থাকতে চায় না এবং তারা
সেটা পারেও না।
বিবর্তনবাদ
যে একটি প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক থিউরী সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় হাজার হাজার ফসিল রেকর্ড দেখে। বিবর্তনবাদকে প্রমাণ করেছে জেনেটিক্সের আবিষ্কারগুলো। ডিএনএর মধ্যে মিল দেখে মানুষ খুব সহজেই নিশ্চিত হয়েছে যে বিবর্তন একটি
সত্য ঘটনা। এতো এতো ফ্যাক্টই প্রমাণ করে দিয়েছে যে বিবর্তনবাদ একটি
প্রতিষ্ঠিত থিউরী অর্থাৎ প্রমাণিত সত্য।
এতো
কিছুর পরেও যারা ধর্মান্ধতা, ধর্মীয় গোঁড়ামী, অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে দাবী করবে বিবর্তনবাদ সত্য নয়; নির্দ্বিধায় তারা বোঁকার স্বর্গে বাস করছে।
No comments:
Post a Comment